নিউইয়র্ক ১০:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

নিউইয়র্কে আড়াই লাখ ডলারে শরীর থেকে ২৫ কেজি ত্বক অপসারণ

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৮:১৯:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ জুন ২০১৫
  • / ৭০৯ বার পঠিত

নিউইয়র্ক: নিউইয়র্কের বিশেষজ্ঞ সার্জনদের সফল অস্ত্রোপাচারে বিশ্বের সবচেয়ে স্থূলকায় ব্যক্তির ২৯৫ কেজি বা ৬৫০ পাউন্ড মেদ ঝরিয়ে ফেলেছেন। ৫৪ বছর বয়সী পল মেসন ৪৪৪ দশমিক ৫ কেজি বা ৯৮০ পাউন্ড ওজনের কারণে বিশ্বের সবচেয়ে মোটা মানুষের স্বীকৃতি পেয়েছিলেন। তিনি ইংল্যান্ডের সাফোল্ক কাউন্টির ইপসউইচ এলাকার বাসিন্দা।
অস্ত্রোপাচারের পর পল মেসনের শরীরে বিশ্রীভাবে তার ত্বক একেবারে ঝুলে পড়লো। মোম গলে যেমন মোমবাতির গায়ে লেগে থাকে, অনেকটা সেরকম হয়ে গিয়েছিল তার ত্বক। অতিরিক্ত ২৩ কেজি চামড়া শরীরটাকে একটা কদর্য রূপ দিলো। শেষ পর্যন্ত দীর্ঘ সাড়ে ৯ ঘণ্টা অতি সূক্ষ্মভাবে পরিচালিত এক সার্জারির মাধ্যমে মেসনের শরীর থেকে অতিরিক্ত ২৪-২৫ কেজি ত্বক সফলভাবে অপসারণ করলেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের বিশেষজ্ঞ সার্জনরা।
অনেক পরিকল্পনা ও সৌভাগ্য মিলেই মেদ ঝরানোর পর ঝুলে পড়া অতিরিক্ত ত্বক বিশেষভাবে কেটে বাদ দেয়ার এ সার্জারিতে সফলতা আসে। যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানহাটনের লেনক্স হিল হাসপাতালে তার দেহে এ সার্জারি করা হয়। বিশেষজ্ঞরা মানবিক এ কারণে কোন ফি না নিয়েই অস্ত্রোপচার করেন। মূল বিশেষজ্ঞ সার্জনদের পাশাপাশি ৪ প্লাস্টিক সার্জন, জেনারেল সার্জন, অ্যানেসথেসিওলজিস্ট এবং নার্সদের কেউই একটি পয়সাও নেননি। মেসনের অস্ত্রোপচারের বিল আড়াই লাখ ডলার ছাড়িয়ে যেতো বলে জানান বিশেষজ্ঞ সার্জনদের নেতৃত্বে থাকা চিকিৎসক জেনিফার ক্যাপ্লা। মেদ ঝরানোর পর ঝুলে পড়া ত্বক স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ক্যাপ্লা। কিন্তু, ২৯৫ কেজি মেদ ঝরানোর পর অতিরিক্ত যে ত্বক থাকে, তা অপসারণ তো চাট্টিখানি ব্যাপার নয়! তাই এটা তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জটা হচ্ছে, ত্বকের মধ্যে বহু রক্তনালী রয়েছে। আর সেগুলো বাদ দেয়ার জন্য অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্মভাবে অপারেশন পরিচালনা করতে হয়েছে। শত শত রক্তনালী ছিল ত্বকের সঙ্গে। সেগুলো একটি একটি করে খুঁজে বের করে সার্জারি করতে হয়েছে। বেশ কয়েক ঘণ্টা এ প্রক্রিয়ায় অস্ত্রোপচার চললো। একটি রক্তনালী মিস করলে রক্তক্ষরণে মৃত্যু ঝুঁকি ছিল মেসনের, এমনটা জানান ক্যাপ্লা। মেসনের পেটের চারপাশ থেকে অতিরিক্ত চামড়ার প্রথম টুকরোটি সরাতেই অস্ত্রোপচারকদের লেগেছে ৪ ঘণ্টার বেশি। প্রথম টুকরোটা কাটার পরই যেন সার্জনরা একরকম বিজয়ের আনন্দ বোধ করতে শুরু করেন। শেষ পর্যন্ত সার্জনরা মেসনের পেট থেকে ১২ ও তার পা থেকে সম্ভবত ১২ থেকে ১৩ কেজি চামড়া কেটে বাদ দেন। আরেকটি অপারেশন করাতে চান মেসন। এবার তার ওপরের বাহু থেকে যে অতিরিক্ত মাংস ঝুলে রয়েছে, সেটা অপসারণ করতে চান তিনি। পরের বার অতিরিক্ত ত্বক ও মাংসসহ ঝরাতে চান ৪০ পাউন্ড ওজন। তবে সেটা ভবিষ্যতে। আপাতত, মেসন তার নতুন ফিরে পাওয়া শরীরের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেবেন। নতুন একটি জীবনে পা রাখলেন তিনি, যেখানে সম্ভাবনাটা আরও বেশি।

