নিউইয়র্ক ০৯:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

সাবেক সভাপতি জন উদ্দিনদের কাছে পাওনা অর্থ সহ বিভিন্ন ইস্যুতে দফায় দফায় উত্তেজনা

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১২:৫৩:৫৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০১৬
  • / ১০৫৪ বার পঠিত

নিউইয়র্ক: যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বৃহত্তর সিলেটের প্রবাসী বাংলাদেশী তথা জালালাবাদবাসীদের সর্ববৃহৎ সামাজিক সংগঠন জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকা ইনক’র সাধারণ সভায় সাবেক সভাপতি জন উদ্দিনের কাছে পাওনা অর্থ অদায় সহ বিভিন্ন ইস্যুতে দফায় দফায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক এসোসিয়েশনের ট্রাষ্টি বোর্ডের নেতৃত্বে আলোচনার ভিত্তিতে জন উদ্দিনের কাছে পাওনা অর্থ (৩৩ হাজার ৫০০ ডলার) তিন মাসের মধ্যে আদায় অন্যথায় তার (জন উদ্দিন) বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সভায় ‘জাতির জনক’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুদিবস ১৫ আগষ্ট ‘জাতীয় শোক দিবস’ পালন এবং ঈদে মিলাদুন্নবী ও দোয়া মাহফিল আয়োজনের সিদ্ধান্ত ছাড়াও এসোসিয়েশনের গঠনতন্ত্র বাংলা ভাষার পাশাপাশি ইরেজীতে প্রকাশ, অর্থ লেন-দেনে পারসোনাল চেক ব্যতিরেকে মানি অর্ডার/ব্যাংক ড্রাফট গ্রহণ (ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে নগদ ক্যাশ গ্রহণ), মৃত্যু সংবাদ প্রচারে ‘অটোমেটিক টেলিফোন ম্যাসেস ব্রডকাস্টার’ সিস্টেম ব্যবহারের ব্যয় বাবদ ২০০ ডলার ফি, নির্বাচন পরিচালনার জন্য নির্বাচন কমিশন কর্তৃক পৃথক ব্যাংক একাউন্ট খোলা সহ গঠনতন্ত্র মোতাবেক আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সিটির এস্টোরিয়াস্থ জালালাবাদ কার্যালয়ে ৩১ জানুয়ারী রোববার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন এসোসিয়েশনের সভাপতি বদরুল হোসেন খান। সভা পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক জুয়েল চৌধুরী। বাংলাদেশ সোসাইটি ইনক’র সভাপতি আজমল হোসেন কুনু সহ এসোসিয়েশনের উপদেষ্টা এবং সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ সভামঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন। খবর ইউএনএ’র।
সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন সংগঠনের সাবেক সহ সভাপতি মৌলানা সাইফুল আলম সিদ্দিকী। এরপর গত সাধারণ সভা থেকে সভার দিন পর্যন্ত যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের সম্মানে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
Jalalbad Asso. AGM Pic-1সভায় সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষের রিপোর্ট পেশ করেন যথাক্রমে সাধারণ সম্পাদক জুয়েল চৌধুরী ও কোষাধ্যক্ষ আতাউল গণি আসাদ। রিপোর্ট দু’টি উপস্থাপনের পর আলোচনায় অংশ নেন এসোসিয়েশনের সাবেক উপদেষ্টা মকবুল রহিম চুনুই, উপদেষ্টা যথাক্রমে মোহাম্মদ একলিমুজ্জামান ও ডা. আকামত আলী তালুকদার, এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি যথাক্রমে আব্দুল বাসিত, কামাল আহমেদ ও বদরুন নাহার খান মিতা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে মিসবাহ মজিদ, মইনুল হক চৌধুরী, আতাউর রহমান সেলিম, আব্দুল হাসিব মামুন ও আহমেদ জিল্লু। এছাড়াও পর্যায়ক্রমে আলোচনায় অংশ নেন সাইকুল ইসলাম, মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, আলহাজ সৈয়দ জুবায়ের আলী, মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, আব্দুল মালেক লায়েক, দরুদ মিয়া রনেল, আজিমুর রহমান বুরহান, মিসবা আবদীন, ফজলু মিয়া, আব্দুল বাসিত বুলবুল, শরীফ আহমেদ লস্কর, কয়সর আহমেদ, মৌলানা ছয়ফুল আলম সিদ্দিকী, গোলাম মর্তুজা, মুজাহিদুল ইসলাম, গৌস খান, আব্দুল করীম, সালেহ চৌধুরী, রুহেল চৌধুরী, এডভোকেট নাসির উদ্দিন ও মনজুর আহমেদ চৌধুরী। সভায় বিপুল সংখ্যক জালালাবাদবাসী উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষের রিপোর্টের উপর আলোচনার সূত্রপাত করে সাইকুল ইসলাম গঠনতন্ত্র মোতাবেক সংগঠন পরিচালনার উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, আয়-ব্যয়ে সাধারণ সম্পাদকের রিপোর্টের সাথে কোষাধ্যক্ষের রিপোর্টের মিল নেই। তার বক্তব্যের পর উপস্থিত অনেকেই আয়-ব্যয়ে আরো স্বচ্ছতার উপর গুরুত্বারোপ করেন। সভায় দরুদ মিয়া রনেলের প্রস্তাবে এখন থেকে প্রতি বছর ‘জাতীয় শোক দিবস পালন’, আলহাজ সৈয়দ জুবায়ের আলীর প্রস্তাবে প্রতি বছর পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী ও দোয়া মাহফিল আয়োজন, আব্দুল হাসিব মামুনের প্রস্তাবে গঠনতন্ত্র বাংলা ভাষার পাশাপাশি ইরেজীতে প্রকাশ, আব্দুর করীমের প্রস্তাবে বাংলাদেশ সোসাইটির সাথে জালালাবাদ এসোসিয়েশনের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হয়। সভায় গৃহীত অন্যান্য সিদ্ধান্তের প্রস্তাব সাধারণ সম্পাদক তার রিপোর্টের মাধ্যমে উপস্থাপন করেন। সভায় সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষের রিপোর্ট প্রশংসিত হয়।
সভায় এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি জন এন উদ্দিনের কাছে পাওনা অর্থ আদায়, বিশিষ্ট রাজনীতিক এডভোকেট সিরাজ উদ্দিন আহমেদের সাথে মতবিনিময় সভার আয়োজন, অফিস ভাড়া, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী ও দোয়া মাহফিল আয়োজন প্রভৃতি বিষয়ে দফায় দফায় মৃদু উত্তেজনা সৃষ্ঠি হয়। এছাড়াও মাঝে মধ্যে সভার ডেকোরাম ভঙ্গ করে একাধিক সদস্য কথা বলায় সভার পরিবেশ নষ্ট হওয়ার উপক্রম হলে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দৃঢ় পদক্ষেপে পরবর্তীতে সুষ্ঠুভাবে সভার কাজ শেষ হয়। উল্লেখ্য, মধ্যরাত ১২টার দিকে সভার সমাপ্তি ঘটে।
সভায় আজমল হোসেন কুনু বলেন, জালালাবাদ এসোসিয়েশনে সভাপতি থাকাকালীন আমাদের সময়ে ‘জালালাবাদ ভবন’ ক্রয়ের লক্ষ্যে প্রথম ফান্ড রেইজিং-এর উদ্যোগ নেয় হয় এবং তখন এক লাখ ৪৫ হাজার ডলার ফান্ড উঠেছিলো। তিনি বলেন, জালালাবাদ ভবন এখন সবার দাবী। সম্মিলিতভাবেই এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রসঙ্গত তিনি বলেন, নির্বাচনের আমরা একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী থাকলেও নির্বাচন পরবর্তী সময়ে জালালাবাদের প্রশ্নে আমরা সবাই যে এক ও ঐক্যবদ্ধ তার প্রমান আজকের সভায় সকলের উপস্থিতি। তিনি বাংলাদেশ সোসাইটিরকে প্রবাসী বাংলাদেশীদের মাদার সংগঠনের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠার উপর গুরুত্বারোপ করেন এবং সোসাইটির সাথে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের জন্য জালালাবাদ এসোসিয়েশনের কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।
কামাল আহমেদ বলেন, সাধারণ সম্পাদকের রিপোর্ট সুন্দর হলেও এই রিপোর্টে ফিলাডেলফিয়ায় বাড়ী ক্রয়কারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে কৃপণতা করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা যখন বাড়ীটি ক্রয় করি তখন এবং পরবর্তী সময়ে আমাদেরকে নানা কথা শুনতে হয়েছে। অথচ আজ এই বাড়ী থেকে এসোসিয়েশনের আয় হচ্ছে এবং বাড়ীটি সংগঠনের অ্যাসেট হয়েছে। বিগত তিন মাস ধরে ঐ বাড়ীতে ভাড়াটিয়া না থাকায় তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেন।
