উৎসবমুখর পরিবেশে শাপলা ওয়েলফেয়ারের পূনর্মিূলনী অনুষ্ঠিত
- প্রকাশের সময় : ১১:১৮:১২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ এপ্রিল ২০১৫
- / ৭৫৩ বার পঠিত
নিউইয়র্ক: উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলো শাপলা ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েটস নিউইয়র্ক ইন্্ক’র বার্ষিক পূনর্মিলনী অনুষ্ঠান। সংগঠনের ১৯ বছর পূর্তি উপলক্ষে গত ৫ এপ্রিল রোববার সন্ধ্যায় সিটির উডসাইডস্থ গুলশান ট্যারেসে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটে নিযুক্ত কনসাল জেনরারেল শামীম আহসান। অনুষ্ঠানমালার মধ্যে ছিলো আলোচনা, সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নৈশভোজ।
সংগঠনের সভাপতি নূরুল হাসানের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি আজমল হোসেন কুনু, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহীম হাওলাদার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রানা ফেরদৌস চৌধুরী, এটর্নী মঈন চৌধুরী, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট এডভোকেট এন মজুমদার, সোসাইটির সহ সভাপতি ফারুক হোসেন মজুমদার ও বৃহত্তর কুমিল্লা সমিতির সাবেক সভাপতি আজাদ বাকের। এছাড়াও সংগঠনের সাবেক উপদেষ্টা পরিষদ মোহাম্মদ এস রহমান শামসু, আহম্মেদ হোসেন বাবু, রুহুল আমিন সিদ্দিকী, গোউস উদ্দিন খান, আমিনুল ইসলাম চৌধুরী, সোলাইমান ভূঁইয়া প্রমুখ মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন । অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সংগঠনের সহ সভাপতি আবু জাফর ইকরাম ও সাধারণ সম্পাদক এম হক সুমন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলোয়াত করে ছোটমনি আয়মান ইশরাক। পবিত্র গীতা থেকে পাঠ করেন শ্রী উত্তম কুমার মন্ডল। এরপর বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করার পর ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, ’৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধ আর যুক্তরাষ্ট্রের ৯/১১-এর ঘটনাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও রাজনৈতিক সহিংসতায় শাহাদাৎ বরণকারীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
এরপর অনুষ্ঠানে সংগঠনের ২০১৪-২০১৫ সালের কার্যকরী পরিষদ ও অনুষ্ঠানের উপ-কমিটিকে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। মঞ্চে উপবিষ্ট অতিথিদের ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করেন সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল মজিদ মাজেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক উত্তম কুমার মন্ডল, অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ হোসাইন, সহ অর্থ সম্পাদক ফরিদ হাছান, আহবায়ক মোহাম্মদ মোস্তফা রিপন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান প্রমুখ।
অনুষ্ঠনে চলতি বৎসর দুই জনকে সংগঠনের আজীবন সদস্য পদ প্রদান করার কথা জানানো হয়। সাংগঠনিক নিয়ম-নীতির আলোকে আজীবন সদস্যদ্বয় হলেন আবু জাফর ইকরাম (সদস্য নং ১৮৩) ও মোহাম্মদ এম. হক সুমন (সদস্য নং ১৮৪)। সভাপতি নুরুল হাছান তাদের আজীবন সনদ প্রদান করেন। এছাড়া সকল সদস্যদের সাথে মিলেমিশে এক সাথে সাংগঠনিক কার্যসম্পন্ন করায় কার্যকরী পরিষদের পক্ষ থেকে সভাপতি নুরুল হাছানকে সিনিয়র সহ-সভাপতি ও কার্যনির্বাহী সদস্য সাহিদ চৌধুরী মাক্কু সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করেন। অপরদিকে অনুষ্ঠানটি সফল করার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখায় সভাপতির একক সিদ্ধান্তে সর্বমোট চারজনকে ‘গিফট কার্ড’ প্রদান করা হয়। সম্মানিতরা হলেন- আবু জাফর ইকরাম, মোহাম্মদ এম হক সুমন, মোম্মদ মোস্তফা রিপন ও উত্তম কুমার মন্ডল।
