জয়ের অপহরণ নিয়ে কাল্পনিক খবর প্রচার ‘বাসস’র : মন্তব্যে অপারগতা প্রকাশ এমডি’র
- প্রকাশের সময় : ০৭:৪৯:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ মার্চ ২০১৫
- / ৪৫৭ বার পঠিত
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে এবং তাঁর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে যুক্তরাষ্ট্রে অপহরণ ও হত্যার ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সংবাদ প্রকাশ নিয়ে জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনা হলেও সরকার বিষয়টি সম্পর্কে কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি।
এদিকে, সজীব ওয়াজেদ জয় ৯ মার্চ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘বিএনপি আমাকে যুক্তরাষ্ট্রে অপহরণের পর হত্যার পরিকল্পনা করেছিল। এগুলো কোনো রাজনৈতিক আচরণ নয়। জঙ্গিদের আচরণ।’ অপহরণ ও হত্যাচেষ্টাকারীরা বিএনপির যত উচ্চ পর্যায়ের নেতৃত্বই হোন না কেন, তাঁদের খুঁজে বের করে বিচারের মুখোমুখি করার কথাও স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেছেন তিনি।
‘জাতির পিতা’র পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা-সংক্রান্ত আইনের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর নিরাপত্তায় বাড়তি কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না, সে সম্পর্কেও কিছু বলা হয়নি। তবে জানতে চাইলে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সূত্র বলেছে, সরকার জয়ের অপহরণের ষড়যন্ত্রের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে জযয়ের অপহরণ ও হত্যাচেষ্টার ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সে দেশ থেকে তথ্য সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তথ্য পাওয়ার পর কারও সম্পৃক্ততা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদি আমরা আকার-ইঙ্গিতেও কারও সম্পৃক্ততা পাই, তাহলেও বিষয়টা আমরা দেখব।’ বাংলাদেশের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইযয়ের একজন এজেন্টকে ঘুষ দিয়ে গোপন তথ্য সংগ্রহের চেষ্টার দায়ে সম্প্রতি তিন ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন নিউইয়ের্কের একটি আদালত। দন্ডিত এই তিনজনের মধ্যে একজন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত রিজভী আহমেদ। তিনি বিএনপির অঙ্গসংগঠন জাসাসের এক নেতার ছেলে। জয়কে ‘অপহরণের ষড়যন্ত্র’ বিষয়ে শুক্রবার (৬ মার্চ) রাতে সরকারি বার্তা সংস্থা বাসস প্রথম একটি খবর প্রচার করে। এরপর রোববার জাতীয় সংসদে সরকারি দল ও জাতীয় পার্টি ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ জানায়। সংসদের এই অনির্ধারিত আলোচনায় দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিরও দাবি জানানো হয়। এ সময় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, রিজভী আহমেদের বাবা মোহাম্মদ উল্লাহ মামুন জাসাসের নেতা। তাঁর সঙ্গে অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। তবে যোগাযোগ করা হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘আমাকে জড়িয়ে সংসদে যে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে, তা অনাকাংখিত ও ষড়যন্ত্রমূলক। অপহরণের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত কাউকে আমি চিনি না, জানিও না।’ শত নাগরিক কমিটি ছাড়া আর কোনো সংগঠনের সঙ্গে তাঁর সম্পৃক্ততা নেই বলেও জানান তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ওই রায়-সম্পর্কিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যায়, যে বাংলাদেশী নাগরিক সম্পর্কে তথ্য লেনদেনের চেষ্টার জন্য অভিযুক্ত ব্যক্তিদের শাস্তি দেওয়া হয়েছে, তাঁর কোনো পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। এতে কোনো অপহরণচেষ্টার কথাও নেই।
বাসস যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের বরাত দিয়ে যে সংবাদ প্রচার করে, তার সঙ্গে ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তির অসংগতির বিষয়ে সংস্থার প্রধান সম্পাদক ও মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তাৎক্ষণিকভাবে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করে জানান, বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে পরে জানাবেন। জয়ের অপহরণ ও হত্যাচেষ্টার বিষয়টি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দায়িত্বশীল কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তাঁরা কেউই এ ব্যাপারে কিছু বলতে রাজি হননি।