নিউইয়র্ক ০৮:৫৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

কোকোর মৃত্যুর জন্য সরকার দায়ী : ড. ওসমান-খোকা

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৯:০৮:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ জানুয়ারী ২০১৫
  • / ১২৫৪ বার পঠিত

নিউইয়র্ক: শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর অকাল মৃত্যুতে নিউইয়র্কে একাধিক দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই সাথে গায়েবানা জানাজাও অনুষ্ঠিত হয়। শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
জ্যাকসন হাইটসে গায়েবানা জানাজা ও দোয়া: আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র নেতা-কর্মীদের উদ্যোগে গত ২৫ জানুয়ারী রোববার নিউইয়র্কে গায়েবানা জানাযা হয়েছে। জ্যাকসন হাইটসের ডাইভার্সিটি প্লাজায় বাদ মাগরিব এই জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিএনপি চেয়ারপার্সনের অন্যতম উপদেষ্টা ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ড. ওসমান ফারুক এবং কেন্দ্রীয় বিএনপি’র ভাইস-চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রী ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকা সহ যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী অংশ নেন। এসময় বিশেষ দোয়াও অনুষ্ঠিত হয়।
গায়েবানা জানাজায় ইমামতি করেন নিউইয়র্ক ষ্টেট বিএনপি’র সভাপতি মাওলানা ওয়ালিউল্লাহ মোহাম্মদ আতিকুল্লাহ। জানাজায় কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও দলের উল্লেখযোগ্য নেতৃবৃন্দের মধ্যে ডা. চৌধুরী সারোয়ারুল হাসান, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. মজিবুবুর রহমান মজুমদার, সাবেক সভাপতি আব্দুল লতিফ সম্রাট, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লু, সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি গিয়াস আহমেদ ও শরাফত হোসেন বাবু, সাবেক সহ সভাপতি সামসুল ইসলাম মজনু, মনজুর আহমেদ চৌধুরী ও আনোয়ার হোসেন, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক হেলাল উদ্দিন, নিয়াজ আহমেদ জুয়েল, আখতার হোসেন বাদল, ফিরোজ আহমেদ, কাজী সাখাওয়াত হোসেন আজম, সাবেক কোষাধ্যক্ষ জসিম ভূঁইয়া, যুক্তরাষ্ট্র যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক সৈয়দ এম রেজা, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আবু সাইদ আহমদ, কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এম এ বাতেন, যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রদলের একাংশের সভাপতি আতাউর রহমান আতা এবং অপরাংশের সভাপতি এম এ বাছিত, পেনসেলভেনিয়া বিএনপি’র সভাপতি শাহ ফরিদ ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুর খান হারুন, বিএনপি নেতা প্রফেসর রফিকুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম ডলার, এবাদ চৌধুরী, এমলাক হোসেন ফয়সাল, নূরুল আমীন পলাশ, সাইদুর রহমান সাঈদ, শামীম আহমেদ, এম এ বাসিত, শাহাদৎ হোসেন রাজু, সাজ্জাদ পারভেজ, যুক্তরাষ্ট্র জাসাস-এর সভাপতি ও কেন্দ্রীয় জাসাসের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক গোলাম ফারুক শাহীন, যুবদল নেতা আতিকুল হক আহাদ, আহবাব হোসেন চৌধুরী খোকন, আমানত হোসেন আমান, আনোয়ারুল হক লেবু, এমদাদ তরফদার, মহিদুল ইসলাম মুহিত, সৈয়দ এনাম আহমদ, এমদাদ তরফদার, মোহাম্মদ লোটাস, নওশাদ উদ্দিন মানিক, সুমন সামসুদ্দিন, মোহাম্মদ মাসুম, মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, ছাত্রদল নেতা সোয়েব আহমেদ চৌধুরী, তারিক আহমেদ, দেওয়ান রকি, আহমেদ চৌধুরী প্রমুখ।
