নিউইয়র্কের প্রেসনোট : বাংলা মিডিয়ার আতœপ্রকাশ, মান ও মর্যাদা
- প্রকাশের সময় : ০৮:৩৩:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ মার্চ ২০১৫
- / ৭৯৫ বার পঠিত
নিউইয়র্কে কয়টি বাংলা সংবাদপত্র, কয়টি টিভি চ্যানেল? এই প্রশ্নের উত্তর দেয়া কঠিন। কেননা, নিউইয়র্ক থেকে এখন মিডিয়া প্রকাশনা বা সম্প্রচারের সংখ্যা এতোই বেড়ে গেছে যে কারো পক্ষেই সঠিক হিসাব দেয়া সম্ভব নয়। তবে প্রাথমিক হিসেবে প্রায় দুই ডজন বাংলা প্রিন্ট মিডিয়ার পাশাপাশি ঢাকার টিভি চ্যানেলগুলো ছাড়াও প্রায় অর্ধ ডজন টিভি এই নিউইয়র্ক থেকে সম্প্রচারিত হচ্ছে। যা উত্তর আমেরিকায় অগ্রসরমান বাংলাদেশী কমিউনিটির জন্য সুখের ব্যপার ছাড়াও দু:খের ব্যাপারও বটে। কেননা, হাতেগোন কয়েকটি প্রিন্ট আর ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া ছাড়া অধিকাংশ মিডিয়ার আতœপ্রকাশ, মান ও মার্যাদা বিশেষ করে সাংবাদিকতার পেশাগত মর্যাদার ব্যাপারে সচেতন মহলে প্রশ্ন রয়েছে। কথায় বলে সাংবাদিক হতে যেমন কোন সার্টিফিকেট লাগে না, তেমনী এই নিউইয়র্কে পত্রিকা প্রকাশ করতে কোন সার্টিফিকেট বা কোন যোগ্যতা লাগে না। মজার ব্যাপার হচ্ছে এখানে সাংবাদিক ছাড়াও যাদের সাংবাদিকতা সম্পর্কে নূন্যতম জ্ঞান-গরিমা নেই তারাও সাংবাদিক-সম্পাদক (!) হয়েছেন। ডাক্তার থেকে শুরু করে বিজ্ঞাপন কালেক্টর বা বিজ্ঞাপন ম্যানেজার এমন কি গৃহবধুর নামও সম্পাদকের তালিকায় উঠেছে। অনেক মিডিয়ায় পেশাদার সাংবাদিক/সম্পাদক নেই। নেই পেশাদারিত্বের ছাপ। অনেক মিডিয়ায় ঢাকার মিডিয়ার খবরাখবর ‘কাট এন্ড পেস্ট’ ছাড়া কমিউনিটির খবর নেই বললেই চলে। যেন বিজ্ঞাপনের জন্যই পত্রিকার প্রকাশ। এমন প্রেক্ষাপটে সিনিয়র ও পেশাদার একজন সম্পাদক আলাপকালে বললেন, ‘নিউইয়র্কের মিডিয়াগুলোর (প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক) অবস্থা, মান-মর্যাদা দেখে নিজেকে এখন আর সম্পাদক/সাংবাদিক পরিচয় দিতে লজ্জা লাগছে’। মাননীয় সম্পাদক মহোদয়ের কথাটি অবশ্যই ভাববার বিষয়।
২.
নিউইয়র্ক থেকে ‘ছাপ’ শীর্ষক একটি মাসিক ম্যাগাজিন প্রকাশিত হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ‘ছাপ’র প্রচারণা শুরু হয়েছে। জানা গেছে, গতানুগতিক ম্যাগাজিন বা পত্রিকা নয় ‘ব্যাতিক্রমী’ ম্যাগ্যাজিন হিসেবেই ‘ছাপ’ প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। ইতিপূর্বে মাসিক বিনোদন, মাসিক আনন্দ, মাসিক কম্পিউটার নেট প্রভৃতি নামে ম্যাগাজিন পত্রিকা প্রকাশিত হয়ে বন্ধ হয়ে গেছে। ১৯৯১ সাথে পরিচয় মাগাজিন আকারে প্রকাশিত হওয়ার পর পরবর্তীতে ট্যাবলেট আকারে সাপ্তাহিক হিসেবে প্রকাশিত হয়ে আসছে। এদিকে গত ২১ ফেব্রুয়ারী থেকে ‘বর্তমান বাংলা’ নামে একটি নতুন সাপ্তাহিক প্রকাশিত হয়েছে। ইতিমধ্যেই বর্তমান বাংলা’র দুটি সংখ্যা বাজারে এসেছে। বর্তমান বাংলা পর্যালোচনায় দেখা যায় এতে নতুনত্ব কিছু তো নেই বরং মানে-গুণে অনেক পত্রিকার চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে। নতুন পত্রিকা হিসেবে নতুনত্ব না থাকলে, নতুন কিছু না দেখালে, অন্য মিডিয়াগুলোর চেয়ে ব্যতিক্রমী কিছু না থাকলে পত্রিকাটি পাঠক প্রিয়তা পাবে না। আর পাঠক প্রিয়তা না পেলে
৩.
