নিউইয়র্ক ০৮:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

জলবায়ু পরিবর্তনে আয় কমবে সাধারণ মানুষের

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৬:২৪:০২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
  • / ৬ বার পঠিত

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে চরমভাবাপন্ন আবহাওয়ার কারণে ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী মানুষের আয় ১৯ শতাংশ কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর্থিক এই ক্ষতি শুধু সরকার ও বড় বাণিজ্যিক সংস্থার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে ব্যক্তি পর্যায়েও প্রভাব ফেলবে। প্রভাবশালী ‘নেচার’ জার্নালে প্রকাশিত নতুন এক গবেষণায় এ কথা বলা হয়েছে। জার্মানির পটসডাম ইনস্টিটিউট ফর ক্লাইমেট ইমপ্যাক্ট রিসার্চের গবেষকদের মধ্যে দুজন ম্যাক্সিমিলিয়ান কটজ ও লিওনি ওয়েনজ বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আয়ের ওপর এই প্রভাব পড়বে।

এমনকি জরুরি ভিত্তিতে কিছু ব্যবস্থা নিলেও কিছু ক্ষতি এড়ানো যাবে না। গবেষক দুজন বলেন, ‘এই ক্ষতিকর প্রভাবগুলো অনিবার্য এ অর্থে যে এর অনেক প্রভাবকেই ২০৪৯ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন রকম সম্ভাব্য কার্বন নিঃসরণ প্রভাব থেকে আলাদা করা যাবে না।’ গবেষণায় বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিলে দীর্ঘ মেয়াদে কিছুটা ক্ষতি কমতে পারে। স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক পরিবেশ গবেষক নোয়াহ ডিফেনবাউ বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হওয়া অর্থনৈতিক ক্ষতির দিকটি বিভিন্নভাবে প্রকাশ পাবে।

ঝড়-বন্যার মতো চরমভাবাপন্ন আবহাওয়ার কারণে যেমন সম্পত্তির মেরামতে ব্যয় বাড়বে তেমনি তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে কৃষি, শ্রমিকের উত্পাদনশীলতা এমনকি কখনো কখনো মানসিক সক্ষমতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার ব্যয় নিয়ে আলোচনায় বেশির ভাগ সময় তেল ও গ্যাসের ব্যবহার কমানো এবং বায়ুমণ্ডলে নিঃসৃত কার্বন সরানোর মতো ব্যয়বহুল প্রযুক্তি নিয়ে কথা ওঠে। তবে এই গবেষণায় বলা হচ্ছে, কার্বন হ্রাসের জন্য পরিবেশ অনুকূল প্রকল্পে বিনিয়োগ গুরুত্বপূর্ণ হলেও এর মধ্যেই স্পষ্ট স্বল্প মেয়াদের অর্থনৈতিক অভিঘাত ঠেকাতে যথেষ্ট হবে না। গবেষকদের দাবি, জলবায়ু পরিবর্তনের আশু অর্থনৈতিক ক্ষতি এরই মধ্যে সংকট মোকাবেলার খরচকে ছাড়িয়ে গেছে।

প্যারিস জলবায়ু চুক্তি মেনে চললে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ২০৫০ সালের মধ্যে ছয় ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করা দরকার। তবে একই সময়ের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে ৩৮ ট্রিলিয়ন ডলার। গবেষক ম্যাক্সিমিলিয়ান কটজ ও লিওনি ওয়েনজ জানান, অভিযোজন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অর্থনৈতিক ক্ষতি কিছুটা কমতে পারে। ক্যালিফোর্নিয়ার সান ডিয়েগো ইউনিভার্সিটির স্ক্রিপস ইনস্টিটিউট অব ওশানোগ্রাফির গবেষক বার্নার্দো বাস্তিয়েন সাংবাদিকদের বলেন, অভিযোজন কৌশল গ্রহণের ফলে দীর্ঘ মেয়াদে অর্থ সাশ্রয়ে কিছুটা সুবিধা পাওয়া যেতে পারে। উদাহরণ হিসেবে ক্যালিফোর্নিয়ায় দাবানল প্রতিরোধে গৃহীত পদক্ষেপের কথা বলেন তিনি।

গবেষণাটিতে আরো বলা হয়েছে, ২০৪৯ সালের আগেই কিছু ক্ষয়ক্ষতি পরিলক্ষিত হবে। সামনের দশকগুলোতে এগুলো প্রকাশ পেতে থাকবে বলে মনে করেন গবেষকরা। আগামী বছরগুলোতে বিশ্বের কোন অঞ্চল কী পরিমাণ অর্থনৈতিক ক্ষতির মধ্যে পড়তে যাচ্ছে, সে ব্যাপারেও ধারণা দিয়েছেন তাঁরা। আগামী ২৬ বছরে উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলোতে আয় হ্রাস পাবে ১১ শতাংশ এবং দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকায় কমবে ২২ শতাংশ। সূত্র : এনডিটিভি

