নিউইয়র্ক ০৩:২৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সোহাগ সাধারণ সম্পাদক জাকির

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১০:৪৪:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ জুলাই ২০১৫
  • / ১৯৭১ বার পঠিত

ঢাকা: বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি পদে সাইফুর রহমান সোহাগ এবং সাধারণ সম্পাদক পদে জাকির হোসেন নির্বাচিত হয়েছেন। সোহাগ ২৬৯০ এবং জাকির ২৬৭৫ ভোট পেয়েছেন। আর এর মধ্য দিয়ে লিয়াকত সিকদার সিন্ডিকেটের প্রার্থীরাই ঐতিহ্যবাহী এই সংগঠনটির নেতৃত্বে এলেন। ভোট গণনা শেষে রোববার (২৬ জুলাই) রাত আটটায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার সুমন কুণ্ডু এ ফল ঘোষণা করেন। এর আগে সকাল ১০টায় সংগঠনটির ২৮তম জাতীয় সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। নির্বাচন শুরু হওয়ার আগে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারের সুযোগ দেয়া হয়। প্রত্যাহার শেষে সভাপতি পদে ১৩ এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ১৮ জন প্রার্থী ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হন। পরে আরও দুই দফায় প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সুযোগ দেয়া হলে চূড়ান্তভাবে সভাপতি পদে প্রার্থী হন ৮ জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হন ১৬ জন।
বেলা সাড়ে ১১টায় পঞ্চগড় জেলার কাউন্সিলরদের মাধ্যমে ভোট প্রদান শুরু হয়। বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে সংগঠনের সদ্যবিদায়ী সভাপতি এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলমের ভোট প্রদানের মধ্য দিয়ে ভোট গ্রহণ শেষ হয়। মোট ৩১৩৮ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ২৮১৯ জন ভোট প্রদান করেন। শতকরা হিসেবে ৮৯.৮৩ ভাগ কাউন্সিলর ভোট দেন। বাকিরা অনুপস্থিত ছিলেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও ছাত্রলীগের সদ্যবিদায়ী সহ সভাপতি সুমন কুণ্ডুর নেতৃত্বে সহকারী নির্বাচন কমিশনার ও সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মুস্তাক এবং দফতর সম্পাদক শেখ রাসেল নির্বাচন পরিচালনা করেন। সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক জয়দেব নন্দী, যুগ্ম আহবায়ক হাসান তারেক, সাংগঠনিক সম্পাদক তরিকুল হাসান ভোট গ্রহণে সহায়তা করেন। পুরো প্রক্রিয়াটির তত্ত¡বাবধানে ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহীম, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা এনামুল হক শামিম, সুজিত রায় নন্দী, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাঈনুদ্দিন হাসান চৌধুরী, শাহ আলম, যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক হারুনূর রশীদ, ¯ে^চ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা আবু কাওসার, সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথ, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্না প্রমুখ।
দিনব্যাপী ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠান পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, সংগঠনটির ১০১টি সাংগঠনিক জেলার বেশির ভাগ থেকেই ২৫ জন করে কাউন্সিলর ভোট দিতে আসেন। এদের প্রত্যেকের কাছে কাউন্সিলর কার্ড থাকলেও নাম ও ছবি মিলিয়ে ভোট নেয়া হয়নি। তবে পর্যায়ক্রমে বিভাগ ও জেলাভিত্তিক আলাদা করে কাউন্সিলরদের মঞ্চে ডেকে নির্বাচন কমিশনার ব্যালট পেপার হাতে দেন।
এদিকে রাতে ফলাফল ঘোষণার সময় শুধু সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। তাদের প্রাপ্ত ভোট এবং নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বীর ভোট সম্পর্কে কোনো তথ্য দেয়া হয়নি। এমনকি বারবার চাওয়া হলেও তারা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্ব›দ্বীদের নামের তালিকা প্রদান করেননি। এদিকে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপনের অনুসারীরা সকালে সম্মেলনস্থলে এসে প্রার্থিতা বাতিলের ঘোষণা দেন। এদের মধ্যে অনেকে কাউন্সিলর থাকলেও তাদের ভোট প্রদান করেননি। ভোট গ্রহণকালে একাধিকবার তাদের নাম ঘোষণা করা হলেও কাউকে ভোট দিতে দেখা যায়নি। প্রবাসের নয়টি ইউনিটের মধ্যে চারটি ইউনিটের নেতা-কর্মীরা সম্মেলনে ভোট প্রদান করেন। ইউনিট চারটি হল- যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, ডেনমার্ক ও অস্ট্রেলিয়া।
প্রসঙ্গত, ২৫ জুলাই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ২৮তম জাতীয় সম্মেলন শুরু হয়। রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রথম দিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। রোববার দ্বিতীয় দিনে ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত হয়।
নবনির্বাচিত সভাপতি সোহাগ এর আগে সদ্যবিদায়ী কেন্দ্রীয় কমিটির পরিবেশ সম্পাদক ছিলেন। জাকির হোসাইন ছিলেন সহ-সম্পাদক। সোহাগের গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর, আর জাকিরের বাড়ি মৌলভীবাজার। সোহাগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের ২০০৫-০৬ শিক্ষা বর্ষের এবং জাকির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০০৮-০৯ শিক্ষা বর্ষের শিক্ষার্থী। তারা দু’জনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের ছাত্র। বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতির শুরুতে সোহাগ ছিলেন জিয়া হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং জাকির সদস্য ছিলেন। সোহাগ বর্তমানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় মাস্টার্স এবং জাকির রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এমফিল করছেন। (দৈনিক যুগান্তর)

