নিউইয়র্ক ১১:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

ঐতিহাসিক জেলহত্যা দিবস ৩ নভেম্বর

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৩:২৭:২২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ নভেম্বর ২০১৪
  • / ১১৩৪ বার পঠিত

১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে হত্যার শিকার জাতীয় চার নেতা স্মরণে জেলহত্যা দিবস পালন উপলক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। উল্লেখ্য, ‘জাতির জনক’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহযোদ্ধা, মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, মুজিবনগর সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি শেখ নজরুল ইসলাম এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাপ্টেন মনসুর আলী ও  বাণিজ্যমন্ত্রী এএইচএম কামরুজ্জামানকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। চলতি বছর তাঁদের ৩৬তম মৃত্যুবার্ষিকী।
নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটস্থ পালকি পার্টি সেন্টারে ৩ নভেম্বর সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের প্রশাসক আব্দুস জহির চৌধুরী সুফিয়ান এবং বিশেষ অতিথি থাকবেন অ্যাডভোকেট ফজিলাতুৃন্নেসা বাপ্পী এমপি। যুক্তরাষ্ট্্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ অনুষ্ঠানটি সফল করতে দলীয় নেতা-কর্মী ও মহাজোট সরকারের নেতা-কর্মীসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকলকে অনুরোধ জানিয়েছেন।
৩ নভেম্বরের ইতিহাস: ১৯৭৫ সালের এই দিনটির সূচনালগ্নে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে বন্দি অবস্থায় নির্মমভাবে হত্যা করা হয় মহান মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনাকারী চার জাতীয় নেতা বাংলাদেশের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, মন্ত্রিসভার সদস্য ক্যাপ্টেন এম. মনসুর আলী এবং এএইচএম কামরুজ্জামানকে। দিনটি জাতির ইতিহাসের অন্যতম বেদনাবিধুর দিন। এর আগে একই বছরের ১৫ আগস্ট তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ‘জাতির জনক’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর তার ঘনিষ্ঠ এ চার সহকর্মীকে গ্রেফতার করে কারারুদ্ধ করা হয়। পরবর্তী অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ক্যু-পাল্টা ক্যুর রক্তাক্ত অধ্যায়ে ৩ নভেম্বর সংঘটিত হয় জেল হত্যাকান্ড। সেই থেকে প্রতি বছর এই দিনটি জেলহত্যা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মাধ্যমে ঘাতকচক্র স্বাধীনতার নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করেছিল। আর সেই চক্রান্তকারীদের পাঠানো ঘাতকরাই আইনের প্রতি কোনো রকম তোয়াক্কা না করে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ঢুকে ফজরের আজানের সময় নির্মমভাবে হত্যা করে জাতির চার সূর্য সন্তানকে। কারাগারের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকা অবস্থায় এমন জঘন্য, নৃশংস ও বর্বরোচিত হত্যাকান্ড পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।
জেল হত্যাকান্ডের পরদিনই ঢাকায় লালবাগ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘ ২১ বছর এই হত্যাকান্ডের তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ রাখা হয়। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর জেলহত্যা মামলার প্রক্রিয়া পুনরুজ্জীবিত হয়। এর পর দীর্ঘ ৮ বছরেরও বেশি সময় বিচারকাজ চলার পর বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের ২০ অক্টোবর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত মামলাটির রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ২০ আসামির মধ্যে সাবেক ১৫ সেনা কর্মকর্তার শাস্তি এবং অপর ৫ জনকে খালাস দেওয়া হয়। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে পলাতক তিন আসামির মৃত্যুদন্ড এবং অপর ১২ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড হয়।
