নিউইয়র্ক ১১:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচন ২৬ অক্টোবর

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১২:০০:৫১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০১৪
  • / ৯৫৬ বার পঠিত

নিউইয়র্ক তথা উত্তর আমেরিকায় প্রবাসী বাংলাদেশীদের মাদার সামাজিক সংগঠন হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ সোসাইটি ইন্্ক নিউইয়র্কের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন (২০১৫-২০১৬) আগামী ২৬ অক্টোবর রোববার। নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে নির্বাচন কমিশন (ইসি) জানিয়েছেন। নির্বাচনে ‘কামাল-সানী’ ও ‘কুনু-রহীম’ প্যানেল সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। সোসাইটির কার্যকরী পরিষদের ১৯ পদে দুই প্যানেল থেকে ৩৮জন প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন। উভয় প্যানেলের চলছে শেষ সপ্তাহের প্রচারণা। এদিকে ব্রঙ্কসে ভোট কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার দাবী ইসি কর্তৃক নাকচ হয়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ব্রঙ্কসবাসীদের কেউ কেউ। ব্রঙ্কসবাসী ও ‘কামাল-সানি’ প্যানেলের দাবী উপেক্ষা করে ব্রঙ্কসে ভোট কেন্দ্র না প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্তে ইসি ‘অনঢ়’ রয়েছে। একই দাবীতে ‘কামাল-সানী’ প্যানেল ইসি’র কাছে দাবী জানিয়ে প্রয়োজনে নির্বাচন বয়কটের হুমকী দিলেও কমিউনিটি ও সোসাইটির বৃহত্তর স্বার্থে প্যানেলটি নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। ফলে দুই প্যানেলের নির্বাচনী প্রচারণায় জমে উঠেছে সোসাইটির নির্বাচন।
বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচন ঘিরে কমিউনিটির সচেতন মহলে নানা আলোচনা হচ্ছে। কমিউনিটির আলোচনায় সোসাইটিতে যোগ্য নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি সোসাইটিকে ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর রাহুমুক্ত করার বিষয়টি প্রাধান্য পাচ্ছে। সেই সাথে কমিউনিটির সর্বস্তরের মানুষকে সোসাইটির সদস্য/ভোটার হিসেবে সম্পৃক্ত করার প্রক্রিয়া আরো সহজতর, কমিউনিটিকে সোসাইটি মুখী করার বিষয়ও উঠে আসছে। দেশ স্বাধীনতার পর সত্তর দশকের মাঝামাঝি প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ সোসাইটি নানা চড়াই-উৎড়াই পেরিয়ে তৎকালীন কমিউনিটি নেতৃবৃন্দের ‘ড্রইং রুম’ থেকে আজ সিটির এলমহার্স্টস্থ নিজস্ব ভবনে আসন নিয়েছে। সোসাইটি নিয়ে কমিউনিটির চাওয়া-পাওয়ার শেষ নেই। শেষ নেই সামাজিক দায়-দায়িত্বের। সবদিক বিবেচনায় উত্তর আমেরিকা প্রবাসী বাংলাদেশীদের একটাই চাওয়া-পাওয়া সোসাইটিতে যোগ্য নেতৃত্ব চাই। সোসাইটি হোক গণমুখী সামাজিক সংগঠন। মূলধারায় বাংলাদেশ আর প্রবাসী বাংলাদেশীদেরকে নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্য সংগঠন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, নির্বাচনে একক প্যানেল বিজয়ের সম্ভাবনা কম। উভয় প্যানেল থেকে যোগ্য প্রার্থী নির্বাচনে ভোটাররা সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন। বিশেষ করে সভাপতি পদে কামাল আহমেদ ও আজমল হোসেন কুনু, সাধারণ সম্পাদক পদে আব্দুর রহীম হাওলাদার ও জে মোল্লা সানী, কোষাধ্যক্ষ পদে শেখ সিরাজুল ইসলাম ও মোহাম্মদ আলী এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মোহাম্মদ সাদী মিন্টু ও সৈয়দ এম জামানের মধ্যে লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি। এছাড়া এবার সোসাইটির সভাপতি পদের প্রার্থীদ্বয় একই এলাকার অর্থাৎ সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার সন্তান এবং সম্পর্কে মামা-ভাগ্নে হওয়ায় কৌতুহলী ভোটাররা সোসাইটির নির্বাচনকে ‘মামা-ভাগ্নের নির্বাচন’ বলে অভিহিত করছেন। সোসাইটির ইতিহাসে একই এলাকার কোন প্রার্থী বিশেষ করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী ছিলেন না। ইতিপূর্বে দেখা গেছে এক এলাকার (জেলা) সভাপতি হলে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী হয়েছেন অন্য এলাকার (জেলা)। কিন্তু এবারই ব্যতিক্রম যে, শুধু সিলেট জেলা নয়, বরং একই উপজেলা বিয়ানীবাজারের সন্তান হচ্ছেন কামাল আহমেদ ও আজমল হোসেন কুনু। ফলে নির্বাচনটি উভয়ের জন্য মর্যাদার লড়াইও বটে। অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থীদের মধ্যে জে মোল্লা সানী নরসিংদীর আর আব্দুর রহীম হাওলাদার বিক্রমপুর-মুন্সীগঞ্জ জেলার সন্তান।