নিউইয়র্ক ০৮:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

সাংবাদিক সম্মেলন ‘প্রবাকস’র ১২ দফা দাবী : দ্বৈত নাগরিকত্বে আইনে প্রবাসীদের হতাশা বাড়বে

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৩:১৪:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০১৬
  • / ৯৪০ বার পঠিত

নিউইয়র্ক: গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রীসভায় অনুমোদিত দ্বৈত নাগরিকত্ব আইন সংশোধনীর খসড়ায় প্রবাসীদের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি দাবী করে মন্ত্রীসভায় গৃহিত আইনটি পুর্ণবিবেচনার দাবী জানিয়েছে ‘প্রাবসী বাঙ্গালী কল্যাণ সমিতি-প্রবাকস’। সেই সাথে প্রবাসীদের দাবী-দাওয়া আদায়ের লক্ষ্যে প্রবাকস’র পক্ষ থেকে ১২ দফা দাবীও উত্থাপন করা হয়েছে।
সিটির জ্যাকসন হাইটসস্থ ইত্যাদি গার্ডেন মিলনায়তনে গত ১৩ ফেব্রুয়ারী শনিবার সন্ধ্যায় প্রবাকস আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে দাবীগুলো উত্থাপন করা হয়। সাংবাদিক সম্মেলনে দ্বৈত নাগরিকত্ব সংশোধনীতে প্রবাসের আশার প্রতিফলন ঘটেনি বলেও অভিযোগ করা হয়। সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান বজলু চৌধুরী। এসময় প্রবাকস সভাপতি মোশাররফ আলম ছাড়াও সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল করীম চৌধুরী এবং ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক আখলাকুল আম্বিয়া চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। খবর ইউএনএ’র।
সাংবাদিক সম্মেলনে প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা, স্থানীয় ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহন, সরকারি ও কূটনীতিক পর্যায়ে দ্বৈত নাগরিকদের চাকুরির সুযোগ, জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি পদে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ দেয়া, বিমান বন্দরে ভিআইপি মর্যাদা, পুলিশী সহায়তায়’সহ ১২টি দাবি পেশ করা হয়। অন্যথায় বাংলাদেশের অর্থনীতির চালিকা শক্তি প্রবাসিদের বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ কমে যাবে বলেও দাবি করেন প্রবাকস’র নেতারা। দাবি আদায়ে বাংলাদেশ কনস্যুলেটে স্মরাকলিপি পেশ’সহ ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন অব্যাহতের ঘোষণাও দেয়া হয়।
সাংবাদিক সম্মেলনে প্রবাকস নেতৃবৃন্দ বলেন, যাদের কষ্টের বিনিময়ে দেশের অর্থনীতির চালিকা শক্তি তাদের মুল্যায়ন না করলে এর দায় সরকারকেই বহন করতে হবে। তবে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে খসড়া নীতিমালা দ্বৈত নাগরিকত্ব ইস্যুতে সরকারকে ধন্যবাদও জানান কেউ কেউ।
সাংবাদিক সম্মেলনে প্রবাকস-এর সাধারণ সম্পাদক লিখিত বক্তব্যে বলেন: বাংলাদেশে অতি সম্প্রতি দ্বৈত নাগরিকত্ব আইন নামে একটি আইনের খসড়া গত ১লা ফেব্রুয়ারী ২০১৬ মন্ত্রীসভায় চুড়ান্তভাবে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশের সরকারি বার্তা সংস্থা বাসসের বরাতে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে আমরা বিষয়টি জেনেছি। ওই প্রতিবেদনে স্পষ্ট বলা আছে, বিদেশি নাগরিকত্ব গ্রহন করেছেন এমন প্রবাসী বাংলাদেশী নাগরিকদের দ্বৈত নাগরিকত্ব