নিউইয়র্ক ০৭:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

গাফফারের খোদাদ্রোহীতা : পর্বত সদৃশ অজ্ঞতা ও বেয়াদবি

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১০:৫০:০০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জুলাই ২০১৫
  • / ১০৮৪ বার পঠিত

মোবায়েদুর রহমান: গত ৩ জুলাই নিউইয়র্কে বাংলাদেশের জাতিসংঘ মিশনের আলোচনা সভায় গাফফারের বক্তৃতার বিষয়বস্ত ছিল, ‘বাংলাদেশ : অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যত’ অথচ বাংলাদেশের ওপর আলোচনাকে কেন্দ্রীভূত না করে তিনি অপ্রাসঙ্গিকভাবে আল্লাহ্, রাসূল (সা:) তথা ইসলামের বিরুদ্ধে বিষোদগার শুরু করেন। ফলে এটি স্পষ্ট হয়ে যায় যে, আমেরিকায় তাকে আনা হয়েছিল ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানোর জন্য।
যা ঘটেছে সেটি স্বাভাবিক
নিউইয়র্কে বাংলাদেশী মুসলমানদের ক্ষোভের যে বিষ্ফোরন ঘটেছে সেটি অত্যন্ত স্বাভাবিক। কারণ ইতিপূর্বে অনেকে ব্লাসফেমাস এ্যাক্ট বা ধর্মদ্রোহী কাজে অনেকে লিপ্ত হয়েছে। ইংল্যান্ডের সালমান রুশদি এবং বাংলাদেশের দাউদ হায়দার ও তসলিমা নাসরিন ধর্মদ্রোহীতা করেছে। কিন্তু স্বয়ং আল্লাহ্ সুবহানাহু তা’লার ৯৯ টি নামকে নিয়ে কটাক্ষ করার সাহস কেউ করেনি। গাফফার চৌধুরীই প্রথম বাংলাদেশী যে সর্বপ্রথম খোদ আল্লাহ তা’লাকে চ্যালেঞ্জ করল। এরপর আর কোনো মমিন মুসলমনের পক্ষে স্থির থাকা সম্ভব নয়। সেই পুঞ্জীভুত ক্ষোভেরই প্রচন্ড বিষ্ফোরন ঘটেছে নিউইয়র্কে।
তাহলে কারা করল এই আয়োজন?
গাফফারকে আমেরিকা নিয়ে গেল কে বা কারা? গাফফার যদি ব্যক্তিগত উদ্যোগে আমেরিকা যেত এবং ব্যক্তিগতভাবে আমেরিকায় এসব বক্তব্য দিত তাহলে সেগুলো এক ভাবে বিবেচনা করা যেত। কিন্তু তার যে বক্তব্যের বিরুদ্ধে মুসলমানদের প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে সে অনুষ্ঠাণের সঞ্চালক ছিলেন নিউইয়র্কে অবস্থিত বাংলাদেশের জাতিসংঘ দুতাবাসের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এম. এ মোমেন। এই দুতাবাসটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ এবং স্থায়ী প্রতিনিধি মোমেনের চাকরী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে। ড. মোমেন কি এই অনুষ্ঠানটি করার আগে অথবা গাফফারকে একমাত্র বক্তা করে অনুষ্ঠান করার অনুমতি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে নিয়ে ছিলেন? নাকি এমন একটি অনুষ্ঠান করার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাকে নির্দেশ দিয়েছিল? যদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মতি বা নির্দেশ থাকে তাহলে বলতেই হবে যে, এই ধর্মদ্রোহীতা বা খোদাদ্রোহীতায় রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা ছিল। আর যদি সেটা না থাকে তাহলে সম্পূর্ণ দায়িত্ব স্থায়ী প্রতিনিধি মোমিনের ঘাড়ে বর্তায়। সেক্ষেত্রে প্রশ্ন