যুক্তরাষ্ট্র থেকে স্বাধীন হতে চায় ক্যালিফোর্নিয়া
- প্রকাশের সময় : ০৭:৩০:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০১৭
- / ৯৯৭ বার পঠিত
ঢাকা: বিলাসবহুল ভবনের একটি কক্ষে জড়ো হয়েছেন ১৫ জন মানুষ। তারা এক গুরুত্বপূর্ণ কাজের পরিকল্পনা সাজাচ্ছেন। আর তা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ক্যালিফোর্নিয়ার স্বাধীন হওয়ার কার্যকর নকশা। গ্রুপের এক সদস্য জিউফ লিউস। তার হাতে একটি পতাকা। ধূসর রঙের ভালুক আঁকা ক্যালিফোর্নিয়ার ওই পতাকার দিকে তাকিয়ে তিনি বলেন, আমি স্বাধীন ক্যালিফোর্নিয়ার এ পতাকার প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করলাম। তার পাশে আরেক পোস্টারে লেখা- ‘ক্যালিফোর্নিয়া কোনো অঙ্গরাজ্য নয়, একটি জাতিরাষ্ট্র।’
ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচিত হওয়ার পর ক্যালিফোর্নিয়ার স্বাধীনতার দাবিটি জোরালো হয়ে উঠছে। এরই মধ্যে একটি গ্রুপ ক্যালিফোর্নিয়ার স্বাধীনতার দাবি জানিয়ে একটি আবেদনে স্বাক্ষর সংগ্রহের কাজ করছে। আবেদনটি আলোচনায় নিতে হলে ৫ লাখ ৮৫ হাজার ৪০৭ জন ভোটারের স্বাক্ষর লাগবে।
এ আবেদনটির লক্ষ্য হচ্ছে, ক্যালিফোর্নিয়াকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে স্বাধীন করে একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। ক্যালিফোর্নিয়ার স্বাধীনতার পক্ষে কাজ গোষ্ঠীটির পক্ষ থেকে অঙ্গরাজ্যজুড়ে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। তারা প্রতিবাদ ও সভা আয়োজন করছেন। গোষ্ঠীটির নেতা জানিয়েছেন, তারা এ পর্যন্ত ৫৩টি শাখা খুলেছেন। এসব শাখা নতুন স্বেচ্ছাসেবী সংগ্রহ ও আন্দোলনের কৌশল প্রণয়নের কাজ করছে।
সান ফ্রান্সিসকোর এক একাডেমিক কনসালটেন্ট টিম ভলমার বলেন, আমরা যা প্রত্যক্ষ করছি, তা একটি নতুন জাতির ভূমিষ্ঠ হওয়ার লক্ষণ। ৫৭ বছর বয়সী টিম আরও বলেন, ‘মুক্ত বিশ্ব যা ত্যাগ করেছে, আমরা এখন তাতে নেতৃত্ব দিতে পারি।’
যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য ক্যালিফোর্নিয়া। এর জনসংখ্যা ৪ কোটি। অন্য রাজ্যগুলোর ক্ষতিতে ভর্তুকি দেয় এ রাজ্য। জাতীয় বাণিজ্য নীতিতে বৈষম্যের স্বীকার। অন্য রাজ্যগুলোর পরিবেশ নীতি ও অভিবাসন নীতি থেকে আলাদা।
স্বাধীনতা আন্দোলনের এক শীর্ষনেতা মার্কাস রুইজ ইভান্স বলেন, ক্যালিফোর্নিয়া আমেরিকার থেকে একেবারেই আলাদা। অন্যদের দ্বারা ঘৃণিত, তাদের কাছে আমরা অদ্ভুত। আরও কয়েক বছর আগেই তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার স্বাধীনতার কথা বলেছিলেন। ২০১২ সালে তিনি ৫৪০ পৃষ্ঠার স্বাধীনতার প্রচারপত্র প্রকাশ করেছিলেন।
আগের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা প্রশাসনের বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ করে তিনি বলেছিলেন, আমি গ্যালিলিও-কোপার্নিকাসের মতো। আমার তত্ত্ব একেবারেই বিপ্লবী, যদিও তা সত্য প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত অনেকেই মানতে চাইবেন না।
প্রাথমিকভাবে ফেসবুকে একটি পেজ খোলার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে ক্যালিফোর্নিয়ার স্বাধীনতার প্রচারণা। এখন পেজটিতে ৩৯ হাজার মানুষ যুক্ত রয়েছেন। ২০১৯ সালের ৫ মার্চ একটি গণভোট আয়োজনের লক্ষ্যে স্বাক্ষর গ্রহণ হচ্ছে। ওই গণভোটে মার্কিন সংবিধানের একটি ধারা বাতিল করতে জনগণের সম্মতি নেয়া হবে, যাতে বলা হয়েছে, ক্যালিফোর্নিয়া যুক্তরাষ্ট্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ। (দৈনিক যুগান্তর)