দেয়া হয়েছে। এটা আমাদের সারা বিশ্বের প্রবাসীদের জন্য একটি সুসংবাদ। কেবলমাত্র সার্কভুক্ত দেশগুলো বাদ দিয়ে অন্যসব দেশে যতো প্রবাসী বাংলাদেশী বিদেশি নাগরিকত্ব নিয়েছেন তাদের সবাইকে নতুন এই আইনে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেয়া হয়েছে। এজন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রীসভার সম্মানিত সদস্যদের সারা বিশ্বের এক কোটি প্রবাসীদের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়: সদ্য অনুমোদিত দ্বৈত নাগরিকত্ব আইনের বিষয়ে প্রবাসী বাঙ্গালি কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে বিভিন্ন দেশের প্রবাসীদের মতামত জানতে চাওয়া হয়। তারা প্রত্যেকেই প্রবাসীদের ভোটে দাঁড়ানোর অধিকার এবং ভোট দেয়ার অধিকার চান। ওই আইনে বলা আছে, দ্বৈত নাগরিকরা জাতীয় সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন, রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচন, বিচারকসহ প্রজাতন্ত্রের কোনো চাকরিতে নিয়োগ, স্থানীয় সরকার নির্বাচন ও কোনো রাজনৈতিক দল করতে পারবেননা। মন্ত্রীসভায় অনুমোদিত দ্বৈত নাগরিকত্ব আইনটি রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পর গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে শিগগির কার্যকর হবে বলে আমরা জানতে পেরেছি। গেজেট নোটিফিকেশনের আগে ওই আইনে আসলে কী কী আছে তা যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমাদের পক্ষে জানা একেবারে অসম্ভব। আবার আইনটির গেজেট হয়ে গেলে অনেক আইনি জটিলতা তৈরি হবে বলে আমরা আশংকা করছি।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়: সদ্য অনুমোদিত ওই আইনে দ্বৈত নাগরিকরা ভোটে দাঁড়াতে পারবেননা বলে স্পষ্ট উল্লেখ থাকলেও ওই সংবাদে প্রবাসীরা ভোট দিতে পারবেন কি না তা স্পষ্ট উল্লেখ নেই। আমরা আশংকা করছি- যেহেতু দ্বৈত নাগরিকরা ভোটে দাঁড়াতে পারবেন না তাহলে তারা ভোটও দিতে পারবেন না। আবার ভোট দেয়ার অধিকার যদি থাকে তাহলে তো ভোটে দাঁড়ানোরও অধিকার থাকে। এই অস্পষ্টতার কারণে আমরা দ্বিধাগ্রস্ত।
তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ প্রবাসীদের ভোটাধিকারের দাবিতে নিয়মতান্ত্রিক সামাজিক আন্দোলন করে আসছি। বাংলাদেশের সরকার প্রবাসীদের ভোটাধিকার বিষয়ে এর আগের মেয়াদে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেত্রীত্বে সংসদে আইন পাস করেন এবং ওই আইনে প্রবাসীদের ভোটাধিকার দেয়া হয়। ওই আইন কার্যকর করতে ইতোমধ্যে প্রবাসীরা বিভিন্ন দেশ থেকে বিচ্ছিন্নভাবে অনেকে বাংলাদেশে গিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র গ্রহন করেছেন এবং ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকেই ভোটের সময় বাংলাদেশে গিয়ে অনেকেই ভোট দিচ্ছেন। সদ্য সমাপ্ত পৌরসভা নির্বাচনেও বিভিন্ন দেশ থেকে প্রবাসীরা অনেকেই ভোট দিতে বাংলাদেশে গেছেন। আবার কেউ কেউ নির্বাচনেও প্রার্থী হয়েছেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়: প্রবাসীরা পেশাগত কারণে বাংলাদেশ থেকে হাজার মাইল দূরে থাকলেও মনটা সবসময় পড়ে থাকে বাংলাদেশেই। দেশে-বিদেশে নানান ইস্যুতে রাজনৈতিক বিভক্তি থাকলেও সব সরকারই সবসময় বলেন, প্রবাসীদের