নিউইয়র্ক ১২:২৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

ডাকসু ও চকসু থেকে মান্নার নাম মুছল, ছবি পোড়াল ছাত্রলীগ

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৮:৪৩:৩৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৫
  • / ৬৬৫ বার পঠিত

ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সংগ্রহশালায় ভিপিদের তালিকা থেকে মাহমুদুর রহমান মান্নার নাম মুছে দিয়েছে ছাত্রলীগ কর্মীরা। পাশাপাশি সংগ্রহশালায় থাকা মান্নার ছবিও নামিয়ে পুড়িয়ে দেয় তারা। ২৪ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার দুপুরে ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জয়দেব নন্দীর নেতৃত্বে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের জন্য মান্নাকে দায়ী করে তার নাম মুছে ফেলা ও ছবি পুড়িয়ে ফেলে ছাত্রলীগ কর্মীরা। উল্লেখ্য, মান্না ১৯৭৯ ও ১৯৮০ সালে দুই মেয়াদে ডাকসুর ভিপি ছিলেন।
এ বিষয়ে ডাকসু’র সাবেক ভিপি আ স ম আবদুর রব বলেন, সমাজে ভিন্নমত থাকতেই পারে। তাই বলে কারও অতীত ইতিহাস মুছে ফেলা যায় না। এটা নিন্দনীয়। এর আগে বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকা ও অজ্ঞাত পরিচয়ের এক ব্যক্তির সঙ্গে মান্নার কথোপকথনের দু’টি অডিও ক্লিপ প্রকাশ হয়। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এটি আলোচনার আসে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও দলের এ সাবেক নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী ওঠে।
এদিকে গত ২৩ ফেব্রুয়ারী সোমবার রাতে মান্নাকে পুলিশের পরিচয়ে তার ভাইয়ের মেয়ের বাসা থেকে তুলে নেয়া হয়েছে বলে তার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। তবে তাকে আটকের খবর অস্বীকার করেছে পুলিশ।
অপরদিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চকসু)-এর এক সময়ের নেতা মাহমুদুর রহমান মান্নার নাম সংগ্রহশালা থেকে মুছে দিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। মঙ্গলবার দুপুরে প্রশাসনের নির্দেশে ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী সেখানো টাঙানো সাবেক নেতাদের বোর্ড থেকে তার নাম ও ছবি মুছে ফেলে। এই সময় তারা নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মান্নাকে নিয়ে নানা ধরনের শ্লোগান দিতে থাকেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা দেড়টার দিকে ১০ থেকে ১২ জনের ছাত্রলীগের একটি দল হঠাৎ চাকসু ভবনে গিয়ে হাজির হয়। এরপর তারা চাকসু’র সাবেক নেতাদের নাম সংবলিত সংগ্রহশালা থেকে মান্নার নাম মুছে দেয়। পরে ছবিও সরিয়ে ফেলে।
প্রসঙ্গত, মান্নার একটি ফোনালাপ নিয়ে দেশজুড়ে নানা আলোচনা শুরু হলে মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার নাম মুছে দেয় ছাত্রলীগ। এরপরপরই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. আনোয়ারুল আজিম আরিফ তার শাস্তি দাবী করে গণমাধ্যমে বিবৃতি দেন। একপর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা চাকসু ভবনে গিয়ে মান্নার ছবি মুছে দেয়। জানতে চাইলে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর টিপু বলেন, মান্না সাহেবের বক্তব্য নিয়ে আমরা বিস্মিত। তিনি কিভাবে লাশ ফেলে দেয়ার কথা বললেন তা জানিনা। তাই ঐতিহ্যবাহী চাকসু থেকে তার নাম মুছে দেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, মাহমুদুর রহমান মান্না ১৯৭২ থেকে ১৯৭৩ সালে চাকসু’র নির্বাচিত জিএস ছিলেন। তৎকালীন সময়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি একজন ভালো বক্তার খেতাব পেয়েছিলেন। এই সময় তিনি ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের যাতায়াত সমস্যা, আবাসিক হলে সীট বন্টন, শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি, গবেষণামূলক কাজে উৎসাহ প্রদান, সাংস্কৃতিক চর্চাসহ একাধিক বিষয়ে জোরালো ভূমিকা রাখেন। জাতীয় রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণের পর গত ৩০ বছরে তাকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আর তেমন দেখা যায়নি।(দৈনিক মানবজমিন)