জানাজা নামাজের পর উপস্থিত শোকার্ত দলীয় নেতা-কর্মী এবং মিডিয়াকর্মীদের উদ্দেশ্যে ড. ওসমান ফারুক বলেন, সরকার নির্যাতন চালিয়ে আরাফাত রহমান কোকোকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে। শুধু জিয়া পরিবারই নয় জাতীয়তাদী আদর্শের সব নেতা-কর্মী আজ আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতিহিংসার শিকার। তিনি বলেন, দেশে শেয়ারবাজারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বড় বড় দূর্নীতি হলেও সেব্যাপারে সরকারের কোন মাথাব্যথা নেই। অথচ দুদুক করা ছোট-খাটো মামলায় কোকোকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
ড. ওসমান ফারুক বলেন, শেখ হাসিনা সরকার দেশকে নির্যাতনের কারাগারে পরিণত করেছে। কোকোর মৃত্যুতে স্বাভাবিক কারনেই মা খালেদা জিয়া শোকহত। আমরাও শোকাহত। এই শোককে শক্তিতে পরিণত করে স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটাতে হবে।
সাদেক হোসেন খোকাও কোকোর অকাল মৃত্যুতে সরকারকে দায়ী করে বলেন, এই সরকার আবারো ১৯৭৫ সালের মতো বাকশালী আচরণ শুরু করেছে। তিনি বলেন, জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেগম খালেদা জিয়া বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া কথা বলেছেন, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বেগম খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারের কথা বলেছেন। তাদের এই কথা টেলিভিশনে দেখে আরাফাত রহমান কোকো হৃদরোগে আক্রান্ত হন এবং তাকে হাসপাতালে নেয়ার পথে মৃত্যুবরণ করেন।
সাদেক হোসেন খোকা বলেন, বেগম খালেদা জিয়া স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে ৯ বছর আন্দোলন করে যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শেখ হাসিনা সরকার সেই গণতন্ত্রকে দলীয়তন্ত্রে পরিণত করে। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের আচরণকে গণতন্ত্রের পরিপন্থি স্বৈরাচারী বলে উল্লেখ করে কোেেকার মৃত্যু শোককে শক্তিতে পরিণত করে হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে দেশ-প্রবাসে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহবান জানান।
অপরদিকে রোববার সন্ধ্যায় ব্রুকলীনে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. মজিবুর রহমান মজুমদারের আহ্বানে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী পালন ও কোকোর মৃত্যুতে শোক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ব্রুকলীনে দোয়া: প্রবাসী বাংলাদেশী অধ্যুষিত ব্রুকলীনের চার্চ-ম্যাকডোনাল্ড এলাকার প্রতিষ্ঠিত বায়তুল জান্নাহ মসজিদে গত ২৪ জানুয়ারী শনিবার বিকেলে এক অনুষ্ঠিত দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিএনপি সমর্থক প্রবাসী বাংলাদেশীরা শরীক হন। দোয়া মাহফিল শেষে মোনাজাতে আরাফাত রহমান কোকোর আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয়।
দোয়া মাহফিলে নিউইয়র্কে চিকিৎসাধীন বিএনপি’র ভাইস-চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা সহ অন্যান্যের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. মুজিবুর রহমান মজুমদার, সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি গিয়াস আহমেদ, সাবেক সহ সভাপতি অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, ব্রুকলীন বিএনপির সভাপতি কামাল উদ্দিন আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর সারওয়ার্দী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন ।
দোয়া মাহফিলের পর মিডিয়ার সাথে আলাপকালে সাদেক হোসেন খোকা বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর অকাল মৃত্যুতে তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনায় প্রবাসী বাংলাদেশীদের দোয়া চেয়েছেন। তিনি বলেন, কোকো রাজনীতি বিমুখ ছিলেন। অথচ তাকে রাজনৈতিক হয়রানির শিকার হয়ে দেশ ছাড়তে হয়েছে। তিনি বলেন, মা-ভাইসহ স্বজনদের থেকে দূরে থাকার কারণেই তিনি মৃত্যুর শিকার হয়েছেন।