রেমিটেন্সে বাংলাদেশের অর্থনীতি সচল থাকে। আমরা প্রবাসীরা বাংলাদেশকে নিয়ে যতোটা ভাবি বাংলাদেশে যারা থাকেন তারাও এতোটা ভাবেননা। নিউইয়র্কসহ বিশ্বজুড়ে প্রতি সপ্তাহে প্রবাসীদের কমপক্ষে ১০০ অনুষ্ঠান হয়। প্রতিটিতেই আমাদের আলোচনার বিষয় হলো- বাংলাদেশ। বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন দেশ থেকে আমরা প্রবাসীরা বাংলাদেশে কয়েক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বাংলাদেশে গেলে আমাদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করেন। ওনারা বিদেশে আসলে আমরা যথাসাধ্য ওনাদের সম্মান করি। কিন্তু দ্বৈত নাগরিকত্ব আইনের এক খোঁচায় আমাদের দীর্ঘদিনের ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক এখন নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা আমাদের গুরুত্ব দেবেননা কারণ আমরা তাদের ভোটার না। তাদের নির্বাচিত হতে আমাদের সমর্থন-ভোট কোনোটিরই আর প্রয়োজন হবেনা। এই আইনের ফলে প্রবাসী বিনিয়োগকারীরা নিরুৎসাহিত হবেন। ইতোমধ্যে যারা বিনিয়োগ করেছেন তারাও বিনিয়োগের টাকা ফেরৎ নিয়ে আসতে পারেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়: দ্বৈত নাগরিকত্ব আইনে ভোটাধিকার ও ভোটে প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি বাদ দিলে আরো একটি আত্মঘাতি বিষয় জুড়ে দেওয়া হয়েছে। তাহলো-দ্বৈত নাগরিকরা বাংলাদেশ সরকারের কোনো চাকরি করতে পারবেন না। বিশ্বজুড়ে অনেক বাংলাদেশী বিশিষ্টজন আছেন কাজ করার সুযোগ পেলে সকলেই দেশের জন্য কাজ করতে রাজি আছেন। কিন্তু নতুন এই আইনে আমাদের দেশে ফিরে যাবার পথ বন্ধ হয়ে গেছে। তারচেয়েও শংকার বিষয় আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম নিয়ে। সামাজিক নিরাপত্তা, রাজনৈতিক অস্থিরতা, যানজটসহ নানান কারণে এমনিতেই আমাদের ছেলেমেয়েরা বাংলাদেশে যেতে চায়না। তারা উচ্চ শিক্ষা শেষ করে বিদেশেই থাকছে। বিদেশে উচ্চ শিক্ষিত আমাদের নতুন প্রজন্মকে দেশের প্রতি আকৃষ্ট করতে বছরে অন্তত একবার আমরা তাদেরকে বাংলাদেশে নিয়ে যেতে চেষ্টা করি। কিন্তু বাংলাদেশে তাদের যদি কোনো অধিকার না থাকে তবে তারা বাংলাদেশে যাবে কেনো?
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়: বাংলাদেশ ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৭ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। এই রিজার্ভের সব টাকা আমাদের প্রবাসীদের। গত কয়েক বছর ধরে শীর্ষ রেমিটেন্স প্রদানকারী দেশ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপ থেকেও বিপুল পরিমান রেমিটেন্স বাংলাদেশে যায়। আমাদের পরের প্রজন্ম যদি বাংলাদেশ বিমুখ হয়ে যায়, বাংলাদেশে তাদের যদি কাজ করার সুযোগ না থাকে তাহলে তারা বাংলাদেশে যাবে কেনো? বাংলাদেশে না গেলে বিনিয়োগ বাড়বে কীভাবে? আর তারা যদি বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক চুটিয়ে ফেলে তাহলে বাংলাদেশে টাকা পাঠাবে কে? যদি সত্যিই সেরকম পরিস্থিতি তৈরি হয় তাহলে আগামী ১০-২০ বছর পর ইউরোপ-আমেরিকা থেকে প্রবাসীদের রেমিটেন্স অর্ধেকে নেমে আসবে। তারপর একসময় হয়তো শূণ্যে নেমে যাবে। তখন বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে?
