নিউইয়র্ক ০৮:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

টেক্সাস কারাগারে বাংলাদেশীদের মানবেতর জীবন

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১২:২৪:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ জুলাই ২০১৫
  • / ৬৫০ বার পঠিত

নিউইয়র্ক: ভাগ্য বদলাতে স্বপ্নের দেশে পাড়ি জমান অসংখ্য বাংলাদেশী। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রায় ২৫-৩০ লাখ টাকার চুক্তিতে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন দেশ পাড়ি দিয়ে সাধারণত টেক্সাসের সীমান্ত দিয়ে স্বপ্নের দেশে প্রবেশ করেন তারা। কখনো উত্তাল সাগর, কখনোবা গভীর অরণ্য ভেঙে স্বপ্নের দেশে পাড়ি জমানো অসংখ্য বাংলাদেশী মানবেতর জীবনযাপন করছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন কারাগারে। সম্প্রতি জীবন বাঁচাতে সহায়তা চেয়ে টেক্সাসের ‘এল পাসো’ এলাকার একটি কারাগার থেকে সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকার সম্পাদক বরাবর চিঠি লিখেছেন বাংলাদেশী মাহবুব রহমান নামের এক বন্দী। গেল মে মাসে পাঠানো ওই চিঠির ওপর ভিত্তি করে বাংলা পত্রিকা ও টাইম টেলিভিশনে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর নড়েচড়ে বসে কমিউনিটি নেতারা। আশ্বাস দেন তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসবেন। সে লক্ষ্যে কাজ করছেন বলেও বাংলা পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন তারা।
এরপর জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে আরেকটি চিঠি পাঠানো হয় ঐ কারাগার থেকে। প্রথম দফায় চিঠিতে বাংলাদেশী বন্দিরা তাদের এলাইন নম্বর’সহ প্রায় ৩০ জনের স্বাক্ষর দেন। কিন্তু দ্বিতীয় দফায় প্রায় ৭০জনের স্বাক্ষর রয়েছে চিঠিতে। কারাগার থেকে লেখা বাংলাদেশীদের চিঠি আসার পর এ বিষয়ে যাচাই-বাছাই করা হয়। খোঁজ নিয়ে ওই কারাগারে একাধিক বাংলাদেশী বন্দী থাকার সত্যতা পাওয়া গেছে। প্রায় ৭০ জনের স্বাক্ষরিত পত্র লেখক মাহবুব রহমান উল্লেখ করেন, ‘তিনিসহ প্রায় ৯০ জন বাংলাদেশী টেক্সাসের ‘এল পাসো’র এলাকার ওই কারাগারে আটক রয়েছেন। যাদের মধ্যে গেল মাসে বন্দিদের ৯ জনের অ্যাসাইলাম আবেদন বাতিল করে (রিমোভাল অর্ডার) দেয় আদালত। বলা হয়, আইনী সুযোগ থাকা স্বত্বেও বাংলাদেশ সম্পর্কে জঙ্গিবাদসহ নানা ইস্যুতে নেতিবাচক প্রচারণা থাকায় আদালতে হোমল্যান্ড সিকিউরিটির পক্ষের আইনজীবীরা জর্জের কাছে তা তুলে ধরেন। অপর দিকে আমাদের পক্ষে যে ৩জন আইনজীবী কাজ করছেন তারা আমাদের ভাষা বুঝতে পারছেন না। কারণ আমরা ভালো ইংরেজী জানিনা।’
