নিউইয়র্ক ০৭:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

২০২৩ সালেই পাল্টে যাবে বাংলাদেশ

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১০:৩৫:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ মার্চ ২০২৩
  • / ৩ বার পঠিত

হককথা ডেস্ক : বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাউন্টেন ব্যাটালিয়ন কমাণ্ডার বিশিষ্ট রাজনীতিক ও লেখক আবু জাফর মাহমুদ বলেছেন, ২০২৩ সালেই পাল্টে যাবে বাংলাদেশ। সেটি এখন নিশ্চিতভাবেই চোখে দেখা যায়। আবু জাফর মাহমুদ তার প্রবন্ধ সংকলন জয় বাংলা জয় বাংলাদেশ এর প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন। নিউইয়র্কের ‘জয় বাংলাদেশ প্রকাশন’ থেকে প্রকাশিত গ্রন্থের প্রকাশনা উপলক্ষে শনিবার (১৮ মার্চ ২০২৩) জ্যাকসন হাইটস এর জুইশ সেন্টারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে নিউইয়র্কের প্রায় সকল বাংলা সংবাদ মাধ্যমের সম্পাদক প্রধান কর্মাধ্যক্ষ, সাংবাদিকসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াতের পর বাংলাদেশ ও আমেরিকার জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া ব্যতিক্রমী এই অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সাংবাদিক আদিত্য শাহীন। পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত এবং তার বাংলায় তর্জমা করেন মওলানা আব্দুস সাদিক।


আবু জাফর মাহমুদ বলেন, আমরা বাংলাদেশি আমেরিকান। বাংলাদেশি স্বকীয়তার যে শক্তি ও সত্য, সেখানে যে ভালোবাসা রয়েছে ওই ভালোবাসা নিয়েই আমরা আমেরিকান। যখন আমরা আমেরিকান তখন আমরা বিশ্বনেতা। আমাদের প্রতিটি কাজ বিশ্ব নেতৃত্বের। ইনশাল্লাহ ২০২৩ সালেই প্রমাণ করে ছাড়বো আমরা বিশ্বনেতা। বাংলাদেশ পাল্টে যাবে। ফিরে দাঁড়াবে।

অনুষ্ঠানে বক্তারা আবু জাফর মাহমুদের প্রবন্ধ সংকলনের মূল্যায়ণ নিয়ে সবিস্তারে আলোচনা করেন। তারা বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর মাহমুদ সচেতন মানুষের চোখে খুলে দেবার মতো নানান বিষয় তুলে ধরেছেন তার সংকলন গ্রন্থটিতে। ‘জয় বাংলা, জয় বাংলাদেশ’ নামকরণের মধ্য দিয়ে বর্তমান সময়ের অপরিহার্য রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন। সে সঙ্গে তার সাহসী উচ্চারণের মধ্য দিয়ে পরিবর্তিত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখার নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে।

বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক মাঈনুদ্দিন নাসের, টাইম টিভি’র প্রধান নির্বাহী আবু তাহের, সিনিয়র সাংবাদিক সাঈদ তারেক, বাংলাদেশ পত্রিকার সম্পাদক ডা.ওয়াজেদ এ খান, প্রথম আলোর সম্পাদক ইব্রাহিম চৌধুরী খোকন, পরিচয় সম্পাদক নাজমুল আহসান,নিউইয়র্ক কাগজের কন্ট্রিবিউটিং এডিটর মনোয়ারুল ইসলাম, জন্মভূমির সম্পাদক রতন তালুকদার, সাপ্তাহিক প্রবাস সম্পাদক আবু সাঈদ, টিবিএন ২৪’র এ এফ এম জামান, আইনজীবি শেখ আখতারুল ইসলাম, সারওয়ার চৌধুরী সিপিএ ও প্রফেসর ড. আবুল কাশেম। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন, মূলধারার রাজনীতিক মোর্শেদ আলম, হক কথার সম্পাদক এবিএম সালাহউদ্দীন আহাম্মেদ, ভোরের কাগজের বিশেষ প্রতিনিধি শামীম আহমেদ,আই অন টিভি’র রিমন ইসলাম,চ্যানেল টিটি’র সিইও শিবলী চৌধুরী কায়েস, বাংলাদেশ প্রতিদিনের আবুল কাশেম, ইউএসএ নিউজ অনলাইনের শাখাওয়াত সেলিম, নিউইয়র্ক কাগজের সম্পাদক আফরোজা ইসলাম।


