নিউইয়র্ক ০৯:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

ইউরোপে স্পেনের ক্লাবগুলোর কেন এত দাপট?

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১১:৫২:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ মে ২০১৬
  • / ৭১৩ বার পঠিত

ঢাকা: ঘরোয়া লিগের শিরোপা লড়াই শেষ, এবার শুধু ইউরোপিয়ান শ্রেষ্ঠত্বের মীমাংসা বাকি। আর সেখানেও স্পেনের দোর্দণ্ড প্রতাপ। চ্যাম্পিয়নস লিগে তো এবার অল স্প্যানিশ ফাইনালই, ২৮ মে মিলানে মুখোমুখি রিয়াল মাদ্রিদ ও অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। আজ রাতে ইউরোপা লিগের ফাইনালেও লিভারপুলকে হারিয়ে সেভিয়ার সামনে টানা তৃতীয় শিরোপা জেতার সুযোগ। ইউরোপিয়ান ফুটবলে অনেক দিন ধরেই স্পেন ছড়ি ঘোরাচ্ছে। এই মৌসুমেও একমাত্র লিভারপুলের কাছে ভিয়ারিয়ালের হারটা বাদ দিলে ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় ১৭টি নকআউট ম্যাচেই স্প্যানিশ ক্লাবগুলো জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে। কিন্তু ইউরোপিয়ান ফুটবলে স্প্যানিশ জাদুর রহস্য কী?
শীর্ষ দুইয়ের দাপট: বিশ্বের সেরা ক্লাবগুলোর শীর্ষ তালিকার শুরুর দিকেই বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদের নাম আসবে। মেসি ও রোনালদো মিলে এই দুই ক্লাবকে নিয়ে গেছেন অন্য উচ্চতায়। স্পেনের ক্লাবগুলো তাই মৌসুমে অন্তত চারবার এই দুটি দলের সঙ্গে খেলার সুযোগ পাচ্ছে। রিয়াল বা বার্সার সঙ্গে খেলাটা তাদের জন্য যতটা চ্যালেঞ্জিং, ইংল্যান্ড, জার্মানি বা ইতালির অন্যান্য বড় ক্লাবগুলোর সঙ্গে খেলা এখনো ততটা নয়। তার চেয়েও বড় কথা, রিয়াল ও বার্সার একাডেমি থেকে প্রচুর খেলোয়াড়ও বেরিয়ে আসছে। স্পেনের অন্যান্য ক্লাবেও তাঁরা আলো ছড়াচ্ছেন।