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়: বিগত সংসদ নির্বাচনে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে তিনজন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত বৃটিশ নাগরিক নির্বাচিত হয়েছেন। এর আগের সংসদেও নির্বাচিত হয়েছেন একজন। রুশনারা-টিউলিপদের পথ অনুসরন করে আগামীতে এই সংখ্যা নিশ্চয় আরো বাড়বে। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অষ্ট্রেলিয়াসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অন্তত শতাধিক স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধি আছেন প্রবাসী বাংলাদেশী। উন্নত বিশ্বের যেকোনো দেশেই ভোটে দাঁড়িয়ে প্রতিদ্বন্ধিতা করে বিজয়ী হওয়ার মতো চ্যালেঞ্জ নেওয়ার সাহস আমাদের আছে। রুশনারা-টিউলিপরা ব্রিটিশ পার্লামেন্ট জয় করেছেন। ইউএস কংগ্রেসেও আমাদের আগামী প্রজন্মের প্রতিনিধিরা নিয়মিতভাবে থাকবে বলে আমরা আশাবাদী। কিন্তু দ্বৈত নাগরিকত্ব আইনের মাধ্যমে বাংলাদেশের সাথে আমাদের সম্পর্ক ঢিলে হওয়ার উপক্রম হয়েছে। আমাদের আগামী প্রজন্মকেও ওই আইনে অস্বীকার করা হচ্ছে। বাংলাদেশ যে আমাদের সন্তানদের সাত পুরুষের দেশ প্রবাসে বেড়ে ওঠা আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম যদি তা ভুলে যায় তাহলে বাংলাদেশের কী অবস্থা হবে? বাংলাদেশের পক্ষে কথা বলার মতো বিদেশে কোনো লোক খুঁজে পাওয়া যাবে? এমতাবস্থায় প্রবাকস দ্বৈত নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের জন্য ১২ দফা দাবি পেশ করছে।
১) দ্বৈত নাগরিকদের বাংলাদেশের ব্যাপারে আকৃষ্ট করতে ভোটাধিকার দিতে হবে।
২) দ্বৈত নাগরিকদের বাংলাদেশের উন্নয়নে প্রত্যক্ষভাবে ভূমিকা রাখার জন্য স্থানীয় সরকার নির্বাচন ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটে দাঁড়াতে দিতে হবে।
৩) দ্বৈত নাগরিকরা যাতে বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার নির্বাচন ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হতে পারে সেজন্য প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে স্থানীয় সরকারে ৪০ভাগ এবং জাতীয় সংসদে ২০ ভাগ প্রার্থী দিতে হবে।
৪) দ্বৈত নাগরিকদের জাতীয় সংসদে ডেপুটি স্পীকার, মন্ত্রীসভার সদস্য, হুইপ, সংসদীয় কমিটির সভাপতির পদ দিতে হবে।
৫) দ্বৈত নাগরিকদের শিক্ষকতা, মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং, ব্যাংকিং, গবেষণা, তথ্যপ্রযুক্তিসহ বাংলাদেশ সরকারের সকল চাকরিতে উচ্চ পর্যায়ে নিয়োগ দিতে হবে।
৬) বাংলাদেশ সরকারের প্রাথমিক শিক্ষা, উচ্চ শিক্ষা, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, ব্যাংক, মেডিকেল, পাবলিক সার্ভিস কমিশন, ইলেকশন কমিশন, মানবাধিকার কমিশন, রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো, বিনিয়োগ বোর্ড, ইপিজেড, বিচার বিভাগ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, জাতীয় সংসদ সচিবালয়, বিসিএসসহ সকল চাকরিতে প্রবাসীদের জন্য কোটা সংরক্ষণ করতে হবে।
৭) বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নে প্রবাসীদের আকৃষ্ট করতে এবং প্রবাসীদের অংশগ্রহন নিশ্চিত করতে জাতীয় সংসদে বিদ্যমান ৩০০ আসনের বাইরে নারীদের জন্য সংরক্ষিত ৫০টি আসনের মতো দ্বৈত নাগরিকদের জন্য ৫০টি আসন সংরক্ষন করতে হবে।
৮) বিদেশি পাসপোর্টধারী বাংলাদেশি/দ্বৈত নাগরিকদের বাংলাদেশের প্রতিটি বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ ব্যবহার করতে দিতে হবে।