মকবুল রহীম চুনুই গঠনতন্ত্র মোতাবেক সংগঠন পরিচালনার জন্য কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।
আজিমুর রহমান বুরহান বলেন, ২০০৩ সাল থেকেই ‘জালালাবাদ ভবন’ ক্রয়ের ব্যাপারে অর্থ সংগ্রহ করা হচ্ছে অথচ আমরা কার্যকরী কোন পদক্ষেপ দেখছি না। সিলেটে ডায়ালাইসি সেন্টার প্রতিষ্ঠার নামেও অর্থ সংগ্রহ করা হচ্ছে। অথচ এব্যাপারে আমরা বিস্তারিত অবহিত নই। কতদিন আমাদেরকে অর্থ সংগ্রহ করতে হবে তাও আমরা জানিনা। এডভোকেট সিরাজ উদ্দিন আহমেদের সাথে মতবিনিময় সভা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তিনি (সিরাজ উদ্দিন) জনপ্রতিনিধি নন তাই তাকে সংবর্ধিত করা গঠনতন্ত্র পরিপন্থী হয়েছে। তিনি কর্মকর্তাদের বাস্তববাদী হয়ে গঠনতন্ত্রের আলোকে এসোসিয়েশন পরিচালার উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি সংগঠনের অফিস ভাড়ারও সমালোচনা করেন।
বদরুন নাহার খান মিতা, মনজুর আহমেদ চৌধুরী, আতাউর রহমান সেলিম, আব্দুল হাসিব মামুন বিগত নির্বাচনগুলোর অভিজ্ঞতার আলোকে নির্বাচন কমিশনের জন্য পৃথক ব্যাংক একাউন্ট খোলা এবং আর্থিক লেন-দেনে মানি অর্ডার/সার্টিফাইড চেক ব্যবহার প্রস্তাব দেন।
শরীফ লস্কর বলেন, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের ইতিহাসে দুই ব্যক্তি ছাড়া আর কোন কর্মকর্তা সংগঠনের অর্থ আতœসাৎ করেননি। তিনি আলোচনার মাধ্যমে জন উদ্দিনের কাছে পাওনা অর্থ আদায়ের প্রস্তাব দেন। এছাড়া তিনি সংগঠনের অর্থ লেন-দেনে মানি অর্ডার গ্রহণ এবং প্রবাসীদের হয়রানী বন্ধে সংগঠনকে প্রতিবাদী হওয়ার দাবী জানান।
রুহেল চৌধুরী আর্থিক স্বচ্ছতার জন্য সংগঠনের নির্বাচন ঘোষণার পর ব্যাংক একাউন্ট ফ্রিজ করার প্রস্তাব দেন।
সভায় উপিস্থিত সকলেই এসোসিয়েশনের হাউজিং এ্যাসিসটেন্স ও জব ইন্টার্নিশীপ কার্যক্রমের প্রশংসা এবং আর্থিক ভীত মজবুত করতে আজীবন সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করেন।
সভাপতি বদরুল হোসেন খান তার বক্তব্যে উপস্থিত সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান এবং গঠনতন্ত্রের বাইরে সংগঠন পরিচালনা করা হবে না বলে সকলকে আশ্বস্থ করেন। এর আগে সাধারণ সম্পাদক জুয়েল চৌধুরী ও কোষাধ্যক্ষ আতাউল গনি আসাদ বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
Jalalbad Asso. AGM'2016_GS Jueel Chow. Speechসাধারণ সম্পাদকের রিপোর্ট: সভায় সাধারণ সম্পাদকের রিপোর্টের শুরুতেই জুয়েল আহমেদ কমিউনিটির পরিচিত মুখ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সদ্য প্রয়াত শাহীন রহমান সহ সম্প্রতি মৃত্যুবরণকারী জালালাবাদবাসীদের মধ্যে বাংলাদেশ সোসাইটি ইন্ক’র ট্রাষ্টি বোর্ড মেম্বার ও এসোসিয়েশনের সাবেক বোর্ড অব ট্রাষ্টির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা রশিদ আহমেদ, শাপলা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সাবেক সভাপতি শহীদ চৌধুরী মাক্কু, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সাবেক সহ সভাপতি এ এইচ এম আখতারুজ্জামান চৌধুরী, মরহুম রশীদ আহমেদের একমাত্র পুত্র রাজীব আহমেদ এবং তরুণ মাজেদুল আহমেদ সামিকে স্মরণ করেন এবং সংগঠনের বিগত ছয় মাসের কর্মকান্ড ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেন। এসোসিয়েশনের উল্লেখযোগ্য কর্মকান্ডের ছিলো: কনস্যুলেট সেবা, আজীবন সদস্য সংগ্রহ, হাউজিং এ্যাসিসটেন্স, অমর একুশে পালন, মহিলাদের জন্য ইসলামিক সেমিনার, স্বাধীনতা দিবস পালন, ফ্লাই দুবাই বন্ধে¦র প্রতিবাদ, জব ইন্টার্নিশীপ, ইফতার মাহফিল, নার্সিং হোমে ইফতার পরিবেশনের কর্মসূচী, ড. মোমেনকে বিদায়, জালালাবাদ ভবন প্রতিষ্ঠায় ফান্ড রেইজিং প্রভৃতি।
প্রবাসীদের কনস্যুলেট সেবা প্রসঙ্গে রিপোর্টে বলা হয়: জালালাবাদ এসোসিয়েশন-এর চলমান এই প্রক্রিয়ার উদ্যোগে প্রতি তিন মাস অন্তর নিউজার্সীতে (২৩৬ ইউনিয়ন এভিনিউ) সকল প্রবাসীদের জন্য কনস্যুলেট সেবা প্রদান অব্যাহত রয়েছে। এজন্য তিনি কনস্যুলেট জেনারেল অব বাংলাদেশ নিউইয়র্কের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
আজীবন সদস্য সংগ্রহ সম্পর্কে রিপোর্টে বলা হয়: বর্তমান কার্যকরী পরিষদের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই আজীবন সদস্য সংগ্রহ অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং অদ্যাবধি ৫৫জন ব্যক্তি আজীবন সদস্য পদ গ্রহণ করেছেন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত এসোসিয়েশনের আজীবন সদস্য সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সর্বমোট ৩৫৬ জন।
হাউজিং এ্যাসিসটেন্স সম্পর্কে রিপোর্টে বলা হয়: কমিউনিটির বিশেষ করে স্বল্প আয়ের মানুষদের জন্য ইতিপূর্বে গৃহীত ‘অ্যাফোর্ডেবল হাউজিং অ্যাসিসটেন্টস প্রোগ্রাম অব নিউইয়র্ক’ কর্মসূচীর ফলোআপ এবং এ ব্যাপারে ২৪ মে এসোসিয়েশন কার্যালয়ে এক সেমিনার ছাড়াও একই দিন ‘ওবামা কেয়ার’ বিষয়েও একটি সেমিনার আয়োজন করা হয়। উল্লেখ্য ‘অ্যাফোর্ডেবল হাউজিং অ্যাসিসটেন্টস প্রোগ্রাম অব নিউইয়র্ক’ কর্মসূচীর আলোকে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী আবেদন করার পর একাধিক প্রবাসী লটারীর মাধ্যমে বাসা বরাদ্দ পেয়েছেন।
এসোসিয়েশনের ট্যাক্স ফাইলিং সম্পর্কে রিপোর্টে বলা হয়: এসোসিয়েশনকে গতিশীল, জবাবদিহী ও স্বচ্ছ করার লক্ষ্যে বিগত ২০১৩ সাল থেকে প্রতি বছর ‘আই আর এস’ আওতায় ট্যাক্স ফাইলিং করা হয়ে থাকে।
সংগঠনের সাবেক নির্বাচন কমিশনার আওতাদ চৌধুরী কর্তৃক সংগঠনে অর্থ ফেরৎ প্রদান সম্পর্কে রিপোর্টে বলা হয়: জালালাবাদ এসোসিয়েশন-এর বিগত ১৯৯৯ সালের নির্বাচন কমিশনের অন্যতম সদস্য আওতাদ চৌধুরী তার কাছে এসোসিয়েশনের পাওনা ৩,০০০ (তিন হাজার) ডলার আদায় করা হয়। গত ৭ জুন এসোসিয়েশন কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় আওতাদ চৌধুরী উপস্থিত হয়ে সকলের উপস্থিতিতে তিনি তার কাছে পাওনা অর্থ চেকের মাধ্যমে পরিশোধ করেন। রিপোর্টে আরো বলা হয়, আওতাদ চৌধুরীর কাছে প্রাপ্ত অর্থ আদায়ের লক্ষ্যে এসোসিয়েশন বাদী হয়ে বিগত ২০০০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারী তার (আওতাদ চৌধুরী) বিরুদ্ধে অর্থ আতœসাতের মামলা দায়ের করা হয়। যেহতু আওতাদ চৌধুরী তার কাছে পাওনা অর্থ সংগঠনের কাছে ফেরৎ দেন সেহেতু তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ এবং অর্থ ফেরৎ দেয়ার জন্য এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে তার সদস্য পদ পুনর্বহাল করা হয়।
অমর একুশে পালন প্রসঙ্গে রিপোর্টে বলা হয়: গত বছর (২০১৫ সাল) জেবিবিএ’র সাথে যৌথ উদ্যোগে অমর একুশে ফেব্রুয়ারী মহান শহীদ দিবস তথা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয়। এ উপলক্ষ্যে জ্যাকসন হাইটসের পালকি পার্টি সেন্টারে আলোচনা সভা এবং স্থানীয় ডাইভারসিটি প্লাজায় অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।
