নিউইয়র্ক: জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকার এক মতবিনিময় সভায় সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আমিরাত এয়ার লাইন্সের সরাসারি ‘ফ্লাই দুবাই’ ফ্লাইট পুন: চালুর দাবীতে আন্দোলনের ডাক দেয়া হয়েছে। সভায় দাবীটি আদায়ে নানা কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়েছে। সভায় কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ দুবাই-সিলেট রুটের ‘ফ্লাই দুবাই’ বন্ধ থাকায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং অবিলম্বে রুটটি চালুর দাবী জানান। সভায় নেতৃবৃন্দ এই দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত ভবিষ্যতে নিউইয়র্ক সফররত সরকারের মন্ত্রীদের কালো পতাকা প্রদর্শন, দাবীর সমর্থনে অর্থমন্ত্রীর সাথে অনতিবিলম্বে ফোনালাপ করে মন্ত্রীর সহযোগিতা কামনার পরামর্শ দেন। পাশাপাশি বৃহত্তর সিলেটের এমপিসহ দেশ ও প্রবাসের সকল জালালাবাদ এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দের সহযোগিতাও কামনা করে ‘ফ্লাই দুবাই’ ফ্লাইট বাতিলের বিরুদ্ধে স্বোচ্চার হওয়ার জন্য দলমত নির্বিশেষে সকল জালারাবাদবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। সভায় প্রয়োজনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ কন্সুলেটের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করারও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এছাড়া দাবীর সমর্থনে ওয়েব সাইট ও ফেইসবুক চালুসহ সকল প্রকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাহায্যে সকল জালালাবাদবাসীর সহযোগিতা কামনা করা হয়।
সিটির এস্টোরিয়াস্থ জালালাবাদ এসোসিয়েশনের অফিসে গত ১৭ মে রোববার সন্ধ্যায় এই সভার আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন এসোসিয়েশনের সভাপতি বদরুল হোসেন খান। সভা পরিচালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল চৌধুরী। সভায় নিউইয়র্কে বসবাসরত বৃহত্তর সিলেটের সর্বস্তরের প্রবাসী বাংলাদেশী ও কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ অংশ নেন। খবর ইউএনএ’র।
সভায় আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সোসাইটি ইন্্ক নিউইয়র্কের সভাপতি আজমল হোসেন কুনু ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম হাওলাদার, সোসাইটির সদস্য মোহাম্মদ ফখর উদ্দীন, ব্রঙ্কস বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি আব্দুস শহীদ, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের উপদেষ্টা তোফায়েল আহমদ চৌধুরী, সাবেক সভাপতি আব্দুল বাসিত, এডভোকেট নাসির উদ্দীন, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মুকিত চৌধুরী ও গিয়াস উদ্দীন, কমিউনিটি নেতা নুরুল ইসলাম বতা, লোকমান হোসেইন লুকু, মোহাম্মদ আব্দুল মতিন, একলিমুজ্জামান নুনু, মাহবুব আহমদ চৌধুরী, বদরুজ্জামান চৌধুরী, আব্দুল বাছির খান, মিজানুর রহমান চৌধুরী, মোহাম্মদ বেলাল আহমদ, আকবর হোসেন, আতাউল গনি আসাদ, শেরওয়ান আহমদ চৌধুরী, এবাদ চৌধুরী, শেখ আতিকুল ইসলাম, মোহাম্মদ হেলিম উদ্দীন, সিটির কমিউনিটি বোর্ড মেম্বার মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির সভাপতি বিলাল চৌধুরী প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, বৃহত্তর সিলেটবাসী ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে বৈষম্যের শিকার হয়েছে। আমিরাতের ফ্লাইট বন্ধ হওয়া বৈষম্যের লক্ষন। যেখানে চট্ট্রগামে দৈনিক দুটি ফ্লাইট যাচ্ছে, সেখানে সিলেটে মাত্র একটি ফ্লাইট চালুর পর বন্ধ করে দেয়া উদ্দেশ্যমুলক। বাংলাদেশ বিমান কর্তৃপক্ষের অসহযোগিতার কারণেই ‘ফ্লাই দুবাই’ বন্ধ রয়েছে বলে তারা অভিযোগ করেন এবং দাবী আদায়ে সবাইকে দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
সভায় জালালাবাদ এসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা জানান, ‘ফ্লাই দুবাই’ চালুর দাবীতে এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে গত ৪ এপ্রিল জাতিসংঘের বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. একে আব্দুল মোমেনের মাধ্যমে প্রদত্ত স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। কিন্তু দু:খজনক হলেও সত্য যে, ঐ স্মারকলিপির ব্যাপারে আজো কোন প্রতিক্রিয়া সরকারের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
সভায় বক্তাদের কেউ কেউ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের সমালোচনা করে বলেন, তিনি একজন সিনিয়র মন্ত্রী। যিনি বৃহত্তর সিলেটের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বলে আমরা মনে করি। অথচ সিলেটের আমিরাতের ফ্লাইট বন্ধ হলেও তিনি এখন পর্যন্ত কোন প্রতিক্রিয়া দেখাননি। ‘ফ্লাই দুবাই’ চালুর জন্য অর্থমন্ত্রীর দৃর্ষ্টি আকর্ষন করে বক্তারা বলেন, তিনি চাইলে সহজেই এর সমাধান করতে পারেন। এজন্য অর্থমন্ত্রীর সাথে টেলিকনফারেন্সের বিষয়ে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভায় বক্তাদের অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সিলেট বিভাগ থেকে শুরু করে অনেক ক্ষেত্রেই আন্দোলন ছাড়া দাবী পূরণ হয়নি। সিলেটে ‘ফ্লাই দুবাই’ ফ্লাইট পুন: সরাসরি চালুর জন্য প্রয়োজন বৃহত্তর আন্দোলন।
সভায় ‘ফ্লাই দুবাই’ ফ্লাইট পুন: সরাসরি চালুর আন্দোলন ও বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়নে সমন্বয়কের দায়িত্ব পালনের জন্য জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জেড এ চৌধুরীকে দায়িত্ব দেয়া হয়।