নিউইয়র্ক ০৮:৪২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

অন্ধকার আকাশের ‘নিভৃতাবাস’

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১০:৫৩:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ মার্চ ২০২৪
  • / ৮৮ বার পঠিত

পৃথিবীতে আলোক দূষণ বেড়ে গেছে। কোথাও খালি চোখে ঠিকমতো অন্ধকার আকাশ দেখারও উপায় নেই। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের অরেগনের কথা আলাদা। সেখানকার দূষণমুক্ত আকাশ এবং বিক্ষিপ্ত গাছপালার কারণে দীর্ঘদিন ধরেই এটি আকাশ পর্যবেক্ষকদের কাছে স্বর্গরাজ্য। সম্প্রতি অরেগন নতুন আরেকটি স্বীকৃতি পেয়েছে। এটি এখন বিশ্বের বৃহত্তম অন্ধকার আকাশের নিভৃতাবাস (Sanctuary)। এখানে আকাশ পর্যবেক্ষকেরা ২৫ লাখ একর জায়গাজুড়ে রাতের আকাশের আদি দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন।

অন্ধকার আকাশের নিভৃতাবাস হিসেবে এর আগে বিশ্বে ১৮টি স্থানের স্বীকৃতি ছিল। এ সপ্তাহে তার সঙ্গে যুক্ত হলো অরেগনের নাম। এটিই এখন সবচেয়ে বৃহৎ অন্ধকার আকাশের এলাকা। অরেগনের দক্ষিণ–পূর্বাঞ্চলের লেক কাউন্টি এই অভয়ারণ্যের মধ্যে পড়েছে। এটি নিউ জার্সির প্রায় অর্ধেক এলাকার সমান। প্রত্যন্ত এ অঞ্চলের সঙ্গে অরেগনের আরও ১ কোটি ১০ লাখ হেক্টর এলাকা এর মধ্যে ধরা যেতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের জ্যোতির্বিদদের প্রতিষ্ঠা করা অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ডার্ক স্কাই ইন্টারন্যাশনাল অরেগনকে নতুন এ স্বীকৃতি দিয়েছে। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়, বিশ্বে যেসব অন্ধকার আকাশের অঞ্চল আছে, তার মধ্যে অরেগনের আকাশকে আগে থেকেই বিবেচনা করা হতো; কিন্তু স্বীকৃতি ছিল না। এখন বৃহত্তম অন্ধকার আকাশের নিভৃতাবাস হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় এটির সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

অরেগন এলাকাটিকে সনদের জন্য আবেদনকারী ও পরিবেশ পরামর্শক ডন নিলসন বলেন, অরেগনের জনসংখ্যা ও আলোক দূষণের হার বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে এটি সুরক্ষা করা গেলে দীর্ঘদিন ধরে মানুষ এবং বন্য প্রাণীদের জন্য নক্ষত্র দেখার সুযোগ হিসেবে কাজ করবে।

অরেগনের পর্যটন বিভাগ ট্রাভেল সাউদার্ন অরেগনের তথ্য অনুযায়ী, সুউচ্চ মরুভূমির এই এলাকায় প্রাচীনতম পরিচিত মানব পেশার সঙ্গে জড়িত মানুষ পাওয়া যাবে। এ ছাড়া পরিযায়ী পাখিদের যাতায়াতের গুরুত্বপূর্ণ পথ এটি। বড় শিংয়ের ভেড়া ও নানা পশুপাখির বাস এখানে। এর আকাশকে সাধারণত ‘কালি বা মখমল কালো’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়। এখানে বসবাসের জন্য ভবন বা বিদ্যুৎ অপ্রতুল। অন্য শহর থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন অরেগনের বিশাল এই অঞ্চল দেখে পর্যটকেরা তাই বিস্মিত হন।

ট্রাভেল সাউদার্ন অরেগনের নির্বাহী পরিচালক বব হ্যাকেট বলেন, এই এলাকা প্রত্যন্ত ও অত্যাশ্চর্য। এখান থেকে একবারে অনেক তারা দেখে মাঝেমধ্যে অবাক লাগে। এখানে পর্যটককে ধরে রাখার মতো আকর্ষণ রয়েছে। এটি পর্যটককে থামতে বাধ্য করে। মনে হয় যেন তারাগুলো হাত দিয়ে ছোঁয়া যাবে। তবে প্রত্যন্ত এ অঞ্চলে ভ্রমণের আগে পর্যটকদের অবশ্যই প্রস্তুতি নিয়ে আসার কথা বলেন বব হ্যাকেট।

ডার্ক স্কাইয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, বৃহত্তম অন্ধকার আকাশের নিভৃতাবাসের স্বীকৃতি পেতে তাদের দীর্ঘদিন ধরে প্রচেষ্টা চালাতে হয়েছে। এ জন্য রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে নানা আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন পক্ষকে আলো নিয়ন্ত্রণের বিষয়টিতে সম্মত হতে হয়েছে। এখন এ নিভৃতাবাস দেখার দায়িত্ব থাকবে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমি ব্যবস্থাপনা ব্যুরোর অধীনে। দেশটির পর্যটন কর্তৃপক্ষের আশা, নতুন স্বীকৃতি ওই অঞ্চলে পর্যটন বাড়াবে। এতে স্থানীয়রা লাভবান হবেন। বিশ্বের আরও ২০০টি স্থানে রাতের আকাশ রক্ষার জন্য চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে ডার্ক স্কাই। সূত্র : প্রথম আলো।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