মহিলাদের জন্য ইসলামিক সেমিনার প্রসঙ্গে রিপোর্টে বলা হয়: এসোসিয়েশনের উদ্যোগে গত মার্চ মাসে সংগঠন কার্যালয়ে ‘নূর মাহফিল’ শীর্ষক ইসলামিক সেমিনারের আয়োজন করা হয়। এতে নতুন প্রজন্মসহ বিপুল সংখ্যক মহিলা অংশ নেন। এই সেমিনারের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের কিশোর-কিশোরীরা ধর্মীয় এবং সামাজিক কর্মকান্ডে আরো উদ্বুদ্ধ হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
মহান স্বাধীনতা দিবস পালন প্রসঙ্গে রিপোর্টে বলা হয়: প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ-এর ৪৪তম স্বাধীনতা দিবস (২৬ মার্চ’২০১৫) যথাযথ মর্যাদায় ফিলাডেলফিয়াতে পালন করা হয়। উল্লেখ্য, জালালাবাদ এসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সংগঠনের উদ্যোগে প্রতিবছর বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস পালন করা হচ্ছে।
ফ্লাই দুবাই বন্ধে¦র প্রতিবাদ সম্পর্কে রিপোর্টে বলা হয়: সিলেটের সাথে ‘ফ্লাই দুবাই’ বন্ধের প্রতিবাদে মে মাসে এসোসিয়েশনের উদ্যোগে মতবিনিময় সভার আয়োজন এবং এব্যাপারে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি (ড. একে আব্দুল মোমেন)-এর মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
এসোসিয়েশনের বোর্ড অব ট্রাষ্টি গঠন সম্পর্কে রিপোর্টে বলা হয়: বিগত ৩১ মে সংগঠনের বোর্ড অব ট্রাষ্ট্রি গঠন করা হয়। নতুন বোর্ডের সদস্যরা হলেন যথাক্রমে সর্বজনাব মোহাম্মদ একলিমুজ্জামান নুনু (সিলেট), ডা. মোহাম্মদ আকামত আলী তালুকদার (সুনামগঞ্জ), গজনফর আলী চৌধুরী (মৌলভীবাজার) ও মুবাশ্বির হোসেন চৌধুরী (হবিগঞ্জ)।
জব ইন্টার্নিশীপ সম্পর্কে রিপোর্টে বলা হয়: এসোসিয়েশনের উদ্যোগে নিউইয়র্ক হোটেল ট্রেড কাউন্সিল (লোকাল ৬ ইউনিয়ন)-এর আয়োজনে মে মাসে সামার জব ইন্টার্নিশীপ-এর আয়োজন করা হয়। এতে প্রবাসীদের ব্যাপক সাড়া পাওয়া যায় এবং একজন প্রবাসী স্থায়ীভাবে চাকুরীর সুযোগ পায়। এছাড়াও বাংলাদেশী মালিকানাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করে ‘জব ব্যাংক’ কর্মসূচীর আওতায় প্রবাসীদের চাকুরীর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এব্যাপারে সংশ্লিষ্টরা সংগঠনের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
রশীদ চৌধুরীর ইন্তেকালে দোয়া: এসোসিয়েশনের ট্রাষ্টি বোর্ডের সাবেক সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা রশীদ আহমেদের ইন্তেকালের পর গত ৮ জুন সংগঠনের পক্ষ থেকে তার বিদেহী আতœার শান্তি কামনায় বিভিন্ন মসজিদে দোয়া মাহফিলের আয়োজন এবং ওয়াশিংটন মেমোরিয়ালে সংগঠনের নিজস্ব কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন কাজে সংগঠনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হয়।
ইফতার মাহফিল আয়োজন সম্পর্কে রিপোর্টে বলা হয়: প্রতিবছরের মতো এবছরও গত ২১ জুন এসোসিয়েশনের উদ্যোগে নিউইয়র্কের উডসাইডস্থ গুলশান ট্যারেসে পূর্ণ ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
নার্সিং হোমে ইফতার পরিবেশনের কর্মসূচী সম্পর্কে রিপোর্টে বলা হয়: পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে জালালাবাদ এসোসিয়েশন বিশেষ কর্মসূচী গ্রহণ করে। এই কর্মসূচীর অংশ হিসেবে পবিত্র রমজান মাসে তিন সপ্তাহ অর্থাৎ ২৮ জুন এবং ৫ ও ১২ জুলাই তিন রোববার নিউইয়র্ক সিটির তিনটি নার্সিং হোমে অবস্থানরত ২৫ জন মুসলমানদের মাঝে ইফতার পরিবেশন করা হয়। এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে কর্মকর্তারা ইফতারী নিয়ে নার্সিং হোমে পরিবেশন করেন। ইফতারী স্পন্সর করে জ্যাকসন হাইটসের প্রিমিয়ার সুইটস ও এস্টোরিয়ার আলাদীন রেষ্টুরেন্ট সহ কার্যকরী পরিষদের কর্মকর্তাবৃন্দ। এছাড়া গত ১৩ জুলাই এসোসিয়েশন কার্যালয়ে সংগঠনের নতুন ট্রাষ্টি বোর্ডে সদস্য ও বিদায়ী ট্রাষ্টি বোর্ড সদস্যদের সম্মানে এক ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয় বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়।
রিপোর্টে বলা হয়: গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রী, সিলেটের কৃতি সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মহসীন আলী এমপি, সিলেটের প্রবীণ রাজনীতিবীদ ও সিলেট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সর্বজন শ্রদ্ধেয় আব্দুজ জাহির চৌধুরী সুফিয়ান এবং জালালাবাদ এসোসিয়েশনের ট্রাষ্ট্রি বোর্ডের প্রাক্তন সদস্য নজরুল ইসলামক চৌধুরীর মৃত্যুতে ২০ সেপ্টেম্বর এসোসিয়েশন কার্যালয়ে শোক সভা ও দোয়া মাহফিল আয়োজন এবং মরহুমদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়।
এছাড়া জাতিসংঘের বাংলাদেশ মিশনে নিযুক্ত স্থায়ী প্রতিনিধি, সিলেটের কৃতি সন্তান ড. একে আব্দুল মোমেনের বিদায় উপলক্ষ্যে গত ১৮ অক্টোবর সংগঠন কার্যালয়ে তার সম্মানে এক বিদায় সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়।
জালালাবাদ ভবন প্রতিষ্ঠায় ফান্ড রেইজিং সম্পর্কে রিপোর্টে বলা হয়: নিউইয়র্কে জালালাবাদ ভবন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গত ৬ ডিসেম্বর উডসাইডের গুলশান ট্যারেসে ফান্ড রেইজিং ডিনারের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কেপিসি গ্রুপের সিইও এবং সিলেটের কৃতি সন্তান ড. কালী প্রদীপ চৌধুরী। উক্ত অনুষ্ঠানে ক্যাশ ও প্রতিশ্রুতি মোতাবেক এক লক্ষ ২৫ হাজার ডলার ফান্ড রেইজ হয়। এজন্য চেজ ব্যাংকে পৃথক একাউন্ট খোলা হয়েছে। এই অনুষ্ঠানে ১০ হাজার ডলার করে অনুদান প্রদানকারী ব্যক্তিবর্গকে সংগঠনের পেট্রোন-এর মর্যাদায় অভিষিক্ত করা হয়। এরা হলেন: জহিরুল ইসলাম, শাহিন খালিক, হাজী শামসুল ইসলাম, জয়নাল আবদীন, বদরুল হক, মোস্তফা কামাল, আবুল কালাম, গিয়াস আহমেদ বেলাল ও জগলুল হুদা। এছাড়া ১২ জন ব্যক্তি এক হাজার ডলার প্রদান করে গোল্ড মেম্বার হিসেবে তালিভুক্ত হয়েছেন, ফাউন্ডিং মেম্বার হিসেবে ৫০০ ডলার প্রদান করেছেন সর্বমোট ২৮ জন এবং ৪৭জন ২০০ ডলার প্রদান করে সাপোর্টার হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছেন। এজন্য তাদের প্রত্যেকের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়।
এছাড়া জনাব জহিরুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে ‘ভবন বাস্তবায়ন কমিটি’ গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন যুগ্ম আহ্বায়ক- মোস্তফা কামাল, সদস্য সচিব- জুয়েল চৌধুরী, অর্থ সচিব- হাজী শামসুল ইসলাম এবং সদস্য- বদরুল হক, গিয়াস আহমেদ, বেলাল, শাহিন খালিক, জয়নাল আবদীন, আবুল কালাম ও জগলুল হুদা।
সাধারণ সম্পাদক তার রিপোর্টে বলেন, জালালাবাদ এসোসিয়েশন এখন আর ছোট কোন সংগঠন নয়। দিনে দিনে এর প্রসার যেমন ঘটছে, তেমনী সামাজিকভাবে এই সংগঠনের দায়িত্বও বেড়ে যাচ্ছে। আর তাই সংগঠনকে শুধু প্রবাসের সামাজিক কর্মকান্ডের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না। প্রবাসের পাশাপাশি আমাদেরকে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ আর দেশের মানুষের জন্য সেবামূলক কাজে সম্পৃক্ত করতে পারলে সংগঠন প্রতিষ্ঠার স্বার্থকতা পরিপূর্ণ হবে বলেই আমাদের বিশ্বাস। আর এই লক্ষ্য সামনে রেখে এসোসিয়েশনের উদ্যোগে সিলেটে আন্তর্জাতিকমানের ‘ডায়ালাইসিস ও হাইপারটেনশন সেন্টার’ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রবাসের বিশিষ্ট চিকিৎসক ও সিলেটরে কৃতি সন্তান অধ্যাপক ডা. জিয়াউদ্দিন আহমেদের বিশেষ আগ্রহ ও উদ্যোগে এই লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য ইতিমধ্যেই ২৯টি ডায়ালাইসিস মেশিন সংগ্রহ (ডোনেশন) সম্ভব হয়েছে এবং ইতিমধ্যেই ২১টি মেশিন বাংলাদেশে প্রেরণ করা হয়েছে। আর এই মেশিনগুলো দেশে পাঠানোর ব্যয় বহন করেছেন ‘এশিয়া ক্যাশ এন্ড কারী’র স্বত্তাধিকারী মাহমুদ চৌধুরী মাসুম। এছাড়াও কয়েকটি মেশিন স্টোরেজ করতে সাহায্য করেছেন ফাতেমা ব্রাদার্স ইনক’র চেয়ারম্যান হাজী শামসুল ইসলাম। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ইতিপূর্বে ডা. জিয়াউদ্দিন আহমেদকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সিলেটে ‘ডায়ালাইসিস ও হাইপারটেনশন সেন্টার’ প্রতিষ্ঠায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আল মুহিত সার্বিক সহযোগিতার জন্য তাকে সহ সংশ্লিস্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ হয়।
