নিউইয়র্ক ১১:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র দুই গ্রুপের মধ্যে চরম বাক-বিতন্ডা হাতাহাতি ॥ জ্যাকসন হাইটসে ব্যানার ছিনিয়ে সভা পন্ড : পুলিশী হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১০:০৪:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ জুলাই ২০১৬
  • / ৮০০ বার পঠিত

নিউইয়র্ক: যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নয়, বরং নিউইয়র্ক ষ্টেট কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে আলাদা আলাদা কর্মসূচি পালন, প্রতিপক্ষ গ্রুপের মধ্যে চরম বাক-বিতন্ডা, হাতাহাতি, অনুষ্ঠান পন্ড ও ব্যানার ছিনিয়ে নেয়ার মত ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির পরস্পর বিরোধী অনুষ্ঠান ঘিরে। ২৪ জুলাই রোববার সন্ধ্যায় বাংলাদেশীদের কেন্দ্রবিন্দু জ্যাকসন হাইটসস্থ ডাইভারসিটি প্লাজায় এই ঘটনা ঘটে। এসময় স্টেট বিএনপি’র কমিটি গঠনের প্রতিবাদ এবং কমিটির গঠনের পক্ষ নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে অনুষ্ঠান দখলের প্রতিযোগিতা হয়েছে। এতে নিউইয়র্ক সিটি বিএনপি ও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র নামে পৃথক দুটি সভার মঞ্চ দখল করে নেয় যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক সভাপতি আব্দুল লতিফ স¤্রাট, জিল্লুর রহমান জিল্লু, গিয়াস আহমদ, অধ্যাপক দেলোয়ার, মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল গ্রুপের লোকজন। দুই সভাকে ঘিরে দলীয় ব্যানার ছিনিয়ে নিয়ে সভা পন্ড’সহ এক পক্ষ আরেক পক্ষকে প্রতিরোধ এবং বাক-বিতন্ডার পরিনতি গিয়ে ঠেঁকে হাতাহাতি পর্যন্ত। পরবর্তীতে নিউইয়র্ক সিটি পুলিশ ঘটনাস্থলে আসার পর পরিস্থিতি শান্ত হয় এবং পুলিশী হস্তক্ষেপের পর বিবদমান দুই গ্রুপের নেতা-কর্মীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও তারেক পরিষদ আন্তর্জাতিক কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান আখতার বদলের সাংবাদিক সম্মেলনও তোপের মুখে পড়ে। এই পর্যায়ে বিএনপির শীর্ষ নেতারা বাদলকে তাদের সাথে সংহতি প্রকাশের অনুরোধ জানালে তিনি সম্মতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন। এ সময় তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র যেকোন কমিটি করতে হলে সবার সম্মতি নিয়েই করতে হবে। চাপিয়ে দেয়া কোন কমিটি নেতা-কর্মীরা মানবে না। এ সময় সেখানে উপস্থিত স¤্রাট-জিল্লু গ্রুপের সমর্থকরা করতালী দিয়ে তাকে স্বাগত জানান। এর আগে বাদল বলেছিলেন, বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতা এহসানুল হক মিলন যেহেতু আন্তর্জাতিক সম্পাদক সেজন্য তাকে অবাঞ্চিত ঘোষনার অধিকার কারো নেই।
এ সময় সেখানে উপস্থিত যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লু, সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি গিয়াস আহমেদ ও অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন, সাব্কে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক কাজী সাখাওয়াত হোসেন আজম প্রমুখ বক্তব্য রেখে অনুষ্ঠান শেষ করার তাগিদ দেন।