সাপ্তাহিক বাংলাদেশ সম্পাদক ডা. ওয়াজেদ এ খান বইটি সম্পর্কে তার লিখিত মূল্যায়ণ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আবু জাফর মাহমুদের প্রবন্ধ সংকলন তথা ‘জয় বাংলা জয় বাংলাদেশ’ শিরোনাম বা শ্লোগানের আবেদন রাজনীতির চেয়ে প্রাসঙ্গিকতা বিবেচনায় অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তিনি সময়ের দাবি পুরণের পাশাপাশি ইতিহাসের সত্য অনুসন্ধান করেছেন। দেশে বা প্রবাসে যে যেখানেই থাকি, এই সত্যের পথে আমাদের সামিল হতে হবে। এই সত্য প্রচারে আন্তরিকভাবে উদ্যোগী হতে হবে।

ইব্রাহিম চৌধুরী বলেন, আমাদের দেশের হাতে গোনা যে দুয়েকজন রাজনীতিক ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছেন ও বীরদর্পে কাজ করে চলেছেন তার মধ্যে আবু জাফর মাহমুদ একজন।

টাইম টিভির সত্তাধিকারী আবু তাহের বলেন, স্বপ্ন একজনই দেখেন, তার পথ ধরে অন্যরা এগিয়ে যায়। আবু জাফর মাহমুদ পরিবর্তনের স্বপ্ন রচনা করেছেন, আমরা বিশ্বাস করি, এখান থেকেই একটি নতুন পথ সূচিত হবে।


প্রফেসর ড. আবুল কাশেম বলেন, জয় বাংলা জয় বাংলাদেশ প্রবন্ধ সংকলনটি বাংলাদেশ সম্পর্কিত বহু তথ্যের সমাহার। এখানে এমন কিছু তথ্য রয়েছে যা সাধারণ মানুষের ধারণা ও চিন্তার বাইরের বিষয়। এই প্রবন্ধগুলো অধ্যায়ণ করলে অনেক অজানা বিষয় সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে। একই সঙ্গে অনেক জটও খুলে যাবে।

বিশিষ্ট সাংবাদিক সাঈদ তারেক বইয়ের নামকরণ প্র্রসঙ্গে তার মূল্যায়ণ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আজ বাংলাদেশিরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছি। জয় বাংলা ও বাংলাদেশ জিন্দাবাদ দুটি গ্রুপ। আমরা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিলাম একটি জাতি, একটি জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার প্রত্যাশায়। কিন্তু বাস্তবে সেই জাতীয় ঐক্যই ধ্বংস করা হয়েছে।

পরিচয় সম্পাদক নাজমুল আহসান বলেন, জয় বাংলা বা বাংলাদেশ জিন্দাবাদ একটি জাতির জন্য মূখ্য ব্যাপার নয়। মুখ্য ব্যাপার হলো ঐক্য। একতাবদ্ধ হওয়া। আমাদের রাজনৈতিক বিরোধীতা থাকতে পারে। কিন্তু দেশের প্রশ্নে এক থাকা দরকার ছিল। ১৯৭১ সালে জয় বাংলা আমাদের ঐক্যবদ্ধ করেছিল। কিছু অংশ এর বিরোধীতা করেছিল। কিন্তু মানুষ এত বেশি স্বতস্ফুর্তভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল, এর মধ্য দিয়ে আমাদের একটি জাতীয় চেতনা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে সে অবস্থা নেই জাতি এখন স্পষ্টত দুটি ভাগে বিভক্ত। তিনি ‘জয় বাংলা জয় বাংলাদেশ’ প্রবন্ধ সংকলনটিকে তথ্যের একটি আকর উল্লেখ করে বলেন, এই গ্রন্থটি একবার পড়লে সবকিছু বুঝে ওঠা যাবে না। এটি বারবার পড়তে হবে। বেশ কয়েকবার পড়লে অনেক কিছু পরিস্কার হয়ে উঠবে।