৯) দ্বৈত নাগরিকদের জন্য ডুয়েল সিটিজেন অ্যাওয়ার্ড প্রবর্তন করতে হবে।
১০) প্রধানমন্ত্রীর দফতরের অধীনে ডুয়েল সিটিজেনশীপ ডিপার্টমেন্ট খুলে দ্বৈত নাগরিকদের বিনিয়োগে সহযোগিতা করা এবং পৈতৃক সম্পত্তি যাহাতে দুষ্ট চক্রের হাতে পরে ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সে ব্যাপারে বাংলাদেশে অবস্থানকালীন সময়ে পুলিশি নিরাপত্তাসহ প্রয়োজনীয় সেবা দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
১১) দ্বৈত নাগরিকদের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোতে যোগ্যতা অনুযায়ী রাষ্ট্রদূত, উপরাষ্ট্রদূত, কনসাল জেনারেল, কাউন্সিলর, সেক্রেটারিসহ শীর্ষপদ গুলোতে নিয়োগ দিতে হবে।
১২) প্রবাসীদের ভোটার আই ডি ও জাতীয় পরিচয় পত্র অবশ্যই দিতে হবে।
ছবি ক্যাপশান: প্রবাকস-এর সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান বজলু চৌধুরী। তার পাশে প্রবাকস নেতৃবৃন্দ। ছবি: ইউএনএ

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

সাংবাদিক সম্মেলন ‘প্রবাকস’র ১২ দফা দাবী : দ্বৈত নাগরিকত্বে আইনে প্রবাসীদের হতাশা বাড়বে

প্রকাশের সময় : ০৩:১৪:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০১৬

নিউইয়র্ক: গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রীসভায় অনুমোদিত দ্বৈত নাগরিকত্ব আইন সংশোধনীর খসড়ায় প্রবাসীদের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি দাবী করে মন্ত্রীসভায় গৃহিত আইনটি পুর্ণবিবেচনার দাবী জানিয়েছে ‘প্রাবসী বাঙ্গালী কল্যাণ সমিতি-প্রবাকস’। সেই সাথে প্রবাসীদের দাবী-দাওয়া আদায়ের লক্ষ্যে প্রবাকস’র পক্ষ থেকে ১২ দফা দাবীও উত্থাপন করা হয়েছে।
সিটির জ্যাকসন হাইটসস্থ ইত্যাদি গার্ডেন মিলনায়তনে গত ১৩ ফেব্রুয়ারী শনিবার সন্ধ্যায় প্রবাকস আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে দাবীগুলো উত্থাপন করা হয়। সাংবাদিক সম্মেলনে দ্বৈত নাগরিকত্ব সংশোধনীতে প্রবাসের আশার প্রতিফলন ঘটেনি বলেও অভিযোগ করা হয়। সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান বজলু চৌধুরী। এসময় প্রবাকস সভাপতি মোশাররফ আলম ছাড়াও সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল করীম চৌধুরী এবং ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক আখলাকুল আম্বিয়া চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। খবর ইউএনএ’র।
সাংবাদিক সম্মেলনে প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা, স্থানীয় ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহন, সরকারি ও কূটনীতিক পর্যায়ে দ্বৈত নাগরিকদের চাকুরির সুযোগ, জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি পদে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ দেয়া, বিমান বন্দরে ভিআইপি মর্যাদা, পুলিশী সহায়তায়’সহ ১২টি দাবি পেশ করা হয়। অন্যথায় বাংলাদেশের অর্থনীতির চালিকা শক্তি প্রবাসিদের বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ কমে যাবে বলেও দাবি করেন প্রবাকস’র নেতারা। দাবি আদায়ে বাংলাদেশ কনস্যুলেটে স্মরাকলিপি পেশ’সহ ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন অব্যাহতের ঘোষণাও দেয়া হয়।
সাংবাদিক সম্মেলনে প্রবাকস নেতৃবৃন্দ বলেন, যাদের কষ্টের বিনিময়ে দেশের অর্থনীতির চালিকা শক্তি তাদের মুল্যায়ন না করলে এর দায় সরকারকেই বহন করতে হবে। তবে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে খসড়া নীতিমালা দ্বৈত নাগরিকত্ব ইস্যুতে সরকারকে ধন্যবাদও জানান কেউ কেউ।