নিউইয়র্ক থেকে সম্প্রচারিত টিবিএন২৪ চ্যানেলের ৮টার সংবাদ আপাতত: বন্ধ রয়েছে। নিউইয়র্ক ভিত্তিক বার্তা সংস্থা ইউএনএ পরিবেশিত খবরে বলা হয়েছে: ‘নিউইয়র্ক থেকে সম্প্রচারিত টিবিএন২৪ চ্যানেলের ৮টার সংবাদ আপাতত: বন্ধ থাকবে বলে টিবিএন কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দিয়েছে। গত ১ মার্চ রোববার টিবিএন২৪ চ্যানেলের ঘোষণায় বলা হয়, প্রতিদিনের রাত ৮টার (নিউইয়র্ক সময়) খবর বর্ধিত কলেবরে আরো সমৃদ্ধ করে আগামী ২৬ মার্চ থেকে সম্প্রচার করা হবে। উল্লেখ্য, সম্প্রচারের প্রায় এক বছরের মাথায় গত ২১ ফেব্রুয়ারী থেকে টিবিএন২৪ চ্যানেল প্রতিদিন রাত ৮টায় নৈশকালীন সংবাদ ‘প্রাইম টাইম নিউজ’ শিরোনামে খবর প্রচার শুরু করেছিলো’। বর্ধিত কলেবরে আরো সমৃদ্ধ আকারে টিবিএন২৪ চ্যানেলের খবর প্রচারের উদ্যোগটি বাস্তবসম্মত। তবে টিবিএন২৪ কর্তৃপক্ষ তাদের ৮টার খবর আপাতত: বন্ধ না করে পরীক্ষামূলকভাবে খবরটি প্রচার করা হলে ভালো হতো। তবে গত কয়েকদিনের ‘প্রাইম টাইম নিউজ’ দেখে মনে হয়েছে খবরটিতে কমিউনিটির চেয়ে আন্তর্জাতিক খবর বেশী প্রাধান্য পেয়েছে। বলতে দ্বিধা নেই টিবিএন২৪ চ্যানেলটি বাংলাদেশী কমিউনিটির জন্যই। তাই খবরে কমিউনিটি যত প্রাধান্য পাবে খবরটি ততই জনপ্রিয় হবে। বিষয়টি টিবিএন২৪ কর্তৃপক্ষ ভেবে দেখতে পারেন।
৪.
চলতি সপ্তাহে নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য প্রিন্টমিডিয়াগুলোর মধ্যে সাপ্তাহিক পরিচয়-এর প্রেসনোট ছাড়াও ‘ট্যাক্স ফাইলিং-এ বৈধ কাগজপত্র থাকা অতি জরুরী’, সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা’র ‘উজ্জল দ্যুতি ছড়াচ্ছে বাংলাদেশীরা : আলো ছায়ার জ্যাকসন হাইটসে নানা রঙের মানুষ’, ‘চিঠি আসছে ঘরে ঘরে : কঠোর অবস্থানে আইআরএস’ আর ‘প্রসঙ্গ বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা : নিউইয়র্ক প্রবাসী সম্পাদকদের প্রতিক্রিয়া’, সাপ্তাহিক ঠিকানা’র ‘শৈত প্রবাহে জবুথবু কম্যুনিটি : ব্যবসা-বাণিজ্যে ভাটা’ শীর্ষক প্রতিবেদন পাঠকমহলে আলোচিত হয়েছে। ০৬ মার্চ’২০১৫। (সাপ্তাহিক পরিচয়)