সাদেক হোসেন খোকা অভিযোগ করে বলেন, কোকোর মৃত্যুতে তার মা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রীর সমবেদনা জানানো নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে। শেখ হাসিনা এমন সময় গিয়েছেন যখন খালেদা জিয়া ঘুমোচ্ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শেখ হাসিনার নিশ্চিত হয়ে সেখানে যাওয়া উচিত ছিল।
বিভিন্ন মহলের শোক: এদিকে আরাফাত রহমান কোকোর অকাল মৃত্যুতে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করে তার বিদেহী আতœর শান্তি কামনা করা হয়েছে।
যুবদল-ছাত্রদলের দোয়া মাহফিল: শহীদ জিয়া ও বেগম খালেদা জিয়ার কনিষ্ঠ পুত্র আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্র যুবদল ও ছাত্রদলের উদ্যোগে ২৫ জানুয়ারী রোববার সন্ধ্যায় দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। জ্যাকসন হাইটসের ফুডকোর্টে রেষ্টুরেন্টে আয়োজিত মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ আন্তর্জাতি বিষয়ক সম্পাদক এম এ বাতিন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক সহ সভাপতি হযরত আলী এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এস এম রেজা, বিএনপি নেতা আজহারুল হক মিলন ও গিয়াস উদ্দিন। মাহফিল পরিচালনা করেন ছাত্রদলের সভাপতি আতাউর রহমান আতা।
মাহফিলে দলীয় নেতা-কর্মীর মধ্যে রাশেদ চৌধুরী বিপ্লব, ফারুক হোসেন মজুমদার, দেওয়ান বাবুল, মাজহারুল ইসলাম জনি, তৌহিদুর রহমান, শেখ সিদ্দিক, শামীম আহমেদ, শেখ মালেক হোসেন, এম কাদের আযাদ, ছায়েদ আলী, রাজু আহমেদ টিপু, মোহাম্মদ জনি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন বলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
নিউইয়র্ক ষ্টেট ও সিটি যুবদল: শহীদ রাষট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং বিএনপির চেয়ারপারসন ও ২০ দলীয় জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কনিষ্ঠ পুত্র আরাফাত রহমান কোকোর অকাল মৃত্যুতে নিউইয়র্ক ষ্টেট ও সিটি যুবদল গভীর শোকা প্রকাশ করছে। সংগঠনের পক্স থেকে প্রদত্ত শেক বার্তায় শোককে শক্তিতে পরিনত করে জনগনের দাবী আদায়ের নেতৃত্বে জিয়া পরিবারের মনোবল ধীর রাখতে মহান আল্লাহ তায়ালার কৃপা কামনা করে বলা হয়: লক্ষ লক্ষ জিয়ার সৈনিকরা কোকো ভাইয়ের প্রতিচ্ছবি হয়ে তার মায়ের (খালেদা জিয়া) পাশে আছে। কোকো ভাই আমাদের মাঝে অমর হয়ে থাকবে। আরাফাত রহমান কোকোর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা ও শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান নিউইয়র্ক ষ্টেট যুবদলের সভাপতি কাজী আমিনুল ইসলাম স্বপন, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল এ ভূঁইয়া, নিউইয়র্ক সিটি যুবদলের সভাপতি বিলাল চৌধুরী ও সাধারন সম্পাদক শেখ হায়দার আলী।
শোক বার্তায় তারা বলেন, বেগম খালেদা জিয়া মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়ায় তাকে ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়ানোর খবর দেয়ার পরও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমবেদনা জানানোর নামে বিএনপির গুলশান কার্যালয়ের বাইরে তিন মিনিটের অবস্থান জনগনের কাছে তার উদ্দেশ্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। শেখ হাসিনার ‘অথর্ব উপদেষ্টারা’ তাকে সস্তা-বস্তাবন্দী উপদেশ দিয়ে জনপ্রিয়তার শূন্যের কোঠায় দাড় করিয়েছন। তারা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্রের কফিনে পেরেক মেরে আগুনে পুরিয়ে মানুষ হত্যার রাজনীতি করছে। সরকার যে অপকৌশল পথে চলছে তা দেশবাসীর কাছে আর অষ্পষ্ট নয়। বিএনপি ও যুবদল নেতৃবৃন্দ বলেন, লাশ ও শোকাহত পরিবারকে নিয়ে নোংরামী বন্ধ করুন, জনগনের অধিকার প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত গণতন্ত্রের আন্দোলন চলছে, চলবে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