পত্র লেখক জানান, ‘বাংলা পত্রিকা ও টাইম টিভিতে প্রচারিত সংবাদের পর অনেকেই আমাদের সাথে যোগাযোগ করেছেন। এ জন্য আমরা আপনাদের কাছে চির কৃতজ্ঞ। এছাড়াও ডাক যোগে পত্রিকার সাংবাদিক আমাদের কাছে (বাংলা পেপার) পাঠানোয় আমরা অনেক কিছু জানতে পেরেছি। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে ৯জনের রিমোভাল অর্ডার হয়েছে তাদের মধ্যে একজনকে জোরপূর্বক দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। যদিও আমাদের বাংলাদেশ কনস্যুলেট পার্সপোর্ট ইস্যু না করতো তাহলে তাকে দেশে ফেরত যেতে হতো না। বাংলাদেশ বিরোধী মিথ্যা প্রচারণা থাকায় আদালত আমাদের ব্যাপারে উদাসীন। অথচ আমাদের সাথে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে গুয়েতামালা, হুন্ডুরাস, মেক্সিকান (হেস্পানিক), আফ্রিকান অনেকে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে প্রবেশ করে। দুঃখের বিষয় আদালতে প্যারোল তাদের জন্য প্রযোজ্য হলেও বাংলাদেশীদের বেলা তা বাতিল করা হচ্ছে। একমাত্র বাংলাদেশী ছাড়া অন্য জাতিগোষ্ঠির সবাই প্যারোল নিয়ে কারাগার থেকে বের হতে পারছেন।’
মাহবুব জানান, ‘আমরা খুব মানবেতর জীবন-যাপন করছি। আমাদের আপনারা বাঁচান। কমিউনিটির ভালো এবং পরোপকারি ভাইদের কাছে আমাদের তথ্য পৌঁছে দিন। আর কনস্যুলেট যাতে কারো নামে পার্সপোর্ট ইস্যু না করে সে বিষয়ে অনুরোধ জানান।’ তিনি আরো বলেন, গেল ২২ এপ্রিল ক্যালিফোর্নিয়ার (ফ্লোরিডা) কনসাল জেনারেল শামসুল আলম চৌধুরী আমাদের সাথে দেখা করেছেন। তিনি ধৈর্য্য ধরে আমাদের সবার কথা শুনেছেন। আমরা উনাকে বলেছি যাতে কারো নামে পাসপোর্ট ইস্যু না করেন। উনি আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু একজনের নামে পার্সপোর্ট দেয়ায় তাকে জোরপূর্ব স্বাক্ষর নিয়ে দেশে পাঠানো হয়েছে। বাকীদের অন্যত্র কোন ডিটেনশন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমরা জানি না। এমতাবস্থায় ভালো আইনজীবীর সহযোগিতা দরকার। যিনি আমাদের বিষয়ে আদালতে সব তুলে ধরতে পারবেন। আশা করছি আপনারা সেই ব্যবস্থা নিবেন। আমরা কথা দিচ্ছি এই বন্দিদশা থেকে বের হয়ে আপনাদের দিকনির্দেশনা মতে চলবো।’
টেক্সাস কারাগারে বন্দি বাংলাদেশীদের বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে বাংলা পত্রিকা ও টাইম টিভি অফিসে বৈঠকে বসেন বাংলাদেশ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহীম হাওলাদার, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল চৌধুরী এবং বাংলাদেশী আইনজীবী এটর্নি শেখ সেলিম। তারা এ বিষয়ে বিভিন্ন খুঁটি-নাটি এবং আইনি দিক নিয়ে খোলা-মেলা আলোচনা করেন। এটর্নি শেখ সেলিমও কিছু পরামর্শ দেন।
এছাড়াও বাংলাদেশ সোসাইটি, জালালাবাদ এসোসিয়েশন একযোগে কাজ করবে বলে জানান। তারা বলেন, ‘প্রথমে বাংলাদেশী বন্দিদের মধ্যে কারা কোন অঞ্চলের সেটা খুঁজে বের করা হবে। যাতে করে অঞ্চল কিংবা এলাকাভিত্তিক সংগঠনগুলো অর্থনৈতিক কিংবা আইনী সহায়তায় এগিয়ে আসতে পারে।’
