নিউইয়র্ক ০৭:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় শোক দিবস পরণ : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের খুনিদের ফিরিয়ে আনার প্রত্যয়

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৭:০৪:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ অগাস্ট ২০১৫
  • / ১৮০৬ বার পঠিত

ঢাকা: যথাযথ মর্যাদা, ভাবগম্ভীর পরিবেশ, বিনম্র শ্রদ্ধা আর শোক শপথে স্মরণের মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে জাতীয় শোক দিবস। ‘জাতির জনক’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চেতনায় অমর-অবিনশ্বর, আজও তার আদর্শ সমুজ্জ্বল, সমগ্র জাতি বিশ্ববাসীর সামনে তা আবারও প্রমাণ করলেন। ১৫ আগষ্ট শনিবার ‘জাতির জনক’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪০তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে দেশজুড়ে এক ভিন্ন আবহের মধ্যে পালিত হয়েছে নানা কর্মসূচি। ধানমন্ডির ঐতিহাসিক ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে, বনানী কবরস্থানে এবং গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় লাখো মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের দৃশ্য ছিল ব্যতিক্রমী। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রী, তিন বাহিনী প্রধানসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষের ঢল নেমেছিল এসব স্থানে। মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন, শ্রমিক-কর্মচারী সংগঠন, নতুন প্রজন্মের বিভিন্ন ফোরাম ও সংগঠনসহ ছেলে-বুড়ো, শিশু-কিশোর, সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ বাঁধভাঙা জোয়ারের মতো ছুটে এসেছিল ‘জাতির জনক’-এর সমাধিতে। যারা টুঙ্গিপাড়া যেতে পারেননি, তারা এসেছিলেন ৩২ নম্বরে। ফুলে ফুলে ছেয়ে যায় ‘জাতির পিতার’ মাজার, বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনের প্রতিকৃতির বেদি ও বনানী কবরস্থান। এ উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থানে আয়োজিত স্মরণসভায় বক্তারা বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে দ্রুত দন্ড কার্যকর করার জোর দাবি জানান। দেশবাসী বঙ্গবন্ধুর শাহাদত বার্ষিকীতে তার স্বপ্ন শোষণহীন, সংস্কারমুক্ত ও অগ্রসর সমাজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সোনার বাংলা গড়ে তোলার প্রত্যয় ঘোষণা করেন।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শনিবার ছিল সরকারি ছুটি। এদিন বিভাগীয় ও জেলা শহরে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসায় যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনটি পালিত হয়। সর্বস্তরের মানুষ শোকের এ দিনে বিভিন্ন কর্মসূচিতে নিজেদের একাত্মতা ঘোষণা করেন। জাতির জনকের শাহাদতবার্ষিকীতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল ছাড়াও সারা দেশেই কাঙালি ভোজের আয়োজন ছিল। ছিল স্মরণ সভা, রক্তদান কর্মসূচি ও শিশুদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতাসহ নানা কর্মসূচি। এসব কর্মসূচিতে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।
শনিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ‘জাতির জনক’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এর আগে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। পরে প্রধানমন্ত্রী ও তার ছোট বোন শেখ রেহানাসহ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে যান বনানী কবরস্থানে। তিনি সেখানে ১৫ আগস্ট নিহত পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। শেষে নিহত ব্যক্তিদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাতে অংশ নেন তিনি।
P & PM_15 Aug'2015রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী জাতীয় শোক দিবসে রাষ্ট্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকাল ৬টা ৩৫ মিনিটে পৃথকভাবে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানান। শ্রদ্ধা জানানোর পর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির সামনে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় সেনাবাহিনীর একটি দল গার্ড অব অনার প্রদান করে। তখন বিউগলে করুণ সুর বাজিয়ে বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করে। পরে বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টে ঘাতকদের নারকীয় হত্যাযজ্ঞে শাহাদতবরণকারীদের আত্মার শান্তি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, তিন বাহিনীর প্রধান, আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা ও ১৪ দলীয় জোটের নেতা এবং উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা পৃথকভাবে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। রাষ্ট্রপতি সকাল সাড়ে ৬টায় ধানমন্ডির ঐতিহাসিক ৩২ নম্বরে পৌঁছলে প্রধানমন্ত্রী তাকে অভ্যর্থনা জানান। পরে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা পৃথকভাবে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিমের নেতৃত্বে ক্ষমতাসীন দলের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের নেতা তথ্যমন্ত্রী ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী এবং ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাম্যবাদী দলের সভাপতি ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়–য়াসহ অন্য নেতারা জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়ায় গিয়ে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পুষ্পস্তবক প্রদান ও দোয়া মাহফিলে অংশ নেন।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সহযোগী এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায়।