শেষে জয় বাংলা জয় বাংলাদেশ প্রবন্ধ সংকলনের লেখক আবু জাফর মাহমুদ বলেন, যুদ্ধ করে রাষ্ট্র জন্ম দেয়ার পর রাষ্ট্রের পরিচিতির ব্যাপারে আমরা উদাসিন থেকেছি। এখন বাংলাদেশের প্রায় ২৪ কোটি মানুষ। তারা মাটির নীচে, পানির নীচে আছে। গাছপালাগুলো আামার সীমান্ত। এগুলোকে একত্র করেই আামার দেশ।

তিনি বলেন, আমার অন্ধ আনুগত্যের দিন নেই। আমি জানি আমি কি লিখি। প্রতিটি মানুষের দাসত্বকে স্থায়ী করতে, আগুনে ফেলে দিতে আমরা ধারাবাহিকভাবে অপকৌশল চালিয়েছি। এগুলো স্পষ্ট বুঝি। তারুণ্যে আবেগ ছিল। এখন আর আবেগ কাজ করে না। এখন আমাদের উত্তরসুরিদের প্রতি যে দরদ সেখান থেকেই তাগিদ আসে ভূখণ্ড রক্ষা করতে হবে। যে কোনো মূল্যে ফিরিয়ে আনতে হবে।

আবু জাফর মাহমুদ বলেন, গত ত্রিশটি বছরের মধ্যে আঠারোটি বছর আমি দেশ নিয়ে ব্যস্ত থেকেছি। প্রকাশ্য জগৎ থেকে কিছু পাইনি। যেটা অন্তরালের জগৎ, অন্ধকারের জগৎ সেখান থেকে সত্যের দেখা পেয়েছি। জেনেছি ওই অন্ধকার থেকে আগুন ঢেলে আমাদের রাষ্ট্রপতিগুলোকে হত্যা করা হয়েছে। জেনেছি কেন রাষ্ট্রের চৌকষ পাহারাদের মেরে ফেলা হয়।


তিনি বলেন, নিউইয়র্কের মেয়র, লোকাল কাউন্সিল ম্যান অথবা কুইন্স বরো প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের পক্ষে যে কাজ করে চলেছেন সেগুলো কারো কথামতো নয়, শুধু ভোটের জন্য নয়। আমেরিকা সারা পৃথিবী নেতৃত্ব দেয়, নিজস্ব স্বার্থ ছাড়া সে কিছু করবে না। মনে রাখতে হবে কোনো রাষ্ট্র আরেকটি রাষ্ট্রকে ভালোবাসে না।

বাংলাদেশে রাষ্ট্রক্ষমতায় কে আছে কে নাই এই সমালোচনার জন্য এই মঞ্চ নয়। এই মঞ্চ সেই ভালোবাসায় আমার মাতৃভূমিকে সিক্ত করার, যাতে করে বাংলাদেশের ২৪ কোটি মানুষ স্বাধীনতার প্রকৃত বোধ ধারণ করতে পারে। এটি অসম্ভব নয়। মানুষ অসুস্থ হলে সব মানুষ মরে যায় না। চিকিৎসার মাধ্যমেই আরোগ্য লাভ হয়। আমরা সেই আরোগ্যের জন্য কাজ করছি। সেটি শিগগিরই সবাই দেখতে পাবেন।


প্রকাশনা অনুষ্ঠানে শিল্পী সৈয়দ আজিজুর রহমানের আঁকা ছবির একটি প্রদর্শনীর আয়োজন হয়। শিল্পী বলেন, আবু জাফর মাহমুদ একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তার মধ্যে যুদ্ধদিনের চেতনা এখনও সজিব। তিনি মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন ও উদ্দেশ্যের বার্তা নিয়েই জাতিকে উজ্জীবিত করতে চান।

অনুষ্ঠানে জয় বাংলা জয় বাংলাদেশ প্রবন্ধ সংকলনটির ওপর সাংবাদিক আদিত্য শাহীন নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। -প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

