নিউইয়র্ক ০৮:৫৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

টাঙ্গাইলের হতভাগ্য আট যুবক ৯ মাস ধরে ভারতের জেলে

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৩:২৫:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মে ২০১৫
  • / ৬১৪ বার পঠিত

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল): টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের হতভাগ্য আট যুবক মানবপাচাররে শিকার হয়ে গত ৯ মাস ধরে ভারতরে একটি জেলে আটক রয়েছেন। লাখ লাখ টাকা খরচ করে মালদ্বীপ গিয়ে ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় মানব পাচারকারীদের খপ্পড়ে পড়ে তারা ভারতের জেলে বন্ধি রয়েছেন। এদিকে ধার-দেনা করে টাকা দিয়ে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে ভারতের জেলে আটক থাকায় তাদের পরিবাররে সদস্যরা প্রায় অনাহার-অর্ধাহারে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। মির্জাপুর থানা পুলিশ এক মানব পাচারকারীকে আটক করেছে বলে জানা গেছে।
পারিবারিক ও পুলিশ সূত্র জানায়, প্রায় দুই বছর আগে মালদ্বীপ পাঠানোর কথা বলে আদম পাচারকারীরা এ উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের থলপাড়া (ঘোনাপাড়া) গ্রামের মৃত হামেদ আলীর ছেলে মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম ও নালু মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ আলী, একই ইউনিয়নের ফতেপুর গ্রামের রিপন, সবুজ মিয়া, বাবুল, জয়নাল (৪৩) এবং পাশ্বর্বতী মহেড়া ইউনিয়নের হিলড়া আদাবাড়ি গ্রামের সোহেল, মহেড়া গ্রামের জুলহাস, আলমগীর এবং পাশ্বর্বতী দেলদুয়ার উপজেলার কামান্না গ্রামের সুজন মিয়া কাছ েেথক দুই লাখ টাকা করে নেয়। টাকা নেয়ার পর থেকে আদম পাচারকারীরা তাদের বিদেশে না পাঠিয়ে নানাভাবে কালক্ষেপণ করতে থাকে। এক পর্যায়ে এ নিয়ে এলাকায় মাতাব্বরা আদম পাচারকারীদের চাপ দিলে গত বছর ১৪ আগস্ট তাদের মালদ্বীপ পাঠানোর কথা বলে ঢাকার বনানীর একটি অফিসে নিয়ে আসে। সেখানে বিদেশগামীদরে সঙ্গে আসা তাদের আত্মীয়-স্বজনদের জানানো হয় রাতে তারা বিমানযোগ মালদ্বীপ যাবে, একথা বলে তাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। এরপর থেকে তাদের আর কোনো খোঁজ খবর নেই। আদম পাচারকারীদের কাছে জিজ্ঞেস করলে তারা জানায় সবাই মালদ্বীপ আছে। পরে তাদের আত্মীয় স্বজনরা জানতে পারেন যে তাদের মালদ্বীপ না পাঠিয়ে অবৈধভাবে ভারতে পাচার করা হয়েছে। সেই থেকে গত নয় মাস ধরে ওই আট হতভাগ্য ভারতের পশ্চিম দিনাজপুর জেলার বালুঘাট জেলে আটক রয়েছেন।
এদিকে ভারতের জেল থেকে আটককৃতদরে ছাড়াতে স্থানীয় চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে একাধিক সালিশ বৈঠক হলেও তাদের জেল থেকে মুক্ত করা সম্ভব হয়নি।
সর্বশেষ গত ২২ মে ফতেপুর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে ওই দুই মানব পাচার কারীর বিরুদ্ধে মির্জাপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ মানব পাচারকারী নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরণ করে। ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ূন তালুকদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ভারতের জেলে আটককৃতদের ছাড়িয়ে আনার জন্য আদম ব্যবসায়ী নজরুল জুন মাসের ১৫ তারিখ র্পযন্ত সময় নিয়েছিল।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাজমূল হক ভূইয়ার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, মানব পাচারকারী নজরুলকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। বিষয়টি র্ঊধ্বতন র্কতৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ভারতের জেলে থেকে তাদের বের করে আনার কাজ শুরু হয়েছে।
ভারতের জেলে আটককৃতদের পরিবার ও স্বজনরা তাদের সন্তানদের ভারতের জেল থেকে মুক্ত করার ব্যাপারে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন।(দৈনিক মানবজমিন)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