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

ডাকসু ও চকসু থেকে মান্নার নাম মুছল, ছবি পোড়াল ছাত্রলীগ

প্রকাশের সময় : ০৮:৪৩:৩৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৫

ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সংগ্রহশালায় ভিপিদের তালিকা থেকে মাহমুদুর রহমান মান্নার নাম মুছে দিয়েছে ছাত্রলীগ কর্মীরা। পাশাপাশি সংগ্রহশালায় থাকা মান্নার ছবিও নামিয়ে পুড়িয়ে দেয় তারা। ২৪ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার দুপুরে ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জয়দেব নন্দীর নেতৃত্বে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের জন্য মান্নাকে দায়ী করে তার নাম মুছে ফেলা ও ছবি পুড়িয়ে ফেলে ছাত্রলীগ কর্মীরা। উল্লেখ্য, মান্না ১৯৭৯ ও ১৯৮০ সালে দুই মেয়াদে ডাকসুর ভিপি ছিলেন।
এ বিষয়ে ডাকসু’র সাবেক ভিপি আ স ম আবদুর রব বলেন, সমাজে ভিন্নমত থাকতেই পারে। তাই বলে কারও অতীত ইতিহাস মুছে ফেলা যায় না। এটা নিন্দনীয়। এর আগে বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকা ও অজ্ঞাত পরিচয়ের এক ব্যক্তির সঙ্গে মান্নার কথোপকথনের দু’টি অডিও ক্লিপ প্রকাশ হয়। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এটি আলোচনার আসে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও দলের এ সাবেক নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী ওঠে।
এদিকে গত ২৩ ফেব্রুয়ারী সোমবার রাতে মান্নাকে পুলিশের পরিচয়ে তার ভাইয়ের মেয়ের বাসা থেকে তুলে নেয়া হয়েছে বলে তার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। তবে তাকে আটকের খবর অস্বীকার করেছে পুলিশ।
অপরদিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চকসু)-এর এক সময়ের নেতা মাহমুদুর রহমান মান্নার নাম সংগ্রহশালা থেকে মুছে দিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। মঙ্গলবার দুপুরে প্রশাসনের নির্দেশে ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী সেখানো টাঙানো সাবেক নেতাদের বোর্ড থেকে তার নাম ও ছবি মুছে ফেলে। এই সময় তারা নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মান্নাকে নিয়ে নানা ধরনের শ্লোগান দিতে থাকেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা দেড়টার দিকে ১০ থেকে ১২ জনের ছাত্রলীগের একটি দল হঠাৎ চাকসু ভবনে গিয়ে হাজির হয়। এরপর তারা চাকসু’র সাবেক নেতাদের নাম সংবলিত সংগ্রহশালা থেকে মান্নার নাম মুছে দেয়। পরে ছবিও সরিয়ে ফেলে।
প্রসঙ্গত, মান্নার একটি ফোনালাপ নিয়ে দেশজুড়ে নানা আলোচনা শুরু হলে মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার নাম মুছে দেয় ছাত্রলীগ। এরপরপরই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. আনোয়ারুল আজিম আরিফ তার শাস্তি দাবী করে গণমাধ্যমে বিবৃতি দেন। একপর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা চাকসু ভবনে গিয়ে মান্নার ছবি মুছে দেয়। জানতে চাইলে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর টিপু বলেন, মান্না সাহেবের বক্তব্য নিয়ে আমরা বিস্মিত। তিনি কিভাবে লাশ ফেলে দেয়ার কথা বললেন তা জানিনা। তাই ঐতিহ্যবাহী চাকসু থেকে তার নাম মুছে দেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, মাহমুদুর রহমান মান্না ১৯৭২ থেকে ১৯৭৩ সালে চাকসু’র নির্বাচিত জিএস ছিলেন। তৎকালীন সময়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি একজন ভালো বক্তার খেতাব পেয়েছিলেন। এই সময় তিনি ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের যাতায়াত সমস্যা, আবাসিক হলে সীট বন্টন, শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি, গবেষণামূলক কাজে উৎসাহ প্রদান, সাংস্কৃতিক চর্চাসহ একাধিক বিষয়ে জোরালো ভূমিকা রাখেন। জাতীয় রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণের পর গত ৩০ বছরে তাকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আর তেমন দেখা যায়নি।(দৈনিক মানবজমিন)