ঢাকা: অভিজিত রায় হত্যাকান্ড বাংলাদেশের সংবিধান ও ব্যক্তি স্বাধীনতার ওপর হামলা। দেশটিতে মুক্ত বুদ্ধি চর্চার যে গর্বিত রীতি রয়েছে এ হামলা তার বিরুদ্ধে। বাংলাদেশ চাইলে এ হত্যার তদন্তে সহায়তা দিতে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র। গত ২৭ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত বিফ্রিংয়ে এ কথা বলেন মুখপাত্র জেন পসাকি। এতে তিনি বলেন, অভিজিত রায়কে হত্যার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এ হামলা নৃশংস ও কাপুরুষোচিত। অভিজিত ছিলেন একজন সাংবাদিক, মানবতাবাদী, একজন স্বামী, একজন বন্ধু। পসাকি বলেন, তার এ মৃত্যুতে আমরা তার পরিবার ও বন্ধুদের প্রতি সমবেদনা জানাই। বাংলাদেশ সময় শুক্রবার রাত ২টায় এ বিবৃতি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। অভিজিত হত্যা কি শুধুই হত্যা নাকি এর পিছনে অন্য কোন ইঙ্গিত আছে তা জানতে চান সাংবাদিকরা। এখানে প্রশ্নোত্তর আকারে ওই বিফ্রিং তুলে ধরা হলো:
প্রশ্ন: বাংলাদেশ প্রসঙ্গে।
উত্তর: আমি কি আরও কিছু যোগ করতে পারি?
প্রশ্ন: হ্যাঁ।
উত্তর: আমাদের সঙ্গে কয়েকজন বন্ধু আছেন, তারা আমাদের সঙ্গে আজ পরিদর্শনে এসেছেন। আমাদের সঙ্গে আছেন দু‘জন ভদ্রমহিলা। তারা হলেন জেনিফার, আলী ও জো। জো শিগগিরই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হচ্ছেন। ম্যাট প্রশ্ন করুন।
প্রশ্ন: বাংলাদেশে হত্যা।
উত্তর: হ্যাঁ।
প্রশ্ন: প্রশাসন কি এার বিষয়ে কোন বর্ণনা দেবে? আপনি কি মনে করেন এটা হত্যাকান্ড ছাড়া অন্য কিছু ছিল কিনা? দৃশ্যত, পারিপার্শ্বিক অবস্থায় এমনই ইঙ্গিত দেয়।
উত্তর: এই মুহূর্তে আমার কাছে এর চেয়ে আর কোন তথ্য নেই। যথার্থ হলে আমরা অবশ্যই কনসুলার সহায়তা দেব। আহ্বান জানালে আমরা তদন্তে সহায়তা করতে প্রস্তুত। পরিষ্কারভাবে বলছি, আমরা তার অতীত জানি। তবে এই মুহূর্তে প্রশাসনিক কোন বিষয় নিয়ে কিছু বলতে পারবো না।
অভিজিতের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেছে এফবিআই
লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যাকান্ডের তদন্ত করার ব্যাপারে তাঁর পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো (এফবিআই)। সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পরিবার চাইলে তারা হত্যার বিষয়ে তদন্ত করতে প্রস্তুত।
অভিজিৎ রায় যুক্তরাষ্ট্রেরও নাগরিক ছিলেন। তাঁর বাবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক অজয় রায় এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘গতকাল শুক্রবার এফবিআইয়ের পক্ষ থেকে আমাদের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা তদন্ত করতে প্রস্তুত বলে আমাদের জানিয়েছে। আমরা বলেছি, আমরা সুষ্ঠু তদন্ত চাই।’ তিনি জানান, বাংলাদেশে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের একটি প্রতিনিধিদল তাঁদের রমনার বাসায় আসবে। এ বিষয়ে দূতাবাস থেকে তাঁদের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে।
পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সঙ্গেও এফবিআইয়ের পক্ষ থেকে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে ডিবির জ্যেষ্ঠ কোনো কর্মকর্তাই এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। (দৈনিক মানবজমিন)