রোববারের ঘটনার সূত্রপাত ঘটে মূলত: তিনটি সভাকে কেন্দ্র করে। কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এহসানুল হক মিলন কর্তৃক নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপি’র কমিটি গঠনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির একটি অংশ। ঐদিন সন্ধ্যার পর জ্যাকসন হাইটসস্থ ডাইভার সিটি প্লাজার আড্ডাখানায় অনুষ্ঠিত এ প্রতিবাদ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির বেশীর ভাগ নেতা-কর্মীরা। স্টেট বিএনপির ব্যানারে এতে অংশ নেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি গিয়াস আহমেদ ও অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লু, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল সহ সাবেক যুগ্ম সম্পাদক কাজী সাখাওয়াত হোসেন আজম, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় জাসাস-এর আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক গোলাম ফারুক শাহীন, নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপি’র খালেক আকন্দ প্রমুখ। এ কর্মসূচিতে একাতœতা পোষণ করেন কেন্দ্রীয় বিএনপি’র অর্থ সম্পাদক আবদুস সালাম।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তখন থেকেই জ্যাকসন হাইটসের বাংলাদেশ প্লাজা মিলনায়তনে ছুটে যান মিলন বিরোধী নেতা-কর্মীরা। ততক্ষণে ওখানে সিটি বিএনপির একটি অংশের ব্যানারে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবদুল খালেক’সহ দু থেকে তিনজন মিলে সভা করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। যদিও সেখানে অনুপস্থিত ছিলেন একই সংগঠনের সভাপতি মাহফুজুল মাওলানা নান্নু। এসময়ে আবদুল খালেকের নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্লাজায় সিটি বিএনপি’র প্রস্তুতি সভার ব্যানার খুলে নিয়ে আসেন সিটি বিএনপি’র আরেকাংশের সভাপতি সেলিম রেজা ও মিলন বিরোধী নেতারা। পরবর্তীতে ব্যানার ছিনিয়ে নেয়া ও সভাকে ঘিরে উভয় পক্ষ বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন যা পরবর্তীতে হাতাহাতি পর্যায় পর্যন্ত গড়ায়।
ঠিক একই সময়ে খাবার বাড়ির পালকী সেন্টারে বিএনপি নেতা মিলনের পক্ষে অবস্থান নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন শুরু করেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র আরেক নেতা আকতার হোসেন বাদল গ্রুপ’সহ তার পক্ষের বেশ কয়েকজন নেতা। যেখানে উপস্থিত ছিলেন নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির একাংশের নেতা মাওলানা অলিউল্যা মোহাম্মদ আতিকুর রহমান। যদিও তিনি সংঘর্ষ ও হট্টগোল বাঁধার আগে সভাস্থল ত্যাগ করেন। সাংবাদিক সম্মেলনে আকতার হোসেন বাদল কেন্দ্রীয় নেতা এসহানুল হক মিলনের কমিটি গঠনের পক্ষে বিভিন্ন যুক্তি তুলে ধরেন। মুহুর্তেই মিলন বিরোধীরা খাবার বাড়িতে অনুষ্ঠিতব্য বাদল গ্রুপের সাংবাদিক সম্মেলন প্রতিরোধে তেড়ে আসেন। বাকবিতন্ডা ও তর্কাতর্কির মধ্যে এখানেও ব্যানারও তুলে নেয়া হয়। কথাকাটাকাটির পর বিএনপি’র সাবেক বেশ কয়েকজন নেতা আকতার হোসেন বাদলের সাংবাদিক সম্মেলন মঞ্চ দখল করে নেন এবং সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য শুরু করেন। এসময়ে তারা এহসানুল হক মিলনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির মধ্যে বিভাজন সৃষ্টির অভিযোগ আনেন।
পরবর্তীতে প্রতিরোধের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটি গঠনে সবার সাথে কাজ করার অঙ্গীকার করেন আকতার হোসেন বাদল’সহ সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে রোববার রাতে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের হিসেবে বিভাজনকে ঘিরে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির অবতারণা ঘটে পুরো জ্যাকসন হাইটস এলাকায়। এসময় উৎসুক প্রবাসী বাংলাদেশীরা বিষয়টির নিন্দা জানান। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের সাধারণ বিএনপি সমর্থক-কর্মীরাও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান, তাদের নেতাদের পদপদবীর লড়াই ইস্যুতে।
