মুক্তধারার বিশ্বজিতের বিরুদ্ধে রুমার এত অভিযোগ!
- প্রকাশের সময় : ০৯:১৫:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ মার্চ ২০১৬
- / ১০৬৬ বার পঠিত
ঢাকা:নিয়ইয়র্কের মুক্তধারার কর্ণধার বিশ্বজিৎ সাহার বিরুদ্ধে নৈতিক ও অর্থনৈতিক অবক্ষয়ের অভিযোগ এনেছেন তার স্ত্রী রুমা সাহা। রুমা সাহা স্বয়ং বিশ্বজিৎ সাহাকে তার পাওনা বুঝিয়ে দিয়ে তাকে আইনগত বিচ্ছেদের জন্য চাপ দিয়েছেন একটি চিঠিতে। যদিও দীর্ঘদিন ধরে রুমা সাহাও শুধু আলাদাই থাকছেন না, বয়ফ্রেন্ড নিয়ে লন্ডন ও ভারতে ঘুরে বেড়িয়েছেন বলে খবর আছে। বর্তমানে রুমা সাহা ঢাকায়। অসংখ্য অভিযোগ এনে বিশ্বজিৎ সাহাকে দেয়া চিঠির কপি তিনি বিভিন্ন জায়গায় পাঠিয়েছেন। সেখান থেকে পূর্বপশ্চিমবিডি ডটকমের হাতেও চিঠিটি এসেছে। চিঠির সঙ্গে বিশ্বজিতের কিছু ছবিও যুক্ত আছে। পাঠকের জন্য রুমা সাহার চিঠিটি পুরোপুরি তুলে দেয়া হলো। চিঠির শেষে তিনি নিজেকে রুমা সাহা না বলে রুমা চৌধুরী উল্লেখ করেছেন।
প্রিয়জন
বিশ্বজিতকে সাম্প্রতিক লেখা এই ব্যক্তিগত চিঠির কপি আপনাদের পাঠাতে হলো বলে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আপনারা তার সাথে ব্যক্তিগত-সামাজিক-সাংস্কৃতিক ভাবে যুক্ত আছেন। আমি তার সাথে গত ২৩ বছর সংসার করেছি এবং নানা কর্মকান্ডে যুক্ত ছিলাম। আমি এই ব্যক্তিটিকে সর্বশেষ যেভাবে জানলাম তা আপনাদের কিছুটা জানানোর জন্যেই চিঠির এই কপি পাঠালাম। আমি বিশ্বজিতের জীবন থেকে বের হয়ে আসার পর আমাকে ঘিরে যে সামাজিক অভিঘাত বা মূল্যায়ন তৈরী হয়েছে তার বলয় থেকে হয়ত আপনিও মুক্ত নন। অত্যন্ত একপেশে ভাবে আপনি যা শুনেছেন বা জানছেন তা যে ঠিক নয় সেই বিষয়ে এই চিঠি থেকে কিছুটা ধারণা পাবেন। আমি আপনাদের কোনো সহানুভুতি বা বিশেষ সমর্থন চাই না। শুধু চাই আপনারা সত্যটা জানুন। একজন প্রতারক যাতে আপনাদের দ্বারা আর পুষ্ট হতে না পারে তা চাই। আপনারা সমাজের আলোকবর্তিকা-চালিকা শক্তি, বিশ্বজিত এবং তার কর্মকান্ডকে সহায়তা করে আশাকরি নিজেদের আর অসন্মান করবেন না। আমি এই কপট-প্রতারক থেকে নিজেকে সম্পূর্ণ মুক্ত করেছি। আমার নতুন জীবনসাথীর সাথে স্বচ্ছতার মধ্য দিয়ে প্রকাশ্য সামাজিক-পারবারিক জীবন কাটাচ্ছি। এখনো আমি বিশ্বজিত থেকে আমার নায্য পাওনা বুঝে পাইনি- এই নায্যতার-অধিকারের লড়াই আমি চালিয়ে যাব এবং তা আদায় করব। আমি আশা করব আপনারাও সমগ্র বিষয়টি আবার বিবেচনা করবেন এবং এই প্রতারকের সাথে আপনাদের সম্পর্ক-সহযোগিতার বিষয়টি নিয়ে ভাববেন।
ভালো থাকবেন। আপনাদের সাথে স্বপ্নময় কর্মে, মানবিকতার লগ্নে, কর্মময় যজ্ঞে, আত্মসন্মানে, সসন্মানে আবার আমার দেখা হবে।
বিশ্বজিত
তোমার সর্বশেষ কীর্তি জানলাম। গত কয়েক বছর ধরে একটা পূর্ণাঙ্গ নারী-সম্পর্ক রক্ষা করে চলেছ। তোমাদের মেলামেশা, বাসর-ফুলশয্যা, ঢাকা-চট্টগ্রাম-কলকাতা ভ্রমন, শপিং, আমার শাড়ি চুরি করে উপহার প্রদান তথা সাহা লতার (লতা আচার্য থেকে সাহা লতাই রুপান্তরিত) সাথে সকল সম্পর্কের সমস্ত তথ্য প্রমান, আলোকচিত্র, সাক্ষী এখন আমার কাছে আছে। আগামী ২ মাসের মধ্যে আমাদের সম্পর্কের আইনগত বিচ্ছেদ এবং ঢাকা-কলকাতা-নিউ ইয়র্কের সকল সম্পত্তির নায্য পাওনা বুঝে না পেলে আমি যা যা করতে যাচ্ছি তার একটা তালিকা প্রদান করা হলো।
১. গণমাধ্যমে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাহা লতার সাথে সম্পর্কের বিস্তারিত সময়ক্রম অনুযায়ী উল্লেখ করা।
২. মুক্তধারা বই মেলার ‘ব্যবসা’ তুলে ধরা। আমেরিকা, ভারত এবং বাংলাদেশের সকল সরকারী বেসরকারী কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা। অনুদান আত্মসাত বিষয়ে সবাইকে সচেতন করা।
৩. ব্যক্তিগত ও মুক্তধারার অতীত ব্যবসা ও ট্যাক্স ফাকি বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা। ফরেনসিক তদন্তের আহ্বান জানানো। দীর্ঘকাল ধরে পাইরেট সিডি-ডিভিডি ব্যবসা বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানানো।
৪. আমেরিকায় বিভিন্ন কর্তৃপক্ষকে বিভিন্ন সম্পর্কিত বিষয়ে জানানো। বাংলাদেশের সম্পত্তি গোপন করা (যার মূল দলিল আমার কাছে আছে) এবং কৌশলগত কারণে অন্যের নামে তা হস্তান্তর বিষয়ে ট্যাক্স কর্তৃপক্ষকে জানানো।
৫. ভারতে নাগরিকত্বের কাগজপত্র এবং ব্যাংক একাউন্ট উন্মোচন করা এবং অবৈধভাবে ৩টি দেশের নাগরিক সুবিধা নেয়ার জন্যে ৩ টি দেশকে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানানো।
৬. নকল সাক্ষর করে চেক জালিয়াতি বিষয়ে পুলিশকে রিপোর্ট করা। শাড়ি চুরি করে অন্য মহিলাকে উপহার দেয়া এবং অবৈধ সম্পর্ক রক্ষার জন্যে আইনগত-সামাজিক পদক্ষেপ নেয়া।
৭. বহতা-বিপ্রসহ পারবারিক সকল সদস্য ও বন্ধু বান্ধবদের তথ্য-প্রমাণসহ সব কিছু জানানো।
৮. মুক্তধারা বইমেলার গত পচিশ বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব জন সন্মুখে প্রকাশ করবার জন্যে সামাজিক দাবি তোলা ও আইনগত পদক্ষেপের দিকে যাওয়া। বইমেলাকে কেন্দ্র করে আদম ব্যবসার বিষয়টি উন্মোচন করা (যেমন কয়েকজনের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা নেয়ার বিষয়টি আমি নিজে জানি)। সংস্কৃতির নামে অশ্লীল ব্যবসা বন্ধ করা।
৯. এই প্রতারক-গণ শত্রুকে যাতে কোনো সামাজিক স্বীকৃতি বা পুরুস্কার দেয়া না হয় সবাইকে সেই আবেদন জানানো। আমার বদনাম বলা হয়েছে এমন প্রতিটি মানুষের কাছে আলাদা আলাদা করে ও সামগ্রিকভাবে একজন ভন্ড-প্রতারক-কীট এর প্রতিকৃতি তুলে ধরা।
১০. নিউইয়র্ক-ঢাকা-কলকাতায় প্রেস কনফারেন্স করে মানুষ কথিত বিশ্ব চিটারকে উন্মোচন করা। সংস্কৃতির আবরণে লুকিয়ে থাকা এই বহুমুখী প্রতারকের কাহিনী মানুষকে-গণমাধ্যমকে জানানো।
মনে রেখো, আমি একটা স্বচ্ছ জীবন যাপন করি। আমি অসুখী ছিলাম এবং নিজের ভালোলাগা-বন্ধুত্ব না লুকিয়ে প্রকাশ্যে সাহসী জীবন যাপন করছি। গত দেড় বছর ধরেই আমি আমাদের সম্পর্ক বিচ্ছেদের জন্যে বলে আসছি এবং বেশ কয়েকটি ইমেল করেছি। আমি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই সত-স্বচ্ছ-প্রকাশ্য থেকেছি। এখনো এক স্বতন্ত্র ও সন্মানজনক জীবন বেছে নিয়েছি। নিজের জীবনকে তোমাদের জন্যে বিসর্জন দিয়েও আমার জুটেছে শুধুই প্রতারণা। আমরা জীবন-শ্রম-সময়-উপার্জন-সঞ্চয় সব তোমার সংসারে ঢেলে দিয়ে বিনিময়ে পেয়েছি শুধু প্রতারণা। তুমি আমার কাছে সেই শুরু থেকেই ছিলে আপাদমস্তক এক প্রতারক। তোমার জীবন থেকে আমি বের হবার অনেক আগেই তুমি সমান্তরাল এক দাম্পত্য সম্পর্কে গোপনে লিপ্ত ছিলে যার সকল প্রমান ঈশ্বর এখন আমার হাতে তুলে দিয়েছেন। এক যুগ আগে কলকাতায় তোমার বেশ্যালয়ে যাবার ও নিউইয়র্কে কলগার্ল অনুসন্ধানের যে তথ্য আমি পেয়েছিলাম তা সত্য ছিল বলেও এখন আমি মনে করি। অর্থাত স্বভাব-চরিত্র-বৈশিষ্ট সবদিক দিয়েই তুমি ছিলে এক ভয়াবহ ভন্ড-প্রতারক-বিশ্বাসঘাতক-চরিত্রহীন।
আমার শক্তি-সাহস-ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে নুন্যতম ধারণা থাকলে এই চিঠি গুরুত্ব দিয়ে এর সময়সীমা অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়ার অনুরোধ থাকলো।
আগামীতে আমি আমেরিকাতে আসলে আমার সাথে পুলিশ, এফ বি আই, ট্যাক্স এবং ফরেনসিক বিভাগের লোক থাকবে।
আমাকে নায্য পাওনা দিয়ে আমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন না করলে আমি উপরে উল্লেখিত সকল পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হব।
রুমা চৌধুরী
২৯-০২-২০১৬