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে সোসাইটির নির্বাচনে কুইন্স ও ব্রুকলীন দু’টি ভোট কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হবে। কুইন্সের ভোট কেন্দ্র হবে গুলশান ট্যারেস (৫৯-১৫ ৩৭ এভিনিউ, উডসাইড, নিউইয়র্ক) আর ব্রুকলীনের কেন্দ্র হচ্ছে পিএস ২১৪ (২৯ ৪৪ পিটকিন এভিনিউ, ব্রুকলীন, নিউইয়র্ক)। এবারের নির্বাচনে ভোটার হচ্ছেন ৪,০৩৬ জন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইঞ্জিনিয়ার নূরুল হক জানান, ২৬ অক্টোবর রোববার সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ হবে। ভোটারদেরকে যথাসময়ে নিজ নিজ আইডি সহ ভোট কেন্দ্রে এসে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিতে হবে। সোসাইটির আজীবন সদস্যদের জন্য ভিন্ন লাইন থাকবে। ভোটারদেরকে নিজ নিজ কেন্দ্রে ভোট দিতে হবে। নির্ধারিত কেন্দ্র ব্যতিত অন্য কোন কেন্দ্রে ভোট দিতে পারবেন না। নির্বাচন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে তিনি নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সবার সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সোসাইটির এবারের নির্বাচনে পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশনের সদস্যরা হচ্ছেন: ইঞ্জিনিয়ার নূরুল হক (চেয়ারম্যান)। কমিশনের সদস্যবৃন্দ হচ্ছেন- যথাক্রমে মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, মোহাম্মদ আজিজ, মোহাম্মদ এ হাকিম মিয়া ও আজমল আলী।
নিবাচনে ‘কামাল-সানী’ প্যানেল থেকে সভাপতি পদে সোসাইটির বর্তমান সভাপতি কামাল আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক পদে সোসাইটির কার্যকরী পরিষদের সাবেক সদস্য, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জে মোল্লা সানী এবং ‘কুনু-রহীম’ প্যানেল থেকে সভাপতি পদে জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আজমল হোসেন কুনু ও সাধারণ সম্পাদক পদে সোসাইটির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহীম হাওলাদার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় এবার নতুন মাত্র যোগ হয়েছে সোসাইটির নির্বাচনে। কেননা, কথা ছিলো বিগত নির্বাচনে বিজয়ী ‘কামাল-রহীম’ প্যানেল আবার একই প্যানেল থেকে নির্বাচন করবেন। কিন্তু বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে সেই কথা আর রাখা সম্ভব হয়নি কারোরই। ফলে পাশাপাশি আবস্থান থেকে মুখোমুখী অবস্থান নিয়েছেন কামাল আহমেদ ও আব্দুর রহীম হাওলাদার। সেই সাথে নির্বাচনকে ঘিরে ‘আপাতত’ বিভক্ত হয়ে পড়েছে কমিউনিটি।
‘প্রবাসে বাংলাদেশী পার্লামেন্ট : ঐক্যবদ্ধ কমিউনিটি গড়াই আমাদের প্রত্যাশা’ শ্লোগান নিয়ে নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন ‘কামাল-সানী’ প্যানেলের প্রার্থীরা। এই প্যানেলের দাবী সমাজকর্মে পরীক্ষিত ও অভিজ্ঞ নবীণ-প্রবীণের সমন্বয়ে ‘কামাল-সানী’ প্যানেল গঠিত হয়েছে।
অপরদিকে ‘বাংলাদেশীদের মধ্যে সুদৃঢ় সর্বজনীন ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় কুনু-রহীম পরিষদ সর্বদা প্রবাসীদের পাশে’ শ্লোগান নিয়ে নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন ‘কুনু-রহীম’ প্যানেলের প্রার্থীরা। এই প্যানেলের ‘নির্বাচনী এজেন্ডা’ অর্থাৎ কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে যে কোন প্রবাসী বাংলাদেশী, বাংলাদেশ সোসাইটির সদস্য পদ গ্রহণ করার পর থেকে সকল সময়ের জন্য সদস্যপদ নথিভুক্ত রেখে নিয়মিত নবায়নের মাধ্যমে ভোটার করার পদক্ষেপ গ্রহণ, সোসাইটির সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে বাৎসরিক সদস্য ফি কমিয়ে ৫ ডলার করার পদক্ষেপ গ্রহণ, স্থায়ী শহীদ মিনার প্রতিষ্ঠায় কমিউনিটি ও কর্তৃপক্ষের সাথে যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ, জবের জন্য তথ্য সংগ্রহ করে কমিউনিটিকে সার্বক্ষনিক সহযোগিতা প্রদান, বাংলাদেশী কমিউনিটিকে মূলধারায় সম্পৃক্ত করার জন্য মেলবন্ধন তৈরী করা, বাংলাদেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার জন্য ইতিবাচক ভূমিকা পালন, সিটি ও ষ্টেট থেকে কমিউনিটির জন্য বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা আদায়ের উদ্যোগ গ্রহণ, বাংলাদেশ ডে উপলক্ষ্যে প্যারেড আয়োজন, নতুন প্রজন্মের ছাত্র-ছাত্রীদের বাংলাদেশী কৃষ্টি ও সংস্কৃতি শিক্ষাদান এবং বাংলা স্কুলের কার্যক্রম আরো জোরদার করা।
এদিকে উভয় প্যানেলের নির্বাচনী কর্মকান্ডের অংশ হিসেছে চলছে প্রার্থীদের ব্যাপক গণ সংযোগ। মূলত: সন্ধ্যার পরই জমে উঠছে প্রচার-প্রচারণা ও গণ সংযোগ। কমিউনিটির কোন অনুষ্ঠানের খবর পেলেই উভয় প্যানেলের প্রার্থীরা ছুটে যাচ্ছেন ঐসব সভা-সমাবেশে। কখনো যাচ্ছেন এককভাবে আবার যৌথভাবে বা দলবল নিয়ে। মধ্যরাত পর্যন্ত চলছে প্রচারণা। সেই সাথে ভোটের হিসাব-নিকাশ শুরু হয়েছে। কোথায়, কোন এলাকায় কত ভোট আছে, কাকে প্যানেলে টানলে ভোট পাওয়া যাবে এসবও হিসাব-নিকাশে স্থান পাচ্ছে। আবার চলছে ফোনেও দোয়া এবং ভোট প্রার্থণা। প্রচারণা চলছে সামাজিক গণমাধ্যম ফেসবুকেও। প্রার্থী ও প্যানেল দু’টির রং বে রং-এর পোস্টার সাটানো হচ্ছে গুরুত্ত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে। প্রচারণা চলছে ব্রুকলনি টু ব্রঙ্কস, জ্যামাইকা টু ম্যানহাটান, ভায়া নিউজার্সী, পেনসেলভেনিয়া আর কানেকটিকাট। তবে জ্যাকসন হাইটসেই এই প্রচারণা বেশী লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সবমিলিয়ে সোসাইটির নির্বাচনে হাড্ডা-হাড্ডি লড়াইয়ের আভাষ পাওয়া যাচ্ছে।