ভোর থেকেই স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মী এবং সর্বস্তরের মানুষ বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনের রাস্তায় জমায়েত হতে থাকেন। লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। শুক্রবার সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করার মধ্য দিয়ে জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশে দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিত করার পাশাপাশি তোলা হয় কালো পতাকা।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত বাড়ির ভেতরে যান। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের কালো রাতে ঐতিহাসিক এই বঙ্গবন্ধু ভবনের সিঁড়ির যে স্থানে বঙ্গবন্ধুর লাশ পড়েছিল, সেখানে গোলাপের পাপড়ি ছিটিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিছু সময় নীরবে অশ্রুসজল চোখে দাঁড়িয়ে ছিলেন। পরে তিনি ওই ভবনের একটি কক্ষে বসে কিছু সময় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন। সেখানে তিনি প্রায় আধা ঘণ্টা অবস্থান করেন। বিকালে বঙ্গবন্ধু ভবনে অনুষ্ঠিত মহিলা আওয়ামী লীগের মিলাদ মাহফিলে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় ভবনের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত ঘুরে তার বাবা-মার স্মৃতিচিহ্ন প্রত্যক্ষ করেন। এ সময় বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা ও প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ পরিবারের অন্য সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া এ অনুষ্ঠানে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীসহ মহিলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।
ভোর সাড়ে ৬টার আগেই বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের উপস্থিতিতে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে ৩২ নম্বর সড়ক। হাতে কালো ব্যানার ও বুকে কালো ব্যাজ ধারণ করেন নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোরসহ সর্বস্তরের মানুষ। সবাই বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে জাতির জনকের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তারা বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে দ্রুত ফাঁসির রায় কার্যকর করার দাবি জানান।
মেয়র সাইদ খোকনের নেতৃত্বে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, ওমর ফারুক চৌধুরী ও হারুনুর রশিদের নেতৃত্বে যুবলীগ, পংকজ দেবনাথের নেতৃত্বে স্বেচ্ছাসেবক লীগ, সফিকুল বাহার মজুমদার টিপু, হুমায়ুন কবির ও সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম নয়নের নেতৃত্বে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় কমিটি এবং আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, কৃষক লীগ, ছাত্রলীগ ও তাঁতী লীগ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
এছাড়াও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, বঙ্গবন্ধু শিশুকিশোর মেলা, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব পরিষদ, মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, অরুন সরকার রানার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, শেখ রাসেল শিশু সংসদ, মুক্তিযোদ্ধা ও খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ফোরাম-৭১, ইন্সটিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ, ঢাকা সড়ক পরিবহন সমিতি, বঙ্গমাতা পরিষদ, আওয়ামী হকার্স লীগ, মহানগর সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটি, মুক্তিযুদ্ধ একাডেমি প্রভৃতি সংগঠন জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
জাতীয় শোক দিবসের দিনব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দুস্থ ও গরিব মানুষের মধ্যে খাবার বিতরণ করা হয়। এছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে দরিদ্রদের মধ্যে খাবার বিতরণ করে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর থানা ও ওয়ার্ড ইউনিটগুলো। ধানমন্ডি ৩২-এ খাবার বিতরণ ও রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন ছিল। বাদ জোহর দেশের বিভিন্ন মসজিদে দোয়া ও মোনাজাত এবং অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ প্রার্থনার ব্যবস্থা করা হয়।
শুক্রবার রাত থেকেই রাজধানীসহ সারা দেশে বঙ্গবন্ধুর কালজয়ী ভাষণ, ‘জাতির জনক’কে নিয়ে গান, কবিতা প্রচারিত হয়েছে। এলিফ্যান্ট রোডসহ রাজধানীর কিছু এলাকায় সারা রাত মাইকে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ প্রচার করা হয়। শনিবার এ প্রচারণা অব্যাহত ছিল। সারা দিন দিবসটি উপলক্ষে সব ক’টি গণমাধ্যমে ছিল বিশেষ আয়োজন। জাতীয় দৈনিকগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র বের করে। শিশু-কিশোরদের জন্য বিভিন্ন চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। রাজপথ থেকে অলিগলি সর্বত্রই বঙ্গবন্ধুর ছবি, শোক প্রকাশ করে বিভিন্ন ব্যানার-ফেস্টুন লাগানো হয়। সব মিলিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশেই বিরাজ করছিল শোকাবহ পরিবেশ। (দৈনিক যুগান্তর)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় শোক দিবস পরণ : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের খুনিদের ফিরিয়ে আনার প্রত্যয়