রিপোর্টে আরো বলা হয়: ডা. জিয়াউদ্দিন আহমেদ অনেক দিন ধরে বাংলাদেশে বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে সেবার মহান আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে এক্সরে মেশিন, আল্টাসনগ্রাম মেশিন, সার্জিক্যাল ইকুইপমেন্ট, হসপিটাল বেড বিনামূল্যে প্রদান করেছেন। প্রচার বিমুখ এই সমাজসেবীর প্রতি রইল আমাদের বিন¤্র শ্রদ্ধা ও ভালবাসা। এছাড়া সিলেটে প্রস্তাবিত ‘ডায়ালাইসিস ও হাইপারটেনশন সেন্টার’ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সিলেটের ব্যবসায়ী জুবায়ের চৌধুরী, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে ৬০ ডিসিমল নিষ্কন্টক জায়গা দান করেছেন। যার বর্তমান বাজার দর প্রায় ৮ কোটি টাকা।
রিপোর্টে বলা হয়: নিউইয়র্ক সফররত সিলেটের দুই কৃতি সন্তান বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনের বিচারপতি খিজির ইসলাম চৌধুরী এবং রূপালী ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান ও সেবামূলক সংগঠন সীমান্তিক-এর প্রতিষ্ঠাতা ড. আহমেদ আল কবীরের সাথে গত ১৫ জুন এবং বিশিষ্ট রাজনীতিক, সিলেটের কৃতি সন্তান অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের সাথে ২৮ সেপ্টেম্বর মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি জন এন উদ্দিনের কাছে পাওয়া অর্থ সম্পর্কে রিপোর্ট বলা হয়: এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি জন এন উদ্দিন-এর কাছে সংগঠন কর্তৃক পাওনা ৪৯ হাজার ডলারের মধ্যে এখন পর্যন্ত মাত্র ১৬ হাজার ৫০০ ডলার আদায় করা সম্ভব হয়েছে। বকেয়া অর্থ (৩৩ হাজার ৫০০ ডলার) আদায়ের ব্যাপারে জন উদ্দিনকে সংগঠনের পক্ষ থেকে একাধিকবার মৌখিক ও পত্রের (নোটিশ) মাধ্যমে বকেয়া অর্থ ফেরৎ দেয়ার অনুরোধ জানালেও তিনি তা আমলে নিচ্ছেন না। তাই তার কাছে পাওনা অর্থ আদায়ে আইনগত ব্যবস্থা ছাড়া অন্য কোন পথ খোলা নেই। এব্যাপারে আপনাদের সুচিন্তিত মতামত কামনা করছি।
এসোসিয়েশন কর্তৃক ক্রয়কৃত কবর স্থান সম্পর্কে রিপোর্টে বলা হয়: লং আইল্যান্ডের ওয়াশিংটর মেমোরিয়াল পার্ক-এ ক্রয়কৃত ১০০টি ও নিউজার্সীর লরেন হিল গ্রেভ সেমিট্রি-তে এসোসিয়েশনের ক্রয়কৃত ৫টি কবরস্থান রয়েছে। এসব কবরস্থানের মধ্যে ওয়াশিংটন মেমোরিয়াল কবর স্থানের ৭টি কবর ব্যবহৃত হয়েছে।
সাধারণ সম্পাদক তার রিপোর্টে বলেন, আমাদের নির্বাচনী অঙ্গীকারের মধ্যে অন্যতম ছিলো সংগঠনের সকল প্রকার কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতা প্রতিষ্ঠা করা। তাই গঠনতন্ত্রের অনুচ্ছেদ ১৩ এর ধারা ২ এর কিছুটা পরিবর্তন করে ‘ভোটার ফরম জমা দেয়ার সময় কোন রকমের নগদ অর্থ গ্রহণ না করে’ এর স্থলে ‘সংগঠন বরাবর মানি অর্ডার, ক্যাশিয়ার চেক বা ড্রাফট গ্রহণ করা যাতে করে অতীতের যে তিক্ত অভিজ্ঞতা আমাদের হয়েছে তার অবসান হবে বলে আমাদের বিশ্বাস। এছাড়াও একই অনুচ্ছেদের ধারা ৬ এর অন্তর্গত প্রার্থীর মনোনয়নপত্র ফিসহ এতদসংক্রান্ত সকল লেন-দেন নগদ অর্থের বদলে উপরে উল্লেখিত মানি অর্ডার বা ক্যাশিয়ার চেক বা ড্রাফট গ্রহণের প্রস্তাব রাখছি। তবে ব্যক্তিগত বা একই পরিবারভুক্ত সদস্য এবং একই মেইলিং এর অন্তর্গত কেউ ভোটার হতে চান তার ক্ষেত্রে নগদ অর্থ গ্রহণ করা যেতে পারে।
রিপোর্টে বলা হয়: বিভিন্ন সময়ে কমিউনিটির বিভিন্ন ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করে থাকেন। তাদের মৃত্যু সংবাদ সাথে সাথে সবাইকে জানানোর জন্য সংগঠনের পক্ষ থেকে ইতিপূর্বে ফোন ম্যাসেজিং সিস্টেম-এর মাধ্যমে সংবাদটি অবহিত করা হয়। এজন্য বেশ অর্থও ব্যয় করতে হয়। একেকবার এই সিস্টেম ব্যবহার করলে ২০০ ডলার ব্যয় হয়। এতোদিন এই অর্থ সংগঠনের কর্মকর্তারা ব্যয় করে এসেছেন। বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ এবং সকল প্রবাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করায় এই কার্যক্রম অব্যহত রাখা বলে আমরা মনে করি। আমাদের কাছে ১৫ হাজার ফোন নম্বরের ডাটাবেজ রয়েছে। তাই পরবর্তীতে এই ম্যাসেস কার্যক্রম ব্যবহার করার সময় এজন্য ব্যয়কৃত অর্থ সংগঠনের ফান্ড থেকে পরিশোধ এবং যে বা যারা এই পদ্ধতি ব্যবহার করতে চান তাদেরকে ঐ ফি প্রদান করার জন্য প্রস্তাব রাখছি। উল্লেখ্য, মৃত্যু সংবাদ ব্যতিরেকে অন্যকোন বিষয়ে এই সিস্টেম ব্যবহার করা যাবে না।
রিপোর্টে জালালাবাদ এসোসিয়েশনের আগামী ৬ মাসের উল্লেখযোগ্য কর্মকান্ডের মধ্যে ‘জালালাবাদ ভবন’ প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া, আগামী ২১ ফেব্রুয়ারী অমর একুশে মহান শহীদ দিবস তথা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এবং আগামী ২৬ মার্চ বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা দিবস পালন ছাড়াও আগামী ১২ জুন সংগঠনের উদ্যোগে ইফতার মাহফিলের আয়োজন কথা উল্লেখ করা হয়।
সাধারণ সম্পাদক জুয়েল চৌধুরী তার রিপোর্টে জালালাবাদ এসোসিয়েশনের বোর্ড অব ট্রাষ্টির সকল সদস্য, কার্যকরী পরিষদের সকল কর্মকর্তা, সংগঠনের সাবেক কর্মকর্তাবৃন্দ, সদস্য/সদস্যাসহ সকল জালালাবাদবাসী এবং সকল মিডিয়ার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমাদের প্রাণপ্রিয় জালালাবাদ এসোসিয়েশন-কে আরো গতিশীল ও প্রবাসের অনুকরণীয়, অনুসরণীয় সংগঠনের পরিণত করতে ‘আমি আপনাদের সবার অব্যাহত সহযোগিতা কামনা করছি। জালালাবাদ এসোসিয়েশন হোক আপনার, আমার সবার প্রিয় সংগঠন’।
Jalalbad Asso. AGM_Trasarar Asadকোষাধ্যক্ষ্যের রিপোট: এসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ আতাউল গণি আসাদ তার রিপোর্টে (জানুয়ারী’২০১৫-জানুয়ারী’২০১৬) বিগত সাধারণ সভার পর ৬৫ হাজার ৮১ ডলার আট সেন্ট নিয়ে যাত্রা শুরু এবং এই সময়ে ৩০ হাজার ১০৯ ডলার ৬৫ সেন্ট আয় ও ৪১ হাজার ৮৮৭ ডলার ৩৫ সেন্ট ব্যয়ের হিসাব তুলে ধরেন। সংগঠনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে গচ্ছিত অর্থের পরিমান ৫৩ হাজার ৩০৩ ডলার ৩৮ সেন্ট। সংগঠনের অ্যাসেটের মধ্যে ফিলাফেলডিয়ায় ক্রয়কৃত নিজস্ব বাড়ী (বর্তমান বাজার মূল্য এক লাখ ৮৪ হাজার ডলার), লং আইল্যান্ড মেমোরিয়াল কবর স্থানে ক্রয়কৃত ১০০ কবরস্থান (এর মধ্যে ৭টি কবরস্থান ব্যবহৃত, ১০০ কবরস্থানের বর্তমান বাজার মূল্য এক লাখ ৩০ হাজার ডলার) এবং নিউজার্সীতে ক্রয়কৃত ৫টি কবরস্থান (বর্তমান বাজার মূল্য ১০ হাজার ৯০০ ডলার) রয়েছে বলে কোষাধ্যক্ষের রিপোর্টতে উল্লেখ করা হয়।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

