ট্রাম্প প্রশাসনে আট দিনও টিকতে পারলেন না বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত রুমানা
- প্রকাশের সময় : ১০:১০:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ মার্চ ২০১৭
- / ৭৭৪ বার পঠিত
ওয়াশিংটন: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন থেকে পদত্যাগ করলেন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের একমাত্র মুসলিম নারী সদস্য রুমানা আহমেদ। ট্রাম্প প্রশাসন শপথ নেয়ার আট দিনের মাথায় ‘মুসলিম নিষিদ্ধকরণ’ ঘোষণার প্রতিবাদে সরে দাঁড়ালেন ওবামা আমলে ২০১১ সালে নিযুক্ত বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত এই কর্মকর্তা। মাত্র ১২ বছর বয়স থেকে নিয়মিত হিজাব পরেন রুমানা। ওবামার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও দেশের সেবায় ট্রাম্প প্রশাসনে কাজ করার ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন তিনি।
২৩ ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবার দ্য আটলান্টিক পত্রিকার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক কলামে রুমানা লিখেছেন, আমার বেশ কয়েকজন আমেরিকান মুসলিম সহকর্মীর মতো আমিও গত বছরের বেশিরভাগ সময় ডোনাল্ড ট্রাম্প যেভাবে আমাদের গোষ্ঠীর মানহানি করেছেন তা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম। এসব সত্ত্বেও জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের কর্মী হিসেবে ট্রাম্পের প্রশাসনে থাকার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু গত ২৭ জানুয়ারী মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ সাতটি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে অস্থায়ীভাবে ও সিরীয় শরণার্থীদের স্থায়ীভাবে নিষেধাজ্ঞা আরোপের নির্বাহী আদেশে ট্রাম্প সই করার কারণেই তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান। তবে আদালতে আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে এই আদেশ সাময়িকভাবে থেমে যায়। কয়েকদিনের মধ্যে ট্রাম্প প্রশাসন থেকে এই আদেশ পুনর্গঠন করা হবে বলে জানান রুমানা আহমেদ।
তিনি আরও লিখেছেন, যে প্রশাসন আমাকে ও আমার মতো মানুষকে নিজেদের নাগরিক মনে না করে উল্টো হুমকি হিসেবে দেখে, তাদের হয়ে কাজ করতে গিয়ে বেশি দিন টিকতে পারবো না জানতাম। তার দাবি, ট্রাম্প প্রশাসন আইএস জুজুকে তুরুপের তাস হিসেবে নিয়ে মুসলিমদের ইরাক ও সিরিয়ার জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সমর্থক দাবি করে অপপ্রচার চালাচ্ছে। কলামে রুমানা আহমেদ জানিয়েছেন, মূলত মুসলিমদের লক্ষ্য রেখে মৌলবাদী সন্ত্রাস পরিভাষা ব্যবহারের মাধ্যমে আইএসকে সামনে এনে চরমপন্থীদের সহিংসতা প্রতিরোধের কর্মসূচি পুনর্গঠনের পরিকল্পনা করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এর মাধ্যমে শ্বেতাঙ্গদের আধিপত্য বেড়ে যাবে আশঙ্কাজনক হারে। তাই নতুন প্রশাসনের জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের নড়েচড়ে বসার পরামর্শ দেন তিনি।
তার মতে, হোয়াইট হাউস ও যুক্তরাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোর নির্দলীয় জাতীয় নিরাপত্তা ও আইনি বিশেষজ্ঞদের খাটো করেছে প্রেসিডেন্ট সমর্থিত পুরো কাঠামো। তিনি মনে করেন, আমেরিকায় এখন সিদ্ধান্ত গ্রহণের কর্তৃত্ব কেন্দ্রীভূত হয়ে গেছে। প্রসঙ্গত, রুমানা আহমেদের বাবা-মা ছিলেন বাংলাদেশী। ১৯৭৮ সালে তারা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। সেখানে তার মা কাজ করতেন ক্যাশিয়ার হিসেবে। পরে ডে-কেয়ার ব্যবসা শুরু করেন। বাবা কর্মরত ছিলেন ব্যাংক অব আমেরিকায়। ব্যাংকটির সদর দফতরে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবেও পদোন্নতি পেয়েছিলেন তিনি। ১৯৯৫ সালে গাড়ি দুর্ঘটনায় তিনি মারা যান। (আমার দেশ)