যুক্তরাষ্ট্র : নতুন পথে চলবে পুরাতন নজরদারি

- প্রকাশের সময় : ০৭:৫৯:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ জুন ২০১৫
- / ৬৩৭ বার পঠিত
ওয়শিংটন: যুক্তরাষ্ট্রের প্যাট্রিয়টিক অ্যাক্ট ‘দেশপ্রেম’ নামের ফোনে আড়িপাতা কর্মসূচি কিছুটা সংশোধিত হয়ে ফ্রিডম অ্যাক্ট (স্বাধীনতা আইন) নামে নতুন করে শুরু হয়েছে। রোববার (৩১ মে) প্যাট্রিয়টিক অ্যাক্টের মেয়াদ শেষ হওয়ায় প্রায় দুদিন এর কার্যক্রম স্থগিত ছিল। মঙ্গলবার (২ জুন) মার্কিন সিনেটে ফ্রিডম অ্যাক্ট বিল পাস হয় এবং এদিনই প্রেসিডেন্ট ওবামা বিলে স্বাক্ষর করেন। ফলে বিলটি আইনে পরিণত হয়েছে। বিবিসি/এএফপির খবরে বুধবার এ তথ্য জানানো হয়েছে।
নতুন আইনে স্বাক্ষরের পরে এক টুইটার বার্তায় প্রেসিডেন্ট ওবামা বলেন, স্বাধীনতা আইন সাধারণ মানুষের স্বাধীনতা এবং জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। তিনি বলেন, আমার প্রশাসন দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে। বিলটি পাস করাতে গড়িমসি করায় আইনজীবীদের কঠোর নিন্দা করেন তিনি।
তবে বিষেশজ্ঞদের মন্তব্য হল, ফ্রিডম অ্যাক্টের কারণে ফোনে আড়িপাতা বৈধতা পেয়েছে এবং আগের চেয়ে বড় পরিসরে নাগরিকের ফোন ডাটা সংগ্রহ করতে পারবে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কিছু সীমাবদ্ধতা পেরিয়ে তা সংগ্রহ করতে হবে। এক কথায় এখন থেকে এ নতুন আইনে চলবে পুরাতন নজরদারি।
মোদ্দাকথা হলে প্যাট্রিয়টিক অ্যাক্ট ও ফ্রিডম অ্যাক্টের মূল বিষয়বস্তু একই থাকছে। শুধু ফোন ডাটা সংগ্রহের পদ্ধতিতে পরিবর্তন এসেছে। বিদেশী পর্যটক ও বিদেশে যাওয়া মার্কিনিদের ফোনে আড়িপাতার ক্ষমতা আগের মতোই থাকছে। তাদের গতিবিধির ওপর নজরদারির ক্ষমতা থাকছে। আর সব কিছুর মূলে থাকছে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও হামলা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে রক্ষা করা।
ফ্রিডম অ্যাক্ট সরকারকে নাগরিকের ব্যক্তিগত ফোন কলের বৃত্তান্ত সংগ্রহ করতে সাহায্য করবে। তবে আগে যেখানে ঢালাওভাবে তা করা হতো, এখন সেখানে আদালতের অনুমতি নিতে হবে। ফোন ডাটা সংরক্ষিত থাকবে টেলিফোন ও ইন্টারনেট কোম্পানিগুলোর নিজস্ব সার্ভারে। সন্দেহভাজন ব্যক্তির ফোন ডাটা পেতে আদালতের অনুমতি নিয়ে সংশ্লিষ্ট ফোন কোম্পানিকে অবহিত করলে, তারা তাদের সার্ভার থেকে তা সরবরাহ করবে।
নতুন এ ব্যবস্থা কার্যকর হতে ছয় মাসের মতো সময় লেগে যাবে। কারণ এ জন্য ফোন ও ইন্টারনেট কোম্পানিগুলোকে নিজস্ব সার্ভার স্থাপন করতে হবে।
২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে টুইন টাওয়ারে (৯/১১) হামলার পর ফোনে আড়িপাতার জন্য গোপনে প্যাট্রিয়টিক কর্মসূচি শুরু করে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা (এনএসএ)। সে সময় প্রেসিডেন্ট ছিলেন জর্জ ডব্লিউ বুশ।
২০১৩ সালে এডওয়ার্ড এনএসএ’র এ কর্মসূচি অসংখ্য তথ্য-প্রমাণসহ ফাঁস করে দিলে এ নিয়ে অস্বস্তিতে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র। পরে প্রেসিডেন্ট ওবামা নাগরিকের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষা করে এ কর্মসূচি সংশোধনের উদ্যোগ নেন। সংশোধিত ফ্রিডম অ্যাক্ট কংগ্রেসের নিম্মকক্ষে পাস হলেও উচ্চকক্ষ সিনেটে তা আটকে যায়।
এদিকে, নাগরিকের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার ওপর নজরদারি কর্মসূচির কঠোর বিরোধিতা করেন রিপাবলিকান সিনেটর ও ২০১৬ সালের সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী মার্কো রুবিও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা আইন আমাদের নিরাপত্তাহীনতায় ফেলে দিয়েছে। যেখানে গোয়েন্দা সংস্থা আমাদের সবসময় নিরাপত্তা দিত তা আর আমরা পাচ্ছি না। কারণ যে দেশের কোনো বড় ধরনের আক্রমণ এড়াতে গোয়েন্দাদের যে সফল কর্তৃত্ব ও সামর্থ্য প্রয়োজন আমাদের তা নিশ্চিত করা উচিত।
তার সঙ্গে আরও কয়েকজন উদারপন্থী সিনেটর সিনেটে বিলটি আটকে দেন। পরে মঙ্গলবার সংশোধিত বিলটি পাস হয়।(দৈনিক যুগান্তর)