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

নিউইয়র্কে আড়াই লাখ ডলারে শরীর থেকে ২৫ কেজি ত্বক অপসারণ

প্রকাশের সময় : ০৮:১৯:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ জুন ২০১৫

নিউইয়র্ক: নিউইয়র্কের বিশেষজ্ঞ সার্জনদের সফল অস্ত্রোপাচারে বিশ্বের সবচেয়ে স্থূলকায় ব্যক্তির ২৯৫ কেজি বা ৬৫০ পাউন্ড মেদ ঝরিয়ে ফেলেছেন। ৫৪ বছর বয়সী পল মেসন ৪৪৪ দশমিক ৫ কেজি বা ৯৮০ পাউন্ড ওজনের কারণে বিশ্বের সবচেয়ে মোটা মানুষের স্বীকৃতি পেয়েছিলেন। তিনি ইংল্যান্ডের সাফোল্ক কাউন্টির ইপসউইচ এলাকার বাসিন্দা।
অস্ত্রোপাচারের পর পল মেসনের শরীরে বিশ্রীভাবে তার ত্বক একেবারে ঝুলে পড়লো। মোম গলে যেমন মোমবাতির গায়ে লেগে থাকে, অনেকটা সেরকম হয়ে গিয়েছিল তার ত্বক। অতিরিক্ত ২৩ কেজি চামড়া শরীরটাকে একটা কদর্য রূপ দিলো। শেষ পর্যন্ত দীর্ঘ সাড়ে ৯ ঘণ্টা অতি সূক্ষ্মভাবে পরিচালিত এক সার্জারির মাধ্যমে মেসনের শরীর থেকে অতিরিক্ত ২৪-২৫ কেজি ত্বক সফলভাবে অপসারণ করলেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের বিশেষজ্ঞ সার্জনরা।
অনেক পরিকল্পনা ও সৌভাগ্য মিলেই মেদ ঝরানোর পর ঝুলে পড়া অতিরিক্ত ত্বক বিশেষভাবে কেটে বাদ দেয়ার এ সার্জারিতে সফলতা আসে। যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানহাটনের লেনক্স হিল হাসপাতালে তার দেহে এ সার্জারি করা হয়। বিশেষজ্ঞরা মানবিক এ কারণে কোন ফি না নিয়েই অস্ত্রোপচার করেন। মূল বিশেষজ্ঞ সার্জনদের পাশাপাশি ৪ প্লাস্টিক সার্জন, জেনারেল সার্জন, অ্যানেসথেসিওলজিস্ট এবং নার্সদের কেউই একটি পয়সাও নেননি। মেসনের অস্ত্রোপচারের বিল আড়াই লাখ ডলার ছাড়িয়ে যেতো বলে জানান বিশেষজ্ঞ সার্জনদের নেতৃত্বে থাকা চিকিৎসক জেনিফার ক্যাপ্লা। মেদ ঝরানোর পর ঝুলে পড়া ত্বক স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ক্যাপ্লা। কিন্তু, ২৯৫ কেজি মেদ ঝরানোর পর অতিরিক্ত যে ত্বক থাকে, তা অপসারণ তো চাট্টিখানি ব্যাপার নয়! তাই এটা তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জটা হচ্ছে, ত্বকের মধ্যে বহু রক্তনালী রয়েছে। আর সেগুলো বাদ দেয়ার জন্য অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্মভাবে অপারেশন পরিচালনা করতে হয়েছে। শত শত রক্তনালী ছিল ত্বকের সঙ্গে। সেগুলো একটি একটি করে খুঁজে বের করে সার্জারি করতে হয়েছে। বেশ কয়েক ঘণ্টা এ প্রক্রিয়ায় অস্ত্রোপচার চললো। একটি রক্তনালী মিস করলে রক্তক্ষরণে মৃত্যু ঝুঁকি ছিল মেসনের, এমনটা জানান ক্যাপ্লা। মেসনের পেটের চারপাশ থেকে অতিরিক্ত চামড়ার প্রথম টুকরোটি সরাতেই অস্ত্রোপচারকদের লেগেছে ৪ ঘণ্টার বেশি। প্রথম টুকরোটা কাটার পরই যেন সার্জনরা একরকম বিজয়ের আনন্দ বোধ করতে শুরু করেন। শেষ পর্যন্ত সার্জনরা মেসনের পেট থেকে ১২ ও তার পা থেকে সম্ভবত ১২ থেকে ১৩ কেজি চামড়া কেটে বাদ দেন। আরেকটি অপারেশন করাতে চান মেসন। এবার তার ওপরের বাহু থেকে যে অতিরিক্ত মাংস ঝুলে রয়েছে, সেটা অপসারণ করতে চান তিনি। পরের বার অতিরিক্ত ত্বক ও মাংসসহ ঝরাতে চান ৪০ পাউন্ড ওজন। তবে সেটা ভবিষ্যতে। আপাতত, মেসন তার নতুন ফিরে পাওয়া শরীরের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেবেন। নতুন একটি জীবনে পা রাখলেন তিনি, যেখানে সম্ভাবনাটা আরও বেশি।