সাবেক সভাপতি জন উদ্দিনদের কাছে পাওনা অর্থ সহ বিভিন্ন ইস্যুতে দফায় দফায় উত্তেজনা

প্রকাশের সময় : ১২:৫৩:৫৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০১৬

নিউইয়র্ক: যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বৃহত্তর সিলেটের প্রবাসী বাংলাদেশী তথা জালালাবাদবাসীদের সর্ববৃহৎ সামাজিক সংগঠন জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকা ইনক’র সাধারণ সভায় সাবেক সভাপতি জন উদ্দিনের কাছে পাওনা অর্থ অদায় সহ বিভিন্ন ইস্যুতে দফায় দফায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক এসোসিয়েশনের ট্রাষ্টি বোর্ডের নেতৃত্বে আলোচনার ভিত্তিতে জন উদ্দিনের কাছে পাওনা অর্থ (৩৩ হাজার ৫০০ ডলার) তিন মাসের মধ্যে আদায় অন্যথায় তার (জন উদ্দিন) বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সভায় ‘জাতির জনক’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুদিবস ১৫ আগষ্ট ‘জাতীয় শোক দিবস’ পালন এবং ঈদে মিলাদুন্নবী ও দোয়া মাহফিল আয়োজনের সিদ্ধান্ত ছাড়াও এসোসিয়েশনের গঠনতন্ত্র বাংলা ভাষার পাশাপাশি ইরেজীতে প্রকাশ, অর্থ লেন-দেনে পারসোনাল চেক ব্যতিরেকে মানি অর্ডার/ব্যাংক ড্রাফট গ্রহণ (ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে নগদ ক্যাশ গ্রহণ), মৃত্যু সংবাদ প্রচারে ‘অটোমেটিক টেলিফোন ম্যাসেস ব্রডকাস্টার’ সিস্টেম ব্যবহারের ব্যয় বাবদ ২০০ ডলার ফি, নির্বাচন পরিচালনার জন্য নির্বাচন কমিশন কর্তৃক পৃথক ব্যাংক একাউন্ট খোলা সহ গঠনতন্ত্র মোতাবেক আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সিটির এস্টোরিয়াস্থ জালালাবাদ কার্যালয়ে ৩১ জানুয়ারী রোববার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন এসোসিয়েশনের সভাপতি বদরুল হোসেন খান। সভা পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক জুয়েল চৌধুরী। বাংলাদেশ সোসাইটি ইনক’র সভাপতি আজমল হোসেন কুনু সহ এসোসিয়েশনের উপদেষ্টা এবং সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ সভামঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন। খবর ইউএনএ’র।
সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন সংগঠনের সাবেক সহ সভাপতি মৌলানা সাইফুল আলম সিদ্দিকী। এরপর গত সাধারণ সভা থেকে সভার দিন পর্যন্ত যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের সম্মানে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
Jalalbad Asso. AGM Pic-1সভায় সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষের রিপোর্ট পেশ করেন যথাক্রমে সাধারণ সম্পাদক জুয়েল চৌধুরী ও কোষাধ্যক্ষ আতাউল গণি আসাদ। রিপোর্ট দু’টি উপস্থাপনের পর আলোচনায় অংশ নেন এসোসিয়েশনের সাবেক উপদেষ্টা মকবুল রহিম চুনুই, উপদেষ্টা যথাক্রমে মোহাম্মদ একলিমুজ্জামান ও ডা. আকামত আলী তালুকদার, এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি যথাক্রমে আব্দুল বাসিত, কামাল আহমেদ ও বদরুন নাহার খান মিতা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে মিসবাহ মজিদ, মইনুল হক চৌধুরী, আতাউর রহমান সেলিম, আব্দুল হাসিব মামুন ও আহমেদ জিল্লু। এছাড়াও পর্যায়ক্রমে আলোচনায় অংশ নেন সাইকুল ইসলাম, মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, আলহাজ সৈয়দ জুবায়ের আলী, মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, আব্দুল মালেক লায়েক, দরুদ মিয়া রনেল, আজিমুর রহমান বুরহান, মিসবা আবদীন, ফজলু মিয়া, আব্দুল বাসিত বুলবুল, শরীফ আহমেদ লস্কর, কয়সর আহমেদ, মৌলানা ছয়ফুল আলম সিদ্দিকী, গোলাম মর্তুজা, মুজাহিদুল ইসলাম, গৌস খান, আব্দুল করীম, সালেহ চৌধুরী, রুহেল চৌধুরী, এডভোকেট নাসির উদ্দিন ও মনজুর আহমেদ চৌধুরী। সভায় বিপুল সংখ্যক জালালাবাদবাসী উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষের রিপোর্টের উপর আলোচনার সূত্রপাত করে সাইকুল ইসলাম গঠনতন্ত্র মোতাবেক সংগঠন পরিচালনার উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, আয়-ব্যয়ে সাধারণ সম্পাদকের রিপোর্টের সাথে কোষাধ্যক্ষের রিপোর্টের মিল নেই। তার বক্তব্যের পর উপস্থিত অনেকেই আয়-ব্যয়ে আরো স্বচ্ছতার উপর গুরুত্বারোপ করেন। সভায় দরুদ মিয়া রনেলের প্রস্তাবে এখন থেকে প্রতি বছর ‘জাতীয় শোক দিবস পালন’, আলহাজ সৈয়দ জুবায়ের আলীর প্রস্তাবে প্রতি বছর পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী ও দোয়া মাহফিল আয়োজন, আব্দুল হাসিব মামুনের প্রস্তাবে গঠনতন্ত্র বাংলা ভাষার পাশাপাশি ইরেজীতে প্রকাশ, আব্দুর করীমের প্রস্তাবে বাংলাদেশ সোসাইটির সাথে জালালাবাদ এসোসিয়েশনের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হয়। সভায় গৃহীত অন্যান্য সিদ্ধান্তের প্রস্তাব সাধারণ সম্পাদক তার রিপোর্টের মাধ্যমে উপস্থাপন করেন। সভায় সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষের রিপোর্ট প্রশংসিত হয়।
সভায় এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি জন এন উদ্দিনের কাছে পাওনা অর্থ আদায়, বিশিষ্ট রাজনীতিক এডভোকেট সিরাজ উদ্দিন আহমেদের সাথে মতবিনিময় সভার আয়োজন, অফিস ভাড়া, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী ও দোয়া মাহফিল আয়োজন প্রভৃতি বিষয়ে দফায় দফায় মৃদু উত্তেজনা সৃষ্ঠি হয়। এছাড়াও মাঝে মধ্যে সভার ডেকোরাম ভঙ্গ করে একাধিক সদস্য কথা বলায় সভার পরিবেশ নষ্ট হওয়ার উপক্রম হলে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দৃঢ় পদক্ষেপে পরবর্তীতে সুষ্ঠুভাবে সভার কাজ শেষ হয়। উল্লেখ্য, মধ্যরাত ১২টার দিকে সভার সমাপ্তি ঘটে।
সভায় আজমল হোসেন কুনু বলেন, জালালাবাদ এসোসিয়েশনে সভাপতি থাকাকালীন আমাদের সময়ে ‘জালালাবাদ ভবন’ ক্রয়ের লক্ষ্যে প্রথম ফান্ড রেইজিং-এর উদ্যোগ নেয় হয় এবং তখন এক লাখ ৪৫ হাজার ডলার ফান্ড উঠেছিলো। তিনি বলেন, জালালাবাদ ভবন এখন সবার দাবী। সম্মিলিতভাবেই এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রসঙ্গত তিনি বলেন, নির্বাচনের আমরা একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী থাকলেও নির্বাচন পরবর্তী সময়ে জালালাবাদের প্রশ্নে আমরা সবাই যে এক ও ঐক্যবদ্ধ তার প্রমান আজকের সভায় সকলের উপস্থিতি। তিনি বাংলাদেশ সোসাইটিরকে প্রবাসী বাংলাদেশীদের মাদার সংগঠনের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠার উপর গুরুত্বারোপ করেন এবং সোসাইটির সাথে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের জন্য জালালাবাদ এসোসিয়েশনের কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।
কামাল আহমেদ বলেন, সাধারণ সম্পাদকের রিপোর্ট সুন্দর হলেও এই রিপোর্টে ফিলাডেলফিয়ায় বাড়ী ক্রয়কারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে কৃপণতা করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা যখন বাড়ীটি ক্রয় করি তখন এবং পরবর্তী সময়ে আমাদেরকে নানা কথা শুনতে হয়েছে। অথচ আজ এই বাড়ী থেকে এসোসিয়েশনের আয় হচ্ছে এবং বাড়ীটি সংগঠনের অ্যাসেট হয়েছে। বিগত তিন মাস ধরে ঐ বাড়ীতে ভাড়াটিয়া না থাকায় তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেন।
