নিউইয়র্ক ০৮:২৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেড বিল নিয়ে বাংলাদেশের উদ্বেগ

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১১:৩৫:২৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ জুলাই ২০১৫
  • / ৯১১ বার পঠিত

ওয়াশিংটন ডিসি: ট্রেড বিলের মাধ্যমে ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারদের অগ্রাধিকার সুবিধা দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে বাংলাদেশের মতো স্বল্পোন্নত দেশগুলো প্রতিযোগিতায় লোকসানে পড়বে। এ কারণে ঢাকা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ১৫ ও ১৬ জুন ক্যাপিটাল হিলে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন কংগ্রেসম্যান ব্র্যাড শারম্যান (ডেমোক্রেট-ক্যালিফোর্নিয়া) এবং কংগ্রেসম্যান টম মারিনোর (রিপাবলিকান-প্যানসালভেনিয়া) সঙ্গে পৃথক বৈঠক করে এ উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন।
ব্র্যাড শারম্যান মার্কিন কংগ্রেসের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলসংক্রান্ত পররাষ্ট্রবিষয়ক উপকমিটির সদস্য। টম মারিনো রেগুলেটরি রিফর্ম অ্যান্ড কমার্শিয়াল অ্যান্ড এন্টিট্রাস্ট ল-সংক্রান্ত উপ কমিটির চেয়ারম্যান। বৈঠককালে রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিন কংগ্রেসম্যানদের যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্পর্ক বিষয়ে অবহিত করেন। ট্রেড অ্যান্ড কমার্স বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে এলডিসি হিসেবে বাংলাদেশ কোনো বিশেষ অথবা পৃথক কোনো সুবিধা ভোগ করে না।
রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন, বাংলাদেশী পণ্যের বিশেষ করে তৈরি পোশাকের বড় গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র। তৈরি পোশাক বাংলাদেশের মোট রফতানির এক-চতুর্থাংশ। বাংলাদেশের পোশাক যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে উচ্চ শুল্ক প্রদান করে থাকে। অথচ বিশ্বের প্রায় সব স্বল্পোন্নত দেশ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শূন্য শুল্ক সুবিধা পেয়ে থাকে।
জিয়াউদ্দিন বলেন, বাংলাদেশে তৈরি পোশাক শিল্পে কমর্রত শ্রমিকদের প্রায় ৯০ শতাংশ নারী। দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে অবদান রেখে এই বিপুলসংখ্যক নারী কর্মী নারীর ক্ষমতায়নে অগ্রসর হচ্ছেন। এমন সন্ধিক্ষণে নারীর ক্ষমতায়ন এবং সামাজিক-অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অংশীদার হিসেবে উৎসাহিত করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচিত সাব-সাহারা ও আফ্রিকার স্বল্পোন্নত দেশগুলোর মতো বাংলাদেশের পণ্যেরও অগ্রাধিকার সুবিধা (শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা) প্রদান করা। একই কারণে যুক্তরাষ্ট্রের উচিত বাংলাদেশের জন্য জিএসপি সুবিধাও পুনর্বহাল করা।
কংগ্রেসম্যান ব্র্যাড শারম্যানের এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, মিয়ানমারের উচিত বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়া। বাংলাদেশের ভূখন্ডে এত বিপুলসংখ্যক শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়ার সামর্থ্য নেই। তিনি উল্লেখ করেন, মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা ধর্মীয় উগ্রপন্থী গ্রুপের সঙ্গে যোগসূত্র রাখার জন্য সন্দেহভাজন। রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে ব্যবহারের প্রমাণ রয়েছে।
রাষ্ট্রদূত কংগ্রেসম্যানদের জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের যে প্রভাব বাংলাদেশের মানুষের ওপর পড়ছে তার কিছুই বাংলাদেশ সৃষ্ট নয়। বাংলাদেশ সবচেয়ে কম কার্বন ডাই অক্সাইড ছড়ায় (মাথাপিছু শূন্য দশমিক ৩ টন দূষণ); কিন্তু বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে বড় শিকার। বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় বর্তমান সরকার ৩৭ কোটি ৫০ লাখ ডলারের ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছে। বিরূপ প্রভাবের সঙ্গে মানিয়ে নিতে ও দুর্ভোগ কমাতে ২৩৮টি প্রকল্প গ্রহণ করেছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশে বর্তমান লড়াই হল উগ্রপন্থী, মানবতাবিরোধী এবং স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে।
তিনি উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব ধরনের সন্ত্রাস ও উগ্রপন্থার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন। কংগ্রেসম্যান ব্র্যাড শারম্যান এবং টম মারিনো বাংলাদেশ সম্পর্কে ব্রিফিং দেয়ায় রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানান। বৈঠকগুলোর সময় ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসের রাজনৈতিক কাউন্সিলর নাইম উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।(দৈনিক যুগান্তর)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেড বিল নিয়ে বাংলাদেশের উদ্বেগ