টাঙ্গাইলের হতভাগ্য আট যুবক ৯ মাস ধরে ভারতের জেলে

প্রকাশের সময় : ০৩:২৫:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মে ২০১৫

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল): টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের হতভাগ্য আট যুবক মানবপাচাররে শিকার হয়ে গত ৯ মাস ধরে ভারতরে একটি জেলে আটক রয়েছেন। লাখ লাখ টাকা খরচ করে মালদ্বীপ গিয়ে ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় মানব পাচারকারীদের খপ্পড়ে পড়ে তারা ভারতের জেলে বন্ধি রয়েছেন। এদিকে ধার-দেনা করে টাকা দিয়ে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে ভারতের জেলে আটক থাকায় তাদের পরিবাররে সদস্যরা প্রায় অনাহার-অর্ধাহারে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। মির্জাপুর থানা পুলিশ এক মানব পাচারকারীকে আটক করেছে বলে জানা গেছে।
পারিবারিক ও পুলিশ সূত্র জানায়, প্রায় দুই বছর আগে মালদ্বীপ পাঠানোর কথা বলে আদম পাচারকারীরা এ উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের থলপাড়া (ঘোনাপাড়া) গ্রামের মৃত হামেদ আলীর ছেলে মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম ও নালু মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ আলী, একই ইউনিয়নের ফতেপুর গ্রামের রিপন, সবুজ মিয়া, বাবুল, জয়নাল (৪৩) এবং পাশ্বর্বতী মহেড়া ইউনিয়নের হিলড়া আদাবাড়ি গ্রামের সোহেল, মহেড়া গ্রামের জুলহাস, আলমগীর এবং পাশ্বর্বতী দেলদুয়ার উপজেলার কামান্না গ্রামের সুজন মিয়া কাছ েেথক দুই লাখ টাকা করে নেয়। টাকা নেয়ার পর থেকে আদম পাচারকারীরা তাদের বিদেশে না পাঠিয়ে নানাভাবে কালক্ষেপণ করতে থাকে। এক পর্যায়ে এ নিয়ে এলাকায় মাতাব্বরা আদম পাচারকারীদের চাপ দিলে গত বছর ১৪ আগস্ট তাদের মালদ্বীপ পাঠানোর কথা বলে ঢাকার বনানীর একটি অফিসে নিয়ে আসে। সেখানে বিদেশগামীদরে সঙ্গে আসা তাদের আত্মীয়-স্বজনদের জানানো হয় রাতে তারা বিমানযোগ মালদ্বীপ যাবে, একথা বলে তাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। এরপর থেকে তাদের আর কোনো খোঁজ খবর নেই। আদম পাচারকারীদের কাছে জিজ্ঞেস করলে তারা জানায় সবাই মালদ্বীপ আছে। পরে তাদের আত্মীয় স্বজনরা জানতে পারেন যে তাদের মালদ্বীপ না পাঠিয়ে অবৈধভাবে ভারতে পাচার করা হয়েছে। সেই থেকে গত নয় মাস ধরে ওই আট হতভাগ্য ভারতের পশ্চিম দিনাজপুর জেলার বালুঘাট জেলে আটক রয়েছেন।
এদিকে ভারতের জেল থেকে আটককৃতদরে ছাড়াতে স্থানীয় চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে একাধিক সালিশ বৈঠক হলেও তাদের জেল থেকে মুক্ত করা সম্ভব হয়নি।
সর্বশেষ গত ২২ মে ফতেপুর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে ওই দুই মানব পাচার কারীর বিরুদ্ধে মির্জাপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ মানব পাচারকারী নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরণ করে। ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ূন তালুকদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ভারতের জেলে আটককৃতদের ছাড়িয়ে আনার জন্য আদম ব্যবসায়ী নজরুল জুন মাসের ১৫ তারিখ র্পযন্ত সময় নিয়েছিল।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাজমূল হক ভূইয়ার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, মানব পাচারকারী নজরুলকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। বিষয়টি র্ঊধ্বতন র্কতৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ভারতের জেলে থেকে তাদের বের করে আনার কাজ শুরু হয়েছে।
ভারতের জেলে আটককৃতদের পরিবার ও স্বজনরা তাদের সন্তানদের ভারতের জেল থেকে মুক্ত করার ব্যাপারে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন।(দৈনিক মানবজমিন)