যুক্তরাষ্ট্রে নাইট্রোজেন গ্যাস দিয়ে প্রথম মৃত্যুদণ্ড কার্যকর
- প্রকাশের সময় : ০৬:৪৭:১৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৪
- / ৫২ বার পঠিত
হককথা ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামা অঙ্গরাজ্যে নাইট্রোজেন গ্যাস দিয়ে শ্বাসরোধ করে প্রথম মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। এটি দেশটিতে নাইট্রোজেন গ্যাস প্রয়োগ করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রথম ঘটনা। বৃহস্পতিবার (স্থানীয় সময়) রাত ৮টা ২৫ মিনিটে স্থানীয় সময় আলাবামার হলম্যান কারেকশনাল ফ্যাসিলিটিতে ৫৮ বছর বয়সী স্মিথের মৃত্যু কার্যকর করা হয়। খবর আল জাজিরা, এপির
এর আগে নাইট্রোজেন গ্যাস ব্যবহার করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সিদ্ধান্ত দেন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট। মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সিদ্ধান্ত স্থগিতের অনুরোধ জানিয়ে আসামি কেনেথ স্মিথের করা আবেদনটি বুধবার খারিজ করে দেওয়া হয়।
কর্মকর্তারা বলেছেন, ৫৮ বছর বয়সী স্মিথকে অক্সিজেন না দিয়ে ফেস মাস্কের মাধ্যমে বিশুদ্ধ নাইট্রোজেন গ্যাস নাক দিয়ে প্রবাহিত করার মাধ্যমে বৃহস্পতিবার রাত ৮টা ২৫ মিনিটে আলাবামার হলম্যান কারেকশনাল ফ্যাসিলিটিতে এ মৃত্যু কার্যকর করা হয়।
২০২২ সালে প্রাণঘাতী ইনজেকশন প্রয়োগ করে প্রথম দফায় কেনেথ স্মিথের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে তখন দণ্ড কার্যকরের সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়। আলাবামার রিপাবলিকান গভর্নর কে আইভি আলাবামা অঙ্গরাজ্যের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া নতুন করে পর্যালোচনার ঘোষণা দেন। এর কয়েক মাস পর পর্যালোচনা শেষ হয়। কেনেথ স্মিথকে নাইট্রোজেন গ্যাস প্রয়োগ করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার তারিখ নির্ধারণ করা হয়।
২০২৩ সালের মে মাসে দ্বিতীয় দফায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রচেষ্টা চালানোর এ সিদ্ধান্তকে আদালতে চ্যালেঞ্জ করেন স্মিথ। তার আইনজীবী সূত্রে জানা গেছে, অঙ্গরাজ্যের স্থানীয় আদালতে স্মিথ বলেছিলেন, মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রথম প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর দ্বিতীয় এ প্রচেষ্টা মার্কিন সংবিধানের অষ্টম সংশোধনীকে লঙ্ঘন করবে। ওই সংশোধনীতে নিষ্ঠুর ও অস্বাভাবিক শাস্তি প্রদানের বিরুদ্ধে বলা আছে। তা ছাড়া ইনজেকশন প্রয়োগের মাধ্যমে প্রথম দফায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ওই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর মারাত্মক রকমের শারীরিক ও মনস্তাত্ত্বিক যন্ত্রণায় ভুগতে হয়েছে বলেও দাবি তার।
১৯৮৮ সালে এলিজাবেথ সেনেট নামের এক নারীকে খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হন স্মিথ। ২০২২ সালে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ স্মিথকে ইনজেকশন প্রয়োগ করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের অনুমতি দেন। ৯ জন বিচারপতিবিশিষ্ট আদালতের ৩ জন বিচারপতি এ সিদ্ধান্তের ব্যাপারে ভিন্নমত জানিয়েছিলেন।
এলিজাবেথ সেনেটকে খুন করার জন্য কেনেথ স্মিথ এবং তার এক সহযোগীকে ভাড়া করেছিলেন ওই নারীর স্বামী চার্লস সেনেট। কৌঁসুলিরা বলেছেন, স্ত্রীর বিমার টাকা পেতে এ ষড়যন্ত্র করেছিলেন চার্লস। পরে তিনি আত্মহত্যা করেন। এ হত্যার ঘটনায় স্মিথের সহযোগীকেও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ২০১০ সালে এ দণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
যেভাবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়
নাইট্রোজেন গ্যাস ব্যবহার করে স্মিথের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে তার মুখে বিশেষভাবে তৈরি একটি মাস্ক পরানো হয়। এ মাস্কের ভেতর দিয়ে অক্সিজেন চলাচলের কোনো সুযোগ নেই। মাস্কটি নাইট্রোজেনভর্তি একটি সিলিন্ডারের সঙ্গে যুক্ত থাকে।
তবে ৫৮ বছর বয়সী স্মিথ আলাদা করে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের অষ্টম সংশোধনীর আওতায় আলাবামা অঙ্গরাজ্যে নাইট্রোজেন গ্যাস ব্যবহার করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ১০ জানুয়ারি স্মিথের আবেদনটির ব্যাপারে এক বিচারপতি রুল জারি করেছেন। বুধবার আটলান্টাভিত্তিক ইলেভেনথ ইউএস সার্কিট কোর্ট অব আপিলস সিদ্ধান্তটি বহাল রেখেছেন। আবেদনটি নিয়ে এখনো সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানানোর সুযোগ আছে। স্মিথের আইনজীবী রবার্ট গ্রাস এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
হককথা/নাছরিন