নিউইয়র্ক ০৮:৫৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

নিউইয়র্কের প্রেসনোট : হলুদ সাংবাদিকতার শিকার গাফফার চৌধুরী

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০২:০৩:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জুলাই ২০১৫
  • / ৯৩৩ বার পঠিত

কাফেরদের নামকরণে আরবী শব্দের ব্যবহার নিয়ে নিউইয়র্কে অমর একুশের গানের রচয়িতা, প্রখ্যাত সাংবাদিক ও কলামিস্ট আব্দুল গাফফার চৌধুরী প্রদত্ত বক্তব্যকে নিউইয়র্ক ভিক্তিক একটি অপেশাদার নিউজ এজেন্সীর পাঠানো ‘টুইস্ট করা’ খবরে দেশে-প্রবাসে তোলপাড় চলছে। গত ৩ জুলাই শুক্রবার জাতিসংঘের বাংলাদেশ মিশনে গাফফার চৌধুরীর পুরো বক্তব্য এবং উপস্থিত সাংবাদিক ও সুধীজনের প্রশ্নোত্তর পর্বটি পুরোটাই নিউইয়র্ক ভিত্তিক টাইম টেলিভিশন সরাসরি সম্প্রচার করে। নিউইয়র্কে কর্মরত ঢাকার একাধিক জাতীয় দৈনিকের নিজস্ব প্রতিনিধিদের রিপোর্ট সংশ্লিষ্ট মিডিয়াগুলোতে কিছুক্ষণের মধ্যেই অনলাইন সংস্করনে খবর হয়ে প্রকাশিত হয়। এর কয়েক ঘন্টা পর নিউইয়র্ক থেকে এনা নামক নিউজ এজেন্সীর খবর উস্মকানীমূলক শিরোনামে ঢাকার দৈনিক মানবজমিন, আমার দেশ-এ ছাপা হওয়ার পর প্রথমে ঢাকায় ইসলামপন্থী একাধিক রাজনৈতিক দল এবং পরবর্তীতে বিএনপি-জামায়াত ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। পরবর্তী ৩৬ ঘন্টার মধ্যেই তার তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয় নিউইয়র্কে। এনা’র পাঠানো সংবাদটিতে কৌশলে আব্দুল গাফফার চৌধুরীর বক্তব্যকে ঘুরিয়ে দেয়া হয়। অবস্থাটা এরকম যে, ‘এখানে প্রশ্রাব করিবেন না, করিলে জরিমানা’ এই লাইনটিকেই শুধু ‘কমা’র অবস্থান পরিবর্তন করে ‘এখানে প্রশ্রাব করিবেন, না করিলে জরিমানা’ লিখলে বাক্য ও শব্দের কোন পরিবর্তন হয়নি, শুধু ‘কমা’র ব্যবহারে পুরো বক্তব্যই বিকৃত করা সম্ভব। নিউইয়র্কে আব্দুল গাফফার চৌধুরীর বক্তব্যকেও ঠিক একই কায়দায় বিকৃত করা হয়েছে। আরবী ভাষা পবিত্র কোরআন শরীফ নাজেল হওয়ার বহু আগে থেকেই প্রচলিত।
আব্দুল গাফফার চৌধুরী তার বক্তব্যে অনেকেই আরবী ভাষার সঠিক অর্থ না বুঝে বা জেনে তা ব্যবহারের উপর বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, আল্লাহতায়ালার যে ৯৯টি নাম প্রচলিত আছে তার কয়েকটি কোরআন নাজেল হওয়ার আগে কাফেররাও ব্যবহার করতো। তিনি এবিষয়ে কয়েকটি উদাহরণও দেন। তার বক্তব্যটি ছিলো সম্পূর্ণ একাডেমিক পরিবেশে। মাদ্রাসার ছাত্র থাকার সুবাদে তিনি আরবী ও ইসলাম সম্পর্কে কিছুটা জ্ঞান অর্জন