নিউইয়র্ক ১২:৩৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুম বাংলাদেশে বড় সমস্যা: যুক্তরাষ্ট্র

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৯:৩৪:৪৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ জুলাই ২০১৫
  • / ৬৪৬ বার পঠিত

ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের মতে, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও জোর করে তুলে নিয়ে গুম বাংলাদেশে মানবাধিকারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভয়াবহ সমস্যা। এর পরই রয়েছে অনলাইন ও গণমাধ্যমে মত প্রকাশে নানা প্রতিবন্ধকতা, খুবই নিম্নমানের কর্মপরিবেশ ও শ্রম অধিকার না থাকা। ইউএস কান্ট্রি রিপোর্টস অন হিউম্যান রাইটস ২০১৪-এর বাংলাদেশ অংশে এ মন্তব্য করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) দুপুরে (বাংলাদেশে মধ্যরাত) এ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটনে স্টেট ডিপার্টমেন্টে এক সাংবাদিক সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মানবাধিকারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অন্য বড় সমস্যাগুলো হল- আইনশৃংখলা বাহিনীর বিভিন্ন নির্যাতন ও ক্ষমতার অপব্যবহার, সরকারি দফতরগুলোতে ব্যাপক দুর্নীতি, নির্বিচারে গ্রেফতার ও আটকে রাখা, দুর্বল বিচারিক ক্ষমতা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতাহীনতা এবং দীর্ঘ সময় বিভিন্নজনকে আটকে রাখা। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দেশে কর্তৃপক্ষ প্রায়ই নাগরিকদের গোপনীয়তা হরণ করে থাকে। এখানকার সবকিছুই রাজনৈতিক বিবেচনায় সম্পন্ন হয়। আর রাজনৈতিক দলগুলোর সংঘাত মানবাধিকারের ক্ষেত্রে আরেকটি জটিল সমস্যা। কিছু উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও) সব সময়ই আইনগত ও সরকারি নানা বিধিনিষেধের মধ্যে থাকে। নারীরা হরহামেশা বৈষম্যের শিকার হন। অল্প বয়সেই জোরপূর্বক বিয়ে দেয়া হয় তাদের। এটি একটি বড় সমস্যা।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বহু শিশুকেই পড়ালেখার বদলে লাগতে হয় কাজে। আর তারা অনেক ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করে থাকে। অর্থনৈতিক দীনতাই তাদের এ কাজ করতে বাধ্য করে। এমনকি একই কারণে অনেক শিশু পাচারেরও শিকার হয়। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা বৈষম্যের শিকার হন। বিশেষ করে স্কুলে লেখাপড়ার ক্ষেত্রে শিশুরা।
যুক্তরাষ্ট্রের মতে, দেশে ধর্মীয় ও জাতিগত সংঘাতও উদ্বেগের। বিশেষ করে সংখ্যালঘুরা প্রায়ই নানাভাবে হামলার শিকার হন। এমনকি এর সঙ্গে অনেক রাজনৈতিক, কখনও সরকারদলীয় নেতার নামও উঠে আসে। প্রায়ই যৌন নির্যাতনের শিকার হন নারীরা। সংখ্যালঘু নারীরাও।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারি কর্মকর্তাদের অনিয়মের বিরুদ্ধে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয় না। যদিও প্রায় প্রতিদিনই এ নিয়ে নানা দাবি উঠে বিভিন্ন মহল থেকে। বিশেষ করে আইনশৃংখলা বাহিনীর কোনো সদস্য অপরাধ করলে কিংবা কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যা করলে, বলতে গেলে তিনি কোনো শাস্তির মুখোমুখিই হন না। এটি বাংলাদেশে মানবাধিকারের ক্ষেত্রে ভয়াবহতম সমস্যা।
আর প্রতিবেদনটি শুরু করা হয়েছে এভাবে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগ ৫ জানুয়ারী সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা ধরে রাখে। যা মাসব্যাপী রাজনৈতিক সহিংসতা সৃষ্টি করে। বিএনপির নেতৃত্বাধীন বিরোধীদলীয় জোট নির্বাচন বর্জন করে এবং রাজপথে ধারাবাহিক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক মহল এ নির্বাচনকে বিতর্কিত আখ্যায়িত করে। তারা জানায়, বিরোধীদের বর্জনের কারণে এটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও ওই সময় আইনশৃংখলা বাহিনীর ওপর কার্যকর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার ক্ষেত্রেও ব্যর্থতার পরিচয় দেয়।(দৈনিক যুগান্তর)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুম বাংলাদেশে বড় সমস্যা: যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশের সময় : ০৯:৩৪:৪৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ জুলাই ২০১৫

ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের মতে, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও জোর করে তুলে নিয়ে গুম বাংলাদেশে মানবাধিকারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভয়াবহ সমস্যা। এর পরই রয়েছে অনলাইন ও গণমাধ্যমে মত প্রকাশে নানা প্রতিবন্ধকতা, খুবই নিম্নমানের কর্মপরিবেশ ও শ্রম অধিকার না থাকা। ইউএস কান্ট্রি রিপোর্টস অন হিউম্যান রাইটস ২০১৪-এর বাংলাদেশ অংশে এ মন্তব্য করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) দুপুরে (বাংলাদেশে মধ্যরাত) এ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটনে স্টেট ডিপার্টমেন্টে এক সাংবাদিক সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মানবাধিকারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অন্য বড় সমস্যাগুলো হল- আইনশৃংখলা বাহিনীর বিভিন্ন নির্যাতন ও ক্ষমতার অপব্যবহার, সরকারি দফতরগুলোতে ব্যাপক দুর্নীতি, নির্বিচারে গ্রেফতার ও আটকে রাখা, দুর্বল বিচারিক ক্ষমতা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতাহীনতা এবং দীর্ঘ সময় বিভিন্নজনকে আটকে রাখা। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দেশে কর্তৃপক্ষ প্রায়ই নাগরিকদের গোপনীয়তা হরণ করে থাকে। এখানকার সবকিছুই রাজনৈতিক বিবেচনায় সম্পন্ন হয়। আর রাজনৈতিক দলগুলোর সংঘাত মানবাধিকারের ক্ষেত্রে আরেকটি জটিল সমস্যা। কিছু উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও) সব সময়ই আইনগত ও সরকারি নানা বিধিনিষেধের মধ্যে থাকে। নারীরা হরহামেশা বৈষম্যের শিকার হন। অল্প বয়সেই জোরপূর্বক বিয়ে দেয়া হয় তাদের। এটি একটি বড় সমস্যা।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বহু শিশুকেই পড়ালেখার বদলে লাগতে হয় কাজে। আর তারা অনেক ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করে থাকে। অর্থনৈতিক দীনতাই তাদের এ কাজ করতে বাধ্য করে। এমনকি একই কারণে অনেক শিশু পাচারেরও শিকার হয়। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা বৈষম্যের শিকার হন। বিশেষ করে স্কুলে লেখাপড়ার ক্ষেত্রে শিশুরা।
যুক্তরাষ্ট্রের মতে, দেশে ধর্মীয় ও জাতিগত সংঘাতও উদ্বেগের। বিশেষ করে সংখ্যালঘুরা প্রায়ই নানাভাবে হামলার শিকার হন। এমনকি এর সঙ্গে অনেক রাজনৈতিক, কখনও সরকারদলীয় নেতার নামও উঠে আসে। প্রায়ই যৌন নির্যাতনের শিকার হন নারীরা। সংখ্যালঘু নারীরাও।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারি কর্মকর্তাদের অনিয়মের বিরুদ্ধে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয় না। যদিও প্রায় প্রতিদিনই এ নিয়ে নানা দাবি উঠে বিভিন্ন মহল থেকে। বিশেষ করে আইনশৃংখলা বাহিনীর কোনো সদস্য অপরাধ করলে কিংবা কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যা করলে, বলতে গেলে তিনি কোনো শাস্তির মুখোমুখিই হন না। এটি বাংলাদেশে মানবাধিকারের ক্ষেত্রে ভয়াবহতম সমস্যা।
আর প্রতিবেদনটি শুরু করা হয়েছে এভাবে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগ ৫ জানুয়ারী সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা ধরে রাখে। যা মাসব্যাপী রাজনৈতিক সহিংসতা সৃষ্টি করে। বিএনপির নেতৃত্বাধীন বিরোধীদলীয় জোট নির্বাচন বর্জন করে এবং রাজপথে ধারাবাহিক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক মহল এ নির্বাচনকে বিতর্কিত আখ্যায়িত করে। তারা জানায়, বিরোধীদের বর্জনের কারণে এটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও ওই সময় আইনশৃংখলা বাহিনীর ওপর কার্যকর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার ক্ষেত্রেও ব্যর্থতার পরিচয় দেয়।(দৈনিক যুগান্তর)