কোকোর মৃত্যুর জন্য সরকার দায়ী : ড. ওসমান-খোকা

প্রকাশের সময় : ০৯:০৮:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ জানুয়ারী ২০১৫

নিউইয়র্ক: শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর অকাল মৃত্যুতে নিউইয়র্কে একাধিক দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই সাথে গায়েবানা জানাজাও অনুষ্ঠিত হয়। শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
জ্যাকসন হাইটসে গায়েবানা জানাজা ও দোয়া: আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র নেতা-কর্মীদের উদ্যোগে গত ২৫ জানুয়ারী রোববার নিউইয়র্কে গায়েবানা জানাযা হয়েছে। জ্যাকসন হাইটসের ডাইভার্সিটি প্লাজায় বাদ মাগরিব এই জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিএনপি চেয়ারপার্সনের অন্যতম উপদেষ্টা ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ড. ওসমান ফারুক এবং কেন্দ্রীয় বিএনপি’র ভাইস-চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রী ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকা সহ যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী অংশ নেন। এসময় বিশেষ দোয়াও অনুষ্ঠিত হয়।
গায়েবানা জানাজায় ইমামতি করেন নিউইয়র্ক ষ্টেট বিএনপি’র সভাপতি মাওলানা ওয়ালিউল্লাহ মোহাম্মদ আতিকুল্লাহ। জানাজায় কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও দলের উল্লেখযোগ্য নেতৃবৃন্দের মধ্যে ডা. চৌধুরী সারোয়ারুল হাসান, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. মজিবুবুর রহমান মজুমদার, সাবেক সভাপতি আব্দুল লতিফ সম্রাট, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লু, সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি গিয়াস আহমেদ ও শরাফত হোসেন বাবু, সাবেক সহ সভাপতি সামসুল ইসলাম মজনু, মনজুর আহমেদ চৌধুরী ও আনোয়ার হোসেন, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক হেলাল উদ্দিন, নিয়াজ আহমেদ জুয়েল, আখতার হোসেন বাদল, ফিরোজ আহমেদ, কাজী সাখাওয়াত হোসেন আজম, সাবেক কোষাধ্যক্ষ জসিম ভূঁইয়া, যুক্তরাষ্ট্র যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক সৈয়দ এম রেজা, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আবু সাইদ আহমদ, কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এম এ বাতেন, যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রদলের একাংশের সভাপতি আতাউর রহমান আতা এবং অপরাংশের সভাপতি এম এ বাছিত, পেনসেলভেনিয়া বিএনপি’র সভাপতি শাহ ফরিদ ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুর খান হারুন, বিএনপি নেতা প্রফেসর রফিকুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম ডলার, এবাদ চৌধুরী, এমলাক হোসেন ফয়সাল, নূরুল আমীন পলাশ, সাইদুর রহমান সাঈদ, শামীম আহমেদ, এম এ বাসিত, শাহাদৎ হোসেন রাজু, সাজ্জাদ পারভেজ, যুক্তরাষ্ট্র জাসাস-এর সভাপতি ও কেন্দ্রীয় জাসাসের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক গোলাম ফারুক শাহীন, যুবদল নেতা আতিকুল হক আহাদ, আহবাব হোসেন চৌধুরী খোকন, আমানত হোসেন আমান, আনোয়ারুল হক লেবু, এমদাদ তরফদার, মহিদুল ইসলাম মুহিত, সৈয়দ এনাম আহমদ, এমদাদ তরফদার, মোহাম্মদ লোটাস, নওশাদ উদ্দিন মানিক, সুমন সামসুদ্দিন, মোহাম্মদ মাসুম, মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, ছাত্রদল নেতা সোয়েব আহমেদ চৌধুরী, তারিক আহমেদ, দেওয়ান রকি, আহমেদ চৌধুরী প্রমুখ।
