নিউইয়র্ক ০২:৫১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

দানবীর রণদা প্রসাদ সাহার ১১৯তম জন্মজয়ন্তী ২২ নভেম্বর

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৮:২১:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ নভেম্বর ২০১৫
  • / ১৭৩৭ বার পঠিত

টাঙ্গাইল: এশিয়াখ্যাত দানবীর রণদা প্রসাদ সাহার ১১৯তম জন্মজয়ন্তী ২২ নভেম্বর, রোববার। ১৮৯৬ সালের এইদিনে তিনি ঢাকার অদুরে সাভারের কাছুর গ্রামে মামাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাড়ি টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার লৌহজং নদী বিধৌত মির্জাপুর গ্রামে। বাবার নাম দেবেন্দ্র নাথ সাহা। মায়ের নাম কুমুদিনী সাহা। তিনি অতি দরিদ্র পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। মাত্র সাত বছর বয়সে তার মায়ের মৃত্যুর পর বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সৎ মায়ের অবহেলার কারণে তিনি ১৪ বছর বয়সে কলকাতায় পাড়ি জমান। সেখানে বাদাম বিক্রিসহ এমন কোন ছোট কাজ নেই যা তিনি করেননি। ভাগ্যক্রমে তিনি সেনাবাহিনীর বেঙ্গল কোরে যোগ দিয়ে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ইরাকে যান। সেখানে তিনি এক অগ্নিকান্ড থেকে হাসপাতালের রোগীদের রক্ষা করেন। পরে পঞ্চম জর্জের সাথে ইংল্যান্ডে দেখা করে কমিশন প্রাপ্ত হন।
কিছুদিন পর চাকুরী বাদ দিয়ে রেলওয়েতে টিটিইর চাকুরি নেন। সেখান থেকে ইস্তফা দিয়ে কয়লা ও পাটের ব্যবসা করে বেশ লাভবান হন। এরপর তিনি জাহাজের ব্যবসা শুরু করেন। এতে তার ভাগ্যলক্ষী সুপ্রসন্ন হতে থাকে। কিন্তু তার কষ্টে উপার্জিত ধন শুধু নিজের ভোগ বিলাসে ব্যয় না করে আর্তমানবতার সেবায়ও এগিয়ে আসেন। এক্ষেত্রে প্রথমে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করা মায়ের নামে ১৯৩৮ সালে মির্জাপুরে কুমুদিনী ডিসপেন্সারি চালু করেন যা-১৯৪৪ সালে হাসপাতালে রূপ নেয় এবং এর নামকরণ করা হয় ‘কুমুদিনী হাসপাতাল’।
পরবর্তী তিনি নারী শিক্ষা বিস্তারের জন্য ভারতেশ্বরী হোমস, কুমুদিনী নার্সিং স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। নারীদের উচ্চ শিক্ষার জন্য টাঙ্গাইলের কুমুদিনী কলেজ এবং গ্রামবাংলার হতদরিদ্র ছাত্রদের জন্য মানিকগঞ্জে বাবার নামে দেবেন্দ্র কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। তাছাড়াও তিনি মির্জাপুর কলেজ ও মির্জাপুর এসকে পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। কিন্তু এই মানব প্রেমিককে ‘৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাক হানাদার বাহিনী এবং তাদের এদেশীয় দোসররা রেহাই দেয়নি। ৭ মে নারায়নগঞ্জের বাসা থেকে তাকে ও তার ছেলে ভবানী প্রসাদ সাহা রবিকে ধরে নিয়ে হত্যা করে। এদিকে প্রতিবারের মত এবারও এলাকাবাসীর উদ্যোগে নানা কর্মসূচীর মাধ্যমে তার জন্মজয়ন্তী পালন করা হচ্ছে। এ উপলক্ষে কুমুদিনী হাসপাতাল, ভারতেশ্বরী হোসমসহ তার প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নানা কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়েছে। (টাঙ্গাইল ২৪ ডট কম)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