হলো, ড. মোমেনের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে কি? গতকাল অর্থাৎ ৭ জুলাই পর্যন্ত এই অপ্রীতিকর ঘটনার ৫ দিন পার হয়ে গেছে। সরকার বা আওয়ামী লীগের কোনো পর্যায় থেকেই এখন পর্যন্ত এই ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। তাই অবিলম্বে সরকার এবং আওয়ামী লীগের তরফ থেকে এই নীরবতা ভঙ্গ করতে হবে। অন্যথায় শুধু নিউ ইয়র্কের বাঙ্গালী মুসলমানরাই নয়, বাংলাদেশের বাঙ্গালী মুসলমানরাও ধরে নেবেন যে, এই ধর্মদ্রোহীতার পেছনে রাষ্ট্রীয় মদদ রয়েছে।
গাফফারের বিষোদ্গার
খোদ আল্লাহ তায়ালাকে চ্যালেঞ্জ করে গাফ্ফার যেসব উদ্ধত উক্তি করেছে তার মধ্যে রয়েছে হিমালয় পর্বত সদৃশ অজ্ঞতা। আল্লাহ ৯৯ নাম, রাসূল (সঃ) এর সংজ্ঞা, আবু বকর নামের অর্থ, দাড়ি টুপি, হিজাব ও নেকাব প্রভৃতি সম্পর্কে গাফফার যেসব কথা বলেছে সেগুলো শুনে এবং পড়ে বোঝা গেছে যে, পবিত্র কোরআন এবং ইসলাম সম্পর্কে এই লোকটির নূন্যতম জ্ঞানও নাই। গাফফার যে আউলা পাতালা বক্তব্য দিয়েছে তাতে বুঝতে অসুবিধা হয়না যে, সে একটি বিশেষ মিশন নিয়ে নেমেছে। এবং সেই মিশন বাস্তবায়িত করার জন্য অদৃশ্য থেকে একটি শক্তিশালী মহল মদদ যোগাচ্ছে।
আন্দালিব রহমানের প্রেসক্রিপশন
গাফফারের এই স্পর্দ্ধিত উক্তির পর জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি যুবনেতা, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান আন্দালিফ রহমান পার্থ বলেছেন, জনাব লতিফ সিদ্দিকি যখন ইসলাম নিয়ে কটূক্তি করেছিল তখন বলেছিলাম এই লোককে জুতা মারলে মিনাতে শয়তানকে পাথর মারার মত সাওয়াব হয়ত হবে না। তবে কিছু সাওয়াব অবশ্যই হবে।
আন্দালিফ রহমান পার্থ বলেন, এখন গাফফার চৌধুরীর ইসলাম নিয়ে কটূক্তির সংবাদটি পড়ার পর আমার মনে হচ্ছে যে, জুতা মারার ব্যাপারটা গাফফার সাহেবের ওপরও প্রযোজ্য।
পর্বত সদৃশ অজ্ঞতা
আবদুল গাফফার চৌধুরী বলেন, ‘আজকের আরবি ভাষায় যেসব শব্দ এর সবই কাফেরদের ব্যবহৃত শব্দ। যেমন- আল্লাহর ৯৯ নাম, সবই কিন্তু কাফেরদের দেবতাদের নাম। তাদের ভাষা ছিল আর-রহমান, গাফফার, গফুর ইত্যাদি। সবই কিন্তু পরবর্তীতে ইসলাম এডাপ্ট করেছিল।’ কিন্তু গাফফার জানে না যে, আল্লাহ্ জাল্লাহ শানুহুর ৯৯ নামের কিছু নাম এসেছে আল্লাহর নিজের পছন্দে যা কোরআনুল করিমে আল্লাহ নিজেকে নিজে অভিহিত করেছেন, কিছু এসেছে জিব্রাইল ফেরেশতার পরমর্শে। ৯৯ নামের হাদিসটি আবু হোরায়রা (রা) বর্ণিত, এর সনদ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
কাবা শরীফে ৩০০ এর উপরে যে মূর্তিগুলি ছিলো তাদের নামের সাথে আল্লাহর ৯৯ নামের কোনো মিল নেই। এ সব মূর্তির নাম হলো, লাত, উজ্জা, মানাত, অবগাল, দুল খালসা, হুবাল, মালাকবেল, নেব, নের্গাল, সিন সুয়া, নুহা, সুয়া ইত্যাদি। কিন্তু আল্লাহর গুনবাচকতায় বিভিন্নতা ছিলো।