সাংবাদিক সম্মেলনে প্রবাকস-এর সাধারণ সম্পাদক লিখিত বক্তব্যে বলেন: বাংলাদেশে অতি সম্প্রতি দ্বৈত নাগরিকত্ব আইন নামে একটি আইনের খসড়া গত ১লা ফেব্রুয়ারী ২০১৬ মন্ত্রীসভায় চুড়ান্তভাবে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশের সরকারি বার্তা সংস্থা বাসসের বরাতে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে আমরা বিষয়টি জেনেছি। ওই প্রতিবেদনে স্পষ্ট বলা আছে, বিদেশি নাগরিকত্ব গ্রহন করেছেন এমন প্রবাসী বাংলাদেশী নাগরিকদের দ্বৈত নাগরিকত্ব দেয়া হয়েছে। এটা আমাদের সারা বিশ্বের প্রবাসীদের জন্য একটি সুসংবাদ। কেবলমাত্র সার্কভুক্ত দেশগুলো বাদ দিয়ে অন্যসব দেশে যতো প্রবাসী বাংলাদেশী বিদেশি নাগরিকত্ব নিয়েছেন তাদের সবাইকে নতুন এই আইনে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেয়া হয়েছে। এজন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রীসভার সম্মানিত সদস্যদের সারা বিশ্বের এক কোটি প্রবাসীদের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়: সদ্য অনুমোদিত দ্বৈত নাগরিকত্ব আইনের বিষয়ে প্রবাসী বাঙ্গালি কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে বিভিন্ন দেশের প্রবাসীদের মতামত জানতে চাওয়া হয়। তারা প্রত্যেকেই প্রবাসীদের ভোটে দাঁড়ানোর অধিকার এবং ভোট দেয়ার অধিকার চান। ওই আইনে বলা আছে, দ্বৈত নাগরিকরা জাতীয় সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন, রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচন, বিচারকসহ প্রজাতন্ত্রের কোনো চাকরিতে নিয়োগ, স্থানীয় সরকার নির্বাচন ও কোনো রাজনৈতিক দল করতে পারবেননা। মন্ত্রীসভায় অনুমোদিত দ্বৈত নাগরিকত্ব আইনটি রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পর গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে শিগগির কার্যকর হবে বলে আমরা জানতে পেরেছি। গেজেট নোটিফিকেশনের আগে ওই আইনে আসলে কী কী আছে তা যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমাদের পক্ষে জানা একেবারে অসম্ভব। আবার আইনটির গেজেট হয়ে গেলে অনেক আইনি জটিলতা তৈরি হবে বলে আমরা আশংকা করছি।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়: সদ্য অনুমোদিত ওই আইনে দ্বৈত নাগরিকরা ভোটে দাঁড়াতে পারবেননা বলে স্পষ্ট উল্লেখ থাকলেও ওই সংবাদে প্রবাসীরা ভোট দিতে পারবেন কি না তা স্পষ্ট উল্লেখ নেই। আমরা আশংকা করছি- যেহেতু দ্বৈত নাগরিকরা ভোটে দাঁড়াতে পারবেন না তাহলে তারা ভোটও দিতে পারবেন না। আবার ভোট দেয়ার অধিকার যদি থাকে তাহলে তো ভোটে দাঁড়ানোরও অধিকার থাকে। এই অস্পষ্টতার কারণে আমরা দ্বিধাগ্রস্ত।
তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ প্রবাসীদের ভোটাধিকারের দাবিতে নিয়মতান্ত্রিক সামাজিক আন্দোলন করে আসছি। বাংলাদেশের সরকার প্রবাসীদের ভোটাধিকার বিষয়ে এর আগের মেয়াদে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেত্রীত্বে সংসদে আইন পাস করেন এবং ওই আইনে প্রবাসীদের ভোটাধিকার দেয়া হয়। ওই আইন কার্যকর করতে ইতোমধ্যে প্রবাসীরা বিভিন্ন দেশ থেকে বিচ্ছিন্নভাবে অনেকে বাংলাদেশে গিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র গ্রহন করেছেন এবং ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকেই ভোটের সময় বাংলাদেশে গিয়ে অনেকেই ভোট দিচ্ছেন। সদ্য সমাপ্ত পৌরসভা নির্বাচনেও বিভিন্ন দেশ থেকে প্রবাসীরা অনেকেই ভোট দিতে বাংলাদেশে গেছেন। আবার কেউ কেউ নির্বাচনেও