নিউইয়র্ক: যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে আটক ৮২ জন বাংলাদেশী নাগরিকের মধ্যে ৪৬ জন তাদেরকে দেশে ফেরৎ পাঠানোর প্রতিবাদে টেক্সাসের কারাগারে আমরণ অনশন শুরু করেছেন। তারা দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আটক রয়েছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। ইতিপূর্বে টেক্সাস কারাগার থেকে কারাবন্দীদের লেখা চিঠির বরাত দিয়ে স্থানীয় বাংলা মিডিয়াগুলোতে খবর প্রকাশিত হয়েছিলো।
সূত্র মতে, অবৈধ পথে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের পর টেক্সাসের ‘এল পাসো’ কারাগারের আটক ওই বাংলাদেশীরা ১৪ অক্টোবর বুধবার থেকে আমরণ অনশন শুরু করেন। এর আগে তারা সকলেই যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছিলেন। কিন্তু ‘সরকার তাদের আবেদন নাকচ করে দিচ্ছে’ বলে কারাগারে এমন খবর ছড়িয়ে পড়ায় বন্দিদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সর্বশেষ গত ২৫ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের ফয়েজ আহম্মেদ নামের একজনকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফেরত পাঠানোর পর এ আতঙ্কে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে।
নিউইয়র্কের মানবাধিকার সংস্থা ‘ডেজিজ রাইসিং আপ অ্যান্ড মুভিং’-এর (ড্রাম) বাংলাদেশী কর্মী কাজী ফৌজিয়া টেক্সাস কারাগারে অনশনরত সিলেটের বিয়ানীবাজারের মাহবুবুর রহমানকে উদ্ধৃত করে বলেছেন, আন্দোলনকারীরা বলছেন, ‘আমাদের হারানোর কিছু নেই, আর তাই আমরা এখন আন্দোলনে!’ ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস ইনফোর্সমেন্টের সদস্যরা হুমকি দিচ্ছেন অনশন না ভাঙলে পাঁচ থেকে দশ বছরের সাজা হবে। আমরা বলেছি সাজা পেতে রাজি আছি, কিন্তু দেশে পাঠাবেন না।’
কাজী ফৌজিয়া আরো জানান, চার মাস থেকে শুরু করে বছর খানেক আগে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নেন ওই ৮২ জন অবৈধ অভিবাসী। মাস দুয়েক হলো তাদের ওই আবেদন বাতিল হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তিনি আরো জানান, প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আদেশ অনুযায়ী ২০০ মাইল রাস্তা পার হওয়া ইমিগ্রান্টদের সঙ্গে মানবিক অধিকারের বিষয়ে প্রশাসনকে বেশি যতœশীল হতে হবে। সেই জায়গায় বাংলাদেশের নাগরিকরা প্রায় ১২ হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছে। তাই বিষয়টি মানবিকভাবেই নিষ্পত্তি হওয়ার কথা।
এদিকে বাংলাদেশ দূতাবাস মানবিক কারণে আটককৃতদের বিরুদ্ধে যাতে কোনো ব্যবস্থা নেয়া না হয় সে জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে যাচ্ছে।
অপরদিকে কারাগারে আটক বাংলাদেশীরা তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসার জন্য বাংলাদেশী কমিউনিটির নেতৃবৃন্দসহ বাংলাদেশী-আমেরিকান আইনজ্ঞদের সহযোগিতা কামনা করেছেন বলে সূত্র জানিয়েছে।