টাইম টিভিকে ক্ষমা প্রার্থনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র আ. লীগের আল্টিমেটাম
- প্রকাশের সময় : ০৩:২৭:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জুন ২০১৬
- / ৯১৮ বার পঠিত
নিউইয়র্ক: ইসরাইলের ক্ষমতাসীন দল লিকুদ পার্টির নেতা মেন্দি সাফাদির মুখ দিয়ে সজীব ওয়াজেদ জয়ের সাথে কথিত বৈঠকের ‘টক শো স্টাইলের ভিডিও চিত্র গ্রহণ’ এবং তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে সাথে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠেছে নিউইয়র্ক থেকে প্রচারিত ‘টাইম টিভি’ এবং একই মালিকানাধীন ‘সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা’র বিরুদ্ধে। এ কারণে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ‘টাইম টিভি’ এবং ‘বাংলা পত্রিকা’ কর্তৃপক্ষকে ৫ দিনের মধ্যে ঘটনার দায় স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা ও দু:খ প্রকাশ করার আহবান জানানো হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের প্যাডে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সৈয়দ বসারত আলী এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ স্বাক্ষরিত পত্রে এ আল্টিমেটাম প্রদান করা হয়েছে গত ৮ জুন।
টাইম টিভি ও বাংলা পত্রিকা বরাবরে প্রেরিত এই পত্রে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, ‘ক্যামেরায় ছলচাতুরির মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা, আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার সজীব ওয়াজেদ জয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করে এমন বক্তব্য প্রচার করা হয়েছে ও অনুষ্ঠানের শেষাংশে বাংলাদেশের গর্বিত সেনাবাহিনীকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে উৎখাত করার আহবান জানানো হয়েছে, যার মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে আপনার টাইম টিভি যে ভূমিকা রেখেছে তাহা যে কোন আইনেই গুরুতর অপরাধ বলে গণ্য হবে ও যাহা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল।’
সজীব ওয়াজেদ জয়ের সাথে সাফাদির কথিত ঐ বৈঠকের কথা সাফাদির মুখ দিয়ে বলিয়ে নিতে যারা টাইম টিভির স্টুডিও ব্যবহার করেছেন তাদের একজন জাহিদ এফ সর্দার সাদীর বিরুদ্ধে ৬ কংগ্রেসম্যানের স্বাক্ষর জালিয়াতিসহ বহু অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে মার্কিন আদালতে। এই সাদী বিএনপি চেয়ারপার্সনের বৈদেশিক বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন। এখনও সে পদে অধিষ্ঠিত থাকার কথা জানিয়ে লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপি নেতা তারেক রহমানের উপদেষ্টাদের নির্দেশে বিভিন্ন তৎপরতা চালাচ্ছেন এই যুক্তরাষ্ট্রে। সাফাদির সাথে কথোপকথনের ঐ ভিডিও চিত্রে আরেকজন রয়েছেন যার নাম জ্যাকব মিল্টন। তার ব্যাপারেও নানা বিতর্ক রয়েছে প্রবাসীদের মধ্যে।
জয়ের সাথে বৈঠকের কথিত ঐ দাবি প্রচার ও প্রকাশের পরই জয় তার ফেসবুকে স্পষ্টভাষায় অস্বীকার করেছেন যে সাফাদির সাথে বৈঠক দূরের কথা সাক্ষাতও ঘটেনি। এরপরই বিডিনিউজের পক্ষ থেকে সাফাদির বক্তব্য জানতে চেষ্টা করা হয়। সাফাদি এখন পর্যন্ত কোন জবাব দেননি। এমনি অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের ব্যানারে গত ১ জুন বুধবার একটি প্রতিবাদ সভা হয় সাফাদির সাথে কথিত ‘টক শো স্টাইলের ভিডিও চিত্র ধারণকারীদের বিচার দাবিতে।’ এর পরদিন অর্থাৎ ২ জুন বৃহস্পতিবার নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের আরেক সংবাদ সম্মেলন থেকে সর্বপ্রথম ‘টাইম টিভি’ ও ‘বাংলা পত্রিকা’র সংশ্লিষ্টতার তথ্য প্রকাশ করে ক্ষোভ জানানো হয়।
গত বছরের শেষার্ধে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ কর্তৃক ‘সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা’কে বর্জনের ঘোষণা দেয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি মিডিয়ার মাধ্যমে ঘোষণাও করেছিলেন যে, বাংলা পত্রিকা জামাত-শিবিরের পারপাস সার্ভ করছে। সে ঘোষণা প্রত্যাহার করা না হলেও গত ৭ মার্চে ‘ঐতিহাসিক ৭ মার্চ স্মরণ সমাবেশে এই বাংলা পত্রিকার সম্পাদককে অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদানের সুযোগ দেয়া হয়। সে ঘটনায় দলীয় নেতা-কর্মীরা হতভম্ব হলেও শীর্ষ কর্মকর্তারা ক্রমান্বয়ে ঐ পত্রিকা ও টাইম টিভির সাথে সম্পর্ক জোরদার করেন। এমনি অবস্থায় টাইম টিভির মাধ্যমে জয়ের বিরুদ্ধে সাফাদির কথিত বৈঠকের কল্প-কাহিনী প্রচারের ঘটনা ঘটে। আর সেটি এমন সময় প্রচার করা হয় যখন সাফাদির সাথে বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীর ষড়যন্ত্র মূলক বৈঠকের মামলা চালু হয় বাংলাদেশে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঐ ভিডিও প্রচারের পর টাইম টিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও বাংলা পত্রিকার সম্পাদক আবু তাহের এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘টাইম টিভি একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান। যে কেউ এর স্টুডিও ভাড়া নিয়ে অনুষ্ঠান নির্মাণ করতে পারেন। তবে নির্মিত সেই অনুষ্ঠানের সাথে টাইম টিভির কোন সম্পর্ক থাকে না।’