প্রার্থী হয়েছেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়: প্রবাসীরা পেশাগত কারণে বাংলাদেশ থেকে হাজার মাইল দূরে থাকলেও মনটা সবসময় পড়ে থাকে বাংলাদেশেই। দেশে-বিদেশে নানান ইস্যুতে রাজনৈতিক বিভক্তি থাকলেও সব সরকারই সবসময় বলেন, প্রবাসীদের রেমিটেন্সে বাংলাদেশের অর্থনীতি সচল থাকে। আমরা প্রবাসীরা বাংলাদেশকে নিয়ে যতোটা ভাবি বাংলাদেশে যারা থাকেন তারাও এতোটা ভাবেননা। নিউইয়র্কসহ বিশ্বজুড়ে প্রতি সপ্তাহে প্রবাসীদের কমপক্ষে ১০০ অনুষ্ঠান হয়। প্রতিটিতেই আমাদের আলোচনার বিষয় হলো- বাংলাদেশ। বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন দেশ থেকে আমরা প্রবাসীরা বাংলাদেশে কয়েক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বাংলাদেশে গেলে আমাদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করেন। ওনারা বিদেশে আসলে আমরা যথাসাধ্য ওনাদের সম্মান করি। কিন্তু দ্বৈত নাগরিকত্ব আইনের এক খোঁচায় আমাদের দীর্ঘদিনের ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক এখন নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা আমাদের গুরুত্ব দেবেননা কারণ আমরা তাদের ভোটার না। তাদের নির্বাচিত হতে আমাদের সমর্থন-ভোট কোনোটিরই আর প্রয়োজন হবেনা। এই আইনের ফলে প্রবাসী বিনিয়োগকারীরা নিরুৎসাহিত হবেন। ইতোমধ্যে যারা বিনিয়োগ করেছেন তারাও বিনিয়োগের টাকা ফেরৎ নিয়ে আসতে পারেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়: দ্বৈত নাগরিকত্ব আইনে ভোটাধিকার ও ভোটে প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি বাদ দিলে আরো একটি আত্মঘাতি বিষয় জুড়ে দেওয়া হয়েছে। তাহলো-দ্বৈত নাগরিকরা বাংলাদেশ সরকারের কোনো চাকরি করতে পারবেন না। বিশ্বজুড়ে অনেক বাংলাদেশী বিশিষ্টজন আছেন কাজ করার সুযোগ পেলে সকলেই দেশের জন্য কাজ করতে রাজি আছেন। কিন্তু নতুন এই আইনে আমাদের দেশে ফিরে যাবার পথ বন্ধ হয়ে গেছে। তারচেয়েও শংকার বিষয় আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম নিয়ে। সামাজিক নিরাপত্তা, রাজনৈতিক অস্থিরতা, যানজটসহ নানান কারণে এমনিতেই আমাদের ছেলেমেয়েরা বাংলাদেশে যেতে চায়না। তারা উচ্চ শিক্ষা শেষ করে বিদেশেই থাকছে। বিদেশে উচ্চ শিক্ষিত আমাদের নতুন প্রজন্মকে দেশের প্রতি আকৃষ্ট করতে বছরে অন্তত একবার আমরা তাদেরকে বাংলাদেশে নিয়ে যেতে চেষ্টা করি। কিন্তু বাংলাদেশে তাদের যদি কোনো অধিকার না থাকে তবে তারা বাংলাদেশে যাবে কেনো?
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়: বাংলাদেশ ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৭ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। এই রিজার্ভের সব টাকা আমাদের প্রবাসীদের। গত কয়েক বছর ধরে শীর্ষ রেমিটেন্স প্রদানকারী দেশ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপ থেকেও বিপুল পরিমান রেমিটেন্স বাংলাদেশে যায়। আমাদের পরের প্রজন্ম যদি বাংলাদেশ বিমুখ হয়ে যায়, বাংলাদেশে তাদের যদি কাজ করার সুযোগ না থাকে তাহলে তারা বাংলাদেশে যাবে কেনো? বাংলাদেশে না গেলে বিনিয়োগ বাড়বে কীভাবে? আর তারা যদি বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক চুটিয়ে ফেলে তাহলে বাংলাদেশে টাকা পাঠাবে কে? যদি সত্যিই সেরকম পরিস্থিতি তৈরি হয় তাহলে আগামী ১০-২০ বছর পর ইউরোপ-আমেরিকা থেকে প্রবাসীদের রেমিটেন্স অর্ধেকে নেমে আসবে। তারপর একসময় হয়তো শূণ্যে নেমে যাবে। তখন বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে?
