বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা আরো ঝুঁকিতে পড়ে যাবে : ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে’র ব্রিফিং
- প্রকাশের সময় : ০৯:৫৭:০৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১ মে ২০১৫
- / ৬০৭ বার পঠিত
নিউইয়র্ক: বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও স্বাধীন মত প্রকাশ ‘নট ফ্রি’ বা স্বাধীন নয় ক্যাটাগরি থেকে মাত্র ৬-৭ পয়েন্ট দূরে অবস্থান করছে। গণমাধ্যমের অনেক নীতি দেশটিতে লঙ্ঘন করা হচ্ছে যা উল্লেখ করার মতো। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে আগামীতে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা আন্তর্জাতিক ক্যাটাগরিতে ‘নট ফ্রি’ (মুক্ত নয়) সূচকের ঝুঁকিতে পড়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন ‘ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে’ অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া বক্তারা।
‘ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে’ উপলক্ষে ২৯ এপ্রিল বুধবার দুপুরে ওয়াশিংটন ডিসিতে আয়োজিত এক ব্রিফিং-এ এসব কথা বলেন তারা। নিউইয়র্কে অবস্থিত স্টেট ডিপার্টমেন্টের ফরেন প্রেস সেন্টার থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ মতবিনিময় সভায় যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাংবাদিকরা অংশ নেন। নিউইয়র্কে এই ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন বাংলাদেশের দুই সাংবাদিক যথাক্রমে অনলাইন নিউজপোর্টাল ‘জাস্ট নিউজ বিডি’র সম্পাদক মুশফিকুল ফজল আনসারী ও নিউইয়র্ক ভিত্তিক কমিউনিটি টিভি চ্যানেলের সাংবাদিক শিবলী চৌধুরী কায়েস। ওয়াশিংটন ডিসিতে বিশ্ব গণমাধ্যম মুক্ত দিবসের এ মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন দেশের সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী, নিউইয়র্ক টাইমস ও ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক ডগলাস ফ্র্যান্টজ, ফ্রিডম হাউসের ভাইস প্রেসিডেন্ট ভেনেসা টিউকার ও ফ্রিডম হাউজের প্রজেক্ট ম্যানেজার জেনিফার ডানহেম।
নানা প্রতিবন্ধকতা ও প্রতিকূলতার মধ্যেও বাংলাদেশের সাংবাদিকদের সাহসিকতার প্রশংসা করেন, অনুষ্ঠানের প্রধান আলোচক ডগলাস ফ্র্যান্টজ। বাংলাদেশী সাংবাদিক হিসেবে জাস্ট নিউজ-এর সম্পাদক মুশফিক ফজল আনসারী দেশের চলমান পরিস্থিতি ও তার নিউজ পোর্টাল জাস্ট নিউজ বাংলাদেশে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করে এ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গি জানতে চান।
জবাবে ডগলাস ফ্র্যান্টজ বলেন, সব কিছুতে গণতান্ত্রিক চর্চাটাই আমাদের প্রত্যাশা। আমি বিশ্বাস করি যে কোন গণতান্ত্রিক দেশের দাবিদার তাদের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে সবার আগে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত না হলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। ওবামা প্রশাসনের প্রভাবশালী এই সাংবাদিক তার দেশেরই কিছু উদাহরণ দিয়ে বলেন, সরকারের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে গণমাধ্যমের কিছু সংবাদ চোখে পড়ে যা আমাকে অসন্তুষ্ট করে। কিছু সংবাদ আছে যা সঠিক নয়, এগুলো যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে তোলে। দেশ ও গণতন্ত্রের স্বার্থে বিভ্রান্তি কাম্য নয়। সাংবাদিকতার মাধ্যমে যেন কোন অপরাধ সংঘঠিত না হয়, সে বিষয়টিও খেয়াল রাখতে হবে। এর আগে ভেনেসা টিউকার বলেন, বাংলাদেশে গণমাধ্যমের মত প্রকাশের স্বাধীনতার ‘নট ফ্রি’ ক্যাটাগরি থেকে মাত্র ৬-৭ পয়েন্ট দূরে অবস্থান করছে। গণমাধ্যমের অনেক নীতি দেশটিতে লঙ্ঘন করা হচ্ছে যা উল্লেখ করার মতো। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে এটি ‘নট ফ্রি’ (মুক্ত নয়) সূচকের ঝুঁকিতে পড়ে যাবে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের সাংবাদিক শিবলী চৌধুরী কায়েস দেশে পেশাগত দায়িত্বপালন করতে গিয়ে নিজে সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার ও দিগন্ত টিভি বন্ধের কথা উল্লেখ করে জানতে চান বাংলাদেশের গণমাধ্যম কর্মীদের নিরাপত্তায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তথা ও ফ্রিডম হাউজের অবস্থান কী? জবাবে মডারেটর বলেন, বাংলাদেশ প্রসঙ্গে একই বিষয় পূর্বে উত্থাপিত হয়েছে। আমাদের আগের মতামতই ব্যক্ত করছি। একই প্রসঙ্গে ফ্রিডম হাউসের ভাইস প্রেসিডেন্ট ভেনেসা টিউকার বলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচকে বাংলাদেশের পূর্বের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। আমরা কিছু সমস্যার বিষয়ে অবগত করেছি, বিশেষ করে বিচার ব্যবস্থায় রাজনীতিকরণ প্রসঙ্গে। আমরা সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যানের এ রকম একটি মামলার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।