নিউইয়র্ক ০৮:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

জ্যামাইকা স্কুলে সন্ত্রাস আতঙ্ক : রেড এলার্ট জারি, শ্বাসরুদ্ধকর কয়েক ঘন্টা

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৯:৩৮:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০১৪
  • / ৭৩৫ বার পঠিত

নিউইয়র্ক: বাংলাদেশী অধ্যুষিত জ্যামাইকার হীলসাইড স্কুল ক্যাম্পাসে মুখোশধারীদের হামলার আশঙ্কার বৃহস্পতিবার রেড এলার্ট জারি করা হয় আশে-পাশের পুরো এলাকায়। পরে জানা যায় এটা ছিলো নিছক একটি ভুল বুঝাবুঝির ঘটনা। কিছু শিক্ষার্থী লুকিয়ে পেছনের দরজা দিয়ে বের হওয়ার সময় কেউ একজন মুখোশধারি মনে করে পুলিশকে খবর দেয়। অতিরিক্ত পুলিশি উপস্থিতিতে মুহুর্তেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলকায়। বড় ধরণের কোন ঘটনা না ঘটায় সস্তি নেমে আসে শিক্ষার্থীদের মাঝে। ১৮ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরের পর এ ঘটনার অবতারণা ঘটে। মুখোশধারীদের অনুপ্রবেশ আশঙ্কায় নড়ে-চড়ে বসে এনওয়াইপিডি। জ্যামাইকার হীলসাইডের গোথিক ড্রাইভ এলাকার স্কুলটিকে ঘিরে দুপুরের পর হঠাৎই শুরু হয় হুলুস্থুল কান্ড। কেউ কিছু বুঝে উঠার আগেই পুরো এলাকায় মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ। এসময় জ্যামাইকার মুসলিম সেন্টারের পাশের এই স্কুলে মুখোশধারিদের হামলার আশঙ্কায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পুরে এলাকায় টানা কয়েকঘন্টার শাঁড়াষি অভিযান চালায় পুলিশ। তালাবদ্ধ করে দেয়া হয় স্কুলের প্রধান ফটক’সহ বিভিন্ন ক্লাসরুম।
পুলিশি তৎপরতায়, দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমে আসে। ধীরে ধীরে শিক্ষার্থীদের বের করে আনা হয়। গ্রুপ ভিত্তিক বেরিয়ে আশে শিক্ষার্থীরা। নিউ ইয়র্ক থেকে সম্প্রচারিত টাইম টেলিভিশন ও বাংলা পত্রিকার কাছে তুলে ধরে তাদের কয়েকঘন্টা অবরুদ্ধথাকার কথা। তারা বলে ‘আসলে পুরো ঘটনা ছিলো আমাদের ক্যাম্পাসের ক’জন শিক্ষার্থীর লুকিয়ে স্কুলে প্রবেশের অথবা বের হওয়ার ঘটনার জের। ক্লাস ফাঁকি দেয়া নাম না জানা ঐসব শিক্ষার্থী মুখ ঢেকে লুকিয়ে পেছনের দরজা দিয়ে প্রবেশ এবং বের হচ্ছিলো। বিষয়টি সিসি ক্যামেরাতে স্কুলের প্রিন্সিপাল স্যারের চোখে পড়ে। মুখোশ পরিহিত সন্ত্রাসী ভেবে যথারীতি তিনি হয়তো পুলিশে খবর দেন। মুহূর্তেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়। আমাদের তালাবদ্ধ করে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। মাথার উপরে চলে হেলিকপ্টার টহল। আমরা ভয়ে আঁতকে উঠি। তবে, স্বস্তি ফিরে পাচ্ছি এই ভেবে যে তেমন কোন ঘটনা ঘটেনি’।