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সোহাগ সাধারণ সম্পাদক জাকির

প্রকাশের সময় : ১০:৪৪:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ জুলাই ২০১৫

ঢাকা: বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি পদে সাইফুর রহমান সোহাগ এবং সাধারণ সম্পাদক পদে জাকির হোসেন নির্বাচিত হয়েছেন। সোহাগ ২৬৯০ এবং জাকির ২৬৭৫ ভোট পেয়েছেন। আর এর মধ্য দিয়ে লিয়াকত সিকদার সিন্ডিকেটের প্রার্থীরাই ঐতিহ্যবাহী এই সংগঠনটির নেতৃত্বে এলেন। ভোট গণনা শেষে রোববার (২৬ জুলাই) রাত আটটায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার সুমন কুণ্ডু এ ফল ঘোষণা করেন। এর আগে সকাল ১০টায় সংগঠনটির ২৮তম জাতীয় সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। নির্বাচন শুরু হওয়ার আগে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারের সুযোগ দেয়া হয়। প্রত্যাহার শেষে সভাপতি পদে ১৩ এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ১৮ জন প্রার্থী ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হন। পরে আরও দুই দফায় প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সুযোগ দেয়া হলে চূড়ান্তভাবে সভাপতি পদে প্রার্থী হন ৮ জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হন ১৬ জন।
বেলা সাড়ে ১১টায় পঞ্চগড় জেলার কাউন্সিলরদের মাধ্যমে ভোট প্রদান শুরু হয়। বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে সংগঠনের সদ্যবিদায়ী সভাপতি এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলমের ভোট প্রদানের মধ্য দিয়ে ভোট গ্রহণ শেষ হয়। মোট ৩১৩৮ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ২৮১৯ জন ভোট প্রদান করেন। শতকরা হিসেবে ৮৯.৮৩ ভাগ কাউন্সিলর ভোট দেন। বাকিরা অনুপস্থিত ছিলেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও ছাত্রলীগের সদ্যবিদায়ী সহ সভাপতি সুমন কুণ্ডুর নেতৃত্বে সহকারী নির্বাচন কমিশনার ও সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মুস্তাক এবং দফতর সম্পাদক শেখ রাসেল নির্বাচন পরিচালনা করেন। সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক জয়দেব নন্দী, যুগ্ম আহবায়ক হাসান তারেক, সাংগঠনিক সম্পাদক তরিকুল হাসান ভোট গ্রহণে সহায়তা করেন। পুরো প্রক্রিয়াটির তত্ত¡বাবধানে ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহীম, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা এনামুল হক শামিম, সুজিত রায় নন্দী, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাঈনুদ্দিন হাসান চৌধুরী, শাহ আলম, যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক হারুনূর রশীদ, ¯ে^চ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা আবু কাওসার, সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথ, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্না প্রমুখ।
দিনব্যাপী ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠান পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, সংগঠনটির ১০১টি সাংগঠনিক জেলার বেশির ভাগ থেকেই ২৫ জন করে কাউন্সিলর ভোট দিতে আসেন। এদের প্রত্যেকের কাছে কাউন্সিলর কার্ড থাকলেও নাম ও ছবি মিলিয়ে ভোট নেয়া হয়নি। তবে পর্যায়ক্রমে বিভাগ ও জেলাভিত্তিক আলাদা করে কাউন্সিলরদের মঞ্চে ডেকে নির্বাচন কমিশনার ব্যালট পেপার হাতে দেন।
এদিকে রাতে ফলাফল ঘোষণার সময় শুধু সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। তাদের প্রাপ্ত ভোট এবং নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বীর ভোট সম্পর্কে কোনো তথ্য দেয়া হয়নি। এমনকি বারবার চাওয়া হলেও তারা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্ব›দ্বীদের নামের তালিকা প্রদান করেননি। এদিকে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপনের অনুসারীরা সকালে সম্মেলনস্থলে এসে প্রার্থিতা বাতিলের ঘোষণা দেন। এদের মধ্যে অনেকে কাউন্সিলর থাকলেও তাদের ভোট প্রদান করেননি। ভোট গ্রহণকালে একাধিকবার তাদের নাম ঘোষণা করা হলেও কাউকে ভোট দিতে দেখা যায়নি। প্রবাসের নয়টি ইউনিটের মধ্যে চারটি ইউনিটের নেতা-কর্মীরা সম্মেলনে ভোট প্রদান করেন। ইউনিট চারটি হল- যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, ডেনমার্ক ও অস্ট্রেলিয়া।
প্রসঙ্গত, ২৫ জুলাই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ২৮তম জাতীয় সম্মেলন শুরু হয়। রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রথম দিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। রোববার দ্বিতীয় দিনে ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত হয়।
নবনির্বাচিত সভাপতি সোহাগ এর আগে সদ্যবিদায়ী কেন্দ্রীয় কমিটির পরিবেশ সম্পাদক ছিলেন। জাকির হোসাইন ছিলেন সহ-সম্পাদক। সোহাগের গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর, আর জাকিরের বাড়ি মৌলভীবাজার। সোহাগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের ২০০৫-০৬ শিক্ষা বর্ষের এবং জাকির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০০৮-০৯ শিক্ষা বর্ষের শিক্ষার্থী। তারা দু’জনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের ছাত্র। বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতির শুরুতে সোহাগ ছিলেন জিয়া হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং জাকির সদস্য ছিলেন। সোহাগ বর্তমানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় মাস্টার্স এবং জাকির রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এমফিল করছেন। (দৈনিক যুগান্তর)