নিউইয়র্ক ১২:০৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

লন্ডনে বাংলাদেশীদের নিজস্ব আইডেনটিটি গড়ে উঠেছে

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০২:২১:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ ডিসেম্বর ২০১৫
  • / ৯৪৮ বার পঠিত

নিউইয়র্ক: যুক্তরাজ্য প্রবাসী বাংলাদেশী-বৃটিশ রেষ্টুরেন্ট ব্যবসায়ী আব্দুল মোহাইমেন বলেছেন, লন্ডনে আমাদের চতুর্থ জেনারেশন চলছে। লন্ডনে বাংলাদেশীদের নিজস্ব আইডেনটিটি গড়ে উঠেছে। এজন্য আমাদেরকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। তিনি বলেন, তৎকালীন অর্থমন্ত্রী (মরহুম) এম সাইফুর রহমান সর্বপ্রথম আমাদেরকে লন্ডনে বাংলাদেশীদের নিজস্ব আইডেনটিটি গড়ে তোলার কথা বলেন। তার কথায় অ্যাম্বাসীর সহযোগিতায় আমরা আমাদের নিজস্ব পরিচিতি গড়ে তুলতে সক্ষম হই। তিনি আরো বলেন, প্রবাসে দেশীয় রাজনীতির চেয়ে পরিবারকে বেশী সময় দেয়া উচিৎ। যাতে আমাদের নতুন প্রজন্ম মানুষের মতো মানুষ হতে পারে। নিজেদেরকে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে পারে।
টাইম টেলিভিশনের নিয়মিত লাইভ অনুষ্ঠান ‘টাইম টক’-এ আলোচনাকালে বাংলাদেশী-বৃটিশ রেষ্টুরেন্ট ব্যবসায়ী আব্দুল মোহাইমেন উপরোক্ত কথা বলেন। সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকার সম্পাদক আবু তাহেরের উপস্থাপনায় টাইম টক অনুষ্ঠানে নিজের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ৯ বছর বয়সে বাবা-মা’র হাত ধরে ১৯৭৭ সালে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমাই। সেখানে দুবছর থাকার পর আবার বাংলাদেশে ফিরে যাই। তারপর থেকেই যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশ যাতায়াত। তিনি বলেন, লন্ডনে ‘ও’ লেভেল শেষ করার পর বাংলাদেশও লেখাপড়া করি। তিনি বলেন, প্রথমে বাবার রেষ্টুরেন্টে ব্যবসায় কাজ বছর কাজ করার পর ৯০ সালে নিজেই রেষ্টুরেন্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করি। বর্তমানে তিনি লন্ডনের বিভিন্ন শহরে চারটি রেষ্টুরেন্টের স্বত্তাধিকারী। লন্ডনের ৭৫ ভাগ রেষ্টুরেন্টের মালিকও এখন বাংলাদেশী-বৃটিশ।
বৃহত্তর সিলেটের মৌলভীবাজার জেলার কচুয়া গ্রামের সন্তান আব্দুল মোহাইমেন গত ১৪ বছর ধরে বাংলাদেশে ব্যবসার সাথে জড়িত। তিনি বলেন, নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও বাংলাদেশে ব্যবসা বাণিজ্যের অনেক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে যেসকল সমস্যা বিরাজমান, সেসব সমস্যা পৃথিবীর সকল দেশেই কমবেশী রয়েছে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত আব্দুল মোহাইমেন মরহুম এম. সাইফুর রহমানকে একজন ভালো মানুষ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, তিনি অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে লন্ডন সফরকালে আমাদেরকে বলেন, বাংলাদেশী রেষ্টুরেন্টগুলো ইন্ডিয়ান রেষ্টুরেন্ট হিসেবে পরিচিত। এই পরিচিতি বাংলাদেশী করতে হবে। এজন্য লন্ডনে বাংলাদেশের দূতাবাস সহযোগিতা করবে। বিষয়টি চ্যালেঞ্জিং হলেও আমরা ১০/১২জন রেষ্টুরেন্ট ব্যবসায়ী বন্ধুরা বসে দ্য গিল্ড অব বাংলাদেশী রেষ্টুরেন্ট অ্যাসোসিয়েশন গড়ে প্রচারণা শুরু করি। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সহ হাউজ অব কমন্সে বাংলাদেশী ক্যুজিন লাঞ্চ’র আয়োজন করি। মিডিয়ার সহযোগিতা নেই। তিনি বলেন, এক্ষত্রে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাফল্য আমাদেরকে সহযোগিতা করে। কেননা, ক্রিকেটের নাম বিশ্বজোড়া ছড়িয়ে পড়ায় আমাদের গ্রাহকরা বাংলাদেশ, বাংলাদেশী খাবার আর বাংলাদেশী রেষ্টুরেন্টের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেন। এখন লন্ডনের অনেক রেষ্টুরেন্ট ‘বাংলাদেশী রেষ্টুরেন্ট’ হিসেবেই পরিচিত।
আব্দুল মোহাইমেন বলেন, বৃটিশ-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আমরা যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে ব্যবসার নতুন দিগন্ত রচনা করেছি। বাংলাদেশী-আমেরিকানরাও এমন উদ্যোগ নিয়ে ব্যবসায়িক সুযোগ-সুবিধা নিতে পারেন।
উল্লেখ্য, নিউইয়র্ক সফরকালে আব্দুল মোহাইমেন গত ২৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় টাইম টেলিভিশন ও সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা অফিসে আসেন এবং মিডিয়া দু‘টিতে কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন। পরে তিনি ‘টাইম টক’-এ যোগ দেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