প্রকাশের সময় : ০৭:০৪:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ অগাস্ট ২০১৫

ঢাকা: যথাযথ মর্যাদা, ভাবগম্ভীর পরিবেশ, বিনম্র শ্রদ্ধা আর শোক শপথে স্মরণের মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে জাতীয় শোক দিবস। ‘জাতির জনক’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চেতনায় অমর-অবিনশ্বর, আজও তার আদর্শ সমুজ্জ্বল, সমগ্র জাতি বিশ্ববাসীর সামনে তা আবারও প্রমাণ করলেন। ১৫ আগষ্ট শনিবার ‘জাতির জনক’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪০তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে দেশজুড়ে এক ভিন্ন আবহের মধ্যে পালিত হয়েছে নানা কর্মসূচি। ধানমন্ডির ঐতিহাসিক ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে, বনানী কবরস্থানে এবং গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় লাখো মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের দৃশ্য ছিল ব্যতিক্রমী। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রী, তিন বাহিনী প্রধানসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষের ঢল নেমেছিল এসব স্থানে। মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন, শ্রমিক-কর্মচারী সংগঠন, নতুন প্রজন্মের বিভিন্ন ফোরাম ও সংগঠনসহ ছেলে-বুড়ো, শিশু-কিশোর, সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ বাঁধভাঙা জোয়ারের মতো ছুটে এসেছিল ‘জাতির জনক’-এর সমাধিতে। যারা টুঙ্গিপাড়া যেতে পারেননি, তারা এসেছিলেন ৩২ নম্বরে। ফুলে ফুলে ছেয়ে যায় ‘জাতির পিতার’ মাজার, বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনের প্রতিকৃতির বেদি ও বনানী কবরস্থান। এ উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থানে আয়োজিত স্মরণসভায় বক্তারা বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে দ্রুত দন্ড কার্যকর করার জোর দাবি জানান। দেশবাসী বঙ্গবন্ধুর শাহাদত বার্ষিকীতে তার স্বপ্ন শোষণহীন, সংস্কারমুক্ত ও অগ্রসর সমাজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সোনার বাংলা গড়ে তোলার প্রত্যয় ঘোষণা করেন।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শনিবার ছিল সরকারি ছুটি। এদিন বিভাগীয় ও জেলা শহরে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসায় যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনটি পালিত হয়। সর্বস্তরের মানুষ শোকের এ দিনে বিভিন্ন কর্মসূচিতে নিজেদের একাত্মতা ঘোষণা করেন। জাতির জনকের শাহাদতবার্ষিকীতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল ছাড়াও সারা দেশেই কাঙালি ভোজের আয়োজন ছিল। ছিল স্মরণ সভা, রক্তদান কর্মসূচি ও শিশুদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতাসহ নানা কর্মসূচি। এসব কর্মসূচিতে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।
শনিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ‘জাতির জনক’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এর আগে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। পরে প্রধানমন্ত্রী ও তার ছোট বোন শেখ রেহানাসহ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে যান বনানী কবরস্থানে। তিনি সেখানে ১৫ আগস্ট নিহত পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। শেষে নিহত ব্যক্তিদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাতে অংশ নেন তিনি।
P & PM_15 Aug'2015রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী জাতীয় শোক দিবসে রাষ্ট্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকাল ৬টা ৩৫ মিনিটে পৃথকভাবে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানান। শ্রদ্ধা জানানোর পর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির সামনে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় সেনাবাহিনীর একটি দল গার্ড অব অনার প্রদান করে। তখন বিউগলে করুণ সুর বাজিয়ে বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করে। পরে বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টে ঘাতকদের নারকীয় হত্যাযজ্ঞে শাহাদতবরণকারীদের আত্মার শান্তি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, তিন বাহিনীর প্রধান, আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা ও ১৪ দলীয় জোটের নেতা এবং উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা পৃথকভাবে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। রাষ্ট্রপতি সকাল সাড়ে ৬টায় ধানমন্ডির ঐতিহাসিক ৩২ নম্বরে পৌঁছলে প্রধানমন্ত্রী তাকে অভ্যর্থনা জানান। পরে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা পৃথকভাবে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিমের নেতৃত্বে ক্ষমতাসীন দলের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের নেতা তথ্যমন্ত্রী ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী এবং ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাম্যবাদী দলের সভাপতি ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়–য়াসহ অন্য নেতারা জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়ায় গিয়ে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পুষ্পস্তবক প্রদান ও দোয়া মাহফিলে অংশ নেন।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সহযোগী এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায়।