কমিউনিটির এই দু’নেতা আরো বলেন, ‘কেউ এগিয়ে না এলেও বাংলাদেশী হিসেবেই মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বন্দিদের ব্যাপারে আমরা কাজ করে যাবো। এছাড়াও সেখানকার বাংলাদেশ কনস্যুলেট ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে চিঠি দিয়ে পার্সপোর্ট ইস্যু না করার জন্য অনুরোধ জানাবো।’
এটর্নি শেখ সেলিম বলেন, ‘১/২ জন হলে আমি ফ্রি আইনী সেবা দিতাম। এছাড়াও তারা আমাদের অবস্থান থেকে অনেক দুরে। প্রথমে তাদেরকে ট্রান্সফার করে আনা গেলে ভালো। আর কমিউনিটি যদি এগিয়ে আসে তাহলে আমিও কাজ করবো। তবে ফি লাগবে। কারণ আইনজীবীরা ফি ছাড়া কাজ করা সম্ভব নয়। এখানে অনেক কেইস রয়েছে। সেগুলো পেন্ডিং হয়ে যাবে। ইত্যাদি। সর্বপোরি আমি আমার পক্ষ থেকে আইনী পরামর্শ দিয়ে যাবো।’ যদি টেক্সাসে যেতেই হয় তাহলে সে বিষয়ে কমিউনিটি নেতাদের উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান শেখ সেলিম।
বন্দি এসব বাংলাদেশীরা দালালকে লাখ লাখ টাকা দিয়ে ইন্ডিয়া-মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, মধ্যপ্রাচ্য ও ল্যাটিন আমেরিকার কয়েকটি দেশ ঘুরে স্বপ্নের দেশে প্রবেশ করে। যাদের মধ্যে এরকম অসংখ্য বাংলাদেশী বর্ডার ক্রসকরে ধরা পড়েন টেক্সাসের ইমিগ্রেশন পুলিশের হাতে। আইনগত রাজনৈতিক আশ্রয় এবং পেরোলের সুবিধা থেকে বঞ্চিত বন্দি ট্যাক্সাসের কারাগারে বন্দি এসব বাংলাদেশী, চিঠিতে তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসার আবেদন জানিয়েছেন কমিউনিটি নেতা ও আইনজীবীদের কাছে।
চিঠি প্রেরক মাহবুবুর রহমানের বর্তমান ঠিকানা
৮৯১৫ মনটানা এভিনিউ
এল পাসো, টেক্সাস ৭৯৯২৫

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

টেক্সাস কারাগারে বাংলাদেশীদের মানবেতর জীবন

প্রকাশের সময় : ১২:২৪:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ জুলাই ২০১৫

নিউইয়র্ক: ভাগ্য বদলাতে স্বপ্নের দেশে পাড়ি জমান অসংখ্য বাংলাদেশী। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রায় ২৫-৩০ লাখ টাকার চুক্তিতে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন দেশ পাড়ি দিয়ে সাধারণত টেক্সাসের সীমান্ত দিয়ে স্বপ্নের দেশে প্রবেশ করেন তারা। কখনো উত্তাল সাগর, কখনোবা গভীর অরণ্য ভেঙে স্বপ্নের দেশে পাড়ি জমানো অসংখ্য বাংলাদেশী মানবেতর জীবনযাপন করছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন কারাগারে। সম্প্রতি জীবন বাঁচাতে সহায়তা চেয়ে টেক্সাসের ‘এল পাসো’ এলাকার একটি কারাগার থেকে সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকার সম্পাদক বরাবর চিঠি লিখেছেন বাংলাদেশী মাহবুব রহমান নামের এক বন্দী। গেল মে মাসে পাঠানো ওই চিঠির ওপর ভিত্তি করে বাংলা পত্রিকা ও টাইম টেলিভিশনে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর নড়েচড়ে বসে কমিউনিটি নেতারা। আশ্বাস দেন তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসবেন। সে লক্ষ্যে কাজ করছেন বলেও বাংলা পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন তারা।
