আইসিসি’র সভাপতি পদ থেকে মোস্তফা কামালের পদত্যাগের ঘোষণা
- প্রকাশের সময় : ০৮:৩৯:৩৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ এপ্রিল ২০১৫
- / ৮৩০ বার পঠিত
ঢাকা: ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল-আইসিসি’র সভাপতি পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন আ ফ ম মোস্তফা কামাল। বুধবার (১ এপ্রিল) অষ্ট্রেলিয়া থেকে দেশে ফিরে তিনি বলেন, ওরা ক্রিকেটকে কলঙ্কিত করেছে। যারা সংস্থার গঠনতন্ত্রবিরোধী আচরণ করে তাদের সাথে কাজ করা সম্ভব না। তিনি শ্রীনিবাসনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, দুর্নীতিগ্রস্ত চেয়ারম্যান দিয়ে ক্রিকেটের উন্নতি সম্ভব নয়।
বুধবার দুপুর ১টায় অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশের মাটিতে পা রেখেই হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দেন। বিশ্বকাপ ক্রিকেটের কোয়ার্টার ফাইনালে ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচ নিয়ে যা ঘটেছে এরপর আইসিসির সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করা উচিত কি না? সাংবাদিকদের কাছে এমন প্রশ্ন করেন মোস্তফা কামাল। তখন উপস্থিত সাংবাদিকরা তাকে পদত্যাগ করার কথা বলেন।
এসময় মোস্তফা কামাল বলেন, ১৬ কোটি মানুষকে ছোট করে এ পদে থাকতে চাই না। আমি এখন যে বক্তব্য দেব তা হবে আইসিসি’র সাবেক সভাপতি হিসেবে। এখন থেকে আমার নামের আগে লেখা হবে আইসিসির সাবেক সভাপতি।
তিনি জানান, আমার পদত্যাগ পত্র তৈরি রয়েছে। এটা খুব শিগগিরই আইসিসির কাছে পাঠিয়ে দেয়া হবে।
তিনি বলেন, আইসিসির ৩.৩ ধারা অনুযায়ী, বিশ্বকাপ টুর্নামেন্টের শিরোপা তুলে দেয়ার দায়িত্ব সভাপতির। এ দায়িত্বের বিচ্যুতি ঘটার সুযোগ নেই। সে হিসেবে গত ২৯ তারিখে ট্রফি দেয়ার কথা ছিল আমার। কেন দিতে পারিনি, আপনারা জানেন। সবাই জানে।
মোস্তফা কামাল বলেন, ফাইনালের আগে আইসিসির একটা অনানুষ্ঠানিক সভা হয়েছিল। সেখানে এন শ্রীনিবাসন ছিলেন। আমাকে তিনি বললেন, আমার বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে নতুবা বিবৃতি প্রত্যাহার করতে হবে। আমি বললাম, ১৬ কোটি মানুষের জন্য এমন বিবৃতি দিয়েছি। তাদের বাদ দিয়ে এটা প্রত্যাহার করতে পারব না। তিনি তখন বললেন, তাহলে আপনি ট্রফি দিতে পারবেন না। তখন আমি বললাম, আমি এখানে সভাপতি হিসেবে এসেছি। সভাপতি ছাড়া ট্রফি দেয়ার অধিকার কারও নেই। এটা আইসিসি’র সংবিধান পরিপন্থী। সংবিধান পরিবর্তন করতে চাইলে পূর্ণ ১০ সদস্যের ৮ সদস্যের সম্মতি লাগবে। এরপর বার্ষিক সভায় সেটা ওঠাতে হবে। আর সেই সভার সভাপতিত্ব আমিই করব। সেদিনের মন্তব্যের জন্য আপনারা আমার কাছে কৈফিয়ত চাইতে পারেন।
মামলা করার বিষয়ে কামল বলেন, মামলা করার পক্ষে নই আমি। কার বিরুদ্ধে মামলা করব? ওই বিতর্কিত ব্যক্তির (শ্রীনি) বিরুদ্ধে? সে তখন বলবে, আইসিসি বলেছে বলেই ট্রফি দিয়েছি। তখন মামলা করতে হবে আইসিসি’র বিরুদ্ধে। আমি আইসিসির বিরুদ্ধে মামলা করার পক্ষপাতী নই।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচে স্পাইডার ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়নি। সত্য কথা বলা অপরাধ না। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। আম্পায়ারদের বিতর্কিত সিদ্ধান্তের তদন্তের সুবিধার্থে আমি পদত্যাগ করলাম।
একাদশ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচে আম্পায়ারের ভুমিকার কঠোর সমালোচনা করেন মোস্তফা কামাল। একই কারণে আইসিসিরও সমালোচনা করেছেন তিনি। মোস্তফা কামালের এই এসব বক্তব্যে রুষ্ট হয়ে বিশ্বকাপের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে আইসিসি সভাপতির হাত থেকে জয়ী দলকে ট্রফি দিতে দেয়া হয়নি।
সভাপতি হিসেবে পুরস্কার তুলে দিতে না পারায় অস্ট্রেলিয়াতেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত বছর মোস্তফা কামাল দায়িত্ব গ্রহণের আগেই আইসিসি সভাপতির প্রায় সব নির্বাহী ক্ষমতা কেড়ে নেয়া হয়েছে। নির্বাহী ক্ষমতা সম্পন্ন চেয়ারম্যানের একটি পদ নতুনভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে। সেই পদেই আছেন শ্রীনিবাসন।(দৈনিক যুগান্তর)