গাফফার পর্দা আর বোরখাকে গুলিয়ে ফেলেছেন। আল কোরানে আল্লাহ বলেন, ‘তারা যেন তাদের চাদরের কিছু অংশ নিজেদের মুখের ওপর টেনে দেয়। তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে। তারা যা সাধারনত প্রকাশ করে থাকে তা ছাড়া তাদের আভরণ প্রদর্শন না করে, তাদের ঘাড় ও বুক যেন মাথার কাপড়ে ঢাকা থাকে। (৩৩:৫৯, ২৪:৩০-৩১)’, যে হুকুম আল্লাহ দিয়েছেন গাফফার তা ওহাবিদের ঘাড়ে চাপিয়েছে। কোরআন শরীফের ব্যাপারে সে কতখানি মূর্খ এবং অজ্ঞ।
গাফফার চৌধুরী বলেন, ‘রসুল মানে দূত, অ্যাম্বাসেডর। রসুলে সালাম মানে শান্তির দূত। রসুল (সা:) বললেই আপনারা মনে করেন হযরত মুহম্মদ (সা:)। তা কিন্তু নয়। যখন রসুলুল্লাহ বলবেন তখন মনে করবেন আল্লাহর প্রতিনিধি। এখন মোমেন ভাই আমেরিকায় থেকে যদি বলেন কিংবা আমি নিজেকে রসুল দাবি করি তাহলে তার কল্লা যাবে।’
গাফফার কি জানে যে, রাসূল তাকে বলা হয়, যার ওপরে জিব্রাইলের মাধ্যমে রেসালত বা আসমানী গ্রন্থ নাজেল হয়। রাসূল মাত্র চারজন, দাউদ, মুসা, ইসা (আ) এবং মুহাম্মদ (সা:), আর যারা শুধু আল্লাহর তরফ থেকে মানুষকে তার প্রতি আহ্বান জানান তারা হলেন নবী। তাদের ওপর কোনো আসমানী কিতাব নাজিল হয়নি। যেমন নূহ নবী, সালেহ নবী। তাই সব রাসূলই নবী, কিন্তু সব নবী রাসূল নন। গাফফারের মাথায় এটি ঢুকেছে বলে মনে হয় না।
সুতরাং অজ্ঞতা থেকে হউক অথবা ঠান্ডা মাথায় হউক, গাফফারের মত যারা আল্লাহর নামকে চ্যালেঞ্জ করে তারা মুরতাদ, তারা খারেজী। এদের শাস্তি হতে হবে শরীয়াহ মোতাবেক, ফৌজদারী আইনে নয়।(দৈনিক ইনকিলাব)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

গাফফারের খোদাদ্রোহীতা : পর্বত সদৃশ অজ্ঞতা ও বেয়াদবি

প্রকাশের সময় : ১০:৫০:০০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জুলাই ২০১৫

মোবায়েদুর রহমান: গত ৩ জুলাই নিউইয়র্কে বাংলাদেশের জাতিসংঘ মিশনের আলোচনা সভায় গাফফারের বক্তৃতার বিষয়বস্ত ছিল, ‘বাংলাদেশ : অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যত’ অথচ বাংলাদেশের ওপর আলোচনাকে কেন্দ্রীভূত না করে তিনি অপ্রাসঙ্গিকভাবে আল্লাহ্, রাসূল (সা:) তথা ইসলামের বিরুদ্ধে বিষোদগার শুরু করেন। ফলে এটি স্পষ্ট হয়ে যায় যে, আমেরিকায় তাকে আনা হয়েছিল ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানোর জন্য।
যা ঘটেছে সেটি স্বাভাবিক
নিউইয়র্কে বাংলাদেশী মুসলমানদের ক্ষোভের যে বিষ্ফোরন ঘটেছে সেটি অত্যন্ত স্বাভাবিক। কারণ ইতিপূর্বে অনেকে ব্লাসফেমাস এ্যাক্ট বা ধর্মদ্রোহী কাজে অনেকে লিপ্ত হয়েছে। ইংল্যান্ডের সালমান রুশদি এবং বাংলাদেশের দাউদ হায়দার ও তসলিমা নাসরিন ধর্মদ্রোহীতা করেছে। কিন্তু স্বয়ং আল্লাহ্ সুবহানাহু তা’লার ৯৯ টি নামকে নিয়ে কটাক্ষ করার সাহস কেউ করেনি। গাফফার চৌধুরীই প্রথম বাংলাদেশী যে সর্বপ্রথম খোদ আল্লাহ তা’লাকে চ্যালেঞ্জ করল। এরপর আর কোনো মমিন মুসলমনের পক্ষে স্থির থাকা সম্ভব নয়। সেই পুঞ্জীভুত ক্ষোভেরই প্রচন্ড বিষ্ফোরন ঘটেছে নিউইয়র্কে।
তাহলে কারা করল এই আয়োজন?
