রাবি অধ্যাপক হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতারের আহবান

- প্রকাশের সময় : ১০:৪৬:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০১৪
- / ৭৪৪ বার পঠিত
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়র অধ্যাপক এ কে এম শফিউল ইসলামের হত্যাকান্ডকে দুর্ভাগ্যজনক উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এই হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানে অবিলম্বে গ্রেফতারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। গত মঙ্গলবার রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) চতুর্থ সমাবর্তন ভাষণে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমি গভীর উদ্বেগের সঙ্গে সম্প্রতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের একজন অধ্যাপকের হত্যাকান্ড লক্ষ্য করেছি। এ ধরনের ঘটনায় জাতির সঙ্গে আমিও শোকাহত।’ তিনি বলেন, জ্ঞান অর্জনের সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠানের একজন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদের ওপর এ ধরনের হত্যাকান্ড কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না।
রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ বলেন, আমি অবিলম্বে হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানাচ্ছি। সমাবর্তন উপলক্ষ্যে নতুন স্নাতকদের অভিনন্দন জানিয়ে আবদুল হামিদ জাতি গঠন কর্মকান্ডে নিজেদের উৎসর্গ করার জন্য তাদের প্রতি আহবান জানান। রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আপনারা ¯œাতক ও দেশের গুরুত্বপূর্ণ মানবসম্পদ। আজকের সমাবর্তন আপনাদের সাফল্যের স্বীকৃতি প্রদানের জন্য। অন্যদিকে আপনাদের পরিবার, সমাজ এবং দেশ ও জাতির প্রতিও দায়িত্ব পালন করতে হবে।’ আবদুল হামিদ বলেন, শিক্ষা হচ্ছে জাতি গঠনের প্রথম সিঁড়ি। শিক্ষা মানে শুধু অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন নয়। বরং ছাত্র-ছাত্রীদের অসাম্প্রদায়িক চেতনাসহ বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে গড়ে তোলা। পাশাপাশি গভীর দেশপ্রেমে তাদের উজ্জীবিত করা।
রাষ্ট্রপতি বলেন, শিক্ষার মধ্যে মানুষ, মানবতা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, জ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রতি আকর্ষণ অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে। তিনি বলেন, শুধু সনদমুখী শিক্ষা নয় – আমাদের এমন এক শিক্ষা ব্যবস্থা থাকা দরকার যাতে মানুষ সৃজনশীল ও আলোকিত হয়। আবদুল হামিদ বলেন, ‘জ্ঞানের জগতে প্রবেশের চাবিকাঠি হচ্ছে শিক্ষা। আমি আশা করি, শিক্ষা অন্ধকার কুঠুরির জানালা খুলে দেবে। শিক্ষা আমাদের সংকীর্ণতার উর্ধ্বে উঠতে সাহায্য করবে। আমরা এমন শিক্ষা চাই যা জনগণের মধ্যে সেতুবন্ধন রচনা করবে।’ রাষ্ট্রপতি বলেন, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সৃজনশীল কর্মকান্ড, মুক্ত চিন্তার চর্চা এবং স্বাধীন চিন্তার বিকাশে ভূমিকা পালন করতে হবেÑ যাতে ছাত্র-ছাত্রীরা নিজেদের অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও নেতৃত্বের গুণাবলীসহ গড়ে তুলতে পারে। গবেষণার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, শিক্ষা ও গবেষণা ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। কারণ, গবেষণার মাধ্যমে নতুন জ্ঞানের সৃষ্টি হয়। যা সমাজের চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বর্তমান যুগকে তথ্যপ্রযুক্তির যুগ হিসেবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দক্ষ প্রকৌশলী হিসেবে গড়ে ওঠার কোনো বিকল্প নেই। বাংলাদেশে বিপুল মানবসম্পদ রয়েছে। প্রকৌশলীরা যদি নিজেদের তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞানে সমৃদ্ধ করতে সক্ষম হয় তাহলে তারা জাতীয় উন্নয়নে বিশাল অবদান রাখতে পারবে বলে রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন রুয়েটের উপাচার্য ড. রফিকুল আলম বেগ। সমাবর্তনে ২ হাজার ৫১৩ জন স্নাতককে ডিগ্রি প্রদান করা হয়।