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়: বিগত সংসদ নির্বাচনে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে তিনজন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত বৃটিশ নাগরিক নির্বাচিত হয়েছেন। এর আগের সংসদেও নির্বাচিত হয়েছেন একজন। রুশনারা-টিউলিপদের পথ অনুসরন করে আগামীতে এই সংখ্যা নিশ্চয় আরো বাড়বে। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অষ্ট্রেলিয়াসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অন্তত শতাধিক স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধি আছেন প্রবাসী বাংলাদেশী। উন্নত বিশ্বের যেকোনো দেশেই ভোটে দাঁড়িয়ে প্রতিদ্বন্ধিতা করে বিজয়ী হওয়ার মতো চ্যালেঞ্জ নেওয়ার সাহস আমাদের আছে। রুশনারা-টিউলিপরা ব্রিটিশ পার্লামেন্ট জয় করেছেন। ইউএস কংগ্রেসেও আমাদের আগামী প্রজন্মের প্রতিনিধিরা নিয়মিতভাবে থাকবে বলে আমরা আশাবাদী। কিন্তু দ্বৈত নাগরিকত্ব আইনের মাধ্যমে বাংলাদেশের সাথে আমাদের সম্পর্ক ঢিলে হওয়ার উপক্রম হয়েছে। আমাদের আগামী প্রজন্মকেও ওই আইনে অস্বীকার করা হচ্ছে। বাংলাদেশ যে আমাদের সন্তানদের সাত পুরুষের দেশ প্রবাসে বেড়ে ওঠা আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম যদি তা ভুলে যায় তাহলে বাংলাদেশের কী অবস্থা হবে? বাংলাদেশের পক্ষে কথা বলার মতো বিদেশে কোনো লোক খুঁজে পাওয়া যাবে? এমতাবস্থায় প্রবাকস দ্বৈত নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের জন্য ১২ দফা দাবি পেশ করছে।
১) দ্বৈত নাগরিকদের বাংলাদেশের ব্যাপারে আকৃষ্ট করতে ভোটাধিকার দিতে হবে।
২) দ্বৈত নাগরিকদের বাংলাদেশের উন্নয়নে প্রত্যক্ষভাবে ভূমিকা রাখার জন্য স্থানীয় সরকার নির্বাচন ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটে দাঁড়াতে দিতে হবে।
৩) দ্বৈত নাগরিকরা যাতে বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার নির্বাচন ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হতে পারে সেজন্য প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে স্থানীয় সরকারে ৪০ভাগ এবং জাতীয় সংসদে ২০ ভাগ প্রার্থী দিতে হবে।
৪) দ্বৈত নাগরিকদের জাতীয় সংসদে ডেপুটি স্পীকার, মন্ত্রীসভার সদস্য, হুইপ, সংসদীয় কমিটির সভাপতির পদ দিতে হবে।
৫) দ্বৈত নাগরিকদের শিক্ষকতা, মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং, ব্যাংকিং, গবেষণা, তথ্যপ্রযুক্তিসহ বাংলাদেশ সরকারের সকল চাকরিতে উচ্চ পর্যায়ে নিয়োগ দিতে হবে।
৬) বাংলাদেশ সরকারের প্রাথমিক শিক্ষা, উচ্চ শিক্ষা, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, ব্যাংক, মেডিকেল, পাবলিক সার্ভিস কমিশন, ইলেকশন কমিশন, মানবাধিকার কমিশন, রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো, বিনিয়োগ বোর্ড, ইপিজেড, বিচার বিভাগ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, জাতীয় সংসদ সচিবালয়, বিসিএসসহ সকল চাকরিতে প্রবাসীদের জন্য কোটা সংরক্ষণ করতে হবে।
৭) বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নে প্রবাসীদের আকৃষ্ট করতে এবং প্রবাসীদের অংশগ্রহন নিশ্চিত করতে জাতীয় সংসদে বিদ্যমান ৩০০ আসনের বাইরে নারীদের জন্য সংরক্ষিত ৫০টি আসনের মতো দ্বৈত নাগরিকদের জন্য ৫০টি আসন সংরক্ষন করতে হবে।
৮) বিদেশি পাসপোর্টধারী বাংলাদেশি/দ্বৈত নাগরিকদের বাংলাদেশের প্রতিটি বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ ব্যবহার করতে দিতে হবে।
৯) দ্বৈত নাগরিকদের জন্য ডুয়েল সিটিজেন অ্যাওয়ার্ড প্রবর্তন করতে হবে।
১০) প্রধানমন্ত্রীর দফতরের অধীনে ডুয়েল সিটিজেনশীপ ডিপার্টমেন্ট খুলে দ্বৈত নাগরিকদের বিনিয়োগে সহযোগিতা করা এবং পৈতৃক সম্পত্তি যাহাতে দুষ্ট চক্রের হাতে পরে ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সে ব্যাপারে বাংলাদেশে অবস্থানকালীন সময়ে পুলিশি নিরাপত্তাসহ প্রয়োজনীয় সেবা দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
১১) দ্বৈত নাগরিকদের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোতে যোগ্যতা অনুযায়ী রাষ্ট্রদূত, উপরাষ্ট্রদূত, কনসাল জেনারেল, কাউন্সিলর, সেক্রেটারিসহ শীর্ষপদ গুলোতে নিয়োগ দিতে হবে।
১২) প্রবাসীদের ভোটার আই ডি ও জাতীয় পরিচয় পত্র অবশ্যই দিতে হবে।
ছবি ক্যাপশান: প্রবাকস-এর সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান বজলু চৌধুরী। তার পাশে প্রবাকস নেতৃবৃন্দ। ছবি: ইউএনএ