করেছিলেন। সেই সূত্রে আরবী ভাষার অপব্যবহার নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, আরবী শব্দ হুরায়রা’র বাংলা তর্জমা বিড়াল। একইভাবে আবু শব্দের তর্জমা বাবা। এখন কেউ যদি কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা মসজিদের নামকরণ করে আবু হুরায়রা তার তর্জমা দাঁড়ায় ‘বিড়ালের বাবা’। এভাবেই তিনি আরো কয়েকটি উদারহণ দিয়ে বলার চেষ্টা করেন যেকোন ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রে তার অর্থ জানা প্রয়োজন। একই সাথে তিনি বাংলা ভাষাকে সাংস্কৃতায়ান করতে হিন্দু-ব্রক্ষণদের লাগাতার অপচেষ্টার বিশদ বর্ণনা দিয়ে বলেন, বাংলা ভাষার উপর কোন আঘাত অতীতে সফল হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না। তিনি ‘বাংলা ভাষা, রবীন্দ্রনাথ ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বাংলাদেশ টিকে থাকবে চিরকাল’ একথাও যেমন বলেছেন, তেমনি রবীন্দ্রনাথ মুসলমানদেরকে কটাক্ষ করে তার লেখনীতে যে শব্দগুলো ব্যবহর করেছেন তারও কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি আওয়ামী লীগে গণতন্ত্রের চর্চার প্রয়োজন দরকার উল্লেখ করে বলেন, অন্যথায় শেখ হাসিনার কিছু হলে দেশ ৭৫ পরবর্তী অবস্থায় ফিরে যেতে পারে।
আব্দুল গাফফার চৌধুরীর পুরো বক্তব্য জাতিসংঘের বাংলাদেশ মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে বসে তিন শতাধিক এবং টাইম টিভির লাইভ সম্প্রচারে নূন্যতম আরো কয়েক হজার দর্শক-শ্রোতা শুনেছেন। কিন্তু যারা প্রতিবাদ ও বিক্ষোভে ফেটে পড়ছেন তাদের শতকরা ৯৯ ভাগ গাফফার চৌধুরীর বক্তব্য না শুনেই শুধুমাত্র ইন্টারনেট নিউজ, ওয়েব পোর্টাল নিউজ ও ফেইস বুকে পোস্ট করা মন্তব্য দেখেই প্রতিবাদী হয়ে উঠেছেন। যেকোন বিষয়ে মত প্রকাশের স্বাধীনতা সকলেরই রয়েছে। ধর্মীয় বিষয়ে বাড়াবাড়ি না করারও পরামর্শ রয়েছে পবিত্র কোরআন শরীফেও। প্রকৃত মুসলমানদের আল কোরআনের নির্দেশ পালন করাই কর্তব্য।
সাংবাদিকতা সমাজ পরিবর্তনের বাহক হতে পারে। কিন্তু কোনভাবেই সমাজে বিশৃঙ্খলা, দাঙ্গা সৃষ্টির সূত্র হতে পারে না।
২.
সাপ্তাহিক পরিচয়-এর এক প্রশ্নের উত্তরে সাপ্তাহিক ঠিকানা’র সম্পাদক লাবলু আনসার জানান, ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারীর পর থেকে তিনি বার্তা সংস্থা এনা’র কোন দায়িত্বে নেই। অতএব এনা প্রেরীত কোন সংবাদের সাথে তার কোন সম্পৃক্ততাও নেই। ১০ জুলাই’২০১৫ (সাপ্তাহিক পরিচয়)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