‘কামাল-সানি’ প্যানেলের প্রার্থীরা হচ্ছেন: সভাপতি- কামাল আহমেদ, সিনিয়র সহ সভাপতি- মহিউদ্দিন দেওয়ান, সহ-সভাপতি- সিরাজ উদ্দিন আহমেদ সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক- জে মোল্লা সানি, সহ-সাধারণ সম্পাদক- আহবার এইচ চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ- শেখ সিরাজুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক- সাদী মিন্টু, সাংস্কৃতিক সম্পাদক- মোশাররফ হোসেন, প্রচার সম্পাদক- মফিজুল ইসলাম ভূঁইয়া, সমাজকল্যাণ সম্পাদক- সম্পাদক কাজী তোফায়েল ইসলাম, সাহিত্য সম্পাদক- কাজী ওয়াহিদ এলিন, ক্রীড়া সম্পাদক- সৈয়দ এনায়েত আলী, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক- ফারহানা চৌধুরী এবং কার্যকরী সদস্য- সৈয়দ ইলিয়াস খসরু, নাদির এ আইয়ুব, শাহ মিজানুর রহমান, এয়াকুত রহমান, নাসির উদ্দিন আহমেদ ও শেখ ফারুকুল ইসলাম।
‘কুনু-রহীম’ প্যানেলের প্রার্থীরা হচ্ছেন: সভাপতি- আজমল হোসেন কুনু, সিনিয়র সহ সভাপতি- আতাউর রহমান সেলিম, সহ সভাপতি- ফারুক হোসেন মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক- আব্দুর রহীম হাওলাদার, সহ-সাধারণ সম্পাদক- ওসমান চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক- সৈয়দ এম কে জামান, কোষাধ্যক্ষ- মোহাম্মদ আলী, সাংস্কৃতিক সম্পাদক- মনিকা রায়, প্রচার সম্পাদক- খোরশেদ আলম, ক্রীড়া সম্পাদক- মোহাম্মদ এ হোসাইন বিপ্লব, সাহিত্য সম্পাদক- মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন, সমাজকল্যাণ সম্পাদক- মিয়া মোশাররফ, ক্রীড়া সম্পাদক- প্রফেসর ওয়াজি উল্যাহ এবং কার্যকরী সদস্য- আবুল কে চৌধুরী, এ কে এম রফিকুল ইসলাম ডালিম, আকবর চৌধুরী, এমডি তুহীন আলী, সাইফুল ইসলাম ও মোহাম্মদ এস হক জামান।
কামাল-সানীর বক্তব্য:
বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ‘কামাল-সানী’ প্যানেলের প্রত্যাশা রোববারের নির্বাচনে তারাই বিজয়ী হবে। জয়ের ব্যাপারে প্যানেলটি শতভাগ আশাবাদী। কেননা, তাদের প্যানেলে রয়েছে সোসাইটিকে সঠিকভাবে নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্য ব্যক্তিত্ব। প্যানেলটির সভাপতি পদপ্রার্থী ও সোসাইটির বর্তমান সভাপতি কামাল আহমেদ বলেন, আমাদের প্যানেলের সকল প্রার্থীই যোগ্য। কমিউনিটিতেও সবার রয়েছে গ্রহণযোগ্যতা। তাছাড়া সোসাইটির বর্তমান কার্যকরী পরিষদের অধিকাংশ কর্মকর্তা ‘কামাল-সানী’ প্যানেল থেকে পুনরায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনি বলেন, কমিউনিটির সেবক হিসেবে বিগত সময়ে আমি বিয়ানীবাজার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সমিতি ইউএসএ ইন্কক ও জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকা ইন্ক-এর মতো সামাজিক সংগঠনে দু’বার সভাপতি নির্বাচিত হয়ে নেতৃত্ব দিয়েছি। সোসাইটির সভাপতি হিসেবে দুই বছর কমিউনিটির সেবা করে যাচ্ছি। সোসাইটির বিগত দুই বছরের কার্যক্রম মূল্যায়ণ করলে বিশেষ করে সোসাইটিতে কনস্যুলেট সেবা, বাংলা ক্লাশ, প্রকাশ্যে ভোটার সংগ্রহ প্রভৃতি কর্মকান্ড পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে সোসাইটি আরো অনেক গণমুখী হয়েছে, কমিউনিটির বিপদে-আপদে সোসাইটি পাশে থেকেছে। তাই আমাদের প্রত্যাশা সোসাইটির সম্মানিত ভোটারগণ তাদের বিবেক-বিবেচনায় ‘কামাল-সানী’ প্যানেলকেই পুনরায় নির্বাচিত করবেন।
‘কামাল-সানী’ প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী জে মোল্লা সানী বলেন, মহান আল্লাহতায়ালা চাইলে আমরাই নির্বাচিত হবো ইনশাল্লাহ। কেননা সোসাইটির সভাপতি কামাল আহমেদের নেতৃত্বে বিগত দুই বছর সোসাইটি যেভাবে গণমুখী হয়েছে তাতে আমরা বিশ্বাস করি সোসাইটির সম্মানিত ভোটারগণ নির্বাচনে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন। তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত সোসাইটির সাথে কমিউনিটির বর্তমান প্রজন্মের নানা গ্যাপ রয়েছে। আমরা নির্বাচিত হলে এই গ্যাপ পূরণের মধ্যদিয়ে আমরা সোসাইটিকে আরো গণমুখী সংগঠণে পরিণত করতে চাই। সেই সাথে সোসাইটির সাবেক কর্মকর্তাদের সম্মান জানিয়ে তাদের সহ পুরো কমিউনিটিকে সোসাইটিমুখী করতে চাই। তাছাড়া কার্যকরী কমিটির সভায় কমিউনিটির বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে আমন্ত্রণ জানিয়ে তাদেরকে সোসাইটির সেবায় অংশ নেয়ার সুযোগ দিয়ে সকল প্রবাসীকে সোসাইটিতে সম্পৃক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। মোট কথা সোসাইটির সাথে কমিউনিটির সেতু বন্ধনই ‘কামাল-সানী’ প্যানেলের মূল্য লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
কুনু-রহীমের বক্তব্য:
বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ‘কুনু-রহীম’ প্যানেলেরও প্রত্যাশা রোববারের নির্বাচনে তারাই বিজয়ী হবে। প্যানেলের কর্মকর্তারা মনে করেন কমিউনিটি সোসাইটির নেতৃত্বে পরিবর্তণ চায়। চায় নতুন মুখ। প্যানেলটিতে রয়েছে কমিউনিটির নবীণ-প্রবীণের সমন্বয়। প্যানেলটির সভাপতি পদপ্রার্থী আজমল হেসেন কুনু বলেন, কমিউনিটির চাওয়াতে সোসাইটির নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আমরা দারুণ আশাবাদী। কেননা, কমিউনিটির নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ আর যোগ্য প্রার্থী। তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে কমিউনিটির সুখে-দুখে জড়িত। সভাপতি হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছি বিয়ানীবাজার সামাজিক  ও সাংস্কৃতিক সমিতি ইউএসএ ইন্কক ও জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকা ইন্ক-এর মতো সামাজিক সংগঠনের। তিনি বলেন, ‘কুনু-রহীম প্যানেল নির্বাচিত হলে সোসাইটিকে সত্যিকারার্থেই প্রবাসীদের সংগঠনের পরিণত করা হবে।
‘কুনু-রহীম’ প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ও সোসাইটির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহীম হাওলাদার বলেন, বিগত সোসাইটির ইতিহাসে আমি সোসাইটিতে পাঁচবার বিভিন্ন পদে নির্বাচিত হয়েছি। একবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সহ সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলাম। সোসাইটির সাথে আমার প্রাণের সম্পর্ক। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে গত দুই বছর সাধ্যমত দায়িত্ব পালন করেছি। তিনি বলেন, প্রকাশ্যে ভোটার সংগ্রহ অভিযান, সোসাইটিতে কনস্যুলেট সেবার ব্যবস্থা প্রভৃতি কর্মকান্ডের মাধ্যমে আমরা সংগঠনটিকে আরো গণমুখী করেছি। সম্মানিত ভোটারগণ ‘কুনু-রহীম’ প্যানেলকে নির্বাচিত করলে আমরা আমাদের সেবা অব্যাহত রাখতে পারবো। তিনি বলেন, এই প্যানেলের সভাপতি পদপ্রার্থী আজমল হোসেন কুনু সহ সকল প্রার্থীই কমিউনিটির পরিচিত মুখ, সবাই যোগ্য। প্রার্থীদের কারো সম্পর্কে কোন ‘ব্যাড রেকর্ড’ নেই। তাই আমাদের প্রত্যাশা ভোটারগণ ‘কুনু-রহীম’ প্যানেলকেই নির্বাচিত করবেন।
কমিউনিটির প্রত্যাশা:
ব্রুকলীনের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, বাংলাদেশ আমেরিকান ডেমোক্রেটিক সোসাইটি ইন্্ক নিউইয়র্কের সেক্রেটারী কবীর চৌধুরী বলেন, প্রবাসে বাংলাদেশ, দেশের কৃষ্টি-কালচার, নতুন প্রজন্মকে দেশীয় কৃষ্টি-কালচারে সম্পৃক্ত করতে যারা ভূমিকা রাখতে পারবেন সোসাইটির নেতৃত্বে তারাই আশা উচিৎ। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সোসাইটি তথা কমিউনিটিতে প্রোডাকটিভ নেতৃত্ব চাই। গতানুগতিক কর্মকান্ড নয়, দেশ ও কমিউনিটির কল্যাণে উন্নয়নমূলক কর্মসূচীর মাধ্যমে মেইন স্ট্রীম পলিটিক্স-এ আমাদের অবস্থান দৃঢ় করতে পারবেন সোসাইটিতে তাদেরকেই নির্বাচিত করা উচিৎ।
জ্যামাইকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, বাংলাদেশ সোসাইটির আজীবন সদস্য, কসবা সোসাইটি অব ইউএসএ’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি একেএম সফিকুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ সোসাইটি, সোসাইটর নির্বাচন নিয়ে কমিউনিটির আগ্রহ থাকলেও অপ্রীয় হলেও সত্য যে, সোসাইটিতে যোগ্য নেতৃত্বের অভাব রয়েছে। উত্তর আমেরিকায় প্রবাসী বাংলাদেশীদের মাদর সংগঠন হিসেবে পরিচিত ও মূলধারায় স্বীকৃত বাংলাদেশ সোসাইটিতে আমরা যোগ্য নেতৃত্ব চাই। যে নেতৃত্ব কমিউনিটিকে ঐক্যবদ্ধ করবে, সোসাইটিকে সত্যিকারার্থেই সর্ববৃহৎ সংগঠনে পরিণত করবে, প্রবাসীর কল্যাণে ভূমিকা রাখবে। তিনি বলেন, কোন ব্যক্তি, দল বা গোষ্ঠীর পকেট সংগঠন বা নেতৃত্ব চাইনা বাংলাদেশ সোসাইটিতে। সোসাইটিতে চাই ‘ভোট ব্যাংক’ সংস্কৃতির অবসান। অর্থের জোড়ে সোসাইটিতে সদস্য বানানো বা ভোট কেনা-বেচার অবসান চাই। তাই ভোটারদেরকে বিবেক-বিবেচনা মাথায় রেখে নির্বাচনে ভোট দিতে হবে।
ব্রঙ্কসের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও নিরব রেষ্টুরেন্টের স্বত্তাধিকারী বখতিয়ার রহমান খোকন সোসাইটির নির্বাচন সম্পর্কে ক্ষোভের সাথে বলেন,‘উই আর নট ফর সেল’। আমরা ব্রঙ্কসে কেন্দ্র চেয়েছিলাম। এনিয়ে কমিউনিটির কতিপয় নেতৃবৃন্দ ও সোসাইটির নির্বাচন কমিশন ‘ডারটি গেম’ খেলেছেন। এই ‘ডার্টি গেম’ এর প্রতিবাদে আমি ভোটদান থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তারপরও বলবো সোসাইটিতে আমরা যোগ্য নেতৃত্ব চাই। সোসাইটির কর্মকর্তারা কমিউনিটির সেবার নামে ফটোসেশন নিয়ে ব্যস্ত থাকে। আমরা এমন কর্মকর্তা বা নেতৃত্ব চাই না। তিনি বলেন, আমাদের দেশ বাংলাদেশ। এই প্রবাসে সবাই মিলে এক টেবিলে বসার-খাওয়ার, এক সাথে বসে দেশ ও কমিউনিটির কল্যাণে কাজ করার নেতৃত্ব চাই।
ওজনপার্কের গ্লোবাল ট্রাভেলস-এর সত্তাধিকারী আলীম উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ সোসাইটিতে সুন্দর নেতৃত্ব চাই। যে নেতৃত্ব সকল প্রবাসী বাংলাদেশীদেরকে ঐক্যবদ্ধ করে কাজ করতে পারবেন তাদেরকে নির্বাচিত করা উচিৎ। আমরা সোসাইটিতে মারামারী, মামলা, দলাদলির নেতৃত্ব চাই না।