 

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

২০২৩ সালেই পাল্টে যাবে বাংলাদেশ

প্রকাশের সময় : ১০:৩৫:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ মার্চ ২০২৩

হককথা ডেস্ক : বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাউন্টেন ব্যাটালিয়ন কমাণ্ডার বিশিষ্ট রাজনীতিক ও লেখক আবু জাফর মাহমুদ বলেছেন, ২০২৩ সালেই পাল্টে যাবে বাংলাদেশ। সেটি এখন নিশ্চিতভাবেই চোখে দেখা যায়। আবু জাফর মাহমুদ তার প্রবন্ধ সংকলন জয় বাংলা জয় বাংলাদেশ এর প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন। নিউইয়র্কের ‘জয় বাংলাদেশ প্রকাশন’ থেকে প্রকাশিত গ্রন্থের প্রকাশনা উপলক্ষে শনিবার (১৮ মার্চ ২০২৩) জ্যাকসন হাইটস এর জুইশ সেন্টারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে নিউইয়র্কের প্রায় সকল বাংলা সংবাদ মাধ্যমের সম্পাদক প্রধান কর্মাধ্যক্ষ, সাংবাদিকসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াতের পর বাংলাদেশ ও আমেরিকার জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া ব্যতিক্রমী এই অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সাংবাদিক আদিত্য শাহীন। পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত এবং তার বাংলায় তর্জমা করেন মওলানা আব্দুস সাদিক।


আবু জাফর মাহমুদ বলেন, আমরা বাংলাদেশি আমেরিকান। বাংলাদেশি স্বকীয়তার যে শক্তি ও সত্য, সেখানে যে ভালোবাসা রয়েছে ওই ভালোবাসা নিয়েই আমরা আমেরিকান। যখন আমরা আমেরিকান তখন আমরা বিশ্বনেতা। আমাদের প্রতিটি কাজ বিশ্ব নেতৃত্বের। ইনশাল্লাহ ২০২৩ সালেই প্রমাণ করে ছাড়বো আমরা বিশ্বনেতা। বাংলাদেশ পাল্টে যাবে। ফিরে দাঁড়াবে।

অনুষ্ঠানে বক্তারা আবু জাফর মাহমুদের প্রবন্ধ সংকলনের মূল্যায়ণ নিয়ে সবিস্তারে আলোচনা করেন। তারা বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর মাহমুদ সচেতন মানুষের চোখে খুলে দেবার মতো নানান বিষয় তুলে ধরেছেন তার সংকলন গ্রন্থটিতে। ‘জয় বাংলা, জয় বাংলাদেশ’ নামকরণের মধ্য দিয়ে বর্তমান সময়ের অপরিহার্য রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন। সে সঙ্গে তার সাহসী উচ্চারণের মধ্য দিয়ে পরিবর্তিত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখার নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে।

বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক মাঈনুদ্দিন নাসের, টাইম টিভি’র প্রধান নির্বাহী আবু তাহের, সিনিয়র সাংবাদিক সাঈদ তারেক, বাংলাদেশ পত্রিকার সম্পাদক ডা.ওয়াজেদ এ খান, প্রথম আলোর সম্পাদক ইব্রাহিম চৌধুরী খোকন, পরিচয় সম্পাদক নাজমুল আহসান,নিউইয়র্ক কাগজের কন্ট্রিবিউটিং এডিটর মনোয়ারুল ইসলাম, জন্মভূমির সম্পাদক রতন তালুকদার, সাপ্তাহিক প্রবাস সম্পাদক আবু সাঈদ, টিবিএন ২৪’র এ এফ এম জামান, আইনজীবি শেখ আখতারুল ইসলাম, সারওয়ার চৌধুরী সিপিএ ও প্রফেসর ড. আবুল কাশেম। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন, মূলধারার রাজনীতিক মোর্শেদ আলম, হক কথার সম্পাদক এবিএম সালাহউদ্দীন আহাম্মেদ, ভোরের কাগজের বিশেষ প্রতিনিধি শামীম আহমেদ,আই অন টিভি’র রিমন ইসলাম,চ্যানেল টিটি’র সিইও শিবলী চৌধুরী কায়েস, বাংলাদেশ প্রতিদিনের আবুল কাশেম, ইউএসএ নিউজ অনলাইনের শাখাওয়াত সেলিম, নিউইয়র্ক কাগজের সম্পাদক আফরোজা ইসলাম।