নিউইয়র্কের প্রেসনোট : হলুদ সাংবাদিকতার শিকার গাফফার চৌধুরী

প্রকাশের সময় : ০২:০৩:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জুলাই ২০১৫

কাফেরদের নামকরণে আরবী শব্দের ব্যবহার নিয়ে নিউইয়র্কে অমর একুশের গানের রচয়িতা, প্রখ্যাত সাংবাদিক ও কলামিস্ট আব্দুল গাফফার চৌধুরী প্রদত্ত বক্তব্যকে নিউইয়র্ক ভিক্তিক একটি অপেশাদার নিউজ এজেন্সীর পাঠানো ‘টুইস্ট করা’ খবরে দেশে-প্রবাসে তোলপাড় চলছে। গত ৩ জুলাই শুক্রবার জাতিসংঘের বাংলাদেশ মিশনে গাফফার চৌধুরীর পুরো বক্তব্য এবং উপস্থিত সাংবাদিক ও সুধীজনের প্রশ্নোত্তর পর্বটি পুরোটাই নিউইয়র্ক ভিত্তিক টাইম টেলিভিশন সরাসরি সম্প্রচার করে। নিউইয়র্কে কর্মরত ঢাকার একাধিক জাতীয় দৈনিকের নিজস্ব প্রতিনিধিদের রিপোর্ট সংশ্লিষ্ট মিডিয়াগুলোতে কিছুক্ষণের মধ্যেই অনলাইন সংস্করনে খবর হয়ে প্রকাশিত হয়। এর কয়েক ঘন্টা পর নিউইয়র্ক থেকে এনা নামক নিউজ এজেন্সীর খবর উস্মকানীমূলক শিরোনামে ঢাকার দৈনিক মানবজমিন, আমার দেশ-এ ছাপা হওয়ার পর প্রথমে ঢাকায় ইসলামপন্থী একাধিক রাজনৈতিক দল এবং পরবর্তীতে বিএনপি-জামায়াত ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। পরবর্তী ৩৬ ঘন্টার মধ্যেই তার তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয় নিউইয়র্কে। এনা’র পাঠানো সংবাদটিতে কৌশলে আব্দুল গাফফার চৌধুরীর বক্তব্যকে ঘুরিয়ে দেয়া হয়। অবস্থাটা এরকম যে, ‘এখানে প্রশ্রাব করিবেন না, করিলে জরিমানা’ এই লাইনটিকেই শুধু ‘কমা’র অবস্থান পরিবর্তন করে ‘এখানে প্রশ্রাব করিবেন, না করিলে জরিমানা’ লিখলে বাক্য ও শব্দের কোন পরিবর্তন হয়নি, শুধু ‘কমা’র ব্যবহারে পুরো বক্তব্যই বিকৃত করা সম্ভব। নিউইয়র্কে আব্দুল গাফফার চৌধুরীর বক্তব্যকেও ঠিক একই কায়দায় বিকৃত করা হয়েছে। আরবী ভাষা পবিত্র কোরআন শরীফ নাজেল হওয়ার বহু আগে থেকেই প্রচলিত।
আব্দুল গাফফার চৌধুরী তার বক্তব্যে অনেকেই আরবী ভাষার সঠিক অর্থ না বুঝে বা জেনে তা ব্যবহারের উপর বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, আল্লাহতায়ালার যে ৯৯টি নাম প্রচলিত আছে তার কয়েকটি কোরআন নাজেল হওয়ার আগে কাফেররাও ব্যবহার করতো। তিনি এবিষয়ে কয়েকটি উদাহরণও দেন। তার বক্তব্যটি ছিলো সম্পূর্ণ একাডেমিক পরিবেশে। মাদ্রাসার ছাত্র থাকার সুবাদে তিনি আরবী ও ইসলাম সম্পর্কে কিছুটা জ্ঞান অর্জন করেছিলেন। সেই সূত্রে আরবী ভাষার অপব্যবহার নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, আরবী শব্দ হুরায়রা’র বাংলা তর্জমা বিড়াল। একইভাবে আবু শব্দের তর্জমা বাবা। এখন কেউ যদি কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা মসজিদের নামকরণ করে আবু হুরায়রা তার তর্জমা দাঁড়ায় ‘বিড়ালের বাবা’। এভাবেই তিনি আরো কয়েকটি উদারহণ দিয়ে বলার চেষ্টা করেন যেকোন ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রে তার অর্থ জানা প্রয়োজন। একই সাথে তিনি বাংলা ভাষাকে সাংস্কৃতায়ান করতে হিন্দু-ব্রক্ষণদের লাগাতার অপচেষ্টার বিশদ বর্ণনা দিয়ে বলেন, বাংলা ভাষার উপর কোন আঘাত অতীতে সফল হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না। তিনি ‘বাংলা ভাষা, রবীন্দ্রনাথ ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বাংলাদেশ টিকে থাকবে চিরকাল’ একথাও যেমন বলেছেন, তেমনি রবীন্দ্রনাথ মুসলমানদেরকে কটাক্ষ করে তার লেখনীতে যে শব্দগুলো ব্যবহর করেছেন তারও কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি আওয়ামী লীগে গণতন্ত্রের চর্চার প্রয়োজন দরকার উল্লেখ করে বলেন, অন্যথায় শেখ হাসিনার কিছু হলে দেশ ৭৫ পরবর্তী অবস্থায় ফিরে যেতে পারে।
আব্দুল গাফফার চৌধুরীর পুরো বক্তব্য জাতিসংঘের বাংলাদেশ মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে বসে তিন শতাধিক এবং টাইম টিভির লাইভ সম্প্রচারে নূন্যতম আরো কয়েক হজার দর্শক-শ্রোতা শুনেছেন। কিন্তু যারা প্রতিবাদ ও বিক্ষোভে ফেটে পড়ছেন তাদের শতকরা ৯৯ ভাগ গাফফার চৌধুরীর বক্তব্য না শুনেই শুধুমাত্র ইন্টারনেট নিউজ, ওয়েব পোর্টাল নিউজ ও ফেইস বুকে পোস্ট করা মন্তব্য দেখেই প্রতিবাদী হয়ে উঠেছেন। যেকোন বিষয়ে মত প্রকাশের স্বাধীনতা সকলেরই রয়েছে। ধর্মীয় বিষয়ে বাড়াবাড়ি না করারও পরামর্শ রয়েছে পবিত্র কোরআন শরীফেও। প্রকৃত মুসলমানদের আল কোরআনের নির্দেশ পালন করাই কর্তব্য।
সাংবাদিকতা সমাজ পরিবর্তনের বাহক হতে পারে। কিন্তু কোনভাবেই সমাজে বিশৃঙ্খলা, দাঙ্গা সৃষ্টির সূত্র হতে পারে না।
২.
সাপ্তাহিক পরিচয়-এর এক প্রশ্নের উত্তরে সাপ্তাহিক ঠিকানা’র সম্পাদক লাবলু আনসার জানান, ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারীর পর থেকে তিনি বার্তা সংস্থা এনা’র কোন দায়িত্বে নেই। অতএব এনা প্রেরীত কোন সংবাদের সাথে তার কোন সম্পৃক্ততাও নেই। ১০ জুলাই’২০১৫ (সাপ্তাহিক পরিচয়)