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচন ২৬ অক্টোবর

প্রকাশের সময় : ১২:০০:৫১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০১৪

নিউইয়র্ক তথা উত্তর আমেরিকায় প্রবাসী বাংলাদেশীদের মাদার সামাজিক সংগঠন হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ সোসাইটি ইন্্ক নিউইয়র্কের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন (২০১৫-২০১৬) আগামী ২৬ অক্টোবর রোববার। নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে নির্বাচন কমিশন (ইসি) জানিয়েছেন। নির্বাচনে ‘কামাল-সানী’ ও ‘কুনু-রহীম’ প্যানেল সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। সোসাইটির কার্যকরী পরিষদের ১৯ পদে দুই প্যানেল থেকে ৩৮জন প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন। উভয় প্যানেলের চলছে শেষ সপ্তাহের প্রচারণা। এদিকে ব্রঙ্কসে ভোট কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার দাবী ইসি কর্তৃক নাকচ হয়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ব্রঙ্কসবাসীদের কেউ কেউ। ব্রঙ্কসবাসী ও ‘কামাল-সানি’ প্যানেলের দাবী উপেক্ষা করে ব্রঙ্কসে ভোট কেন্দ্র না প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্তে ইসি ‘অনঢ়’ রয়েছে। একই দাবীতে ‘কামাল-সানী’ প্যানেল ইসি’র কাছে দাবী জানিয়ে প্রয়োজনে নির্বাচন বয়কটের হুমকী দিলেও কমিউনিটি ও সোসাইটির বৃহত্তর স্বার্থে প্যানেলটি নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। ফলে দুই প্যানেলের নির্বাচনী প্রচারণায় জমে উঠেছে সোসাইটির নির্বাচন।
বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচন ঘিরে কমিউনিটির সচেতন মহলে নানা আলোচনা হচ্ছে। কমিউনিটির আলোচনায় সোসাইটিতে যোগ্য নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি সোসাইটিকে ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর রাহুমুক্ত করার বিষয়টি প্রাধান্য পাচ্ছে। সেই সাথে কমিউনিটির সর্বস্তরের মানুষকে সোসাইটির সদস্য/ভোটার হিসেবে সম্পৃক্ত করার প্রক্রিয়া আরো সহজতর, কমিউনিটিকে সোসাইটি মুখী করার বিষয়ও উঠে আসছে। দেশ স্বাধীনতার পর সত্তর দশকের মাঝামাঝি প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ সোসাইটি নানা চড়াই-উৎড়াই পেরিয়ে তৎকালীন কমিউনিটি নেতৃবৃন্দের ‘ড্রইং রুম’ থেকে আজ সিটির এলমহার্স্টস্থ নিজস্ব ভবনে আসন নিয়েছে। সোসাইটি নিয়ে কমিউনিটির চাওয়া-পাওয়ার শেষ নেই। শেষ নেই সামাজিক দায়-দায়িত্বের। সবদিক বিবেচনায় উত্তর আমেরিকা প্রবাসী বাংলাদেশীদের একটাই চাওয়া-পাওয়া সোসাইটিতে যোগ্য নেতৃত্ব চাই। সোসাইটি হোক গণমুখী সামাজিক সংগঠন। মূলধারায় বাংলাদেশ আর প্রবাসী বাংলাদেশীদেরকে নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্য সংগঠন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, নির্বাচনে একক প্যানেল বিজয়ের সম্ভাবনা কম। উভয় প্যানেল থেকে যোগ্য প্রার্থী নির্বাচনে ভোটাররা সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন। বিশেষ করে সভাপতি পদে কামাল আহমেদ ও আজমল হোসেন কুনু, সাধারণ সম্পাদক পদে আব্দুর রহীম হাওলাদার ও জে মোল্লা সানী, কোষাধ্যক্ষ পদে শেখ সিরাজুল ইসলাম ও মোহাম্মদ আলী এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মোহাম্মদ সাদী মিন্টু ও সৈয়দ এম জামানের মধ্যে লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি। এছাড়া এবার সোসাইটির সভাপতি পদের প্রার্থীদ্বয় একই এলাকার অর্থাৎ সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার সন্তান এবং সম্পর্কে মামা-ভাগ্নে হওয়ায় কৌতুহলী ভোটাররা সোসাইটির নির্বাচনকে ‘মামা-ভাগ্নের নির্বাচন’ বলে অভিহিত করছেন। সোসাইটির ইতিহাসে একই এলাকার কোন প্রার্থী বিশেষ করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী ছিলেন না। ইতিপূর্বে দেখা গেছে এক এলাকার (জেলা) সভাপতি হলে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী হয়েছেন অন্য এলাকার (জেলা)। কিন্তু এবারই ব্যতিক্রম যে, শুধু সিলেট জেলা নয়, বরং একই উপজেলা বিয়ানীবাজারের সন্তান হচ্ছেন কামাল আহমেদ ও আজমল হোসেন কুনু। ফলে নির্বাচনটি উভয়ের জন্য মর্যাদার লড়াইও বটে। অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থীদের মধ্যে জে মোল্লা সানী নরসিংদীর আর আব্দুর রহীম হাওলাদার বিক্রমপুর-মুন্সীগঞ্জ জেলার সন্তান।