সাপ্তাহিক বাংলাদেশ সম্পাদক ডা. ওয়াজেদ এ খান বইটি সম্পর্কে তার লিখিত মূল্যায়ণ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আবু জাফর মাহমুদের প্রবন্ধ সংকলন তথা ‘জয় বাংলা জয় বাংলাদেশ’ শিরোনাম বা শ্লোগানের আবেদন রাজনীতির চেয়ে প্রাসঙ্গিকতা বিবেচনায় অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তিনি সময়ের দাবি পুরণের পাশাপাশি ইতিহাসের সত্য অনুসন্ধান করেছেন। দেশে বা প্রবাসে যে যেখানেই থাকি, এই সত্যের পথে আমাদের সামিল হতে হবে। এই সত্য প্রচারে আন্তরিকভাবে উদ্যোগী হতে হবে।

ইব্রাহিম চৌধুরী বলেন, আমাদের দেশের হাতে গোনা যে দুয়েকজন রাজনীতিক ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছেন ও বীরদর্পে কাজ করে চলেছেন তার মধ্যে আবু জাফর মাহমুদ একজন।

টাইম টিভির সত্তাধিকারী আবু তাহের বলেন, স্বপ্ন একজনই দেখেন, তার পথ ধরে অন্যরা এগিয়ে যায়। আবু জাফর মাহমুদ পরিবর্তনের স্বপ্ন রচনা করেছেন, আমরা বিশ্বাস করি, এখান থেকেই একটি নতুন পথ সূচিত হবে।


প্রফেসর ড. আবুল কাশেম বলেন, জয় বাংলা জয় বাংলাদেশ প্রবন্ধ সংকলনটি বাংলাদেশ সম্পর্কিত বহু তথ্যের সমাহার। এখানে এমন কিছু তথ্য রয়েছে যা সাধারণ মানুষের ধারণা ও চিন্তার বাইরের বিষয়। এই প্রবন্ধগুলো অধ্যায়ণ করলে অনেক অজানা বিষয় সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে। একই সঙ্গে অনেক জটও খুলে যাবে।

বিশিষ্ট সাংবাদিক সাঈদ তারেক বইয়ের নামকরণ প্র্রসঙ্গে তার মূল্যায়ণ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আজ বাংলাদেশিরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছি। জয় বাংলা ও বাংলাদেশ জিন্দাবাদ দুটি গ্রুপ। আমরা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিলাম একটি জাতি, একটি জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার প্রত্যাশায়। কিন্তু বাস্তবে সেই জাতীয় ঐক্যই ধ্বংস করা হয়েছে।

পরিচয় সম্পাদক নাজমুল আহসান বলেন, জয় বাংলা বা বাংলাদেশ জিন্দাবাদ একটি জাতির জন্য মূখ্য ব্যাপার নয়। মুখ্য ব্যাপার হলো ঐক্য। একতাবদ্ধ হওয়া। আমাদের রাজনৈতিক বিরোধীতা থাকতে পারে। কিন্তু দেশের প্রশ্নে এক থাকা দরকার ছিল। ১৯৭১ সালে জয় বাংলা আমাদের ঐক্যবদ্ধ করেছিল। কিছু অংশ এর বিরোধীতা করেছিল। কিন্তু মানুষ এত বেশি স্বতস্ফুর্তভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল, এর মধ্য দিয়ে আমাদের একটি জাতীয় চেতনা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে সে অবস্থা নেই জাতি এখন স্পষ্টত দুটি ভাগে বিভক্ত। তিনি ‘জয় বাংলা জয় বাংলাদেশ’ প্রবন্ধ সংকলনটিকে তথ্যের একটি আকর উল্লেখ করে বলেন, এই গ্রন্থটি একবার পড়লে সবকিছু বুঝে ওঠা যাবে না। এটি বারবার পড়তে হবে। বেশ কয়েকবার পড়লে অনেক কিছু পরিস্কার হয়ে উঠবে।