উল্লেখ্য, গেল বছরের ডিসেম্বর থেকেই মূলত যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র কমিটি গঠনের পরিবর্তে বিভিন্ন ষ্টেট বিএনপির কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে ক্রোধের আগুনে দগ্ধ দীর্ঘদিনের কমিটিহীন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি ও এর সহযোগি অঙ্গ সংগঠনগুলো। একে অন্যকে বহিঃস্কার, পাল্টা বহিঃস্কার’সহ যাকে ঘিরে মূলত এই দ্বন্দ সেই কেন্দ্রীয় নেতা এহসানুল হক মিলনকেও এর আগে বেশ কয়েকবার অবাঞ্চিত ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতাদের একটি অংশ। একটি পক্ষ মিলনের কমিটি গঠনকে সাধুবাদ জানালে পরিস্থিতি আরো জটিল আকার ধারণ করে।
অপরদিকে দীর্ঘদিন ধরে আলাদা ব্যানারে অনুষ্ঠান করে এলেও এহসানুল হক মিলনের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে একই ছাদের নীচে চলে আসেন দ্বিধা-বিভক্ত বেশীরভাগ নেতা-কর্মীরা। মিলন বিরোধী পক্ষে যোগ দেন সাবেক সভাপতি আবদুল লতিফ স¤্রাট, সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি গিয়াস আহমেদ, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লু’র গ্রুপ’সহ নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির খালেক আকন্দ গ্রুপ আর সিটি বিএনপি’র বেশীরভাগ নেতা-কর্মী। তবে, ব্যতিক্রম ছিল যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি শরাফত হোসেন বাবু ও সাবেক কোষাধ্যক্ষ জসিম ভূঁয়া এবং সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আকতার হোসেন বাদল ও মাওলানা অলিউল্যা আতিকুর রহমান গ্রুপ। (সূত্র: সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র দুই গ্রুপের মধ্যে চরম বাক-বিতন্ডা হাতাহাতি ॥ জ্যাকসন হাইটসে ব্যানার ছিনিয়ে সভা পন্ড : পুলিশী হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত

প্রকাশের সময় : ১০:০৪:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ জুলাই ২০১৬

নিউইয়র্ক: যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নয়, বরং নিউইয়র্ক ষ্টেট কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে আলাদা আলাদা কর্মসূচি পালন, প্রতিপক্ষ গ্রুপের মধ্যে চরম বাক-বিতন্ডা, হাতাহাতি, অনুষ্ঠান পন্ড ও ব্যানার ছিনিয়ে নেয়ার মত ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির পরস্পর বিরোধী অনুষ্ঠান ঘিরে। ২৪ জুলাই রোববার সন্ধ্যায় বাংলাদেশীদের কেন্দ্রবিন্দু জ্যাকসন হাইটসস্থ ডাইভারসিটি প্লাজায় এই ঘটনা ঘটে। এসময় স্টেট বিএনপি’র কমিটি গঠনের প্রতিবাদ এবং কমিটির গঠনের পক্ষ নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে অনুষ্ঠান দখলের প্রতিযোগিতা হয়েছে। এতে নিউইয়র্ক সিটি বিএনপি ও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র নামে পৃথক দুটি সভার মঞ্চ দখল করে নেয় যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক সভাপতি আব্দুল লতিফ স¤্রাট, জিল্লুর রহমান জিল্লু, গিয়াস আহমদ, অধ্যাপক দেলোয়ার, মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল গ্রুপের লোকজন। দুই সভাকে ঘিরে দলীয় ব্যানার ছিনিয়ে নিয়ে সভা পন্ড’সহ এক পক্ষ আরেক পক্ষকে প্রতিরোধ এবং বাক-বিতন্ডার পরিনতি গিয়ে ঠেঁকে হাতাহাতি পর্যন্ত। পরবর্তীতে নিউইয়র্ক সিটি পুলিশ ঘটনাস্থলে আসার পর পরিস্থিতি শান্ত হয় এবং পুলিশী হস্তক্ষেপের পর বিবদমান দুই গ্রুপের