ভোর থেকেই স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মী এবং সর্বস্তরের মানুষ বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনের রাস্তায় জমায়েত হতে থাকেন। লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। শুক্রবার সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করার মধ্য দিয়ে জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশে দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিত করার পাশাপাশি তোলা হয় কালো পতাকা।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত বাড়ির ভেতরে যান। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের কালো রাতে ঐতিহাসিক এই বঙ্গবন্ধু ভবনের সিঁড়ির যে স্থানে বঙ্গবন্ধুর লাশ পড়েছিল, সেখানে গোলাপের পাপড়ি ছিটিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিছু সময় নীরবে অশ্রুসজল চোখে দাঁড়িয়ে ছিলেন। পরে তিনি ওই ভবনের একটি কক্ষে বসে কিছু সময় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন। সেখানে তিনি প্রায় আধা ঘণ্টা অবস্থান করেন। বিকালে বঙ্গবন্ধু ভবনে অনুষ্ঠিত মহিলা আওয়ামী লীগের মিলাদ মাহফিলে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় ভবনের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত ঘুরে তার বাবা-মার স্মৃতিচিহ্ন প্রত্যক্ষ করেন। এ সময় বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা ও প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ পরিবারের অন্য সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া এ অনুষ্ঠানে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীসহ মহিলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।
ভোর সাড়ে ৬টার আগেই বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের উপস্থিতিতে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে ৩২ নম্বর সড়ক। হাতে কালো ব্যানার ও বুকে কালো ব্যাজ ধারণ করেন নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোরসহ সর্বস্তরের মানুষ। সবাই বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে জাতির জনকের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তারা বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে দ্রুত ফাঁসির রায় কার্যকর করার দাবি জানান।
মেয়র সাইদ খোকনের নেতৃত্বে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, ওমর ফারুক চৌধুরী ও হারুনুর রশিদের নেতৃত্বে যুবলীগ, পংকজ দেবনাথের নেতৃত্বে স্বেচ্ছাসেবক লীগ, সফিকুল বাহার মজুমদার টিপু, হুমায়ুন কবির ও সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম নয়নের নেতৃত্বে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় কমিটি এবং আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, কৃষক লীগ, ছাত্রলীগ ও তাঁতী লীগ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
এছাড়াও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, বঙ্গবন্ধু শিশুকিশোর মেলা, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব পরিষদ, মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, অরুন সরকার রানার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, শেখ রাসেল শিশু সংসদ, মুক্তিযোদ্ধা ও খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ফোরাম-৭১, ইন্সটিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ, ঢাকা সড়ক পরিবহন সমিতি, বঙ্গমাতা পরিষদ, আওয়ামী হকার্স লীগ, মহানগর সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটি, মুক্তিযুদ্ধ একাডেমি প্রভৃতি সংগঠন জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
জাতীয় শোক দিবসের দিনব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দুস্থ ও গরিব মানুষের মধ্যে খাবার বিতরণ করা হয়। এছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে দরিদ্রদের মধ্যে খাবার বিতরণ করে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর থানা ও ওয়ার্ড ইউনিটগুলো। ধানমন্ডি ৩২-এ খাবার বিতরণ ও রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন ছিল। বাদ জোহর দেশের বিভিন্ন মসজিদে দোয়া ও মোনাজাত এবং অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ প্রার্থনার ব্যবস্থা করা হয়।
শুক্রবার রাত থেকেই রাজধানীসহ সারা দেশে বঙ্গবন্ধুর কালজয়ী ভাষণ, ‘জাতির জনক’কে নিয়ে গান, কবিতা প্রচারিত হয়েছে। এলিফ্যান্ট রোডসহ রাজধানীর কিছু এলাকায় সারা রাত মাইকে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ প্রচার করা হয়। শনিবার এ প্রচারণা অব্যাহত ছিল। সারা দিন দিবসটি উপলক্ষে সব ক’টি গণমাধ্যমে ছিল বিশেষ আয়োজন। জাতীয় দৈনিকগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র বের করে। শিশু-কিশোরদের জন্য বিভিন্ন চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। রাজপথ থেকে অলিগলি সর্বত্রই বঙ্গবন্ধুর ছবি, শোক প্রকাশ করে বিভিন্ন ব্যানার-ফেস্টুন লাগানো হয়। সব মিলিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশেই বিরাজ করছিল শোকাবহ পরিবেশ। (দৈনিক যুগান্তর)