নিউইয়র্ক ১১:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

তাজউদ্দীন আহমদের জন্মবার্ষিকী ২৩ জুলাই

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১০:২৮:১১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জুলাই ২০১৫
  • / ২৬৮৭ বার পঠিত

বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীর সেনানী, ‘জাতির জনক’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর, গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রথম প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় নেতা মরহুম তাজউদ্দীন আহমদের ৯০তম জন্মবার্ষিকী ২৩ জুলাই। ১৯২৫ সালের এই দিনে ঢাকার অদূরে গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া থানার দরদরিয়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মৌলভী মোহাম্মদ ইয়াছিন খান আর মাতার নাম মেহেরুন্নেছা খানম। তাজউদ্দিন আহমেদরা তিন ভাই ও ছয় বোন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে মেধা, দক্ষতা, যোগ্যতা, সততা ও আদর্শবাদের অনন্য এক প্রতীক ছিলেন তাজউদ্দীন আহমদ।
ছাত্রজীবনেই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন তাজউদ্দীন আহমদ। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর এদেশে ভাষার অধিকার, অর্থনৈতিক মুক্তি এবং সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী যত আন্দোলন হয়েছে, প্রতিটিতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। আওয়ামী লীগের গঠন প্রক্রিয়ার মূল উদ্যোক্তাদের মধ্যে তাজউদ্দীন আহমদও ছিলেন একজন। ১৯৬৬ সালে তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ওই বছর বঙ্গবন্ধু বাঙালীর মুক্তি সনদ ৬ দফা ঘোষণা করেন। আর ৬ দফার অন্যতম রূপকার ছিলেন তাজউদ্দীন আহমদ।
২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতারের পর শুরু করে একতরফা গণহত্যাযজ্ঞ। শুরু হয় বাঙালীর সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ। বঙ্গবন্ধু’র অনুপস্থিতিতে তখন নেতৃত্বের মূল দায়িত্ব অর্পিত হয় তাজউদ্দীন আহমদের ওপর। তাঁর জীবনের শ্রেষ্ঠ কীর্তি ১৯৭১ সালে এক চরম সঙ্কটময় মুহূর্তে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠন করে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে সফল ভূমিকা পালন। মাত্র নয় মাসের মধ্যে অর্জিত হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন পর্যন্ত তাজউদ্দীন আহমদ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রীর দায়িত্ব নেন। ১৯৭৪ সালের ২৬ অক্টোবর তিনি মন্ত্রিসভা থেকে সরে যান। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ক্ষমতা দখলকারী ঘাতকচক্র সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তাজউদ্দীন আহমদকে গৃহবন্দী করে। পরে তাঁকে জেলখানায় বন্দী রাখা হয়। বন্দী থাকা অবস্থায় ৫০ বছর বয়সে তাঁকে এবং অপর তিন জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, এম কামরুজ্জামান ও ক্যাপ্টেন (অব) মনসুর আলীকে জেলখানার অভ্যন্তরে একই বছরের ৩ নবেম্বর নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়।
মরহুম তাজউদ্দিন আহমদের স্ত্রী সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দিন সর্বশেষ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন। এছাড়া তিনি ১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ক্রান্তিকালে দলের প্রধান কর্ণধার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাদের তিন কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জনক-জননী। তাদের পুত্র তানজিদ আহমেদ সোহেল তাজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের প্রথম মেয়াদের মন্ত্রী সভায় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিযুক্ত হলেও অন্যানের সাথে আপোষ না করে পিতা তাজউদ্দিন আহমেদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে মন্ত্রী সভা থেকে পদত্যাগ করে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী জীবন-যাপন করছেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

তাজউদ্দীন আহমদের জন্মবার্ষিকী ২৩ জুলাই

প্রকাশের সময় : ১০:২৮:১১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জুলাই ২০১৫

বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীর সেনানী, ‘জাতির জনক’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর, গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রথম প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় নেতা মরহুম তাজউদ্দীন আহমদের ৯০তম জন্মবার্ষিকী ২৩ জুলাই। ১৯২৫ সালের এই দিনে ঢাকার অদূরে গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া থানার দরদরিয়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মৌলভী মোহাম্মদ ইয়াছিন খান আর মাতার নাম মেহেরুন্নেছা খানম। তাজউদ্দিন আহমেদরা তিন ভাই ও ছয় বোন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে মেধা, দক্ষতা, যোগ্যতা, সততা ও আদর্শবাদের অনন্য এক প্রতীক ছিলেন তাজউদ্দীন আহমদ।
ছাত্রজীবনেই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন তাজউদ্দীন আহমদ। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর এদেশে ভাষার অধিকার, অর্থনৈতিক মুক্তি এবং সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী যত আন্দোলন হয়েছে, প্রতিটিতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। আওয়ামী লীগের গঠন প্রক্রিয়ার মূল উদ্যোক্তাদের মধ্যে তাজউদ্দীন আহমদও ছিলেন একজন। ১৯৬৬ সালে তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ওই বছর বঙ্গবন্ধু বাঙালীর মুক্তি সনদ ৬ দফা ঘোষণা করেন। আর ৬ দফার অন্যতম রূপকার ছিলেন তাজউদ্দীন আহমদ।
২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতারের পর শুরু করে একতরফা গণহত্যাযজ্ঞ। শুরু হয় বাঙালীর সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ। বঙ্গবন্ধু’র অনুপস্থিতিতে তখন নেতৃত্বের মূল দায়িত্ব অর্পিত হয় তাজউদ্দীন আহমদের ওপর। তাঁর জীবনের শ্রেষ্ঠ কীর্তি ১৯৭১ সালে এক চরম সঙ্কটময় মুহূর্তে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠন করে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে সফল ভূমিকা পালন। মাত্র নয় মাসের মধ্যে অর্জিত হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন পর্যন্ত তাজউদ্দীন আহমদ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রীর দায়িত্ব নেন। ১৯৭৪ সালের ২৬ অক্টোবর তিনি মন্ত্রিসভা থেকে সরে যান। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ক্ষমতা দখলকারী ঘাতকচক্র সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তাজউদ্দীন আহমদকে গৃহবন্দী করে। পরে তাঁকে জেলখানায় বন্দী রাখা হয়। বন্দী থাকা অবস্থায় ৫০ বছর বয়সে তাঁকে এবং অপর তিন জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, এম কামরুজ্জামান ও ক্যাপ্টেন (অব) মনসুর আলীকে জেলখানার অভ্যন্তরে একই বছরের ৩ নবেম্বর নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়।
মরহুম তাজউদ্দিন আহমদের স্ত্রী সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দিন সর্বশেষ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন। এছাড়া তিনি ১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ক্রান্তিকালে দলের প্রধান কর্ণধার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাদের তিন কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জনক-জননী। তাদের পুত্র তানজিদ আহমেদ সোহেল তাজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের প্রথম মেয়াদের মন্ত্রী সভায় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিযুক্ত হলেও অন্যানের সাথে আপোষ না করে পিতা তাজউদ্দিন আহমেদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে মন্ত্রী সভা থেকে পদত্যাগ করে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী জীবন-যাপন করছেন।