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

জলবায়ু পরিবর্তনে আয় কমবে সাধারণ মানুষের

প্রকাশের সময় : ০৬:২৪:০২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে চরমভাবাপন্ন আবহাওয়ার কারণে ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী মানুষের আয় ১৯ শতাংশ কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর্থিক এই ক্ষতি শুধু সরকার ও বড় বাণিজ্যিক সংস্থার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে ব্যক্তি পর্যায়েও প্রভাব ফেলবে। প্রভাবশালী ‘নেচার’ জার্নালে প্রকাশিত নতুন এক গবেষণায় এ কথা বলা হয়েছে। জার্মানির পটসডাম ইনস্টিটিউট ফর ক্লাইমেট ইমপ্যাক্ট রিসার্চের গবেষকদের মধ্যে দুজন ম্যাক্সিমিলিয়ান কটজ ও লিওনি ওয়েনজ বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আয়ের ওপর এই প্রভাব পড়বে।

এমনকি জরুরি ভিত্তিতে কিছু ব্যবস্থা নিলেও কিছু ক্ষতি এড়ানো যাবে না। গবেষক দুজন বলেন, ‘এই ক্ষতিকর প্রভাবগুলো অনিবার্য এ অর্থে যে এর অনেক প্রভাবকেই ২০৪৯ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন রকম সম্ভাব্য কার্বন নিঃসরণ প্রভাব থেকে আলাদা করা যাবে না।’ গবেষণায় বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিলে দীর্ঘ মেয়াদে কিছুটা ক্ষতি কমতে পারে। স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক পরিবেশ গবেষক নোয়াহ ডিফেনবাউ বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হওয়া অর্থনৈতিক ক্ষতির দিকটি বিভিন্নভাবে প্রকাশ পাবে।

ঝড়-বন্যার মতো চরমভাবাপন্ন আবহাওয়ার কারণে যেমন সম্পত্তির মেরামতে ব্যয় বাড়বে তেমনি তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে কৃষি, শ্রমিকের উত্পাদনশীলতা এমনকি কখনো কখনো মানসিক সক্ষমতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার ব্যয় নিয়ে আলোচনায় বেশির ভাগ সময় তেল ও গ্যাসের ব্যবহার কমানো এবং বায়ুমণ্ডলে নিঃসৃত কার্বন সরানোর মতো ব্যয়বহুল প্রযুক্তি নিয়ে কথা ওঠে। তবে এই গবেষণায় বলা হচ্ছে, কার্বন হ্রাসের জন্য পরিবেশ অনুকূল প্রকল্পে বিনিয়োগ গুরুত্বপূর্ণ হলেও এর মধ্যেই স্পষ্ট স্বল্প মেয়াদের অর্থনৈতিক অভিঘাত ঠেকাতে যথেষ্ট হবে না। গবেষকদের দাবি, জলবায়ু পরিবর্তনের আশু অর্থনৈতিক ক্ষতি এরই মধ্যে সংকট মোকাবেলার খরচকে ছাড়িয়ে গেছে।

প্যারিস জলবায়ু চুক্তি মেনে চললে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ২০৫০ সালের মধ্যে ছয় ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করা দরকার। তবে একই সময়ের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে ৩৮ ট্রিলিয়ন ডলার। গবেষক ম্যাক্সিমিলিয়ান কটজ ও লিওনি ওয়েনজ জানান, অভিযোজন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অর্থনৈতিক ক্ষতি কিছুটা কমতে পারে। ক্যালিফোর্নিয়ার সান ডিয়েগো ইউনিভার্সিটির স্ক্রিপস ইনস্টিটিউট অব ওশানোগ্রাফির গবেষক বার্নার্দো বাস্তিয়েন সাংবাদিকদের বলেন, অভিযোজন কৌশল গ্রহণের ফলে দীর্ঘ মেয়াদে অর্থ সাশ্রয়ে কিছুটা সুবিধা পাওয়া যেতে পারে। উদাহরণ হিসেবে ক্যালিফোর্নিয়ায় দাবানল প্রতিরোধে গৃহীত পদক্ষেপের কথা বলেন তিনি।

গবেষণাটিতে আরো বলা হয়েছে, ২০৪৯ সালের আগেই কিছু ক্ষয়ক্ষতি পরিলক্ষিত হবে। সামনের দশকগুলোতে এগুলো প্রকাশ পেতে থাকবে বলে মনে করেন গবেষকরা। আগামী বছরগুলোতে বিশ্বের কোন অঞ্চল কী পরিমাণ অর্থনৈতিক ক্ষতির মধ্যে পড়তে যাচ্ছে, সে ব্যাপারেও ধারণা দিয়েছেন তাঁরা। আগামী ২৬ বছরে উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলোতে আয় হ্রাস পাবে ১১ শতাংশ এবং দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকায় কমবে ২২ শতাংশ। সূত্র : এনডিটিভি