জিয়াউর রহমান জাতির নিজস্ব পরিচয় তুলে ধরেন : ঐক্যের উপর গুরুত্বারোপ
- প্রকাশের সময় : ১২:৫৮:২১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩ জুন ২০১৫
- / ৮২৯ বার পঠিত
নিউইয়র্ক: বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের (বীরোত্তম) ৩৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ছিলেন আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার। তিনিই জাতির সঙ্কটময় মুহূর্তে বারবার দাঁড়িয়েছেন নির্ভয়ে, মাথা উঁচু করে। বিপর্যস্ত জাতিকে রক্ষা করেছেন সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে। বক্তারা বলেন, ১৯৭১ সালের উত্তাল মার্চে জিয়াউর রহমানের কণ্ঠে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিশেহারা জাতিকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার সাহস জুগিয়েছে। স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েই তিনি ক্ষান্ত থাকেননি, দেশমাতৃকার মুক্তির জন্য হানাদারদের বিরুদ্ধে সেক্টর কমান্ডার ও জেড ফোর্সের অধিনায়ক হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার অবদান ও অতুলনীয় ভূমিকা ইতিহাসে উজ্জ্বল হয়ে আছে।
সিটির জ্যাকসন হাইটসের জুইস সেন্টারে গত ৩১ মে রোববার সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি এই আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়াজন করে। শহীদ জিয়াকে উৎসর্গ করা মঞ্চে অতিথি বিহীন ব্যতিক্রমী এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. মজিবুর রহমান মজুমদার। সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন সংগঠনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লু। সভায় উপস্থিত দলীয় নেতা-কর্মীদের পরিচয় করিয়ে দেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি সামসুল ইসলাম মজনু।
সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন নিউজার্সী বিএনপি’র সভাপতি আলহাজ জোবায়ের আলী এবং সভা শেষে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেন যুবদল নেতা আমানত হোসেন আমান। বিএনপি নেতা ডা. শামীম দেওয়ান ও যুক্তরাষ্ট্র যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ আহমদ যৌথভাবে সভাটি পরিচালনা করেন।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক সহ সভাপতি ইলিয়াস আহমেদ মাস্টার, শামসুল ইসলাম মজনু, আনোয়ার হোসেন, মাহমুদ চৌধুরী, মোহাম্মদ আবুল কাশেম, ও নিয়াজ আহমেদ, সালাহউদ্দিন আহমেদ মুক্তি আন্দোলন-এর আহ্বায়ক এডভোকেট খায়রুল বাশার, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ছৈয়দুল হক, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতা রফিকুল মাওলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা সুরুজ্জামান, যুক্তরাষ্ট্র যুবদলের সভাপতি জাকির এইচ চৌধুরী, প্রফেসর রফিকুল ইসলাম, আবু সুফিয়ান, মাকসুদুল হক চৌধুরী, ডা. তারেক জামান, এবাদ চৌধুরী, মার্শাল মুরাদ, মোহাম্মদ আলী রাজা, তরিকুল্লাহ চৌধুরী, আমানত হোসেন আমান, শামীম মাহমুদ, রেজাউল আজাদ ভুঁইয়া, রেজাউল করিম রেজা, বিলাল আহমেদ চৌধুরী, শেখ হায়দার আলী, বদিউল আলম, আফরোজা বেগম রোজী, মির্জা মামুন চৌধুরী, শাহাদত হোসেন রাজু, হামিদুর রহমান, সাইফুর খান হারুন, নাজিম চৌধুরী রিংকু, হেলালুর রহমান, রেজাউল হাসান রেজা, আমজাদ হোসেন আমান ও ফারুক চৌধুরী প্রমুখ।
সভায় বক্তারা আরো বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর অস্থিতিশীল ও অনিশ্চিত এক পরিস্থিতি থেকে দেশ মুক্তি পায় সাতই নভেম্বরের ঐতিহাসিক সিপাহী-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে। আর এই বিপ্লবের প্রাণ পুরুষ ছিলেন জিয়াউর রহমান। তিনি একদলীয় বাকশালের রাহুমুক্ত করে দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। নিশ্চিত করেন বাক-ব্যক্তি ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা। বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের কালজয়ী দর্শনের প্রবক্তা জিয়াউর রহমান জাতির নিজস্ব পরিচয় তুলে ধরেন। তার অন্যতম উপহার বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের পতাকাবাহী রাজনৈতিক দল ‘বিএনপি’। তার শাহাদাতের পর তার সহধর্মিনী বেগম খালেদা জিয়া দলের হাল ধরেন। তার প্রতিষ্ঠিত দল তিনবার জনগণের ভোটে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পায়।
সভায় ডা. মজিবুর রহমান মজুমদার বলেন, একাত্তরের উত্তাল মার্চে স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান শেখ মুজিবের পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্নে বিষ ঢেলে দিয়েছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি জিয়াকে হত্যা করা হয়। জিয়া হত্যাকান্ডের সঠিক তদন্ত হলে বেরিয়ে আসবে আসলে তাঁর হত্যাকান্ডের সাথে কারা জড়িত। আগামীতে বিএনপি তাঁর এ হত্যাকান্ডের অবশ্যই বিচার করবে।
জিল্লুর রহমান জিল্লু বলেন, সাম্প্রতি য্ক্তুরাজ্যে বিএনপির নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতা-কর্মিরাও আশা করছেন একটি সুষ্ঠ ও সুন্দর কমিটির। অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্র বিএনপিরও কমিটির ঘোষণা আসবে। তবে তার আগে আমাদের নিজেদেরকে সকল বিভেদ মিটাতে হবে। আভ্যন্তরীন কোন্দল দূর করতে না পারলে আমরা কখনই সুন্দর কমিটি উপহার পাবো না। তাই যুক্তরাষ্ট্র বিএনপিকে শক্তিশালী করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদের মতো ইলিয়াস আলীকে অতিসত্ত্বর তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিন। তা নাহলে বিএনপি আবারো নতুন কর্মসূচির ডাক দেবে।
অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটি পেতে হলে আমাদেরকে আরো ধৈর্য্য ধরে এগিয়ে যেতে হবে। রাষ্ট্রপতি জিয়ার আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য যে সংগ্রাম চলছে, এর সাথে একাত্ব হয়ে সকলকে কাজ করতে হবে। মন থেকে মুছে ফেলতে হবে সকল হিংসা ও বিভেদ। তবেই আমাদের নতুন কমিটির আশা পূরণ হবে।