কোচিংয়ের বৈচিত্র্য: স্পেনে ফুটবলের অনেক দর্শনই এখন এক মোহনায় এসে মিলেছে। লুইস এনরিকের বার্সেলোনার কথা ধরুন, ডিয়েগো সিমিওনের অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের সঙ্গে তাদের খেলার ধরন বা দর্শন—কোনোটিই মিল নেই। গার্দিওলা যে লিগে টিকিটাকা দর্শনের সফল পরিণতি দেখে গেছেন, সেখানেই সিমিওনে মূলত প্রতি আক্রমণকে ভর করে সাফল্য পেয়েছেন। আবার রিয়াল মাদ্রিদের দর্শনও আলাদা। ভিয়ারিয়াল, সেভিয়া যেমন প্রতি আক্রমণ নির্ভর, বিলবাও তেমনি সেট পিসে দুর্দান্ত। বিভিন্ন ঘরানার এই ফুটবল স্পেনকে আরও শক্তিশালী করেছে।
জহুরির চোখ: বার্সেলোনা ও রিয়াল না হয় কাড়ি কাড়ি টাকা খরচ করতে পারে, কিন্তু স্পেনের অন্যদের তো সেই ক্ষমতা অনেক কম। অ্যাটলেটিকো, সেভিয়াকে তাই নির্ভর করতে হয় স্বল্প পরিচিত লিগ বা নিজেদের একাডেমি থেকে খেলোয়াড় নিয়ে আসার ওপর। সেভিয়ার ক্রীড়া পরিচালক মঙ্কির যেমন খেলোয়াড় চেনার ব্যাপারে দারুণ সুনাম আছে। বার্সেলোনা, লিভারপুলও তাঁকে পেতে অনেক টাকা খরচ করতে চাইছে। অ্যাটলেটিকো যেমন সুপার এজেন্ট হোর্হে মেন্ডেসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সূত্রে দক্ষিণ আমেরিকা থেকে অনেক উঠতি তারকাদের দলে ভিড়িয়েছেন।
ঘরের খেলোয়াড়: বিদেশি নয়, নিজেদের খেলোয়াড়দেরই লালন করার দিকে বেশির ভাগ দল মনোযোগী। রিয়াল সোসিয়েদাদ ও অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের মতো ক্লাবে তো ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত বাস্ক অঞ্চলের খেলোয়াড়েরাই শুধু খেলতে পারতেন। স্পেনের কোচ ভিসেন্তে দেল বস্ক যেমন বলছেন, ‘স্পেনের প্রতিটা দলই একাডেমি থেকে অনেক তরুণদের তুলে আনে। সে জন্য ক্লাব তো বটেই, জাতীয় দলও উপকৃত হয়।’
ইউরোপিয়ান অভিজ্ঞতা: গত দশ বছরে স্পেনের দলগুলো দাপট দেখিয়েছে ইউরোপ সেরার মঞ্চে। চ্যাম্পিয়নস লিগে বার্সেলোনা জিতেছে তিন বার, রিয়াল মাদ্রিদ এক বার। আর এবার তো স্পেনের একটা দলই শিরোপাটা জিততে চলেছে। গত পাঁচ বছরে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় খেলেছে ৬৩টি ম্যাচ। রিয়াল মাদ্রিদ ৬২, বার্সেলোনা ৫৭, সেভিয়া ৫৩, বিলবাও ৫২, ভ্যালেন্সিয়া খেলেছে ৪৮টি ম্যাচ। এএফপি।