শেষে জয় বাংলা জয় বাংলাদেশ প্রবন্ধ সংকলনের লেখক আবু জাফর মাহমুদ বলেন, যুদ্ধ করে রাষ্ট্র জন্ম দেয়ার পর রাষ্ট্রের পরিচিতির ব্যাপারে আমরা উদাসিন থেকেছি। এখন বাংলাদেশের প্রায় ২৪ কোটি মানুষ। তারা মাটির নীচে, পানির নীচে আছে। গাছপালাগুলো আামার সীমান্ত। এগুলোকে একত্র করেই আামার দেশ।

তিনি বলেন, আমার অন্ধ আনুগত্যের দিন নেই। আমি জানি আমি কি লিখি। প্রতিটি মানুষের দাসত্বকে স্থায়ী করতে, আগুনে ফেলে দিতে আমরা ধারাবাহিকভাবে অপকৌশল চালিয়েছি। এগুলো স্পষ্ট বুঝি। তারুণ্যে আবেগ ছিল। এখন আর আবেগ কাজ করে না। এখন আমাদের উত্তরসুরিদের প্রতি যে দরদ সেখান থেকেই তাগিদ আসে ভূখণ্ড রক্ষা করতে হবে। যে কোনো মূল্যে ফিরিয়ে আনতে হবে।

আবু জাফর মাহমুদ বলেন, গত ত্রিশটি বছরের মধ্যে আঠারোটি বছর আমি দেশ নিয়ে ব্যস্ত থেকেছি। প্রকাশ্য জগৎ থেকে কিছু পাইনি। যেটা অন্তরালের জগৎ, অন্ধকারের জগৎ সেখান থেকে সত্যের দেখা পেয়েছি। জেনেছি ওই অন্ধকার থেকে আগুন ঢেলে আমাদের রাষ্ট্রপতিগুলোকে হত্যা করা হয়েছে। জেনেছি কেন রাষ্ট্রের চৌকষ পাহারাদের মেরে ফেলা হয়।


তিনি বলেন, নিউইয়র্কের মেয়র, লোকাল কাউন্সিল ম্যান অথবা কুইন্স বরো প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের পক্ষে যে কাজ করে চলেছেন সেগুলো কারো কথামতো নয়, শুধু ভোটের জন্য নয়। আমেরিকা সারা পৃথিবী নেতৃত্ব দেয়, নিজস্ব স্বার্থ ছাড়া সে কিছু করবে না। মনে রাখতে হবে কোনো রাষ্ট্র আরেকটি রাষ্ট্রকে ভালোবাসে না।

বাংলাদেশে রাষ্ট্রক্ষমতায় কে আছে কে নাই এই সমালোচনার জন্য এই মঞ্চ নয়। এই মঞ্চ সেই ভালোবাসায় আমার মাতৃভূমিকে সিক্ত করার, যাতে করে বাংলাদেশের ২৪ কোটি মানুষ স্বাধীনতার প্রকৃত বোধ ধারণ করতে পারে। এটি অসম্ভব নয়। মানুষ অসুস্থ হলে সব মানুষ মরে যায় না। চিকিৎসার মাধ্যমেই আরোগ্য লাভ হয়। আমরা সেই আরোগ্যের জন্য কাজ করছি। সেটি শিগগিরই সবাই দেখতে পাবেন।


প্রকাশনা অনুষ্ঠানে শিল্পী সৈয়দ আজিজুর রহমানের আঁকা ছবির একটি প্রদর্শনীর আয়োজন হয়। শিল্পী বলেন, আবু জাফর মাহমুদ একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তার মধ্যে যুদ্ধদিনের চেতনা এখনও সজিব। তিনি মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন ও উদ্দেশ্যের বার্তা নিয়েই জাতিকে উজ্জীবিত করতে চান।

অনুষ্ঠানে জয় বাংলা জয় বাংলাদেশ প্রবন্ধ সংকলনটির ওপর সাংবাদিক আদিত্য শাহীন নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। -প্রেস বিজ্ঞপ্তি।