নিউইয়র্ক ১২:২৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়ার ৪২তম শাহাদাতবার্ষিকী আজ

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৩:৩০:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ মে ২০২৩
  • / ৯ বার পঠিত

হককথা রিপোর্ট: আজ ৩০ মে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুনঃপ্রবর্তক, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪২তম শাহাদাতবার্ষিকী। ১৯৮১ সালের এই দিবাগত রাতে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে একদল বিপথগামী সৈনিকের হাতে তিনি শাহাদাত বরণ করেন। সেই থেকেই তার প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপি দিবসটিকে ‘জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎবার্ষিকী’ হিসেবে পালন করে আসছে। প্রতিবছরই দিবসটি উপলক্ষে তাঁর মাজারে পুষ্পার্ঘ অর্পন, ফাতেহা পাঠ, দোয়া-মোনাজাতে অংশ নেন বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী। অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা, থাকে কয়েকদিন ব্যাপী কর্মসূচি।
দলের প্রতিষ্ঠাতার শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে কেন্দ্রীয় বিএনপি ২৯ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত সারাদেশে কর্মসূচি পালন করছে। অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র নেতা-কর্মীরা পৃথক পৃথকভাবে নানা কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। নিউইয়র্কে গৃহীত কর্মসূচীর মধ্যে জ্যাকসন হাইটস এলাকাবাসীদের উদ্যোগে মঙ্গলবার (৩০ মে) বেলা ২টায় বাংলাদেশ ষ্ট্রীট (৩৭ স্ট্রীট)-এ নবান্ন রেষ্টুরেন্টের সামনে দোয়া মাহফিল ও খাবার বিতরণ করা হবে। উত্তর আমেরিকায় দল নিরপেক্ষ সার্বজনীন এই আয়োজনে সংগঠনের সভাপতি শাকিল মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলম নমী সকলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এই কর্মসূচী সফল করতে দেওয়ান মনির-কে আহŸায়ক ও আমানত হোসেন আমান-কে সদস্য সচিব করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এছাড়াও অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন ও আখতার হোসেন বাদল নেতৃত্বাধীন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি মঙ্গলবার (৩০ মে) সন্ধ্যায় ব্রæকলীনের মধুবন রেষ্টেুরেন্টে দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারী বগুড়ার গাবতলীর বাগবাড়িতে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মনসুর রহমান কলকাতায় একজন কেমিস্ট হিসেবে সরকারি চাকরিতে নিয়োজিত ছিলেন। শৈশব ও কৈশোরের একটি সময় গ্রামে কাটিয়ে জিয়া পিতার সঙ্গে কলকাতায় এবং দেশ বিভাগের পর করাচিতে চলে যান। শিক্ষাজীবন শেষে ১৯৫৩ সালে পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমি কাবুলে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে ভর্তি হন। ১৯৫৫ সালে তিনি কমিশন লাভ করেন। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধে খেমকারান সেক্টরে অসীম সাহসিকতার সঙ্গে একটি কোম্পানির অধিনায়ক হিসেবে যুদ্ধ পরিচালনা করেন। তার কোম্পানি যুদ্ধে সবচেয়ে অধিক খেতাব লাভ করে। সৈনিকজীবনে তিনি যেমন চরম পেশাদারিত্ব দেখিয়েছেন ঠিক জাতীয় সকল সঙ্কটকালেও শক্ত হাতে হাল ধরেছেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানী বাহিনী যখন নিরস্ত্র জনতার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। বিএনপির দাবি জিয়াউর রহমানই তখন চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। নয় মাসের মুক্তি সংগ্রামে তিনি একটি সেক্টরের অধিনায়ক হিসেবে সমরনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ‘বীরোত্তম’ খেতাব লাভ করেন।
১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিহতের পর এক বিশেষ প্রেক্ষাপটে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ৩ নভেম্বর ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে সামরিক অভ্যূত্থানে খন্দকার মোশতাক আহমদ ক্ষমতাচ্যূত হন এবং সেনাবাহিনীর তৎকালীন উপপ্রধান মেজর জেনারেল জিয়াকে গৃহবন্দী করা হয়। সেনাবাহিনীতে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ে। চারদিকে এক অনিশ্চয়তার মধ্যে আধিপত্যবাদের শ্যেন দৃষ্টিতে উৎকণ্ঠিত ছিল সারা জাতি। এমসয় সিপাহি-জনতার মিলিত প্রয়াসে জিয়াকে মুক্ত করা হয় এবং নেতৃত্বের হাল ধরেন তিনি। গভীর দেশপ্রেমের গুণাবলি দিয়ে জিয়াউর রহমান জাতির মধ্যে নতুন করে জাগরণের সৃষ্টি করেন। দেশের মানুষের উপযোগী একটি স্বতন্ত্র জাতীয়তাবাদী আদর্শের বাস্তবায়ন ঘটান। দেশে ঐক্যের রাজনীতি চালু করে সবাইকে এক কাতারে নিয়ে আসেন তিনি। তাঁর প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল বিএনপিতে একদিকে যেমন চরম বামপন্থীরা স্থান পায় তেমনি চরম ডানপন্থীরাও জায়গা করে নেন। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন, বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেন। মাত্র ছয় বছরের জন্য রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেয়ে ৫৪ বছরের জিয়া বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন এবং তলাবিহীন ঝুঁড়ির অপবাদ থেকে দেশ-জাতিকে মুক্ত করেন। বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সাহস জোগান। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীকে নতুনভাবে ঢেলে সাজিয়েছিলেন। ঢাকায় মানিক মিয়া এভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত তার স্মরণকালের নামাজে জানাজায় প্রমাণিত তিনি কত জনপ্রিয় ছিলেন। জিয়াউর রহমান তার ঘটনাবহুল কর্মময় জীবনের কারণেই মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। তার সততা, নিষ্ঠা, দেশপ্রেম, পরিশ্রমপ্রিয়তা ও নেতৃত্বের দৃঢ়তাসহ প্রভৃতি গুণাবলী এদেশের গণমানুষের হৃদয় স্পর্শ করেছিল।

 

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়ার ৪২তম শাহাদাতবার্ষিকী আজ

প্রকাশের সময় : ০৩:৩০:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ মে ২০২৩

হককথা রিপোর্ট: আজ ৩০ মে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুনঃপ্রবর্তক, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪২তম শাহাদাতবার্ষিকী। ১৯৮১ সালের এই দিবাগত রাতে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে একদল বিপথগামী সৈনিকের হাতে তিনি শাহাদাত বরণ করেন। সেই থেকেই তার প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপি দিবসটিকে ‘জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎবার্ষিকী’ হিসেবে পালন করে আসছে। প্রতিবছরই দিবসটি উপলক্ষে তাঁর মাজারে পুষ্পার্ঘ অর্পন, ফাতেহা পাঠ, দোয়া-মোনাজাতে অংশ নেন বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী। অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা, থাকে কয়েকদিন ব্যাপী কর্মসূচি।
দলের প্রতিষ্ঠাতার শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে কেন্দ্রীয় বিএনপি ২৯ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত সারাদেশে কর্মসূচি পালন করছে। অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র নেতা-কর্মীরা পৃথক পৃথকভাবে নানা কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। নিউইয়র্কে গৃহীত কর্মসূচীর মধ্যে জ্যাকসন হাইটস এলাকাবাসীদের উদ্যোগে মঙ্গলবার (৩০ মে) বেলা ২টায় বাংলাদেশ ষ্ট্রীট (৩৭ স্ট্রীট)-এ নবান্ন রেষ্টুরেন্টের সামনে দোয়া মাহফিল ও খাবার বিতরণ করা হবে। উত্তর আমেরিকায় দল নিরপেক্ষ সার্বজনীন এই আয়োজনে সংগঠনের সভাপতি শাকিল মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলম নমী সকলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এই কর্মসূচী সফল করতে দেওয়ান মনির-কে আহŸায়ক ও আমানত হোসেন আমান-কে সদস্য সচিব করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এছাড়াও অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন ও আখতার হোসেন বাদল নেতৃত্বাধীন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি মঙ্গলবার (৩০ মে) সন্ধ্যায় ব্রæকলীনের মধুবন রেষ্টেুরেন্টে দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারী বগুড়ার গাবতলীর বাগবাড়িতে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মনসুর রহমান কলকাতায় একজন কেমিস্ট হিসেবে সরকারি চাকরিতে নিয়োজিত ছিলেন। শৈশব ও কৈশোরের একটি সময় গ্রামে কাটিয়ে জিয়া পিতার সঙ্গে কলকাতায় এবং দেশ বিভাগের পর করাচিতে চলে যান। শিক্ষাজীবন শেষে ১৯৫৩ সালে পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমি কাবুলে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে ভর্তি হন। ১৯৫৫ সালে তিনি কমিশন লাভ করেন। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধে খেমকারান সেক্টরে অসীম সাহসিকতার সঙ্গে একটি কোম্পানির অধিনায়ক হিসেবে যুদ্ধ পরিচালনা করেন। তার কোম্পানি যুদ্ধে সবচেয়ে অধিক খেতাব লাভ করে। সৈনিকজীবনে তিনি যেমন চরম পেশাদারিত্ব দেখিয়েছেন ঠিক জাতীয় সকল সঙ্কটকালেও শক্ত হাতে হাল ধরেছেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানী বাহিনী যখন নিরস্ত্র জনতার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। বিএনপির দাবি জিয়াউর রহমানই তখন চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। নয় মাসের মুক্তি সংগ্রামে তিনি একটি সেক্টরের অধিনায়ক হিসেবে সমরনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ‘বীরোত্তম’ খেতাব লাভ করেন।
১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিহতের পর এক বিশেষ প্রেক্ষাপটে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ৩ নভেম্বর ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে সামরিক অভ্যূত্থানে খন্দকার মোশতাক আহমদ ক্ষমতাচ্যূত হন এবং সেনাবাহিনীর তৎকালীন উপপ্রধান মেজর জেনারেল জিয়াকে গৃহবন্দী করা হয়। সেনাবাহিনীতে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ে। চারদিকে এক অনিশ্চয়তার মধ্যে আধিপত্যবাদের শ্যেন দৃষ্টিতে উৎকণ্ঠিত ছিল সারা জাতি। এমসয় সিপাহি-জনতার মিলিত প্রয়াসে জিয়াকে মুক্ত করা হয় এবং নেতৃত্বের হাল ধরেন তিনি। গভীর দেশপ্রেমের গুণাবলি দিয়ে জিয়াউর রহমান জাতির মধ্যে নতুন করে জাগরণের সৃষ্টি করেন। দেশের মানুষের উপযোগী একটি স্বতন্ত্র জাতীয়তাবাদী আদর্শের বাস্তবায়ন ঘটান। দেশে ঐক্যের রাজনীতি চালু করে সবাইকে এক কাতারে নিয়ে আসেন তিনি। তাঁর প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল বিএনপিতে একদিকে যেমন চরম বামপন্থীরা স্থান পায় তেমনি চরম ডানপন্থীরাও জায়গা করে নেন। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন, বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেন। মাত্র ছয় বছরের জন্য রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেয়ে ৫৪ বছরের জিয়া বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন এবং তলাবিহীন ঝুঁড়ির অপবাদ থেকে দেশ-জাতিকে মুক্ত করেন। বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সাহস জোগান। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীকে নতুনভাবে ঢেলে সাজিয়েছিলেন। ঢাকায় মানিক মিয়া এভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত তার স্মরণকালের নামাজে জানাজায় প্রমাণিত তিনি কত জনপ্রিয় ছিলেন। জিয়াউর রহমান তার ঘটনাবহুল কর্মময় জীবনের কারণেই মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। তার সততা, নিষ্ঠা, দেশপ্রেম, পরিশ্রমপ্রিয়তা ও নেতৃত্বের দৃঢ়তাসহ প্রভৃতি গুণাবলী এদেশের গণমানুষের হৃদয় স্পর্শ করেছিল।