অনুষ্ঠানে বক্তারা শাপলা ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েটস’র কর্মকান্ডের প্রশংসা করেন এবং সামাজিক কর্মকান্ডে আরো ভূমিকা রাখার জন্য নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানান। বক্তরা বলেন, শাপলা কমিউনিটিতে অনেক ভালো কাজের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। শাপলা এসোসিয়েটস হচ্ছে নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার সংগঠন। এই সংগঠনের অনেক সদস্য আজ কুমিউনিটির বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃত্ব দিচ্ছে।
অনুষ্ঠানে কনসাল জেনারেল শামীম আহসান বলেন, ১৯ বছর একটি মানুষের জীবনে পুরোপুরি যৌবন আসে। তাই সংগঠনটিরও যৌবন কাল এখন। তিনি সংগঠনের গঠনমূলক কাজের ধারা অব্যাহত রেখে দেশ ও প্রবাসে কল্যাণমূলক কাজ করার জন্য কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান এবং শাপলার সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
আজমল হোসেন কুনু বলেন, শাপলা এসোসিয়েট এই প্রবাসে একটি সুনামধন্য সামাজিক সংগঠন এবং সাংগঠনিক কর্মী তৈরী করে চলেছে। তিনি বলেন, শাপলার সদস্য হওয়ার কারণে এই প্রবাসে অনেকেই অন্যান্য সংগঠনের নেতৃত্ব দিতে পারছেন। শাপলা হচ্ছে নেতৃত্ব জন্মদানকারী সংগঠন।
আব্দুর রহিম হাওলাদার শাপলা এসোসিয়েটসকে ‘পারিবারিক মিলনমেলা’র কেন্দ্র উল্লেখ করেন এবং বাংলাদেশ সোসাইটি শাপলার সমাজকল্যাণমূলক সকল কাজে পাশে থাকবে বলে জানান।
সভাপতির বক্তব্যে নূরুল হাসান অনুষ্ঠানটি সফল করার জন্য সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় শাপলা ওয়েলফেয়ার ১৯ বছর পূর্তি করলো। এটি গৌরবের বিষয়। সবার সহযোগিতা পেলে ভবিষ্যতে আরো ভালো ও সুন্দর অনুষ্ঠান উপহার দেয়ার পতিশ্রুতি দেন তিনি।
অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক পর্বে মোহনা ও শ্রবন নৃত্য এবং রুবিনা, শিল্পী, মেহরুন আহদে ও রোকসানা মির্জা সঙ্গীত পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠান উপলক্ষে ‘হিরন্ময় শাপলা’ শীর্ষক স্মরণিকা প্রকাশ করা হয়। এটি সম্পাদনা করেন আবু জাফর ইকরাম।
অনুষ্ঠানটি সফল করতে মোহাম্মদ মোস্তফা রিপনকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি করা হয়। কমিটির সদস্যবৃন্দ হলেন মুহাম্মদ এফ ফখর, আবু জাফর ইকরাম, মোহাম্ম সোলায়মান ভূইয়া, মিজানুর রহমান, মোহাম্মদ হোসেন, এ কে এম কামাল উদ্দিন খান ও আহসানুল ইসলাম শিমুল। সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন সাহিদ চৌধুরী মাক্কু, আহমেদ হোসেন বাবু, মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ (মাজেদ), রহিম চৌধুরী, মীর এইচ জামান, মোহাম্মদ এম রহমান, মোহাম্মদ শাহজাহান মিয়া ও ফরিদ হাসান।
বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশী সপরিবারে অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন। উল্লেখ্য, টাইম টিভি অনুষ্ঠানটির অংশ বিশেষ সরাসরি সম্প্রচার করে।