এরপর জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে আরেকটি চিঠি পাঠানো হয় ঐ কারাগার থেকে। প্রথম দফায় চিঠিতে বাংলাদেশী বন্দিরা তাদের এলাইন নম্বর’সহ প্রায় ৩০ জনের স্বাক্ষর দেন। কিন্তু দ্বিতীয় দফায় প্রায় ৭০জনের স্বাক্ষর রয়েছে চিঠিতে। কারাগার থেকে লেখা বাংলাদেশীদের চিঠি আসার পর এ বিষয়ে যাচাই-বাছাই করা হয়। খোঁজ নিয়ে ওই কারাগারে একাধিক বাংলাদেশী বন্দী থাকার সত্যতা পাওয়া গেছে। প্রায় ৭০ জনের স্বাক্ষরিত পত্র লেখক মাহবুব রহমান উল্লেখ করেন, ‘তিনিসহ প্রায় ৯০ জন বাংলাদেশী টেক্সাসের ‘এল পাসো’র এলাকার ওই কারাগারে আটক রয়েছেন। যাদের মধ্যে গেল মাসে বন্দিদের ৯ জনের অ্যাসাইলাম আবেদন বাতিল করে (রিমোভাল অর্ডার) দেয় আদালত। বলা হয়, আইনী সুযোগ থাকা স্বত্বেও বাংলাদেশ সম্পর্কে জঙ্গিবাদসহ নানা ইস্যুতে নেতিবাচক প্রচারণা থাকায় আদালতে হোমল্যান্ড সিকিউরিটির পক্ষের আইনজীবীরা জর্জের কাছে তা তুলে ধরেন। অপর দিকে আমাদের পক্ষে যে ৩জন আইনজীবী কাজ করছেন তারা আমাদের ভাষা বুঝতে পারছেন না। কারণ আমরা ভালো ইংরেজী জানিনা।’
পত্র লেখক জানান, ‘বাংলা পত্রিকা ও টাইম টিভিতে প্রচারিত সংবাদের পর অনেকেই আমাদের সাথে যোগাযোগ করেছেন। এ জন্য আমরা আপনাদের কাছে চির কৃতজ্ঞ। এছাড়াও ডাক যোগে পত্রিকার সাংবাদিক আমাদের কাছে (বাংলা পেপার) পাঠানোয় আমরা অনেক কিছু জানতে পেরেছি। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে ৯জনের রিমোভাল অর্ডার হয়েছে তাদের মধ্যে একজনকে জোরপূর্বক দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। যদিও আমাদের বাংলাদেশ কনস্যুলেট পার্সপোর্ট ইস্যু না করতো তাহলে তাকে দেশে ফেরত যেতে হতো না। বাংলাদেশ বিরোধী মিথ্যা প্রচারণা থাকায় আদালত আমাদের ব্যাপারে উদাসীন। অথচ আমাদের সাথে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে গুয়েতামালা, হুন্ডুরাস, মেক্সিকান (হেস্পানিক), আফ্রিকান অনেকে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে প্রবেশ করে। দুঃখের বিষয় আদালতে প্যারোল তাদের জন্য প্রযোজ্য হলেও বাংলাদেশীদের বেলা তা বাতিল করা হচ্ছে। একমাত্র বাংলাদেশী ছাড়া অন্য জাতিগোষ্ঠির সবাই প্যারোল নিয়ে কারাগার থেকে বের হতে পারছেন।’
মাহবুব জানান, ‘আমরা খুব মানবেতর জীবন-যাপন করছি। আমাদের আপনারা বাঁচান। কমিউনিটির ভালো এবং পরোপকারি ভাইদের কাছে আমাদের তথ্য পৌঁছে দিন। আর কনস্যুলেট যাতে কারো নামে পার্সপোর্ট ইস্যু না করে সে বিষয়ে অনুরোধ জানান।’ তিনি আরো বলেন, গেল ২২ এপ্রিল ক্যালিফোর্নিয়ার (ফ্লোরিডা) কনসাল জেনারেল শামসুল আলম চৌধুরী আমাদের সাথে দেখা করেছেন। তিনি ধৈর্য্য ধরে আমাদের সবার কথা শুনেছেন। আমরা উনাকে বলেছি যাতে কারো নামে পাসপোর্ট ইস্যু না করেন। উনি আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু একজনের নামে পার্সপোর্ট দেয়ায় তাকে জোরপূর্ব স্বাক্ষর নিয়ে দেশে পাঠানো হয়েছে। বাকীদের অন্যত্র কোন ডিটেনশন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমরা জানি না। এমতাবস্থায় ভালো আইনজীবীর সহযোগিতা দরকার। যিনি আমাদের বিষয়ে আদালতে সব তুলে ধরতে পারবেন। আশা করছি আপনারা সেই ব্যবস্থা নিবেন। আমরা কথা দিচ্ছি এই বন্দিদশা থেকে বের হয়ে আপনাদের দিকনির্দেশনা মতে চলবো।’