সম্প্রতি পাকিস্তানের স্কুলে সন্ত্রাসী হামলার রেশ কাটতে না কাটতেই জ্যামাইকা হাইস্কুলে মুখোশ পরে ঢুকে পড়া আশঙ্কা থেকেই এই সর্তকতা জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের পাশাপাশি সংবাদমাধ্যম কর্মীরাও অবস্থান নেন স্কুল চত্বরে। তবে, নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগের কমিশনার উইলিয়াম ব্রেটন সংবাদ মাধ্যমকে জানান, ‘স্কুলটির প্রধান শিক্ষক ভিডিও মনিটরে দুই যুবককে মুখোশ পরে বিকল্প পথে স্কুলে প্রবেশ করতে দেখতে পান। তিনি আমাদের অবহিত করলে আমরাও বিষয়টি আমলে নিয়ে তল্লাশি চালাই’। তবে, এ বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে শিক্ষা বোর্ড জানিয়েছে সব ছাত্র নিরাপদে বের হতে পেরেছে। কোন ধরণের বিশৃঙ্খলা ঘটেনি। বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকায় হওয়ায় জ্যামাইকা হাইস্কুল ক্যাম্পাসে আমেরিকান-বাংলাদেশি অসংখ্য শিক্ষার্থী লেখাপড়া করে।  এ ঘটনায় কিছু সময়ের জন্য হলেও প্রবাসী ও অভিভাবকদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়েছে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা। এছাড়াও পাকিস্তানের একটি স্কুলে জঙ্গি হামলার দৃষ্টান্ত থেকে স্কুলের এমন ঘটনায়  চিন্তিত ও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা। গেল বছর এখানে গুলির ঘটনাও ঘটেছিল বলে জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা। উল্লেখ্য স্কুলটির পাশেই রয়েছে জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার। এছাড়াও স্কুল সংলগ্ন উন্মুক্ত মাঠেই প্রতিবছর ঈদের নামাজ আদায় করে থাকেন প্রবাসী বাংলাদেশীরা। স্কুলটিতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মোট ৫টি ক্যাম্পাস রয়েছে। এখানে সন্ধ্যার পরও ক্লাস করেন শিক্ষার্থীরা
বাংলাদেশী শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম জানান, ‘ঘটনার সময় ক্লাসের মধ্যে প্রায় দুই ঘণ্টা আটকা পড়েছিলাম। আমি’সহ অনেকেই অবরুদ্ধ ছিলাম ভেতরে। আমাদের প্রধান ফটক ও বিভিন্ন ক্লাসরুম তালাবদ্ধ করে দেয় প্রশাসন। আমরা কেবল ক্লাসরুমের দরজার লুকিং মিরর দিয়ে দেখতে পাই ভারী অস্ত্রসস্ত্র সজ্জিত পুলিশের সরব উপস্থিতি। এ সময় ক্লাসে ক্লাসে সাঁড়াশি অনুসন্ধান চালায় পুলিশ’। অন্যেিদক, স্কুল সংলগ্ন জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের একজন খাদেম ডা. মাকসুদুর রহমান জানান, ‘এ ঘটনায় কোন নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারে। বরং পুলিশ যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে পুরো এলাকা জুড়ে। কিন্তু ঘটনার শুরুর দিকে এলাকাবাসি কিছুটা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে’। (বাংলা পত্রিকা)