মকবুল রহীম চুনুই গঠনতন্ত্র মোতাবেক সংগঠন পরিচালনার জন্য কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।
আজিমুর রহমান বুরহান বলেন, ২০০৩ সাল থেকেই ‘জালালাবাদ ভবন’ ক্রয়ের ব্যাপারে অর্থ সংগ্রহ করা হচ্ছে অথচ আমরা কার্যকরী কোন পদক্ষেপ দেখছি না। সিলেটে ডায়ালাইসি সেন্টার প্রতিষ্ঠার নামেও অর্থ সংগ্রহ করা হচ্ছে। অথচ এব্যাপারে আমরা বিস্তারিত অবহিত নই। কতদিন আমাদেরকে অর্থ সংগ্রহ করতে হবে তাও আমরা জানিনা। এডভোকেট সিরাজ উদ্দিন আহমেদের সাথে মতবিনিময় সভা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তিনি (সিরাজ উদ্দিন) জনপ্রতিনিধি নন তাই তাকে সংবর্ধিত করা গঠনতন্ত্র পরিপন্থী হয়েছে। তিনি কর্মকর্তাদের বাস্তববাদী হয়ে গঠনতন্ত্রের আলোকে এসোসিয়েশন পরিচালার উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি সংগঠনের অফিস ভাড়ারও সমালোচনা করেন।
বদরুন নাহার খান মিতা, মনজুর আহমেদ চৌধুরী, আতাউর রহমান সেলিম, আব্দুল হাসিব মামুন বিগত নির্বাচনগুলোর অভিজ্ঞতার আলোকে নির্বাচন কমিশনের জন্য পৃথক ব্যাংক একাউন্ট খোলা এবং আর্থিক লেন-দেনে মানি অর্ডার/সার্টিফাইড চেক ব্যবহার প্রস্তাব দেন।
শরীফ লস্কর বলেন, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের ইতিহাসে দুই ব্যক্তি ছাড়া আর কোন কর্মকর্তা সংগঠনের অর্থ আতœসাৎ করেননি। তিনি আলোচনার মাধ্যমে জন উদ্দিনের কাছে পাওনা অর্থ আদায়ের প্রস্তাব দেন। এছাড়া তিনি সংগঠনের অর্থ লেন-দেনে মানি অর্ডার গ্রহণ এবং প্রবাসীদের হয়রানী বন্ধে সংগঠনকে প্রতিবাদী হওয়ার দাবী জানান।
রুহেল চৌধুরী আর্থিক স্বচ্ছতার জন্য সংগঠনের নির্বাচন ঘোষণার পর ব্যাংক একাউন্ট ফ্রিজ করার প্রস্তাব দেন।
সভায় উপিস্থিত সকলেই এসোসিয়েশনের হাউজিং এ্যাসিসটেন্স ও জব ইন্টার্নিশীপ কার্যক্রমের প্রশংসা এবং আর্থিক ভীত মজবুত করতে আজীবন সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করেন।
সভাপতি বদরুল হোসেন খান তার বক্তব্যে উপস্থিত সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান এবং গঠনতন্ত্রের বাইরে সংগঠন পরিচালনা করা হবে না বলে সকলকে আশ্বস্থ করেন। এর আগে সাধারণ সম্পাদক জুয়েল চৌধুরী ও কোষাধ্যক্ষ আতাউল গনি আসাদ বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
Jalalbad Asso. AGM'2016_GS Jueel Chow. Speechসাধারণ সম্পাদকের রিপোর্ট: সভায় সাধারণ সম্পাদকের রিপোর্টের শুরুতেই জুয়েল আহমেদ কমিউনিটির পরিচিত মুখ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সদ্য প্রয়াত শাহীন রহমান সহ সম্প্রতি মৃত্যুবরণকারী জালালাবাদবাসীদের মধ্যে বাংলাদেশ সোসাইটি ইন্ক’র ট্রাষ্টি বোর্ড মেম্বার ও এসোসিয়েশনের সাবেক বোর্ড অব ট্রাষ্টির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা রশিদ আহমেদ, শাপলা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সাবেক সভাপতি শহীদ চৌধুরী মাক্কু, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সাবেক সহ সভাপতি এ এইচ এম আখতারুজ্জামান চৌধুরী, মরহুম রশীদ আহমেদের একমাত্র পুত্র রাজীব আহমেদ এবং তরুণ মাজেদুল আহমেদ সামিকে স্মরণ করেন এবং সংগঠনের বিগত ছয় মাসের কর্মকান্ড ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেন। এসোসিয়েশনের উল্লেখযোগ্য কর্মকান্ডের ছিলো: কনস্যুলেট সেবা, আজীবন সদস্য সংগ্রহ, হাউজিং এ্যাসিসটেন্স, অমর একুশে পালন, মহিলাদের জন্য ইসলামিক সেমিনার, স্বাধীনতা দিবস পালন, ফ্লাই দুবাই বন্ধে¦র প্রতিবাদ, জব ইন্টার্নিশীপ, ইফতার মাহফিল, নার্সিং হোমে ইফতার পরিবেশনের কর্মসূচী, ড. মোমেনকে বিদায়, জালালাবাদ ভবন প্রতিষ্ঠায় ফান্ড রেইজিং প্রভৃতি।
প্রবাসীদের কনস্যুলেট সেবা প্রসঙ্গে রিপোর্টে বলা হয়: জালালাবাদ এসোসিয়েশন-এর চলমান এই প্রক্রিয়ার উদ্যোগে প্রতি তিন মাস অন্তর নিউজার্সীতে (২৩৬ ইউনিয়ন এভিনিউ) সকল প্রবাসীদের জন্য কনস্যুলেট সেবা প্রদান অব্যাহত রয়েছে। এজন্য তিনি কনস্যুলেট জেনারেল অব বাংলাদেশ নিউইয়র্কের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
আজীবন সদস্য সংগ্রহ সম্পর্কে রিপোর্টে বলা হয়: বর্তমান কার্যকরী পরিষদের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই আজীবন সদস্য সংগ্রহ অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং অদ্যাবধি ৫৫জন ব্যক্তি আজীবন সদস্য পদ গ্রহণ করেছেন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত এসোসিয়েশনের আজীবন সদস্য সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সর্বমোট ৩৫৬ জন।
হাউজিং এ্যাসিসটেন্স সম্পর্কে রিপোর্টে বলা হয়: কমিউনিটির বিশেষ করে স্বল্প আয়ের মানুষদের জন্য ইতিপূর্বে গৃহীত ‘অ্যাফোর্ডেবল হাউজিং অ্যাসিসটেন্টস প্রোগ্রাম অব নিউইয়র্ক’ কর্মসূচীর ফলোআপ এবং এ ব্যাপারে ২৪ মে এসোসিয়েশন কার্যালয়ে এক সেমিনার ছাড়াও একই দিন ‘ওবামা কেয়ার’ বিষয়েও একটি সেমিনার আয়োজন করা হয়। উল্লেখ্য ‘অ্যাফোর্ডেবল হাউজিং অ্যাসিসটেন্টস প্রোগ্রাম অব নিউইয়র্ক’ কর্মসূচীর আলোকে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী আবেদন করার পর একাধিক প্রবাসী লটারীর মাধ্যমে বাসা বরাদ্দ পেয়েছেন।
এসোসিয়েশনের ট্যাক্স ফাইলিং সম্পর্কে রিপোর্টে বলা হয়: এসোসিয়েশনকে গতিশীল, জবাবদিহী ও স্বচ্ছ করার লক্ষ্যে বিগত ২০১৩ সাল থেকে প্রতি বছর ‘আই আর এস’ আওতায় ট্যাক্স ফাইলিং করা হয়ে থাকে।
সংগঠনের সাবেক নির্বাচন কমিশনার আওতাদ চৌধুরী কর্তৃক সংগঠনে অর্থ ফেরৎ প্রদান সম্পর্কে রিপোর্টে বলা হয়: জালালাবাদ এসোসিয়েশন-এর বিগত ১৯৯৯ সালের নির্বাচন কমিশনের অন্যতম সদস্য আওতাদ চৌধুরী তার কাছে এসোসিয়েশনের পাওনা ৩,০০০ (তিন হাজার) ডলার আদায় করা হয়। গত ৭ জুন এসোসিয়েশন কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় আওতাদ চৌধুরী উপস্থিত হয়ে সকলের উপস্থিতিতে তিনি তার কাছে পাওনা অর্থ চেকের মাধ্যমে পরিশোধ করেন। রিপোর্টে আরো বলা হয়, আওতাদ চৌধুরীর কাছে প্রাপ্ত অর্থ আদায়ের লক্ষ্যে এসোসিয়েশন বাদী হয়ে বিগত ২০০০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারী তার (আওতাদ চৌধুরী) বিরুদ্ধে অর্থ আতœসাতের মামলা দায়ের করা হয়। যেহতু আওতাদ চৌধুরী তার কাছে পাওনা অর্থ সংগঠনের কাছে ফেরৎ দেন সেহেতু তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ এবং অর্থ ফেরৎ দেয়ার জন্য এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে তার সদস্য পদ পুনর্বহাল করা হয়।
অমর একুশে পালন প্রসঙ্গে রিপোর্টে বলা হয়: গত বছর (২০১৫ সাল) জেবিবিএ’র সাথে যৌথ উদ্যোগে অমর একুশে ফেব্রুয়ারী মহান শহীদ দিবস তথা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয়। এ উপলক্ষ্যে জ্যাকসন হাইটসের পালকি পার্টি সেন্টারে আলোচনা সভা এবং স্থানীয় ডাইভারসিটি প্লাজায় অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।
মহিলাদের জন্য ইসলামিক সেমিনার প্রসঙ্গে রিপোর্টে বলা হয়: এসোসিয়েশনের উদ্যোগে গত মার্চ মাসে সংগঠন কার্যালয়ে ‘নূর মাহফিল’ শীর্ষক ইসলামিক সেমিনারের আয়োজন করা হয়। এতে নতুন প্রজন্মসহ বিপুল সংখ্যক মহিলা অংশ নেন। এই সেমিনারের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের কিশোর-কিশোরীরা ধর্মীয় এবং সামাজিক কর্মকান্ডে আরো উদ্বুদ্ধ হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