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্তরা হচ্ছে রিসালদার মোসলেম উদ্দিন ওরফে হিরন খান, দফাদার মারফত আলী শাহ এবং এলডি দফাদার মোহাম্মদ আবুল হাসেম মৃধা। যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্তরা হচ্ছে লে. কর্নেল (বরখাস্ত) সৈয়দ ফারুক রহমান, কর্নেল (অব.) সৈয়দ শাহরিয়ার রশীদ, মেজর (অব.) বজলুল হুদা, লে. কর্নেল (বরখাস্ত) খন্দকার আবদুর রশীদ, লে. কর্নেল (অব.) শরিফুল হক ডালিম, লে. কর্নেল (অব.) এমএইচএমবি নূর চৌধুরী, লে. কর্নেল (অব.) একেএম মহিউদ্দিন আহমেদ, লে. কর্নেল (অব.) এএম রাশেদ চৌধুরী, মেজর (অব্যাহতিপ্রাপ্ত) আহাম্মদ শরিফুল হোসেন, ক্যাপ্টেন (অব.) আবদুল মাজেদ, ক্যাপ্টেন (অব্যাহতিপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ কিসমত হোসেন এবং ক্যাপ্টেন (অব.) নাজমুল হোসেন আনসার। খালাসপ্রাপ্তরা হচ্ছেন বিএনপি নেতা কেএম ওবায়দুর রহমান (মরহুম), শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, সাবেক মন্ত্রী তাহেরউদ্দিন ঠাকুর (মরহুম), নুরুল ইসলাম মঞ্জুর এবং মেজর (অব.) খায়রুজ্জামান।
২০০৮ সালের ২৮ আগস্ট হাইকোর্টের রায়ে কেবল রিসালদার মোসলেমউদ্দিনের মৃত্যুদন্ড বহাল রেখে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত দফাদার মারফত আলী শাহ ও এলডি দফাদার মোহাম্মদ আবুল হাসেম মৃধা এবং যাজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্ত অপর চার আসামি লে. কর্নেল (বরখাস্ত) সৈয়দ ফারুক রহমান, লে. কর্নেল (অব.) শাহরিয়ার রশীদ খান, মেজর (অব.) বজলুল হুদা ও লে. কর্নেল (অব.) একেএম মহিউদ্দিন আহমেদকে মামলা থেকে খালাস দেওয়া হয়। নি¤œ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত ওই চার আসামির চারটি আপিল ও রাষ্ট্রপক্ষের ডেথ রেফারেন্স নিষ্পত্তি করে বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি আতাউর রহমান খান সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ এ রায় দেন।
তবে জেল হত্যাকান্ডের সুদীর্ঘ সময় পর এর বিচারের রায় হলেও জাতীয় চার নেতার পরিবারের সদস্যরাসহ বিভিন্ন মহল থেকে ওই সময়ই রায়টিকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ ও ‘প্রহসন’ বলে আখ্যায়িত করা হয়। একই সঙ্গে রায়টি প্রত্যাখ্যানও করা হয়। তাদের অভিযোগ, জেল হত্যার ষড়যন্ত্রের দায়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া হয়নি। জাতির ইতিহাসের নৃশংসতম এই হত্যাকান্ডের পুনঃতদন্ত ও পুন: বিচার দাবি করেন তারা।
এদিকে জেলহত্যা মামলায় খালাস পেলেও লে. কর্নেল (বরখাস্ত) সৈয়দ ফারুক রহমান, লে. কর্নেল (অব.) শাহরিয়ার রশীদ খান, মেজর (অব.) বজলুল হুদা ও লে. কর্নেল (অব.) একেএম মহিউদ্দিন আহমেদ এই চারজন বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত হওয়ায় ২০১১ সালের ২৭ জানুয়ারি তাদের ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়। অন্যদিকে হাইকোর্টের রায়ে যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক অপর আট আসামির সম্পর্কে কোনো মতামত না দেওয়ায় তাদের দন্ড বহাল আছে বলে আইনজীবীরা ব্যাখ্যা দিয়েছেন।