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে সোসাইটির নির্বাচনে কুইন্স ও ব্রুকলীন দু’টি ভোট কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হবে। কুইন্সের ভোট কেন্দ্র হবে গুলশান ট্যারেস (৫৯-১৫ ৩৭ এভিনিউ, উডসাইড, নিউইয়র্ক) আর ব্রুকলীনের কেন্দ্র হচ্ছে পিএস ২১৪ (২৯ ৪৪ পিটকিন এভিনিউ, ব্রুকলীন, নিউইয়র্ক)। এবারের নির্বাচনে ভোটার হচ্ছেন ৪,০৩৬ জন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইঞ্জিনিয়ার নূরুল হক জানান, ২৬ অক্টোবর রোববার সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ হবে। ভোটারদেরকে যথাসময়ে নিজ নিজ আইডি সহ ভোট কেন্দ্রে এসে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিতে হবে। সোসাইটির আজীবন সদস্যদের জন্য ভিন্ন লাইন থাকবে। ভোটারদেরকে নিজ নিজ কেন্দ্রে ভোট দিতে হবে। নির্ধারিত কেন্দ্র ব্যতিত অন্য কোন কেন্দ্রে ভোট দিতে পারবেন না। নির্বাচন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে তিনি নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সবার সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সোসাইটির এবারের নির্বাচনে পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশনের সদস্যরা হচ্ছেন: ইঞ্জিনিয়ার নূরুল হক (চেয়ারম্যান)। কমিশনের সদস্যবৃন্দ হচ্ছেন- যথাক্রমে মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, মোহাম্মদ আজিজ, মোহাম্মদ এ হাকিম মিয়া ও আজমল আলী।
নিবাচনে ‘কামাল-সানী’ প্যানেল থেকে সভাপতি পদে সোসাইটির বর্তমান সভাপতি কামাল আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক পদে সোসাইটির কার্যকরী পরিষদের সাবেক সদস্য, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জে মোল্লা সানী এবং ‘কুনু-রহীম’ প্যানেল থেকে সভাপতি পদে জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আজমল হোসেন কুনু ও সাধারণ সম্পাদক পদে সোসাইটির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহীম হাওলাদার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় এবার নতুন মাত্র যোগ হয়েছে সোসাইটির নির্বাচনে। কেননা, কথা ছিলো বিগত নির্বাচনে বিজয়ী ‘কামাল-রহীম’ প্যানেল আবার একই প্যানেল থেকে নির্বাচন করবেন। কিন্তু বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে সেই কথা আর রাখা সম্ভব হয়নি কারোরই। ফলে পাশাপাশি আবস্থান থেকে মুখোমুখী অবস্থান নিয়েছেন কামাল আহমেদ ও আব্দুর রহীম হাওলাদার। সেই সাথে নির্বাচনকে ঘিরে ‘আপাতত’ বিভক্ত হয়ে পড়েছে কমিউনিটি।
‘প্রবাসে বাংলাদেশী পার্লামেন্ট : ঐক্যবদ্ধ কমিউনিটি গড়াই আমাদের প্রত্যাশা’ শ্লোগান নিয়ে নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন ‘কামাল-সানী’ প্যানেলের প্রার্থীরা। এই প্যানেলের দাবী সমাজকর্মে পরীক্ষিত ও অভিজ্ঞ নবীণ-প্রবীণের সমন্বয়ে ‘কামাল-সানী’ প্যানেল গঠিত হয়েছে।
অপরদিকে ‘বাংলাদেশীদের মধ্যে সুদৃঢ় সর্বজনীন ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় কুনু-রহীম পরিষদ সর্বদা প্রবাসীদের পাশে’ শ্লোগান নিয়ে নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন ‘কুনু-রহীম’ প্যানেলের প্রার্থীরা। এই প্যানেলের ‘নির্বাচনী এজেন্ডা’ অর্থাৎ কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে যে কোন প্রবাসী বাংলাদেশী, বাংলাদেশ সোসাইটির সদস্য পদ গ্রহণ করার পর থেকে সকল সময়ের জন্য সদস্যপদ নথিভুক্ত রেখে নিয়মিত নবায়নের মাধ্যমে ভোটার করার পদক্ষেপ গ্রহণ, সোসাইটির সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে বাৎসরিক সদস্য ফি কমিয়ে ৫ ডলার করার পদক্ষেপ গ্রহণ, স্থায়ী শহীদ মিনার প্রতিষ্ঠায় কমিউনিটি ও কর্তৃপক্ষের সাথে যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ, জবের জন্য তথ্য সংগ্রহ করে কমিউনিটিকে সার্বক্ষনিক সহযোগিতা প্রদান, বাংলাদেশী কমিউনিটিকে মূলধারায় সম্পৃক্ত করার জন্য মেলবন্ধন তৈরী করা, বাংলাদেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার জন্য ইতিবাচক ভূমিকা পালন, সিটি ও ষ্টেট থেকে কমিউনিটির জন্য বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা আদায়ের উদ্যোগ গ্রহণ, বাংলাদেশ ডে উপলক্ষ্যে প্যারেড আয়োজন, নতুন প্রজন্মের ছাত্র-ছাত্রীদের বাংলাদেশী কৃষ্টি ও সংস্কৃতি শিক্ষাদান এবং বাংলা স্কুলের কার্যক্রম আরো জোরদার করা।
এদিকে উভয় প্যানেলের নির্বাচনী কর্মকান্ডের অংশ হিসেছে চলছে প্রার্থীদের ব্যাপক গণ সংযোগ। মূলত: সন্ধ্যার পরই জমে উঠছে প্রচার-প্রচারণা ও গণ সংযোগ। কমিউনিটির কোন অনুষ্ঠানের খবর পেলেই উভয় প্যানেলের প্রার্থীরা ছুটে যাচ্ছেন ঐসব সভা-সমাবেশে। কখনো যাচ্ছেন এককভাবে আবার যৌথভাবে বা দলবল নিয়ে। মধ্যরাত পর্যন্ত চলছে প্রচারণা। সেই সাথে ভোটের হিসাব-নিকাশ শুরু হয়েছে। কোথায়, কোন এলাকায় কত ভোট আছে, কাকে প্যানেলে টানলে ভোট পাওয়া যাবে এসবও হিসাব-নিকাশে স্থান পাচ্ছে। আবার চলছে ফোনেও দোয়া এবং ভোট প্রার্থণা। প্রচারণা চলছে সামাজিক গণমাধ্যম ফেসবুকেও। প্রার্থী ও প্যানেল দু’টির রং বে রং-এর পোস্টার সাটানো হচ্ছে গুরুত্ত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে। প্রচারণা চলছে ব্রুকলনি টু ব্রঙ্কস, জ্যামাইকা টু ম্যানহাটান, ভায়া নিউজার্সী, পেনসেলভেনিয়া আর কানেকটিকাট। তবে জ্যাকসন হাইটসেই এই প্রচারণা বেশী লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সবমিলিয়ে সোসাইটির নির্বাচনে হাড্ডা-হাড্ডি লড়াইয়ের আভাষ পাওয়া যাচ্ছে।