নেতা-কর্মীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও তারেক পরিষদ আন্তর্জাতিক কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান আখতার বদলের সাংবাদিক সম্মেলনও তোপের মুখে পড়ে। এই পর্যায়ে বিএনপির শীর্ষ নেতারা বাদলকে তাদের সাথে সংহতি প্রকাশের অনুরোধ জানালে তিনি সম্মতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন। এ সময় তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র যেকোন কমিটি করতে হলে সবার সম্মতি নিয়েই করতে হবে। চাপিয়ে দেয়া কোন কমিটি নেতা-কর্মীরা মানবে না। এ সময় সেখানে উপস্থিত স¤্রাট-জিল্লু গ্রুপের সমর্থকরা করতালী দিয়ে তাকে স্বাগত জানান। এর আগে বাদল বলেছিলেন, বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতা এহসানুল হক মিলন যেহেতু আন্তর্জাতিক সম্পাদক সেজন্য তাকে অবাঞ্চিত ঘোষনার অধিকার কারো নেই।
এ সময় সেখানে উপস্থিত যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লু, সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি গিয়াস আহমেদ ও অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন, সাব্কে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক কাজী সাখাওয়াত হোসেন আজম প্রমুখ বক্তব্য রেখে অনুষ্ঠান শেষ করার তাগিদ দেন।
রোববারের ঘটনার সূত্রপাত ঘটে মূলত: তিনটি সভাকে কেন্দ্র করে। কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এহসানুল হক মিলন কর্তৃক নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপি’র কমিটি গঠনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির একটি অংশ। ঐদিন সন্ধ্যার পর জ্যাকসন হাইটসস্থ ডাইভার সিটি প্লাজার আড্ডাখানায় অনুষ্ঠিত এ প্রতিবাদ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির বেশীর ভাগ নেতা-কর্মীরা। স্টেট বিএনপির ব্যানারে এতে অংশ নেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি গিয়াস আহমেদ ও অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লু, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল সহ সাবেক যুগ্ম সম্পাদক কাজী সাখাওয়াত হোসেন আজম, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় জাসাস-এর আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক গোলাম ফারুক শাহীন, নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপি’র খালেক আকন্দ প্রমুখ। এ কর্মসূচিতে একাতœতা পোষণ করেন কেন্দ্রীয় বিএনপি’র অর্থ সম্পাদক আবদুস সালাম।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তখন থেকেই জ্যাকসন হাইটসের বাংলাদেশ প্লাজা মিলনায়তনে ছুটে যান মিলন বিরোধী নেতা-কর্মীরা। ততক্ষণে ওখানে সিটি বিএনপির একটি অংশের ব্যানারে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবদুল খালেক’সহ দু থেকে তিনজন মিলে সভা করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। যদিও সেখানে অনুপস্থিত ছিলেন একই সংগঠনের সভাপতি মাহফুজুল মাওলানা নান্নু। এসময়ে আবদুল খালেকের নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্লাজায় সিটি বিএনপি’র প্রস্তুতি সভার ব্যানার খুলে নিয়ে আসেন সিটি বিএনপি’র আরেকাংশের সভাপতি সেলিম রেজা ও মিলন বিরোধী নেতারা। পরবর্তীতে ব্যানার ছিনিয়ে নেয়া ও সভাকে ঘিরে উভয় পক্ষ বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন যা পরবর্তীতে হাতাহাতি পর্যায় পর্যন্ত গড়ায়।