মহান স্বাধীনতা দিবস পালন প্রসঙ্গে রিপোর্টে বলা হয়: প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ-এর ৪৪তম স্বাধীনতা দিবস (২৬ মার্চ’২০১৫) যথাযথ মর্যাদায় ফিলাডেলফিয়াতে পালন করা হয়। উল্লেখ্য, জালালাবাদ এসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সংগঠনের উদ্যোগে প্রতিবছর বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস পালন করা হচ্ছে।
ফ্লাই দুবাই বন্ধে¦র প্রতিবাদ সম্পর্কে রিপোর্টে বলা হয়: সিলেটের সাথে ‘ফ্লাই দুবাই’ বন্ধের প্রতিবাদে মে মাসে এসোসিয়েশনের উদ্যোগে মতবিনিময় সভার আয়োজন এবং এব্যাপারে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি (ড. একে আব্দুল মোমেন)-এর মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
এসোসিয়েশনের বোর্ড অব ট্রাষ্টি গঠন সম্পর্কে রিপোর্টে বলা হয়: বিগত ৩১ মে সংগঠনের বোর্ড অব ট্রাষ্ট্রি গঠন করা হয়। নতুন বোর্ডের সদস্যরা হলেন যথাক্রমে সর্বজনাব মোহাম্মদ একলিমুজ্জামান নুনু (সিলেট), ডা. মোহাম্মদ আকামত আলী তালুকদার (সুনামগঞ্জ), গজনফর আলী চৌধুরী (মৌলভীবাজার) ও মুবাশ্বির হোসেন চৌধুরী (হবিগঞ্জ)।
জব ইন্টার্নিশীপ সম্পর্কে রিপোর্টে বলা হয়: এসোসিয়েশনের উদ্যোগে নিউইয়র্ক হোটেল ট্রেড কাউন্সিল (লোকাল ৬ ইউনিয়ন)-এর আয়োজনে মে মাসে সামার জব ইন্টার্নিশীপ-এর আয়োজন করা হয়। এতে প্রবাসীদের ব্যাপক সাড়া পাওয়া যায় এবং একজন প্রবাসী স্থায়ীভাবে চাকুরীর সুযোগ পায়। এছাড়াও বাংলাদেশী মালিকানাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করে ‘জব ব্যাংক’ কর্মসূচীর আওতায় প্রবাসীদের চাকুরীর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এব্যাপারে সংশ্লিষ্টরা সংগঠনের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
রশীদ চৌধুরীর ইন্তেকালে দোয়া: এসোসিয়েশনের ট্রাষ্টি বোর্ডের সাবেক সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা রশীদ আহমেদের ইন্তেকালের পর গত ৮ জুন সংগঠনের পক্ষ থেকে তার বিদেহী আতœার শান্তি কামনায় বিভিন্ন মসজিদে দোয়া মাহফিলের আয়োজন এবং ওয়াশিংটন মেমোরিয়ালে সংগঠনের নিজস্ব কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন কাজে সংগঠনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হয়।
ইফতার মাহফিল আয়োজন সম্পর্কে রিপোর্টে বলা হয়: প্রতিবছরের মতো এবছরও গত ২১ জুন এসোসিয়েশনের উদ্যোগে নিউইয়র্কের উডসাইডস্থ গুলশান ট্যারেসে পূর্ণ ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
নার্সিং হোমে ইফতার পরিবেশনের কর্মসূচী সম্পর্কে রিপোর্টে বলা হয়: পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে জালালাবাদ এসোসিয়েশন বিশেষ কর্মসূচী গ্রহণ করে। এই কর্মসূচীর অংশ হিসেবে পবিত্র রমজান মাসে তিন সপ্তাহ অর্থাৎ ২৮ জুন এবং ৫ ও ১২ জুলাই তিন রোববার নিউইয়র্ক সিটির তিনটি নার্সিং হোমে অবস্থানরত ২৫ জন মুসলমানদের মাঝে ইফতার পরিবেশন করা হয়। এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে কর্মকর্তারা ইফতারী নিয়ে নার্সিং হোমে পরিবেশন করেন। ইফতারী স্পন্সর করে জ্যাকসন হাইটসের প্রিমিয়ার সুইটস ও এস্টোরিয়ার আলাদীন রেষ্টুরেন্ট সহ কার্যকরী পরিষদের কর্মকর্তাবৃন্দ। এছাড়া গত ১৩ জুলাই এসোসিয়েশন কার্যালয়ে সংগঠনের নতুন ট্রাষ্টি বোর্ডে সদস্য ও বিদায়ী ট্রাষ্টি বোর্ড সদস্যদের সম্মানে এক ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয় বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়।
রিপোর্টে বলা হয়: গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রী, সিলেটের কৃতি সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মহসীন আলী এমপি, সিলেটের প্রবীণ রাজনীতিবীদ ও সিলেট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সর্বজন শ্রদ্ধেয় আব্দুজ জাহির চৌধুরী সুফিয়ান এবং জালালাবাদ এসোসিয়েশনের ট্রাষ্ট্রি বোর্ডের প্রাক্তন সদস্য নজরুল ইসলামক চৌধুরীর মৃত্যুতে ২০ সেপ্টেম্বর এসোসিয়েশন কার্যালয়ে শোক সভা ও দোয়া মাহফিল আয়োজন এবং মরহুমদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়।
এছাড়া জাতিসংঘের বাংলাদেশ মিশনে নিযুক্ত স্থায়ী প্রতিনিধি, সিলেটের কৃতি সন্তান ড. একে আব্দুল মোমেনের বিদায় উপলক্ষ্যে গত ১৮ অক্টোবর সংগঠন কার্যালয়ে তার সম্মানে এক বিদায় সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়।
জালালাবাদ ভবন প্রতিষ্ঠায় ফান্ড রেইজিং সম্পর্কে রিপোর্টে বলা হয়: নিউইয়র্কে জালালাবাদ ভবন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গত ৬ ডিসেম্বর উডসাইডের গুলশান ট্যারেসে ফান্ড রেইজিং ডিনারের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কেপিসি গ্রুপের সিইও এবং সিলেটের কৃতি সন্তান ড. কালী প্রদীপ চৌধুরী। উক্ত অনুষ্ঠানে ক্যাশ ও প্রতিশ্রুতি মোতাবেক এক লক্ষ ২৫ হাজার ডলার ফান্ড রেইজ হয়। এজন্য চেজ ব্যাংকে পৃথক একাউন্ট খোলা হয়েছে। এই অনুষ্ঠানে ১০ হাজার ডলার করে অনুদান প্রদানকারী ব্যক্তিবর্গকে সংগঠনের পেট্রোন-এর মর্যাদায় অভিষিক্ত করা হয়। এরা হলেন: জহিরুল ইসলাম, শাহিন খালিক, হাজী শামসুল ইসলাম, জয়নাল আবদীন, বদরুল হক, মোস্তফা কামাল, আবুল কালাম, গিয়াস আহমেদ বেলাল ও জগলুল হুদা। এছাড়া ১২ জন ব্যক্তি এক হাজার ডলার প্রদান করে গোল্ড মেম্বার হিসেবে তালিভুক্ত হয়েছেন, ফাউন্ডিং মেম্বার হিসেবে ৫০০ ডলার প্রদান করেছেন সর্বমোট ২৮ জন এবং ৪৭জন ২০০ ডলার প্রদান করে সাপোর্টার হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছেন। এজন্য তাদের প্রত্যেকের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়।
এছাড়া জনাব জহিরুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে ‘ভবন বাস্তবায়ন কমিটি’ গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন যুগ্ম আহ্বায়ক- মোস্তফা কামাল, সদস্য সচিব- জুয়েল চৌধুরী, অর্থ সচিব- হাজী শামসুল ইসলাম এবং সদস্য- বদরুল হক, গিয়াস আহমেদ, বেলাল, শাহিন খালিক, জয়নাল আবদীন, আবুল কালাম ও জগলুল হুদা।
সাধারণ সম্পাদক তার রিপোর্টে বলেন, জালালাবাদ এসোসিয়েশন এখন আর ছোট কোন সংগঠন নয়। দিনে দিনে এর প্রসার যেমন ঘটছে, তেমনী সামাজিকভাবে এই সংগঠনের দায়িত্বও বেড়ে যাচ্ছে। আর তাই সংগঠনকে শুধু প্রবাসের সামাজিক কর্মকান্ডের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না। প্রবাসের পাশাপাশি আমাদেরকে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ আর দেশের মানুষের জন্য সেবামূলক কাজে সম্পৃক্ত করতে পারলে সংগঠন প্রতিষ্ঠার স্বার্থকতা পরিপূর্ণ হবে বলেই আমাদের বিশ্বাস। আর এই লক্ষ্য সামনে রেখে এসোসিয়েশনের উদ্যোগে সিলেটে আন্তর্জাতিকমানের ‘ডায়ালাইসিস ও হাইপারটেনশন সেন্টার’ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রবাসের বিশিষ্ট চিকিৎসক ও সিলেটরে কৃতি সন্তান অধ্যাপক ডা. জিয়াউদ্দিন আহমেদের বিশেষ আগ্রহ ও উদ্যোগে এই লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য ইতিমধ্যেই ২৯টি ডায়ালাইসিস মেশিন সংগ্রহ (ডোনেশন) সম্ভব হয়েছে এবং ইতিমধ্যেই ২১টি মেশিন বাংলাদেশে প্রেরণ করা হয়েছে। আর এই মেশিনগুলো দেশে পাঠানোর ব্যয় বহন করেছেন ‘এশিয়া ক্যাশ এন্ড কারী’র স্বত্তাধিকারী মাহমুদ চৌধুরী মাসুম। এছাড়াও কয়েকটি মেশিন স্টোরেজ করতে সাহায্য করেছেন ফাতেমা ব্রাদার্স ইনক’র চেয়ারম্যান হাজী শামসুল ইসলাম। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ইতিপূর্বে ডা. জিয়াউদ্দিন আহমেদকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সিলেটে ‘ডায়ালাইসিস ও হাইপারটেনশন সেন্টার’ প্রতিষ্ঠায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আল মুহিত সার্বিক সহযোগিতার জন্য তাকে সহ সংশ্লিস্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ হয়।