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

ঐতিহাসিক জেলহত্যা দিবস ৩ নভেম্বর

প্রকাশের সময় : ০৩:২৭:২২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ নভেম্বর ২০১৪

১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে হত্যার শিকার জাতীয় চার নেতা স্মরণে জেলহত্যা দিবস পালন উপলক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। উল্লেখ্য, ‘জাতির জনক’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহযোদ্ধা, মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, মুজিবনগর সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি শেখ নজরুল ইসলাম এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাপ্টেন মনসুর আলী ও  বাণিজ্যমন্ত্রী এএইচএম কামরুজ্জামানকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। চলতি বছর তাঁদের ৩৬তম মৃত্যুবার্ষিকী।
নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটস্থ পালকি পার্টি সেন্টারে ৩ নভেম্বর সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের প্রশাসক আব্দুস জহির চৌধুরী সুফিয়ান এবং বিশেষ অতিথি থাকবেন অ্যাডভোকেট ফজিলাতুৃন্নেসা বাপ্পী এমপি। যুক্তরাষ্ট্্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ অনুষ্ঠানটি সফল করতে দলীয় নেতা-কর্মী ও মহাজোট সরকারের নেতা-কর্মীসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকলকে অনুরোধ জানিয়েছেন।
৩ নভেম্বরের ইতিহাস: ১৯৭৫ সালের এই দিনটির সূচনালগ্নে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে বন্দি অবস্থায় নির্মমভাবে হত্যা করা হয় মহান মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনাকারী চার জাতীয় নেতা বাংলাদেশের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, মন্ত্রিসভার সদস্য ক্যাপ্টেন এম. মনসুর আলী এবং এএইচএম কামরুজ্জামানকে। দিনটি জাতির ইতিহাসের অন্যতম বেদনাবিধুর দিন। এর আগে একই বছরের ১৫ আগস্ট তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ‘জাতির জনক’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর তার ঘনিষ্ঠ এ চার সহকর্মীকে গ্রেফতার করে কারারুদ্ধ করা হয়। পরবর্তী অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ক্যু-পাল্টা ক্যুর রক্তাক্ত অধ্যায়ে ৩ নভেম্বর সংঘটিত হয় জেল হত্যাকান্ড। সেই থেকে প্রতি বছর এই দিনটি জেলহত্যা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মাধ্যমে ঘাতকচক্র স্বাধীনতার নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করেছিল। আর সেই চক্রান্তকারীদের পাঠানো ঘাতকরাই আইনের প্রতি কোনো রকম তোয়াক্কা না করে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ঢুকে ফজরের আজানের সময় নির্মমভাবে হত্যা করে জাতির চার সূর্য সন্তানকে। কারাগারের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকা অবস্থায় এমন জঘন্য, নৃশংস ও বর্বরোচিত হত্যাকান্ড পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।
জেল হত্যাকান্ডের পরদিনই ঢাকায় লালবাগ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘ ২১ বছর এই হত্যাকান্ডের তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ রাখা হয়। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর জেলহত্যা মামলার প্রক্রিয়া পুনরুজ্জীবিত হয়। এর পর দীর্ঘ ৮ বছরেরও বেশি সময় বিচারকাজ চলার পর বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের ২০ অক্টোবর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত মামলাটির রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ২০ আসামির মধ্যে সাবেক ১৫ সেনা কর্মকর্তার শাস্তি এবং অপর ৫ জনকে খালাস দেওয়া হয়। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে পলাতক তিন আসামির মৃত্যুদন্ড এবং অপর ১২ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড হয়।
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্তরা হচ্ছে রিসালদার মোসলেম উদ্দিন ওরফে হিরন খান, দফাদার মারফত আলী শাহ এবং এলডি দফাদার মোহাম্মদ আবুল হাসেম মৃধা। যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্তরা হচ্ছে লে. কর্নেল (বরখাস্ত) সৈয়দ ফারুক রহমান, কর্নেল (অব.) সৈয়দ শাহরিয়ার রশীদ, মেজর (অব.) বজলুল হুদা, লে. কর্নেল (বরখাস্ত) খন্দকার আবদুর রশীদ, লে. কর্নেল (অব.) শরিফুল হক ডালিম, লে. কর্নেল (অব.) এমএইচএমবি নূর চৌধুরী, লে. কর্নেল (অব.) একেএম মহিউদ্দিন আহমেদ, লে. কর্নেল (অব.) এএম রাশেদ চৌধুরী, মেজর (অব্যাহতিপ্রাপ্ত) আহাম্মদ শরিফুল হোসেন, ক্যাপ্টেন (অব.) আবদুল মাজেদ, ক্যাপ্টেন (অব্যাহতিপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ কিসমত হোসেন এবং ক্যাপ্টেন (অব.) নাজমুল হোসেন আনসার। খালাসপ্রাপ্তরা হচ্ছেন বিএনপি নেতা কেএম ওবায়দুর রহমান (মরহুম), শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, সাবেক মন্ত্রী তাহেরউদ্দিন ঠাকুর (মরহুম), নুরুল ইসলাম মঞ্জুর এবং মেজর (অব.) খায়রুজ্জামান।
২০০৮ সালের ২৮ আগস্ট হাইকোর্টের রায়ে কেবল রিসালদার মোসলেমউদ্দিনের মৃত্যুদন্ড বহাল রেখে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত দফাদার মারফত আলী শাহ ও এলডি দফাদার মোহাম্মদ আবুল হাসেম মৃধা এবং যাজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্ত অপর চার আসামি লে. কর্নেল (বরখাস্ত) সৈয়দ ফারুক রহমান, লে. কর্নেল (অব.) শাহরিয়ার রশীদ খান, মেজর (অব.) বজলুল হুদা ও লে. কর্নেল (অব.) একেএম মহিউদ্দিন আহমেদকে মামলা থেকে খালাস দেওয়া হয়। নি¤œ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত ওই চার আসামির চারটি আপিল ও রাষ্ট্রপক্ষের ডেথ রেফারেন্স নিষ্পত্তি করে বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি আতাউর রহমান খান সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ এ রায় দেন।
তবে জেল হত্যাকান্ডের সুদীর্ঘ সময় পর এর বিচারের রায় হলেও জাতীয় চার নেতার পরিবারের সদস্যরাসহ বিভিন্ন মহল থেকে ওই সময়ই রায়টিকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ ও ‘প্রহসন’ বলে আখ্যায়িত করা হয়। একই সঙ্গে রায়টি প্রত্যাখ্যানও করা হয়। তাদের অভিযোগ, জেল হত্যার ষড়যন্ত্রের দায়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া হয়নি। জাতির ইতিহাসের নৃশংসতম এই হত্যাকান্ডের পুনঃতদন্ত ও পুন: বিচার দাবি করেন তারা।
এদিকে জেলহত্যা মামলায় খালাস পেলেও লে. কর্নেল (বরখাস্ত) সৈয়দ ফারুক রহমান, লে. কর্নেল (অব.) শাহরিয়ার রশীদ খান, মেজর (অব.) বজলুল হুদা ও লে. কর্নেল (অব.) একেএম মহিউদ্দিন আহমেদ এই চারজন বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত হওয়ায় ২০১১ সালের ২৭ জানুয়ারি তাদের ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়। অন্যদিকে হাইকোর্টের রায়ে যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক অপর আট আসামির সম্পর্কে কোনো মতামত না দেওয়ায় তাদের দন্ড বহাল আছে বলে আইনজীবীরা ব্যাখ্যা দিয়েছেন।