জানাজা নামাজের পর উপস্থিত শোকার্ত দলীয় নেতা-কর্মী এবং মিডিয়াকর্মীদের উদ্দেশ্যে ড. ওসমান ফারুক বলেন, সরকার নির্যাতন চালিয়ে আরাফাত রহমান কোকোকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে। শুধু জিয়া পরিবারই নয় জাতীয়তাদী আদর্শের সব নেতা-কর্মী আজ আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতিহিংসার শিকার। তিনি বলেন, দেশে শেয়ারবাজারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বড় বড় দূর্নীতি হলেও সেব্যাপারে সরকারের কোন মাথাব্যথা নেই। অথচ দুদুক করা ছোট-খাটো মামলায় কোকোকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
ড. ওসমান ফারুক বলেন, শেখ হাসিনা সরকার দেশকে নির্যাতনের কারাগারে পরিণত করেছে। কোকোর মৃত্যুতে স্বাভাবিক কারনেই মা খালেদা জিয়া শোকহত। আমরাও শোকাহত। এই শোককে শক্তিতে পরিণত করে স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটাতে হবে।
সাদেক হোসেন খোকাও কোকোর অকাল মৃত্যুতে সরকারকে দায়ী করে বলেন, এই সরকার আবারো ১৯৭৫ সালের মতো বাকশালী আচরণ শুরু করেছে। তিনি বলেন, জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেগম খালেদা জিয়া বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া কথা বলেছেন, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বেগম খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারের কথা বলেছেন। তাদের এই কথা টেলিভিশনে দেখে আরাফাত রহমান কোকো হৃদরোগে আক্রান্ত হন এবং তাকে হাসপাতালে নেয়ার পথে মৃত্যুবরণ করেন।
সাদেক হোসেন খোকা বলেন, বেগম খালেদা জিয়া স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে ৯ বছর আন্দোলন করে যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শেখ হাসিনা সরকার সেই গণতন্ত্রকে দলীয়তন্ত্রে পরিণত করে। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের আচরণকে গণতন্ত্রের পরিপন্থি স্বৈরাচারী বলে উল্লেখ করে কোেেকার মৃত্যু শোককে শক্তিতে পরিণত করে হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে দেশ-প্রবাসে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহবান জানান।
অপরদিকে রোববার সন্ধ্যায় ব্রুকলীনে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. মজিবুর রহমান মজুমদারের আহ্বানে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী পালন ও কোকোর মৃত্যুতে শোক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ব্রুকলীনে দোয়া: প্রবাসী বাংলাদেশী অধ্যুষিত ব্রুকলীনের চার্চ-ম্যাকডোনাল্ড এলাকার প্রতিষ্ঠিত বায়তুল জান্নাহ মসজিদে গত ২৪ জানুয়ারী শনিবার বিকেলে এক অনুষ্ঠিত দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিএনপি সমর্থক প্রবাসী বাংলাদেশীরা শরীক হন। দোয়া মাহফিল শেষে মোনাজাতে আরাফাত রহমান কোকোর আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয়।
দোয়া মাহফিলে নিউইয়র্কে চিকিৎসাধীন বিএনপি’র ভাইস-চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা সহ অন্যান্যের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. মুজিবুর রহমান মজুমদার, সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি গিয়াস আহমেদ, সাবেক সহ সভাপতি অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, ব্রুকলীন বিএনপির সভাপতি কামাল উদ্দিন আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর সারওয়ার্দী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন ।
দোয়া মাহফিলের পর মিডিয়ার সাথে আলাপকালে সাদেক হোসেন খোকা বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর অকাল মৃত্যুতে তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনায় প্রবাসী বাংলাদেশীদের দোয়া চেয়েছেন। তিনি বলেন, কোকো রাজনীতি বিমুখ ছিলেন। অথচ তাকে রাজনৈতিক হয়রানির শিকার হয়ে দেশ ছাড়তে হয়েছে। তিনি বলেন, মা-ভাইসহ স্বজনদের থেকে দূরে থাকার কারণেই তিনি মৃত্যুর শিকার হয়েছেন।