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

ইউরোপে স্পেনের ক্লাবগুলোর কেন এত দাপট?

প্রকাশের সময় : ১১:৫২:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ মে ২০১৬

ঢাকা: ঘরোয়া লিগের শিরোপা লড়াই শেষ, এবার শুধু ইউরোপিয়ান শ্রেষ্ঠত্বের মীমাংসা বাকি। আর সেখানেও স্পেনের দোর্দণ্ড প্রতাপ। চ্যাম্পিয়নস লিগে তো এবার অল স্প্যানিশ ফাইনালই, ২৮ মে মিলানে মুখোমুখি রিয়াল মাদ্রিদ ও অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। আজ রাতে ইউরোপা লিগের ফাইনালেও লিভারপুলকে হারিয়ে সেভিয়ার সামনে টানা তৃতীয় শিরোপা জেতার সুযোগ। ইউরোপিয়ান ফুটবলে অনেক দিন ধরেই স্পেন ছড়ি ঘোরাচ্ছে। এই মৌসুমেও একমাত্র লিভারপুলের কাছে ভিয়ারিয়ালের হারটা বাদ দিলে ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় ১৭টি নকআউট ম্যাচেই স্প্যানিশ ক্লাবগুলো জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে। কিন্তু ইউরোপিয়ান ফুটবলে স্প্যানিশ জাদুর রহস্য কী?
শীর্ষ দুইয়ের দাপট: বিশ্বের সেরা ক্লাবগুলোর শীর্ষ তালিকার শুরুর দিকেই বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদের নাম আসবে। মেসি ও রোনালদো মিলে এই দুই ক্লাবকে নিয়ে গেছেন অন্য উচ্চতায়। স্পেনের ক্লাবগুলো তাই মৌসুমে অন্তত চারবার এই দুটি দলের সঙ্গে খেলার সুযোগ পাচ্ছে। রিয়াল বা বার্সার সঙ্গে খেলাটা তাদের জন্য যতটা চ্যালেঞ্জিং, ইংল্যান্ড, জার্মানি বা ইতালির অন্যান্য বড় ক্লাবগুলোর সঙ্গে খেলা এখনো ততটা নয়। তার চেয়েও বড় কথা, রিয়াল ও বার্সার একাডেমি থেকে প্রচুর খেলোয়াড়ও বেরিয়ে আসছে। স্পেনের অন্যান্য ক্লাবেও তাঁরা আলো ছড়াচ্ছেন।
কোচিংয়ের বৈচিত্র্য: স্পেনে ফুটবলের অনেক দর্শনই এখন এক মোহনায় এসে মিলেছে। লুইস এনরিকের বার্সেলোনার কথা ধরুন, ডিয়েগো সিমিওনের অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের সঙ্গে তাদের খেলার ধরন বা দর্শন—কোনোটিই মিল নেই। গার্দিওলা যে লিগে টিকিটাকা দর্শনের সফল পরিণতি দেখে গেছেন, সেখানেই সিমিওনে মূলত প্রতি আক্রমণকে ভর করে সাফল্য পেয়েছেন। আবার রিয়াল মাদ্রিদের দর্শনও আলাদা। ভিয়ারিয়াল, সেভিয়া যেমন প্রতি আক্রমণ নির্ভর, বিলবাও তেমনি সেট পিসে দুর্দান্ত। বিভিন্ন ঘরানার এই ফুটবল স্পেনকে আরও শক্তিশালী করেছে।
জহুরির চোখ: বার্সেলোনা ও রিয়াল না হয় কাড়ি কাড়ি টাকা খরচ করতে পারে, কিন্তু স্পেনের অন্যদের তো সেই ক্ষমতা অনেক কম। অ্যাটলেটিকো, সেভিয়াকে তাই নির্ভর করতে হয় স্বল্প পরিচিত লিগ বা নিজেদের একাডেমি থেকে খেলোয়াড় নিয়ে আসার ওপর। সেভিয়ার ক্রীড়া পরিচালক মঙ্কির যেমন খেলোয়াড় চেনার ব্যাপারে দারুণ সুনাম আছে। বার্সেলোনা, লিভারপুলও তাঁকে পেতে অনেক টাকা খরচ করতে চাইছে। অ্যাটলেটিকো যেমন সুপার এজেন্ট হোর্হে মেন্ডেসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সূত্রে দক্ষিণ আমেরিকা থেকে অনেক উঠতি তারকাদের দলে ভিড়িয়েছেন।
ঘরের খেলোয়াড়: বিদেশি নয়, নিজেদের খেলোয়াড়দেরই লালন করার দিকে বেশির ভাগ দল মনোযোগী। রিয়াল সোসিয়েদাদ ও অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের মতো ক্লাবে তো ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত বাস্ক অঞ্চলের খেলোয়াড়েরাই শুধু খেলতে পারতেন। স্পেনের কোচ ভিসেন্তে দেল বস্ক যেমন বলছেন, ‘স্পেনের প্রতিটা দলই একাডেমি থেকে অনেক তরুণদের তুলে আনে। সে জন্য ক্লাব তো বটেই, জাতীয় দলও উপকৃত হয়।’
ইউরোপিয়ান অভিজ্ঞতা: গত দশ বছরে স্পেনের দলগুলো দাপট দেখিয়েছে ইউরোপ সেরার মঞ্চে। চ্যাম্পিয়নস লিগে বার্সেলোনা জিতেছে তিন বার, রিয়াল মাদ্রিদ এক বার। আর এবার তো স্পেনের একটা দলই শিরোপাটা জিততে চলেছে। গত পাঁচ বছরে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় খেলেছে ৬৩টি ম্যাচ। রিয়াল মাদ্রিদ ৬২, বার্সেলোনা ৫৭, সেভিয়া ৫৩, বিলবাও ৫২, ভ্যালেন্সিয়া খেলেছে ৪৮টি ম্যাচ। এএফপি।