‘কামাল-সানি’ প্যানেলের প্রার্থীরা হচ্ছেন: সভাপতি- কামাল আহমেদ, সিনিয়র সহ সভাপতি- মহিউদ্দিন দেওয়ান, সহ-সভাপতি- সিরাজ উদ্দিন আহমেদ সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক- জে মোল্লা সানি, সহ-সাধারণ সম্পাদক- আহবার এইচ চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ- শেখ সিরাজুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক- সাদী মিন্টু, সাংস্কৃতিক সম্পাদক- মোশাররফ হোসেন, প্রচার সম্পাদক- মফিজুল ইসলাম ভূঁইয়া, সমাজকল্যাণ সম্পাদক- সম্পাদক কাজী তোফায়েল ইসলাম, সাহিত্য সম্পাদক- কাজী ওয়াহিদ এলিন, ক্রীড়া সম্পাদক- সৈয়দ এনায়েত আলী, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক- ফারহানা চৌধুরী এবং কার্যকরী সদস্য- সৈয়দ ইলিয়াস খসরু, নাদির এ আইয়ুব, শাহ মিজানুর রহমান, এয়াকুত রহমান, নাসির উদ্দিন আহমেদ ও শেখ ফারুকুল ইসলাম।
‘কুনু-রহীম’ প্যানেলের প্রার্থীরা হচ্ছেন: সভাপতি- আজমল হোসেন কুনু, সিনিয়র সহ সভাপতি- আতাউর রহমান সেলিম, সহ সভাপতি- ফারুক হোসেন মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক- আব্দুর রহীম হাওলাদার, সহ-সাধারণ সম্পাদক- ওসমান চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক- সৈয়দ এম কে জামান, কোষাধ্যক্ষ- মোহাম্মদ আলী, সাংস্কৃতিক সম্পাদক- মনিকা রায়, প্রচার সম্পাদক- খোরশেদ আলম, ক্রীড়া সম্পাদক- মোহাম্মদ এ হোসাইন বিপ্লব, সাহিত্য সম্পাদক- মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন, সমাজকল্যাণ সম্পাদক- মিয়া মোশাররফ, ক্রীড়া সম্পাদক- প্রফেসর ওয়াজি উল্যাহ এবং কার্যকরী সদস্য- আবুল কে চৌধুরী, এ কে এম রফিকুল ইসলাম ডালিম, আকবর চৌধুরী, এমডি তুহীন আলী, সাইফুল ইসলাম ও মোহাম্মদ এস হক জামান।
কামাল-সানীর বক্তব্য:
বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ‘কামাল-সানী’ প্যানেলের প্রত্যাশা রোববারের নির্বাচনে তারাই বিজয়ী হবে। জয়ের ব্যাপারে প্যানেলটি শতভাগ আশাবাদী। কেননা, তাদের প্যানেলে রয়েছে সোসাইটিকে সঠিকভাবে নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্য ব্যক্তিত্ব। প্যানেলটির সভাপতি পদপ্রার্থী ও সোসাইটির বর্তমান সভাপতি কামাল আহমেদ বলেন, আমাদের প্যানেলের সকল প্রার্থীই যোগ্য। কমিউনিটিতেও সবার রয়েছে গ্রহণযোগ্যতা। তাছাড়া সোসাইটির বর্তমান কার্যকরী পরিষদের অধিকাংশ কর্মকর্তা ‘কামাল-সানী’ প্যানেল থেকে পুনরায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনি বলেন, কমিউনিটির সেবক হিসেবে বিগত সময়ে আমি বিয়ানীবাজার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সমিতি ইউএসএ ইন্কক ও জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকা ইন্ক-এর মতো সামাজিক সংগঠনে দু’বার সভাপতি নির্বাচিত হয়ে নেতৃত্ব দিয়েছি। সোসাইটির সভাপতি হিসেবে দুই বছর কমিউনিটির সেবা করে যাচ্ছি। সোসাইটির বিগত দুই বছরের কার্যক্রম মূল্যায়ণ করলে বিশেষ করে সোসাইটিতে কনস্যুলেট সেবা, বাংলা ক্লাশ, প্রকাশ্যে ভোটার সংগ্রহ প্রভৃতি কর্মকান্ড পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে সোসাইটি আরো অনেক গণমুখী হয়েছে, কমিউনিটির বিপদে-আপদে সোসাইটি পাশে থেকেছে। তাই আমাদের প্রত্যাশা সোসাইটির সম্মানিত ভোটারগণ তাদের বিবেক-বিবেচনায় ‘কামাল-সানী’ প্যানেলকেই পুনরায় নির্বাচিত করবেন।
‘কামাল-সানী’ প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী জে মোল্লা সানী বলেন, মহান আল্লাহতায়ালা চাইলে আমরাই নির্বাচিত হবো ইনশাল্লাহ। কেননা সোসাইটির সভাপতি কামাল আহমেদের নেতৃত্বে বিগত দুই বছর সোসাইটি যেভাবে গণমুখী হয়েছে তাতে আমরা বিশ্বাস করি সোসাইটির সম্মানিত ভোটারগণ নির্বাচনে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন। তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত সোসাইটির সাথে কমিউনিটির বর্তমান প্রজন্মের নানা গ্যাপ রয়েছে। আমরা নির্বাচিত হলে এই গ্যাপ পূরণের মধ্যদিয়ে আমরা সোসাইটিকে আরো গণমুখী সংগঠণে পরিণত করতে চাই। সেই সাথে সোসাইটির সাবেক কর্মকর্তাদের সম্মান জানিয়ে তাদের সহ পুরো কমিউনিটিকে সোসাইটিমুখী করতে চাই। তাছাড়া কার্যকরী কমিটির সভায় কমিউনিটির বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে আমন্ত্রণ জানিয়ে তাদেরকে সোসাইটির সেবায় অংশ নেয়ার সুযোগ দিয়ে সকল প্রবাসীকে সোসাইটিতে সম্পৃক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। মোট কথা সোসাইটির সাথে কমিউনিটির সেতু বন্ধনই ‘কামাল-সানী’ প্যানেলের মূল্য লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
কুনু-রহীমের বক্তব্য:
বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ‘কুনু-রহীম’ প্যানেলেরও প্রত্যাশা রোববারের নির্বাচনে তারাই বিজয়ী হবে। প্যানেলের কর্মকর্তারা মনে করেন কমিউনিটি সোসাইটির নেতৃত্বে পরিবর্তণ চায়। চায় নতুন মুখ। প্যানেলটিতে রয়েছে কমিউনিটির নবীণ-প্রবীণের সমন্বয়। প্যানেলটির সভাপতি পদপ্রার্থী আজমল হেসেন কুনু বলেন, কমিউনিটির চাওয়াতে সোসাইটির নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আমরা দারুণ আশাবাদী। কেননা, কমিউনিটির নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ আর যোগ্য প্রার্থী। তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে কমিউনিটির সুখে-দুখে জড়িত। সভাপতি হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছি বিয়ানীবাজার সামাজিক  ও সাংস্কৃতিক সমিতি ইউএসএ ইন্কক ও জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকা ইন্ক-এর মতো সামাজিক সংগঠনের। তিনি বলেন, ‘কুনু-রহীম প্যানেল নির্বাচিত হলে সোসাইটিকে সত্যিকারার্থেই প্রবাসীদের সংগঠনের পরিণত করা হবে।
‘কুনু-রহীম’ প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ও সোসাইটির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহীম হাওলাদার বলেন, বিগত সোসাইটির ইতিহাসে আমি সোসাইটিতে পাঁচবার বিভিন্ন পদে নির্বাচিত হয়েছি। একবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সহ সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলাম। সোসাইটির সাথে আমার প্রাণের সম্পর্ক। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে গত দুই বছর সাধ্যমত দায়িত্ব পালন করেছি। তিনি বলেন, প্রকাশ্যে ভোটার সংগ্রহ অভিযান, সোসাইটিতে কনস্যুলেট সেবার ব্যবস্থা প্রভৃতি কর্মকান্ডের মাধ্যমে আমরা সংগঠনটিকে আরো গণমুখী করেছি। সম্মানিত ভোটারগণ ‘কুনু-রহীম’ প্যানেলকে নির্বাচিত করলে আমরা আমাদের সেবা অব্যাহত রাখতে পারবো। তিনি বলেন, এই প্যানেলের সভাপতি পদপ্রার্থী আজমল হোসেন কুনু সহ সকল প্রার্থীই কমিউনিটির পরিচিত মুখ, সবাই যোগ্য। প্রার্থীদের কারো সম্পর্কে কোন ‘ব্যাড রেকর্ড’ নেই। তাই আমাদের প্রত্যাশা ভোটারগণ ‘কুনু-রহীম’ প্যানেলকেই নির্বাচিত করবেন।
কমিউনিটির প্রত্যাশা:
ব্রুকলীনের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, বাংলাদেশ আমেরিকান ডেমোক্রেটিক সোসাইটি ইন্্ক নিউইয়র্কের সেক্রেটারী কবীর চৌধুরী বলেন, প্রবাসে বাংলাদেশ, দেশের কৃষ্টি-কালচার, নতুন প্রজন্মকে দেশীয় কৃষ্টি-কালচারে সম্পৃক্ত করতে যারা ভূমিকা রাখতে পারবেন সোসাইটির নেতৃত্বে তারাই আশা উচিৎ। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সোসাইটি তথা কমিউনিটিতে প্রোডাকটিভ নেতৃত্ব চাই। গতানুগতিক কর্মকান্ড নয়, দেশ ও কমিউনিটির কল্যাণে উন্নয়নমূলক কর্মসূচীর মাধ্যমে মেইন স্ট্রীম পলিটিক্স-এ আমাদের অবস্থান দৃঢ় করতে পারবেন সোসাইটিতে তাদেরকেই নির্বাচিত করা উচিৎ।
জ্যামাইকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, বাংলাদেশ সোসাইটির আজীবন সদস্য, কসবা সোসাইটি অব ইউএসএ’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি একেএম সফিকুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ সোসাইটি, সোসাইটর নির্বাচন নিয়ে কমিউনিটির আগ্রহ থাকলেও অপ্রীয় হলেও সত্য যে, সোসাইটিতে যোগ্য নেতৃত্বের অভাব রয়েছে। উত্তর আমেরিকায় প্রবাসী বাংলাদেশীদের মাদর সংগঠন হিসেবে পরিচিত ও মূলধারায় স্বীকৃত বাংলাদেশ সোসাইটিতে আমরা যোগ্য নেতৃত্ব চাই। যে নেতৃত্ব কমিউনিটিকে ঐক্যবদ্ধ করবে, সোসাইটিকে সত্যিকারার্থেই সর্ববৃহৎ সংগঠনে পরিণত করবে, প্রবাসীর কল্যাণে ভূমিকা রাখবে। তিনি বলেন, কোন ব্যক্তি, দল বা গোষ্ঠীর পকেট সংগঠন বা নেতৃত্ব চাইনা বাংলাদেশ সোসাইটিতে। সোসাইটিতে চাই ‘ভোট ব্যাংক’ সংস্কৃতির অবসান। অর্থের জোড়ে সোসাইটিতে সদস্য বানানো বা ভোট কেনা-বেচার অবসান চাই। তাই ভোটারদেরকে বিবেক-বিবেচনা মাথায় রেখে নির্বাচনে ভোট দিতে হবে।
ব্রঙ্কসের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও নিরব রেষ্টুরেন্টের স্বত্তাধিকারী বখতিয়ার রহমান খোকন সোসাইটির নির্বাচন সম্পর্কে ক্ষোভের সাথে বলেন,‘উই আর নট ফর সেল’। আমরা ব্রঙ্কসে কেন্দ্র চেয়েছিলাম। এনিয়ে কমিউনিটির কতিপয় নেতৃবৃন্দ ও সোসাইটির নির্বাচন কমিশন ‘ডারটি গেম’ খেলেছেন। এই ‘ডার্টি গেম’ এর প্রতিবাদে আমি ভোটদান থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তারপরও বলবো সোসাইটিতে আমরা যোগ্য নেতৃত্ব চাই। সোসাইটির কর্মকর্তারা কমিউনিটির সেবার নামে ফটোসেশন নিয়ে ব্যস্ত থাকে। আমরা এমন কর্মকর্তা বা নেতৃত্ব চাই না। তিনি বলেন, আমাদের দেশ বাংলাদেশ। এই প্রবাসে সবাই মিলে এক টেবিলে বসার-খাওয়ার, এক সাথে বসে দেশ ও কমিউনিটির কল্যাণে কাজ করার নেতৃত্ব চাই।
ওজনপার্কের গ্লোবাল ট্রাভেলস-এর সত্তাধিকারী আলীম উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ সোসাইটিতে সুন্দর নেতৃত্ব চাই। যে নেতৃত্ব সকল প্রবাসী বাংলাদেশীদেরকে ঐক্যবদ্ধ করে কাজ করতে পারবেন তাদেরকে নির্বাচিত করা উচিৎ। আমরা সোসাইটিতে মারামারী, মামলা, দলাদলির নেতৃত্ব চাই না।