গাফফারকে আমেরিকা নিয়ে গেল কে বা কারা? গাফফার যদি ব্যক্তিগত উদ্যোগে আমেরিকা যেত এবং ব্যক্তিগতভাবে আমেরিকায় এসব বক্তব্য দিত তাহলে সেগুলো এক ভাবে বিবেচনা করা যেত। কিন্তু তার যে বক্তব্যের বিরুদ্ধে মুসলমানদের প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে সে অনুষ্ঠাণের সঞ্চালক ছিলেন নিউইয়র্কে অবস্থিত বাংলাদেশের জাতিসংঘ দুতাবাসের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এম. এ মোমেন। এই দুতাবাসটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ এবং স্থায়ী প্রতিনিধি মোমেনের চাকরী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে। ড. মোমেন কি এই অনুষ্ঠানটি করার আগে অথবা গাফফারকে একমাত্র বক্তা করে অনুষ্ঠান করার অনুমতি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে নিয়ে ছিলেন? নাকি এমন একটি অনুষ্ঠান করার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাকে নির্দেশ দিয়েছিল? যদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মতি বা নির্দেশ থাকে তাহলে বলতেই হবে যে, এই ধর্মদ্রোহীতা বা খোদাদ্রোহীতায় রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা ছিল। আর যদি সেটা না থাকে তাহলে সম্পূর্ণ দায়িত্ব স্থায়ী প্রতিনিধি মোমিনের ঘাড়ে বর্তায়। সেক্ষেত্রে প্রশ্ন হলো, ড. মোমেনের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে কি? গতকাল অর্থাৎ ৭ জুলাই পর্যন্ত এই অপ্রীতিকর ঘটনার ৫ দিন পার হয়ে গেছে। সরকার বা আওয়ামী লীগের কোনো পর্যায় থেকেই এখন পর্যন্ত এই ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। তাই অবিলম্বে সরকার এবং আওয়ামী লীগের তরফ থেকে এই নীরবতা ভঙ্গ করতে হবে। অন্যথায় শুধু নিউ ইয়র্কের বাঙ্গালী মুসলমানরাই নয়, বাংলাদেশের বাঙ্গালী মুসলমানরাও ধরে নেবেন যে, এই ধর্মদ্রোহীতার পেছনে রাষ্ট্রীয় মদদ রয়েছে।
গাফফারের বিষোদ্গার
খোদ আল্লাহ তায়ালাকে চ্যালেঞ্জ করে গাফ্ফার যেসব উদ্ধত উক্তি করেছে তার মধ্যে রয়েছে হিমালয় পর্বত সদৃশ অজ্ঞতা। আল্লাহ ৯৯ নাম, রাসূল (সঃ) এর সংজ্ঞা, আবু বকর নামের অর্থ, দাড়ি টুপি, হিজাব ও নেকাব প্রভৃতি সম্পর্কে গাফফার যেসব কথা বলেছে সেগুলো শুনে এবং পড়ে বোঝা গেছে যে, পবিত্র কোরআন এবং ইসলাম সম্পর্কে এই লোকটির নূন্যতম জ্ঞানও নাই। গাফফার যে আউলা পাতালা বক্তব্য দিয়েছে তাতে বুঝতে অসুবিধা হয়না যে, সে একটি বিশেষ মিশন নিয়ে নেমেছে। এবং সেই মিশন বাস্তবায়িত করার জন্য অদৃশ্য থেকে একটি শক্তিশালী মহল মদদ যোগাচ্ছে।
আন্দালিব রহমানের প্রেসক্রিপশন
গাফফারের এই স্পর্দ্ধিত উক্তির পর জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি যুবনেতা, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান আন্দালিফ রহমান পার্থ বলেছেন, জনাব লতিফ সিদ্দিকি যখন ইসলাম নিয়ে কটূক্তি করেছিল তখন বলেছিলাম এই লোককে জুতা মারলে মিনাতে শয়তানকে পাথর মারার মত সাওয়াব হয়ত হবে না। তবে কিছু সাওয়াব অবশ্যই হবে।