রিপোর্টে আরো বলা হয়: ডা. জিয়াউদ্দিন আহমেদ অনেক দিন ধরে বাংলাদেশে বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে সেবার মহান আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে এক্সরে মেশিন, আল্টাসনগ্রাম মেশিন, সার্জিক্যাল ইকুইপমেন্ট, হসপিটাল বেড বিনামূল্যে প্রদান করেছেন। প্রচার বিমুখ এই সমাজসেবীর প্রতি রইল আমাদের বিন¤্র শ্রদ্ধা ও ভালবাসা। এছাড়া সিলেটে প্রস্তাবিত ‘ডায়ালাইসিস ও হাইপারটেনশন সেন্টার’ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সিলেটের ব্যবসায়ী জুবায়ের চৌধুরী, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে ৬০ ডিসিমল নিষ্কন্টক জায়গা দান করেছেন। যার বর্তমান বাজার দর প্রায় ৮ কোটি টাকা।
রিপোর্টে বলা হয়: নিউইয়র্ক সফররত সিলেটের দুই কৃতি সন্তান বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনের বিচারপতি খিজির ইসলাম চৌধুরী এবং রূপালী ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান ও সেবামূলক সংগঠন সীমান্তিক-এর প্রতিষ্ঠাতা ড. আহমেদ আল কবীরের সাথে গত ১৫ জুন এবং বিশিষ্ট রাজনীতিক, সিলেটের কৃতি সন্তান অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের সাথে ২৮ সেপ্টেম্বর মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি জন এন উদ্দিনের কাছে পাওয়া অর্থ সম্পর্কে রিপোর্ট বলা হয়: এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি জন এন উদ্দিন-এর কাছে সংগঠন কর্তৃক পাওনা ৪৯ হাজার ডলারের মধ্যে এখন পর্যন্ত মাত্র ১৬ হাজার ৫০০ ডলার আদায় করা সম্ভব হয়েছে। বকেয়া অর্থ (৩৩ হাজার ৫০০ ডলার) আদায়ের ব্যাপারে জন উদ্দিনকে সংগঠনের পক্ষ থেকে একাধিকবার মৌখিক ও পত্রের (নোটিশ) মাধ্যমে বকেয়া অর্থ ফেরৎ দেয়ার অনুরোধ জানালেও তিনি তা আমলে নিচ্ছেন না। তাই তার কাছে পাওনা অর্থ আদায়ে আইনগত ব্যবস্থা ছাড়া অন্য কোন পথ খোলা নেই। এব্যাপারে আপনাদের সুচিন্তিত মতামত কামনা করছি।
এসোসিয়েশন কর্তৃক ক্রয়কৃত কবর স্থান সম্পর্কে রিপোর্টে বলা হয়: লং আইল্যান্ডের ওয়াশিংটর মেমোরিয়াল পার্ক-এ ক্রয়কৃত ১০০টি ও নিউজার্সীর লরেন হিল গ্রেভ সেমিট্রি-তে এসোসিয়েশনের ক্রয়কৃত ৫টি কবরস্থান রয়েছে। এসব কবরস্থানের মধ্যে ওয়াশিংটন মেমোরিয়াল কবর স্থানের ৭টি কবর ব্যবহৃত হয়েছে।
সাধারণ সম্পাদক তার রিপোর্টে বলেন, আমাদের নির্বাচনী অঙ্গীকারের মধ্যে অন্যতম ছিলো সংগঠনের সকল প্রকার কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতা প্রতিষ্ঠা করা। তাই গঠনতন্ত্রের অনুচ্ছেদ ১৩ এর ধারা ২ এর কিছুটা পরিবর্তন করে ‘ভোটার ফরম জমা দেয়ার সময় কোন রকমের নগদ অর্থ গ্রহণ না করে’ এর স্থলে ‘সংগঠন বরাবর মানি অর্ডার, ক্যাশিয়ার চেক বা ড্রাফট গ্রহণ করা যাতে করে অতীতের যে তিক্ত অভিজ্ঞতা আমাদের হয়েছে তার অবসান হবে বলে আমাদের বিশ্বাস। এছাড়াও একই অনুচ্ছেদের ধারা ৬ এর অন্তর্গত প্রার্থীর মনোনয়নপত্র ফিসহ এতদসংক্রান্ত সকল লেন-দেন নগদ অর্থের বদলে উপরে উল্লেখিত মানি অর্ডার বা ক্যাশিয়ার চেক বা ড্রাফট গ্রহণের প্রস্তাব রাখছি। তবে ব্যক্তিগত বা একই পরিবারভুক্ত সদস্য এবং একই মেইলিং এর অন্তর্গত কেউ ভোটার হতে চান তার ক্ষেত্রে নগদ অর্থ গ্রহণ করা যেতে পারে।
রিপোর্টে বলা হয়: বিভিন্ন সময়ে কমিউনিটির বিভিন্ন ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করে থাকেন। তাদের মৃত্যু সংবাদ সাথে সাথে সবাইকে জানানোর জন্য সংগঠনের পক্ষ থেকে ইতিপূর্বে ফোন ম্যাসেজিং সিস্টেম-এর মাধ্যমে সংবাদটি অবহিত করা হয়। এজন্য বেশ অর্থও ব্যয় করতে হয়। একেকবার এই সিস্টেম ব্যবহার করলে ২০০ ডলার ব্যয় হয়। এতোদিন এই অর্থ সংগঠনের কর্মকর্তারা ব্যয় করে এসেছেন। বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ এবং সকল প্রবাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করায় এই কার্যক্রম অব্যহত রাখা বলে আমরা মনে করি। আমাদের কাছে ১৫ হাজার ফোন নম্বরের ডাটাবেজ রয়েছে। তাই পরবর্তীতে এই ম্যাসেস কার্যক্রম ব্যবহার করার সময় এজন্য ব্যয়কৃত অর্থ সংগঠনের ফান্ড থেকে পরিশোধ এবং যে বা যারা এই পদ্ধতি ব্যবহার করতে চান তাদেরকে ঐ ফি প্রদান করার জন্য প্রস্তাব রাখছি। উল্লেখ্য, মৃত্যু সংবাদ ব্যতিরেকে অন্যকোন বিষয়ে এই সিস্টেম ব্যবহার করা যাবে না।
রিপোর্টে জালালাবাদ এসোসিয়েশনের আগামী ৬ মাসের উল্লেখযোগ্য কর্মকান্ডের মধ্যে ‘জালালাবাদ ভবন’ প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া, আগামী ২১ ফেব্রুয়ারী অমর একুশে মহান শহীদ দিবস তথা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এবং আগামী ২৬ মার্চ বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা দিবস পালন ছাড়াও আগামী ১২ জুন সংগঠনের উদ্যোগে ইফতার মাহফিলের আয়োজন কথা উল্লেখ করা হয়।
সাধারণ সম্পাদক জুয়েল চৌধুরী তার রিপোর্টে জালালাবাদ এসোসিয়েশনের বোর্ড অব ট্রাষ্টির সকল সদস্য, কার্যকরী পরিষদের সকল কর্মকর্তা, সংগঠনের সাবেক কর্মকর্তাবৃন্দ, সদস্য/সদস্যাসহ সকল জালালাবাদবাসী এবং সকল মিডিয়ার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমাদের প্রাণপ্রিয় জালালাবাদ এসোসিয়েশন-কে আরো গতিশীল ও প্রবাসের অনুকরণীয়, অনুসরণীয় সংগঠনের পরিণত করতে ‘আমি আপনাদের সবার অব্যাহত সহযোগিতা কামনা করছি। জালালাবাদ এসোসিয়েশন হোক আপনার, আমার সবার প্রিয় সংগঠন’।
Jalalbad Asso. AGM_Trasarar Asadকোষাধ্যক্ষ্যের রিপোট: এসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ আতাউল গণি আসাদ তার রিপোর্টে (জানুয়ারী’২০১৫-জানুয়ারী’২০১৬) বিগত সাধারণ সভার পর ৬৫ হাজার ৮১ ডলার আট সেন্ট নিয়ে যাত্রা শুরু এবং এই সময়ে ৩০ হাজার ১০৯ ডলার ৬৫ সেন্ট আয় ও ৪১ হাজার ৮৮৭ ডলার ৩৫ সেন্ট ব্যয়ের হিসাব তুলে ধরেন। সংগঠনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে গচ্ছিত অর্থের পরিমান ৫৩ হাজার ৩০৩ ডলার ৩৮ সেন্ট। সংগঠনের অ্যাসেটের মধ্যে ফিলাফেলডিয়ায় ক্রয়কৃত নিজস্ব বাড়ী (বর্তমান বাজার মূল্য এক লাখ ৮৪ হাজার ডলার), লং আইল্যান্ড মেমোরিয়াল কবর স্থানে ক্রয়কৃত ১০০ কবরস্থান (এর মধ্যে ৭টি কবরস্থান ব্যবহৃত, ১০০ কবরস্থানের বর্তমান বাজার মূল্য এক লাখ ৩০ হাজার ডলার) এবং নিউজার্সীতে ক্রয়কৃত ৫টি কবরস্থান (বর্তমান বাজার মূল্য ১০ হাজার ৯০০ ডলার) রয়েছে বলে কোষাধ্যক্ষের রিপোর্টতে উল্লেখ করা হয়।