সাদেক হোসেন খোকা অভিযোগ করে বলেন, কোকোর মৃত্যুতে তার মা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রীর সমবেদনা জানানো নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে। শেখ হাসিনা এমন সময় গিয়েছেন যখন খালেদা জিয়া ঘুমোচ্ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শেখ হাসিনার নিশ্চিত হয়ে সেখানে যাওয়া উচিত ছিল।
বিভিন্ন মহলের শোক: এদিকে আরাফাত রহমান কোকোর অকাল মৃত্যুতে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করে তার বিদেহী আতœর শান্তি কামনা করা হয়েছে।
যুবদল-ছাত্রদলের দোয়া মাহফিল: শহীদ জিয়া ও বেগম খালেদা জিয়ার কনিষ্ঠ পুত্র আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্র যুবদল ও ছাত্রদলের উদ্যোগে ২৫ জানুয়ারী রোববার সন্ধ্যায় দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। জ্যাকসন হাইটসের ফুডকোর্টে রেষ্টুরেন্টে আয়োজিত মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ আন্তর্জাতি বিষয়ক সম্পাদক এম এ বাতিন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক সহ সভাপতি হযরত আলী এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এস এম রেজা, বিএনপি নেতা আজহারুল হক মিলন ও গিয়াস উদ্দিন। মাহফিল পরিচালনা করেন ছাত্রদলের সভাপতি আতাউর রহমান আতা।
মাহফিলে দলীয় নেতা-কর্মীর মধ্যে রাশেদ চৌধুরী বিপ্লব, ফারুক হোসেন মজুমদার, দেওয়ান বাবুল, মাজহারুল ইসলাম জনি, তৌহিদুর রহমান, শেখ সিদ্দিক, শামীম আহমেদ, শেখ মালেক হোসেন, এম কাদের আযাদ, ছায়েদ আলী, রাজু আহমেদ টিপু, মোহাম্মদ জনি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন বলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
নিউইয়র্ক ষ্টেট ও সিটি যুবদল: শহীদ রাষট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং বিএনপির চেয়ারপারসন ও ২০ দলীয় জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কনিষ্ঠ পুত্র আরাফাত রহমান কোকোর অকাল মৃত্যুতে নিউইয়র্ক ষ্টেট ও সিটি যুবদল গভীর শোকা প্রকাশ করছে। সংগঠনের পক্স থেকে প্রদত্ত শেক বার্তায় শোককে শক্তিতে পরিনত করে জনগনের দাবী আদায়ের নেতৃত্বে জিয়া পরিবারের মনোবল ধীর রাখতে মহান আল্লাহ তায়ালার কৃপা কামনা করে বলা হয়: লক্ষ লক্ষ জিয়ার সৈনিকরা কোকো ভাইয়ের প্রতিচ্ছবি হয়ে তার মায়ের (খালেদা জিয়া) পাশে আছে। কোকো ভাই আমাদের মাঝে অমর হয়ে থাকবে। আরাফাত রহমান কোকোর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা ও শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান নিউইয়র্ক ষ্টেট যুবদলের সভাপতি কাজী আমিনুল ইসলাম স্বপন, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল এ ভূঁইয়া, নিউইয়র্ক সিটি যুবদলের সভাপতি বিলাল চৌধুরী ও সাধারন সম্পাদক শেখ হায়দার আলী।
শোক বার্তায় তারা বলেন, বেগম খালেদা জিয়া মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়ায় তাকে ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়ানোর খবর দেয়ার পরও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমবেদনা জানানোর নামে বিএনপির গুলশান কার্যালয়ের বাইরে তিন মিনিটের অবস্থান জনগনের কাছে তার উদ্দেশ্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। শেখ হাসিনার ‘অথর্ব উপদেষ্টারা’ তাকে সস্তা-বস্তাবন্দী উপদেশ দিয়ে জনপ্রিয়তার শূন্যের কোঠায় দাড় করিয়েছন। তারা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্রের কফিনে পেরেক মেরে আগুনে পুরিয়ে মানুষ হত্যার রাজনীতি করছে। সরকার যে অপকৌশল পথে চলছে তা দেশবাসীর কাছে আর অষ্পষ্ট নয়। বিএনপি ও যুবদল নেতৃবৃন্দ বলেন, লাশ ও শোকাহত পরিবারকে নিয়ে নোংরামী বন্ধ করুন, জনগনের অধিকার প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত গণতন্ত্রের আন্দোলন চলছে, চলবে।