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

জ্যামাইকা স্কুলে সন্ত্রাস আতঙ্ক : রেড এলার্ট জারি, শ্বাসরুদ্ধকর কয়েক ঘন্টা

প্রকাশের সময় : ০৯:৩৮:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০১৪

নিউইয়র্ক: বাংলাদেশী অধ্যুষিত জ্যামাইকার হীলসাইড স্কুল ক্যাম্পাসে মুখোশধারীদের হামলার আশঙ্কার বৃহস্পতিবার রেড এলার্ট জারি করা হয় আশে-পাশের পুরো এলাকায়। পরে জানা যায় এটা ছিলো নিছক একটি ভুল বুঝাবুঝির ঘটনা। কিছু শিক্ষার্থী লুকিয়ে পেছনের দরজা দিয়ে বের হওয়ার সময় কেউ একজন মুখোশধারি মনে করে পুলিশকে খবর দেয়। অতিরিক্ত পুলিশি উপস্থিতিতে মুহুর্তেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলকায়। বড় ধরণের কোন ঘটনা না ঘটায় সস্তি নেমে আসে শিক্ষার্থীদের মাঝে। ১৮ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরের পর এ ঘটনার অবতারণা ঘটে। মুখোশধারীদের অনুপ্রবেশ আশঙ্কায় নড়ে-চড়ে বসে এনওয়াইপিডি। জ্যামাইকার হীলসাইডের গোথিক ড্রাইভ এলাকার স্কুলটিকে ঘিরে দুপুরের পর হঠাৎই শুরু হয় হুলুস্থুল কান্ড। কেউ কিছু বুঝে উঠার আগেই পুরো এলাকায় মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ। এসময় জ্যামাইকার মুসলিম সেন্টারের পাশের এই স্কুলে মুখোশধারিদের হামলার আশঙ্কায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পুরে এলাকায় টানা কয়েকঘন্টার শাঁড়াষি অভিযান চালায় পুলিশ। তালাবদ্ধ করে দেয়া হয় স্কুলের প্রধান ফটক’সহ বিভিন্ন ক্লাসরুম।
পুলিশি তৎপরতায়, দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমে আসে। ধীরে ধীরে শিক্ষার্থীদের বের করে আনা হয়। গ্রুপ ভিত্তিক বেরিয়ে আশে শিক্ষার্থীরা। নিউ ইয়র্ক থেকে সম্প্রচারিত টাইম টেলিভিশন ও বাংলা পত্রিকার কাছে তুলে ধরে তাদের কয়েকঘন্টা অবরুদ্ধথাকার কথা। তারা বলে ‘আসলে পুরো ঘটনা ছিলো আমাদের ক্যাম্পাসের ক’জন শিক্ষার্থীর লুকিয়ে স্কুলে প্রবেশের অথবা বের হওয়ার ঘটনার জের। ক্লাস ফাঁকি দেয়া নাম না জানা ঐসব শিক্ষার্থী মুখ ঢেকে লুকিয়ে পেছনের দরজা দিয়ে প্রবেশ এবং বের হচ্ছিলো। বিষয়টি সিসি ক্যামেরাতে স্কুলের প্রিন্সিপাল স্যারের চোখে পড়ে। মুখোশ পরিহিত সন্ত্রাসী ভেবে যথারীতি তিনি হয়তো পুলিশে খবর দেন। মুহূর্তেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়। আমাদের তালাবদ্ধ করে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। মাথার উপরে চলে হেলিকপ্টার টহল। আমরা ভয়ে আঁতকে উঠি। তবে, স্বস্তি ফিরে পাচ্ছি এই ভেবে যে তেমন কোন ঘটনা ঘটেনি’।
সম্প্রতি পাকিস্তানের স্কুলে সন্ত্রাসী হামলার রেশ কাটতে না কাটতেই জ্যামাইকা হাইস্কুলে মুখোশ পরে ঢুকে পড়া আশঙ্কা থেকেই এই সর্তকতা জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের পাশাপাশি সংবাদমাধ্যম কর্মীরাও অবস্থান নেন স্কুল চত্বরে। তবে, নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগের কমিশনার উইলিয়াম ব্রেটন সংবাদ মাধ্যমকে জানান, ‘স্কুলটির প্রধান শিক্ষক ভিডিও মনিটরে দুই যুবককে মুখোশ পরে বিকল্প পথে স্কুলে প্রবেশ করতে দেখতে পান। তিনি আমাদের অবহিত করলে আমরাও বিষয়টি আমলে নিয়ে তল্লাশি চালাই’। তবে, এ বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে শিক্ষা বোর্ড জানিয়েছে সব ছাত্র নিরাপদে বের হতে পেরেছে। কোন ধরণের বিশৃঙ্খলা ঘটেনি। বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকায় হওয়ায় জ্যামাইকা হাইস্কুল ক্যাম্পাসে আমেরিকান-বাংলাদেশি অসংখ্য শিক্ষার্থী লেখাপড়া করে।  এ ঘটনায় কিছু সময়ের জন্য হলেও প্রবাসী ও অভিভাবকদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়েছে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা। এছাড়াও পাকিস্তানের একটি স্কুলে জঙ্গি হামলার দৃষ্টান্ত থেকে স্কুলের এমন ঘটনায়  চিন্তিত ও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা। গেল বছর এখানে গুলির ঘটনাও ঘটেছিল বলে জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা। উল্লেখ্য স্কুলটির পাশেই রয়েছে জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার। এছাড়াও স্কুল সংলগ্ন উন্মুক্ত মাঠেই প্রতিবছর ঈদের নামাজ আদায় করে থাকেন প্রবাসী বাংলাদেশীরা। স্কুলটিতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মোট ৫টি ক্যাম্পাস রয়েছে। এখানে সন্ধ্যার পরও ক্লাস করেন শিক্ষার্থীরা
বাংলাদেশী শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম জানান, ‘ঘটনার সময় ক্লাসের মধ্যে প্রায় দুই ঘণ্টা আটকা পড়েছিলাম। আমি’সহ অনেকেই অবরুদ্ধ ছিলাম ভেতরে। আমাদের প্রধান ফটক ও বিভিন্ন ক্লাসরুম তালাবদ্ধ করে দেয় প্রশাসন। আমরা কেবল ক্লাসরুমের দরজার লুকিং মিরর দিয়ে দেখতে পাই ভারী অস্ত্রসস্ত্র সজ্জিত পুলিশের সরব উপস্থিতি। এ সময় ক্লাসে ক্লাসে সাঁড়াশি অনুসন্ধান চালায় পুলিশ’। অন্যেিদক, স্কুল সংলগ্ন জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের একজন খাদেম ডা. মাকসুদুর রহমান জানান, ‘এ ঘটনায় কোন নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারে। বরং পুলিশ যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে পুরো এলাকা জুড়ে। কিন্তু ঘটনার শুরুর দিকে এলাকাবাসি কিছুটা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে’। (বাংলা পত্রিকা)