অন্ধকার আকাশের ‘নিভৃতাবাস’

প্রকাশের সময় : ১০:৫৩:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ মার্চ ২০২৪

পৃথিবীতে আলোক দূষণ বেড়ে গেছে। কোথাও খালি চোখে ঠিকমতো অন্ধকার আকাশ দেখারও উপায় নেই। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের অরেগনের কথা আলাদা। সেখানকার দূষণমুক্ত আকাশ এবং বিক্ষিপ্ত গাছপালার কারণে দীর্ঘদিন ধরেই এটি আকাশ পর্যবেক্ষকদের কাছে স্বর্গরাজ্য। সম্প্রতি অরেগন নতুন আরেকটি স্বীকৃতি পেয়েছে। এটি এখন বিশ্বের বৃহত্তম অন্ধকার আকাশের নিভৃতাবাস (Sanctuary)। এখানে আকাশ পর্যবেক্ষকেরা ২৫ লাখ একর জায়গাজুড়ে রাতের আকাশের আদি দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন।

অন্ধকার আকাশের নিভৃতাবাস হিসেবে এর আগে বিশ্বে ১৮টি স্থানের স্বীকৃতি ছিল। এ সপ্তাহে তার সঙ্গে যুক্ত হলো অরেগনের নাম। এটিই এখন সবচেয়ে বৃহৎ অন্ধকার আকাশের এলাকা। অরেগনের দক্ষিণ–পূর্বাঞ্চলের লেক কাউন্টি এই অভয়ারণ্যের মধ্যে পড়েছে। এটি নিউ জার্সির প্রায় অর্ধেক এলাকার সমান। প্রত্যন্ত এ অঞ্চলের সঙ্গে অরেগনের আরও ১ কোটি ১০ লাখ হেক্টর এলাকা এর মধ্যে ধরা যেতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের জ্যোতির্বিদদের প্রতিষ্ঠা করা অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ডার্ক স্কাই ইন্টারন্যাশনাল অরেগনকে নতুন এ স্বীকৃতি দিয়েছে। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়, বিশ্বে যেসব অন্ধকার আকাশের অঞ্চল আছে, তার মধ্যে অরেগনের আকাশকে আগে থেকেই বিবেচনা করা হতো; কিন্তু স্বীকৃতি ছিল না। এখন বৃহত্তম অন্ধকার আকাশের নিভৃতাবাস হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় এটির সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

অরেগন এলাকাটিকে সনদের জন্য আবেদনকারী ও পরিবেশ পরামর্শক ডন নিলসন বলেন, অরেগনের জনসংখ্যা ও আলোক দূষণের হার বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে এটি সুরক্ষা করা গেলে দীর্ঘদিন ধরে মানুষ এবং বন্য প্রাণীদের জন্য নক্ষত্র দেখার সুযোগ হিসেবে কাজ করবে।

অরেগনের পর্যটন বিভাগ ট্রাভেল সাউদার্ন অরেগনের তথ্য অনুযায়ী, সুউচ্চ মরুভূমির এই এলাকায় প্রাচীনতম পরিচিত মানব পেশার সঙ্গে জড়িত মানুষ পাওয়া যাবে। এ ছাড়া পরিযায়ী পাখিদের যাতায়াতের গুরুত্বপূর্ণ পথ এটি। বড় শিংয়ের ভেড়া ও নানা পশুপাখির বাস এখানে। এর আকাশকে সাধারণত ‘কালি বা মখমল কালো’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়। এখানে বসবাসের জন্য ভবন বা বিদ্যুৎ অপ্রতুল। অন্য শহর থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন অরেগনের বিশাল এই অঞ্চল দেখে পর্যটকেরা তাই বিস্মিত হন।

ট্রাভেল সাউদার্ন অরেগনের নির্বাহী পরিচালক বব হ্যাকেট বলেন, এই এলাকা প্রত্যন্ত ও অত্যাশ্চর্য। এখান থেকে একবারে অনেক তারা দেখে মাঝেমধ্যে অবাক লাগে। এখানে পর্যটককে ধরে রাখার মতো আকর্ষণ রয়েছে। এটি পর্যটককে থামতে বাধ্য করে। মনে হয় যেন তারাগুলো হাত দিয়ে ছোঁয়া যাবে। তবে প্রত্যন্ত এ অঞ্চলে ভ্রমণের আগে পর্যটকদের অবশ্যই প্রস্তুতি নিয়ে আসার কথা বলেন বব হ্যাকেট।

ডার্ক স্কাইয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, বৃহত্তম অন্ধকার আকাশের নিভৃতাবাসের স্বীকৃতি পেতে তাদের দীর্ঘদিন ধরে প্রচেষ্টা চালাতে হয়েছে। এ জন্য রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে নানা আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন পক্ষকে আলো নিয়ন্ত্রণের বিষয়টিতে সম্মত হতে হয়েছে। এখন এ নিভৃতাবাস দেখার দায়িত্ব থাকবে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমি ব্যবস্থাপনা ব্যুরোর অধীনে। দেশটির পর্যটন কর্তৃপক্ষের আশা, নতুন স্বীকৃতি ওই অঞ্চলে পর্যটন বাড়াবে। এতে স্থানীয়রা লাভবান হবেন। বিশ্বের আরও ২০০টি স্থানে রাতের আকাশ রক্ষার জন্য চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে ডার্ক স্কাই। সূত্র : প্রথম আলো।