দানবীর রণদা প্রসাদ সাহার ১১৯তম জন্মজয়ন্তী ২২ নভেম্বর

প্রকাশের সময় : ০৮:২১:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ নভেম্বর ২০১৫

টাঙ্গাইল: এশিয়াখ্যাত দানবীর রণদা প্রসাদ সাহার ১১৯তম জন্মজয়ন্তী ২২ নভেম্বর, রোববার। ১৮৯৬ সালের এইদিনে তিনি ঢাকার অদুরে সাভারের কাছুর গ্রামে মামাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাড়ি টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার লৌহজং নদী বিধৌত মির্জাপুর গ্রামে। বাবার নাম দেবেন্দ্র নাথ সাহা। মায়ের নাম কুমুদিনী সাহা। তিনি অতি দরিদ্র পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। মাত্র সাত বছর বয়সে তার মায়ের মৃত্যুর পর বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সৎ মায়ের অবহেলার কারণে তিনি ১৪ বছর বয়সে কলকাতায় পাড়ি জমান। সেখানে বাদাম বিক্রিসহ এমন কোন ছোট কাজ নেই যা তিনি করেননি। ভাগ্যক্রমে তিনি সেনাবাহিনীর বেঙ্গল কোরে যোগ দিয়ে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ইরাকে যান। সেখানে তিনি এক অগ্নিকান্ড থেকে হাসপাতালের রোগীদের রক্ষা করেন। পরে পঞ্চম জর্জের সাথে ইংল্যান্ডে দেখা করে কমিশন প্রাপ্ত হন।
কিছুদিন পর চাকুরী বাদ দিয়ে রেলওয়েতে টিটিইর চাকুরি নেন। সেখান থেকে ইস্তফা দিয়ে কয়লা ও পাটের ব্যবসা করে বেশ লাভবান হন। এরপর তিনি জাহাজের ব্যবসা শুরু করেন। এতে তার ভাগ্যলক্ষী সুপ্রসন্ন হতে থাকে। কিন্তু তার কষ্টে উপার্জিত ধন শুধু নিজের ভোগ বিলাসে ব্যয় না করে আর্তমানবতার সেবায়ও এগিয়ে আসেন। এক্ষেত্রে প্রথমে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করা মায়ের নামে ১৯৩৮ সালে মির্জাপুরে কুমুদিনী ডিসপেন্সারি চালু করেন যা-১৯৪৪ সালে হাসপাতালে রূপ নেয় এবং এর নামকরণ করা হয় ‘কুমুদিনী হাসপাতাল’।
পরবর্তী তিনি নারী শিক্ষা বিস্তারের জন্য ভারতেশ্বরী হোমস, কুমুদিনী নার্সিং স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। নারীদের উচ্চ শিক্ষার জন্য টাঙ্গাইলের কুমুদিনী কলেজ এবং গ্রামবাংলার হতদরিদ্র ছাত্রদের জন্য মানিকগঞ্জে বাবার নামে দেবেন্দ্র কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। তাছাড়াও তিনি মির্জাপুর কলেজ ও মির্জাপুর এসকে পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। কিন্তু এই মানব প্রেমিককে ‘৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাক হানাদার বাহিনী এবং তাদের এদেশীয় দোসররা রেহাই দেয়নি। ৭ মে নারায়নগঞ্জের বাসা থেকে তাকে ও তার ছেলে ভবানী প্রসাদ সাহা রবিকে ধরে নিয়ে হত্যা করে। এদিকে প্রতিবারের মত এবারও এলাকাবাসীর উদ্যোগে নানা কর্মসূচীর মাধ্যমে তার জন্মজয়ন্তী পালন করা হচ্ছে। এ উপলক্ষে কুমুদিনী হাসপাতাল, ভারতেশ্বরী হোসমসহ তার প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নানা কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়েছে। (টাঙ্গাইল ২৪ ডট কম)