টেক্সাস কারাগারে বন্দি বাংলাদেশীদের বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে বাংলা পত্রিকা ও টাইম টিভি অফিসে বৈঠকে বসেন বাংলাদেশ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহীম হাওলাদার, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল চৌধুরী এবং বাংলাদেশী আইনজীবী এটর্নি শেখ সেলিম। তারা এ বিষয়ে বিভিন্ন খুঁটি-নাটি এবং আইনি দিক নিয়ে খোলা-মেলা আলোচনা করেন। এটর্নি শেখ সেলিমও কিছু পরামর্শ দেন।
এছাড়াও বাংলাদেশ সোসাইটি, জালালাবাদ এসোসিয়েশন একযোগে কাজ করবে বলে জানান। তারা বলেন, ‘প্রথমে বাংলাদেশী বন্দিদের মধ্যে কারা কোন অঞ্চলের সেটা খুঁজে বের করা হবে। যাতে করে অঞ্চল কিংবা এলাকাভিত্তিক সংগঠনগুলো অর্থনৈতিক কিংবা আইনী সহায়তায় এগিয়ে আসতে পারে।’
কমিউনিটির এই দু’নেতা আরো বলেন, ‘কেউ এগিয়ে না এলেও বাংলাদেশী হিসেবেই মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বন্দিদের ব্যাপারে আমরা কাজ করে যাবো। এছাড়াও সেখানকার বাংলাদেশ কনস্যুলেট ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে চিঠি দিয়ে পার্সপোর্ট ইস্যু না করার জন্য অনুরোধ জানাবো।’
এটর্নি শেখ সেলিম বলেন, ‘১/২ জন হলে আমি ফ্রি আইনী সেবা দিতাম। এছাড়াও তারা আমাদের অবস্থান থেকে অনেক দুরে। প্রথমে তাদেরকে ট্রান্সফার করে আনা গেলে ভালো। আর কমিউনিটি যদি এগিয়ে আসে তাহলে আমিও কাজ করবো। তবে ফি লাগবে। কারণ আইনজীবীরা ফি ছাড়া কাজ করা সম্ভব নয়। এখানে অনেক কেইস রয়েছে। সেগুলো পেন্ডিং হয়ে যাবে। ইত্যাদি। সর্বপোরি আমি আমার পক্ষ থেকে আইনী পরামর্শ দিয়ে যাবো।’ যদি টেক্সাসে যেতেই হয় তাহলে সে বিষয়ে কমিউনিটি নেতাদের উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান শেখ সেলিম।
বন্দি এসব বাংলাদেশীরা দালালকে লাখ লাখ টাকা দিয়ে ইন্ডিয়া-মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, মধ্যপ্রাচ্য ও ল্যাটিন আমেরিকার কয়েকটি দেশ ঘুরে স্বপ্নের দেশে প্রবেশ করে। যাদের মধ্যে এরকম অসংখ্য বাংলাদেশী বর্ডার ক্রসকরে ধরা পড়েন টেক্সাসের ইমিগ্রেশন পুলিশের হাতে। আইনগত রাজনৈতিক আশ্রয় এবং পেরোলের সুবিধা থেকে বঞ্চিত বন্দি ট্যাক্সাসের কারাগারে বন্দি এসব বাংলাদেশী, চিঠিতে তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসার আবেদন জানিয়েছেন কমিউনিটি নেতা ও আইনজীবীদের কাছে।
চিঠি প্রেরক মাহবুবুর রহমানের বর্তমান ঠিকানা
৮৯১৫ মনটানা এভিনিউ
এল পাসো, টেক্সাস ৭৯৯২৫