আন্দালিফ রহমান পার্থ বলেন, এখন গাফফার চৌধুরীর ইসলাম নিয়ে কটূক্তির সংবাদটি পড়ার পর আমার মনে হচ্ছে যে, জুতা মারার ব্যাপারটা গাফফার সাহেবের ওপরও প্রযোজ্য।
পর্বত সদৃশ অজ্ঞতা
আবদুল গাফফার চৌধুরী বলেন, ‘আজকের আরবি ভাষায় যেসব শব্দ এর সবই কাফেরদের ব্যবহৃত শব্দ। যেমন- আল্লাহর ৯৯ নাম, সবই কিন্তু কাফেরদের দেবতাদের নাম। তাদের ভাষা ছিল আর-রহমান, গাফফার, গফুর ইত্যাদি। সবই কিন্তু পরবর্তীতে ইসলাম এডাপ্ট করেছিল।’ কিন্তু গাফফার জানে না যে, আল্লাহ্ জাল্লাহ শানুহুর ৯৯ নামের কিছু নাম এসেছে আল্লাহর নিজের পছন্দে যা কোরআনুল করিমে আল্লাহ নিজেকে নিজে অভিহিত করেছেন, কিছু এসেছে জিব্রাইল ফেরেশতার পরমর্শে। ৯৯ নামের হাদিসটি আবু হোরায়রা (রা) বর্ণিত, এর সনদ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
কাবা শরীফে ৩০০ এর উপরে যে মূর্তিগুলি ছিলো তাদের নামের সাথে আল্লাহর ৯৯ নামের কোনো মিল নেই। এ সব মূর্তির নাম হলো, লাত, উজ্জা, মানাত, অবগাল, দুল খালসা, হুবাল, মালাকবেল, নেব, নের্গাল, সিন সুয়া, নুহা, সুয়া ইত্যাদি। কিন্তু আল্লাহর গুনবাচকতায় বিভিন্নতা ছিলো।
গাফফার পর্দা আর বোরখাকে গুলিয়ে ফেলেছেন। আল কোরানে আল্লাহ বলেন, ‘তারা যেন তাদের চাদরের কিছু অংশ নিজেদের মুখের ওপর টেনে দেয়। তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে। তারা যা সাধারনত প্রকাশ করে থাকে তা ছাড়া তাদের আভরণ প্রদর্শন না করে, তাদের ঘাড় ও বুক যেন মাথার কাপড়ে ঢাকা থাকে। (৩৩:৫৯, ২৪:৩০-৩১)’, যে হুকুম আল্লাহ দিয়েছেন গাফফার তা ওহাবিদের ঘাড়ে চাপিয়েছে। কোরআন শরীফের ব্যাপারে সে কতখানি মূর্খ এবং অজ্ঞ।
গাফফার চৌধুরী বলেন, ‘রসুল মানে দূত, অ্যাম্বাসেডর। রসুলে সালাম মানে শান্তির দূত। রসুল (সা:) বললেই আপনারা মনে করেন হযরত মুহম্মদ (সা:)। তা কিন্তু নয়। যখন রসুলুল্লাহ বলবেন তখন মনে করবেন আল্লাহর প্রতিনিধি। এখন মোমেন ভাই আমেরিকায় থেকে যদি বলেন কিংবা আমি নিজেকে রসুল দাবি করি তাহলে তার কল্লা যাবে।’
গাফফার কি জানে যে, রাসূল তাকে বলা হয়, যার ওপরে জিব্রাইলের মাধ্যমে রেসালত বা আসমানী গ্রন্থ নাজেল হয়। রাসূল মাত্র চারজন, দাউদ, মুসা, ইসা (আ) এবং মুহাম্মদ (সা:), আর যারা শুধু আল্লাহর তরফ থেকে মানুষকে তার প্রতি আহ্বান জানান তারা হলেন নবী। তাদের ওপর কোনো আসমানী কিতাব নাজিল হয়নি। যেমন নূহ নবী, সালেহ নবী। তাই সব রাসূলই নবী, কিন্তু সব নবী রাসূল নন। গাফফারের মাথায় এটি ঢুকেছে বলে মনে হয় না।
সুতরাং অজ্ঞতা থেকে হউক অথবা ঠান্ডা মাথায় হউক, গাফফারের মত যারা আল্লাহর নামকে চ্যালেঞ্জ করে তারা মুরতাদ, তারা খারেজী। এদের শাস্তি হতে হবে শরীয়াহ মোতাবেক, ফৌজদারী আইনে নয়।(দৈনিক ইনকিলাব)