যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের বাঁধায় সিজারের সাংবাদিক সম্মেলন পন্ড
- প্রকাশের সময় : ১১:২৯:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ মার্চ ২০১৫
- / ১১৮৫ বার পঠিত
নিউইয়র্ক: যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ-যুবলীগের প্রচন্ড বাঁধার মুখে পন্ড হয়ে গেলো যুক্তরাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সংরক্ষিত সজিব ওয়াজেদ জয়ের তথ্য পেতে এফবিআইয়ের এক সদস্যকে ঘুষ দেওয়ায় অভিযোগে দন্ডপ্রাপ্ত যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বিএনপি নেতার পুত্র রিজভী আহমেদ ওরফে সিজারের সাংবাদিক সম্মেলন। দু’জন পুলিশ প্রহরায় পিতা বিএনপি নেতা মোহাম্ম§দ উল্লাহ মামুনের সাথে সিজার সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত হলেও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের বিরোধীতা, প্রতিবাদ আর চরম হৈচৈ-এর মুখে পড়েন। ঘটনার এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধরা সিজারের উপর হামলা চালানোর উদ্যোগ নিলে তিনি (সিজার) দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে নিজেকে রক্ষা করেন ।
সিটির জ্যাকসন হাইটস্থ ফুটকোট রেষ্টুরেন্টের কনফারেন্স রুমে শনিবার (১৪ মার্চ) এই সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। মূলত: এফবিআই সদস্যকে ঘুষ দেয়ার অভিযোগে সিজারের বিরুদ্ধে আদালত কর্র্তৃক ৪২ মাস কারাদন্ডাদেশ ঘোষিত হওয়ার পর নিজের অবস্থান পরিষ্কার করতেই সিজারের পক্ষ থেকে এই সাংবাদিক সম্মেলনের আহ্বান করা হয়। উল্লেখ্য, সিজার বর্তমানে জামিনে আছেন। আগামী ২০ এপ্রিল তাকে কারাগারে রিপোর্ট করতে হবে। ৪ মার্চ বুধবার নিউইয়র্কের হোয়াইট প্লেইন ফেডারেল আদালতের বিচারক ভিনসেন্ট এল ব্রিকেটি তার বিরুদ্ধে আদেশ দেন। একই মামলায় ঘুষ লেনেদেনে মধ্যস্থতাকারী যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক জোহানেস থালেরকেও আড়াই বছরের কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। মামলার প্রধান আসামী এফবিআইয়ের স্পেশাল এজেন্ট রবার্ট লাস্টিকের সাজার বিষয়ে আগামী ৩০ এপ্রিল আদেশ দেবে এই আদালত।
সিজারের সাংবাদিক সম্মেলন শুরুর খবর পেয়েই যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও যুবলীগসহ দলীয় ৩০/৪০জন নেতা-কর্মী (যারা আশাপাশে অবস্থান করছিলেন) ঘটনাস্থলে প্রবেশ করে তাকে (সিজার) ‘সাজাপ্রাপ্ত আসামী-ক্রিমিনাল’ আখ্যায়িত করে হৈচৈ শুরু করে দেয় এবং প্রতিবাদমূখর হয়ে উঠেন। আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা সিজারকে উদ্দেশ্য করে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতে থাকেন। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানসহ প্রতিবাদী হয়ে উঠেন দলের সহ সভাপতি সৈয়দ বশারত আলী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমেদ, আব্দুল হাসিব মামুন ও আব্দুর রহিম বাদশা, আওয়ামী লীগ নেতা তৈয়বুর রহমান টনি, মাহবুবুর রহমান টুকু, হোসেন সোহেল রানা, যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ফরিদ আলম, যুবলীগের অপরাংশের আহ্বায়ক তারিকুল হায়দার চৌধুরী, যুগ্ম অঅহ্বায়ক বাহার খন্দকার সবুজ, যুবলীগ নেতা সাইফুল্লাহ ভুঁইয়া, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সাখাওয়াত হোসেন প্রমুখ। এসময় আওয়ামী লীগ নেতারা সেখানে উপস্থিত দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে বুঝাতে সক্ষম হন যে ‘সিজার ক্রিমিনাল এবং সাজাপ্রাপ্ত আসামী’। তাই সে সাংবাদিক সম্মেলন করতে পারবে না। এসময় সিজার ও তার বাবা মোহাম্মদউল্লাহ মামুন প্রতিবাদ করলেও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের তোপের মুখে আর দাঁড়াতে পারেনি। উদ্ভুত পরিস্থিতে সিজার ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। সেখানে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কয়েকজন নেতাকে উপস্থিত দেখা গেলেও তাদের নিরব দর্শকের ভূমিকায় দেখা যায়। তবে সাংবাদিক সম্মেলন শুরুর সময় সিজারের সাথে তার পিতা কেন্দ্রীয় জাসাসের সহ সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুন, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল, বিএনপি নেতা কাজী আজম ও মোহাম্মদ সাঈদকে তার (সিজারের) পাশে দেখা যায়।
এসময় ক্ষুব্ধ যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, একজন ক্রিমিনাল কি করে এখানে সাংবাদিক সম্মেলন করার সাহস পায়। সে সাজাপ্রাপ্ত আসামী। তার কোন রাইট (অধিকার) নাই সাংবাদিক সম্মেলন করার। তিনি সিজারকে প্রতিহত করার আহ্বান জানান।
সাংবাদিক সম্মেলনে হাতে আনা সিজারের লিখিত বক্তব্য থেকে জানা যায়, বাংলাদেশের গরীব মানুষের অর্থ লুটপাটের সাথে প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজিব ওয়াজেদ জড়িত। সিজার বলেন, কারো বিরুদ্ধে নয়, দেশেপ্রেমে উব্ধুব্ধ হয়ে আর বিবেকের তাড়নায় তিনি (সিজার) জয়ের অর্থ আতœসাতের খোঁজখবর নেন।