প্রকাশের সময় : ১১:৩৫:২৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ জুলাই ২০১৫

ওয়াশিংটন ডিসি: ট্রেড বিলের মাধ্যমে ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারদের অগ্রাধিকার সুবিধা দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে বাংলাদেশের মতো স্বল্পোন্নত দেশগুলো প্রতিযোগিতায় লোকসানে পড়বে। এ কারণে ঢাকা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ১৫ ও ১৬ জুন ক্যাপিটাল হিলে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন কংগ্রেসম্যান ব্র্যাড শারম্যান (ডেমোক্রেট-ক্যালিফোর্নিয়া) এবং কংগ্রেসম্যান টম মারিনোর (রিপাবলিকান-প্যানসালভেনিয়া) সঙ্গে পৃথক বৈঠক করে এ উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন।
ব্র্যাড শারম্যান মার্কিন কংগ্রেসের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলসংক্রান্ত পররাষ্ট্রবিষয়ক উপকমিটির সদস্য। টম মারিনো রেগুলেটরি রিফর্ম অ্যান্ড কমার্শিয়াল অ্যান্ড এন্টিট্রাস্ট ল-সংক্রান্ত উপ কমিটির চেয়ারম্যান। বৈঠককালে রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিন কংগ্রেসম্যানদের যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্পর্ক বিষয়ে অবহিত করেন। ট্রেড অ্যান্ড কমার্স বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে এলডিসি হিসেবে বাংলাদেশ কোনো বিশেষ অথবা পৃথক কোনো সুবিধা ভোগ করে না।
রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন, বাংলাদেশী পণ্যের বিশেষ করে তৈরি পোশাকের বড় গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র। তৈরি পোশাক বাংলাদেশের মোট রফতানির এক-চতুর্থাংশ। বাংলাদেশের পোশাক যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে উচ্চ শুল্ক প্রদান করে থাকে। অথচ বিশ্বের প্রায় সব স্বল্পোন্নত দেশ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শূন্য শুল্ক সুবিধা পেয়ে থাকে।
জিয়াউদ্দিন বলেন, বাংলাদেশে তৈরি পোশাক শিল্পে কমর্রত শ্রমিকদের প্রায় ৯০ শতাংশ নারী। দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে অবদান রেখে এই বিপুলসংখ্যক নারী কর্মী নারীর ক্ষমতায়নে অগ্রসর হচ্ছেন। এমন সন্ধিক্ষণে নারীর ক্ষমতায়ন এবং সামাজিক-অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অংশীদার হিসেবে উৎসাহিত করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচিত সাব-সাহারা ও আফ্রিকার স্বল্পোন্নত দেশগুলোর মতো বাংলাদেশের পণ্যেরও অগ্রাধিকার সুবিধা (শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা) প্রদান করা। একই কারণে যুক্তরাষ্ট্রের উচিত বাংলাদেশের জন্য জিএসপি সুবিধাও পুনর্বহাল করা।
কংগ্রেসম্যান ব্র্যাড শারম্যানের এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, মিয়ানমারের উচিত বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়া। বাংলাদেশের ভূখন্ডে এত বিপুলসংখ্যক শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়ার সামর্থ্য নেই। তিনি উল্লেখ করেন, মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা ধর্মীয় উগ্রপন্থী গ্রুপের সঙ্গে যোগসূত্র রাখার জন্য সন্দেহভাজন। রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে ব্যবহারের প্রমাণ রয়েছে।
রাষ্ট্রদূত কংগ্রেসম্যানদের জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের যে প্রভাব বাংলাদেশের মানুষের ওপর পড়ছে তার কিছুই বাংলাদেশ সৃষ্ট নয়। বাংলাদেশ সবচেয়ে কম কার্বন ডাই অক্সাইড ছড়ায় (মাথাপিছু শূন্য দশমিক ৩ টন দূষণ); কিন্তু বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে বড় শিকার। বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় বর্তমান সরকার ৩৭ কোটি ৫০ লাখ ডলারের ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছে। বিরূপ প্রভাবের সঙ্গে মানিয়ে নিতে ও দুর্ভোগ কমাতে ২৩৮টি প্রকল্প গ্রহণ করেছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশে বর্তমান লড়াই হল উগ্রপন্থী, মানবতাবিরোধী এবং স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে।
তিনি উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব ধরনের সন্ত্রাস ও উগ্রপন্থার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন। কংগ্রেসম্যান ব্র্যাড শারম্যান এবং টম মারিনো বাংলাদেশ সম্পর্কে ব্রিফিং দেয়ায় রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানান। বৈঠকগুলোর সময় ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসের রাজনৈতিক কাউন্সিলর নাইম উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।(দৈনিক যুগান্তর)