ঠিক একই সময়ে খাবার বাড়ির পালকী সেন্টারে বিএনপি নেতা মিলনের পক্ষে অবস্থান নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন শুরু করেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র আরেক নেতা আকতার হোসেন বাদল গ্রুপ’সহ তার পক্ষের বেশ কয়েকজন নেতা। যেখানে উপস্থিত ছিলেন নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির একাংশের নেতা মাওলানা অলিউল্যা মোহাম্মদ আতিকুর রহমান। যদিও তিনি সংঘর্ষ ও হট্টগোল বাঁধার আগে সভাস্থল ত্যাগ করেন। সাংবাদিক সম্মেলনে আকতার হোসেন বাদল কেন্দ্রীয় নেতা এসহানুল হক মিলনের কমিটি গঠনের পক্ষে বিভিন্ন যুক্তি তুলে ধরেন। মুহুর্তেই মিলন বিরোধীরা খাবার বাড়িতে অনুষ্ঠিতব্য বাদল গ্রুপের সাংবাদিক সম্মেলন প্রতিরোধে তেড়ে আসেন। বাকবিতন্ডা ও তর্কাতর্কির মধ্যে এখানেও ব্যানারও তুলে নেয়া হয়। কথাকাটাকাটির পর বিএনপি’র সাবেক বেশ কয়েকজন নেতা আকতার হোসেন বাদলের সাংবাদিক সম্মেলন মঞ্চ দখল করে নেন এবং সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য শুরু করেন। এসময়ে তারা এহসানুল হক মিলনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির মধ্যে বিভাজন সৃষ্টির অভিযোগ আনেন।
পরবর্তীতে প্রতিরোধের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটি গঠনে সবার সাথে কাজ করার অঙ্গীকার করেন আকতার হোসেন বাদল’সহ সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে রোববার রাতে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের হিসেবে বিভাজনকে ঘিরে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির অবতারণা ঘটে পুরো জ্যাকসন হাইটস এলাকায়। এসময় উৎসুক প্রবাসী বাংলাদেশীরা বিষয়টির নিন্দা জানান। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের সাধারণ বিএনপি সমর্থক-কর্মীরাও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান, তাদের নেতাদের পদপদবীর লড়াই ইস্যুতে।
উল্লেখ্য, গেল বছরের ডিসেম্বর থেকেই মূলত যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র কমিটি গঠনের পরিবর্তে বিভিন্ন ষ্টেট বিএনপির কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে ক্রোধের আগুনে দগ্ধ দীর্ঘদিনের কমিটিহীন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি ও এর সহযোগি অঙ্গ সংগঠনগুলো। একে অন্যকে বহিঃস্কার, পাল্টা বহিঃস্কার’সহ যাকে ঘিরে মূলত এই দ্বন্দ সেই কেন্দ্রীয় নেতা এহসানুল হক মিলনকেও এর আগে বেশ কয়েকবার অবাঞ্চিত ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতাদের একটি অংশ। একটি পক্ষ মিলনের কমিটি গঠনকে সাধুবাদ জানালে পরিস্থিতি আরো জটিল আকার ধারণ করে।
অপরদিকে দীর্ঘদিন ধরে আলাদা ব্যানারে অনুষ্ঠান করে এলেও এহসানুল হক মিলনের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে একই ছাদের নীচে চলে আসেন দ্বিধা-বিভক্ত বেশীরভাগ নেতা-কর্মীরা। মিলন বিরোধী পক্ষে যোগ দেন সাবেক সভাপতি আবদুল লতিফ স¤্রাট, সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি গিয়াস আহমেদ, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লু’র গ্রুপ’সহ নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির খালেক আকন্দ গ্রুপ আর সিটি বিএনপি’র বেশীরভাগ নেতা-কর্মী। তবে, ব্যতিক্রম ছিল যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি শরাফত হোসেন বাবু ও সাবেক কোষাধ্যক্ষ জসিম ভূঁয়া এবং সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আকতার হোসেন বাদল ও মাওলানা অলিউল্যা আতিকুর রহমান গ্রুপ। (সূত্র: সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা)