মির্জা ফখরুল ইসলাম নিউইয়র্কে : অভ্যর্থনায় নেই কেন্দ্রীয় নেতারা
- প্রকাশের সময় : ০৮:২০:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগাস্ট ২০১৫
- / ৬১৯ বার পঠিত
নিউইয়র্ক: বিএনপির ভারপাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ১১ আগস্ট মঙ্গলবার বেলা ১২টায় সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সে জেএফকে এয়রিপোর্টে অবতরণ করেন। চিকিৎসার জন্যে তিনি সিঙ্গাপুর থেকে নিউইয়র্কে এলেন। এয়ারপোর্টে তাকে স্বাগত জানান যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি গিয়াস আহমেদ, আলহাজ সোলায়মান ভূইয়া এবং নূর মোহাম্মদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল, বিএনপি নেতা আব্বাস উদ্দিন দুলাল, ব্রুকলীন বিএনপি নেতা হাজী কামালউদ্দিন প্রমুখ। নিউইয়র্কে বসবাসরত মির্জা ফখরুলের এক বন্ধু এয়ারপোর্টে এসেছিলেন তার বাসায় নেয়ার জন্যে। কিন্তু তিনি স্ত্রী রাহাত আরা বেগমসহ হোটেলে উঠেছেন। নিউইয়র্কে বিশ্বখ্যাত কর্ণেল হাসপাতালের চিকিৎসকদের সাথে তার এপয়েন্টমেন্ট রয়েছে ১৩ আগস্ট বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা এবং সকাল ১১টায়। এরপর তিনি স্থির করবেন কোথায় অবস্থান করবেন সে ব্যাপারে।
ফখরুলের ইন্টারনাল ক্যারোটিড আর্টারিতে ব্লক ধরা পড়েছে। এর অস্ত্রোপচার করাতে চান সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী। গত ২৭ জুলাই তিনি ঢাকা থেকে সিঙ্গাপুর গিয়েছিলেন। সেখানে ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হসপিটাল এবং ইকোনো হসপিটালের তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তার বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে।
জেএফকে এয়ারপোর্টে সমবেত নেতা-কর্মীদের ফখরুল জানান, ‘সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকদের পরামর্শে নিউইয়র্ক এলাম।’ হুইল চেয়ারে করে এয়ারপোর্টের বাইরে এসে হুইল চেয়ারেই ছিলেন ফখরুল। তিনি বলেন, ‘আমি দেশবাসীসহ দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের দোয়া চাইছি, যাতে সুস্থ হয়ে দেশে ফিরতে পারি। আমি যাতে আবার দেশ ও দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে পারি।’
উল্লেখ্য, নাশকতার মামলায় ছয় মাস ধরে কারাগারে ছিলেন তিনি। ক্যারোটিড আর্টারির চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা বাংলাদেশে না থাকায় গত ১৪ জুলাই সুপ্রিম কোর্ট ফখরুলকে বিদেশে যেতে জামিন দেয়।
এদিকে, নিউইয়র্কে চিকিৎসরত বিএনপির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার নির্দেশে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির এক নেতা নিউইয়র্কে ফখরুলের জন্যে একটি বাসা নিয়েছিলেন। এমনকি একজন চিকিৎসকের সাথে আলোচনাও করেছিলেন। কিন্তু কোন এক অজ্ঞাত কারণে শেষ মুহূর্তে ফখরুলের অনুরোধে সে সব পরিকল্পনা বাতিল করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এমনকি মহাসচিবের অনুরোধেই খোকা জেএফকে এয়ারপোর্টে যাননি। খোকা এয়ারপোর্টে গেলে সাথে অনেক নেতা-কর্মী যাবেন ভেবে মির্জা ফখরুল মানা করেছিলেন বলে জানা গেছে। তবে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ দফতর সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ডা: রফিক চৌধুরী এয়ারপোর্টে ছিলেন ফখরুলকে স্বাগত জানাতে। অপরদিকে, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বিএনপির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ড. ওসমান ফারুক, সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পাদক এহসানুল হক মিলন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী আলমগীর কবির এয়ারপোর্টে যাননি। একইভাবে ৪ খন্ডে বিভক্ত যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির অপর ৩ খন্ডের কাউকেই দেখা যায়নি এয়ারপোর্টে।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার তথ্য ফাঁস করে দেয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত একটি গ্রুপের সাথে চিকিৎসার জন্যে নিউইয়র্কে অবস্থানরত সাদেক হোসেন খোকার সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে বিএনপির নেতা-কর্মীরা বলাবলি করছেন। এ কারণে মির্জা ফখরুল নিজেকে কোন গ্রুপের সাথেই জড়াতে চাননি। ফখরুলের নিকটাত্মীয় নিউইয়র্ক প্রবাসী রফিকুল আলম এবং রফিকুল ইসলাম ডলারের তত্ত্বাবধানে সস্ত্রীক হোটেলে থেকেই চিকিৎসা নিতে আগ্রহী বলে জানা গেছে।
অপরদিকে এয়ারপোর্ট থেকে গিয়াস আহমেদ জানান, ‘চিকিৎসার প্রয়োজনে এসেছেন বিধায় ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব রাজনৈতিক কোন কর্মসূচিতে অংশ নেবেন না বলেও জানিয়ে দিলেন।’ ‘আমরা অনুরোধ জানিয়েছিলাম চিকিৎসার পাশাপাশি দলীয় নেতা-কর্মীদের এক মতবিনিময় সভায় অংশ গ্রহণের জন্যে। কিন্তু তিনি সম্মত হননি’-বলেন গিয়াস।
এদিকে, এয়ারপোর্ট থেকে হোটেলে পৌঁছার পর সাদেক হোসেন খোকা সেখানে সাক্ষাৎ করেন মির্জা ফখরুলের সাথে। তারা কুশলাদি বিনিময় করেন।