লন্ডনে বাংলাদেশীদের নিজস্ব আইডেনটিটি গড়ে উঠেছে

প্রকাশের সময় : ০২:২১:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ ডিসেম্বর ২০১৫

নিউইয়র্ক: যুক্তরাজ্য প্রবাসী বাংলাদেশী-বৃটিশ রেষ্টুরেন্ট ব্যবসায়ী আব্দুল মোহাইমেন বলেছেন, লন্ডনে আমাদের চতুর্থ জেনারেশন চলছে। লন্ডনে বাংলাদেশীদের নিজস্ব আইডেনটিটি গড়ে উঠেছে। এজন্য আমাদেরকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। তিনি বলেন, তৎকালীন অর্থমন্ত্রী (মরহুম) এম সাইফুর রহমান সর্বপ্রথম আমাদেরকে লন্ডনে বাংলাদেশীদের নিজস্ব আইডেনটিটি গড়ে তোলার কথা বলেন। তার কথায় অ্যাম্বাসীর সহযোগিতায় আমরা আমাদের নিজস্ব পরিচিতি গড়ে তুলতে সক্ষম হই। তিনি আরো বলেন, প্রবাসে দেশীয় রাজনীতির চেয়ে পরিবারকে বেশী সময় দেয়া উচিৎ। যাতে আমাদের নতুন প্রজন্ম মানুষের মতো মানুষ হতে পারে। নিজেদেরকে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে পারে।
টাইম টেলিভিশনের নিয়মিত লাইভ অনুষ্ঠান ‘টাইম টক’-এ আলোচনাকালে বাংলাদেশী-বৃটিশ রেষ্টুরেন্ট ব্যবসায়ী আব্দুল মোহাইমেন উপরোক্ত কথা বলেন। সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকার সম্পাদক আবু তাহেরের উপস্থাপনায় টাইম টক অনুষ্ঠানে নিজের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ৯ বছর বয়সে বাবা-মা’র হাত ধরে ১৯৭৭ সালে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমাই। সেখানে দুবছর থাকার পর আবার বাংলাদেশে ফিরে যাই। তারপর থেকেই যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশ যাতায়াত। তিনি বলেন, লন্ডনে ‘ও’ লেভেল শেষ করার পর বাংলাদেশও লেখাপড়া করি। তিনি বলেন, প্রথমে বাবার রেষ্টুরেন্টে ব্যবসায় কাজ বছর কাজ করার পর ৯০ সালে নিজেই রেষ্টুরেন্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করি। বর্তমানে তিনি লন্ডনের বিভিন্ন শহরে চারটি রেষ্টুরেন্টের স্বত্তাধিকারী। লন্ডনের ৭৫ ভাগ রেষ্টুরেন্টের মালিকও এখন বাংলাদেশী-বৃটিশ।
বৃহত্তর সিলেটের মৌলভীবাজার জেলার কচুয়া গ্রামের সন্তান আব্দুল মোহাইমেন গত ১৪ বছর ধরে বাংলাদেশে ব্যবসার সাথে জড়িত। তিনি বলেন, নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও বাংলাদেশে ব্যবসা বাণিজ্যের অনেক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে যেসকল সমস্যা বিরাজমান, সেসব সমস্যা পৃথিবীর সকল দেশেই কমবেশী রয়েছে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত আব্দুল মোহাইমেন মরহুম এম. সাইফুর রহমানকে একজন ভালো মানুষ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, তিনি অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে লন্ডন সফরকালে আমাদেরকে বলেন, বাংলাদেশী রেষ্টুরেন্টগুলো ইন্ডিয়ান রেষ্টুরেন্ট হিসেবে পরিচিত। এই পরিচিতি বাংলাদেশী করতে হবে। এজন্য লন্ডনে বাংলাদেশের দূতাবাস সহযোগিতা করবে। বিষয়টি চ্যালেঞ্জিং হলেও আমরা ১০/১২জন রেষ্টুরেন্ট ব্যবসায়ী বন্ধুরা বসে দ্য গিল্ড অব বাংলাদেশী রেষ্টুরেন্ট অ্যাসোসিয়েশন গড়ে প্রচারণা শুরু করি। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সহ হাউজ অব কমন্সে বাংলাদেশী ক্যুজিন লাঞ্চ’র আয়োজন করি। মিডিয়ার সহযোগিতা নেই। তিনি বলেন, এক্ষত্রে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাফল্য আমাদেরকে সহযোগিতা করে। কেননা, ক্রিকেটের নাম বিশ্বজোড়া ছড়িয়ে পড়ায় আমাদের গ্রাহকরা বাংলাদেশ, বাংলাদেশী খাবার আর বাংলাদেশী রেষ্টুরেন্টের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেন। এখন লন্ডনের অনেক রেষ্টুরেন্ট ‘বাংলাদেশী রেষ্টুরেন্ট’ হিসেবেই পরিচিত।
আব্দুল মোহাইমেন বলেন, বৃটিশ-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আমরা যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে ব্যবসার নতুন দিগন্ত রচনা করেছি। বাংলাদেশী-আমেরিকানরাও এমন উদ্যোগ নিয়ে ব্যবসায়িক সুযোগ-সুবিধা নিতে পারেন।
উল্লেখ্য, নিউইয়র্ক সফরকালে আব্দুল মোহাইমেন গত ২৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় টাইম টেলিভিশন ও সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা অফিসে আসেন এবং মিডিয়া দু‘টিতে কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন। পরে তিনি ‘টাইম টক’-এ যোগ দেন।