মিজান সভাপতি ও মনজুর সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত

- প্রকাশের সময় : ০৯:৪৫:৫৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬
- / ৫৬৭ বার পঠিত
নিউইয়র্ক: প্রবাসী বাংলাদেশীদের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত নিউইয়র্ক তথা উত্তর আমেরিকার শীর্ষ স্থানীয় প্রতিষ্ঠান ‘জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার-জেএমসি’র পরিচালনা কমিটির নির্বাচনের মধ্যদিয়ে অবশেষে প্রতিষ্ঠানটিতে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলো। আশির দশকে প্রতিষ্ঠিত এই জেএমসি এতোদিন মূলত: নির্বাচক কমিটির মধ্যদিয়ে পরিচালনা কমিটি গঠিত হয়ে আসছিলো। এনিয়ে জেএমসির মুসল্লী, সাধারণ সদস্য ও কমিউনিটির সচেতন মহলে নানা প্রশ্ন, আলোচনা আর সমালোচনার পাশাপাশি নির্বাচনের দাবী উঠে। এমন পরিস্থিতিতে গত ৪ সেপ্টেম্বর রোববার জেএমসি’র সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপস্থিত সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের দাবীর মুখে দুই বছরের (২০১৬-২০১৭) জন্য গণতান্ত্রিকভাবে পরিচালনা কমিটি গঠিত হয়। সভায় হাত তুলে সদস্যরা নতুন সভাপতি হিসেবে খাজা মিজান হাসান ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মনজুর আহমেদ চৌধুরীকে নির্বাচত করেন। খবর ইউএনএ’র।
জানা গেছে, ৪ সেপ্টেম্বর বাদ আসর অনুষ্ঠিত জেএমসি’র সাধারণ সভায় সভাপতিত্ব করেন ট্রাষ্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ডা. মোহাম্মদ রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আসাবুর রহমান। সভা পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিদায় সভাপতি ডা. ওয়াহিদুর রহমান। তিনি তার বক্তব্যের পর নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রফিকুর রহমানকে নতুন কমিটি গঠনের দায়িত্ব দেন। এরপর রফিকুর রহমান তার বক্তব্য শেষে জেএমসি’র পরিচালনা কমিটির নাম (মনোনীত) প্রস্তাব করেন। সভার অধিকাংশ সদস্য তার প্রস্তাব সমর্থণ না করায় শুরু হয় বিপত্তি, দাবী উঠে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নতুন কমিটি নির্বাচনের। প্রয়োজনে কেউ কেউ গোপন ভোটে নির্বাচনের কথা বলেন। এসময় কিছুটা বিশৃঙ্খল পরিবেশের সৃষ্টি হয়। জেএমসি’র সাবেক সভাপতি আব্দুল আওয়াল সিদ্দিকী এক পর্যায়ে বলে উঠেন আমার কাছে অন্তত ২০০ সদস্যের স্বাক্ষর রয়েছে। আমরা এই সিদ্ধান্ত মানি না। তার কথার সাথে ঐক্যমত পোষণ করেন সভাপতি ডা. ওয়াহিদুর রহমান। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে আওয়াল সিদ্দিকী, ওয়াহিদুর রহমান ও আকতার হোসেন সহ তাদের সমর্থকরা সভাস্থাল ত্যাগ করার চেষ্টা করেন। এসময় উত্তেজিত সদস্যরা তাদের প্রতিরোধ গড়ে তোলেন এবং অনিয়মের প্রতিবাদ করার পাশাপাশি তাৎক্ষনিকভাবে ভোটাভুটির মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের দাবী জানান। ফলে আরো উত্তপ্ত হয়ে উঠে পরিস্থিতি। এই পর্যায়ে পুলিশ কল করেন সভাপতি ডা. ওয়াহিদুর রহমান। কিন্তু তাতেও কোন লাভ হয়নি। সদস্যদের দাবী ও বাধার মুখে আবার শুরু হয় সভার কার্যক্রম এবং উপস্থিত সবার দাবীতে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নতুন কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। পরবর্তীতে সদস্যদের হাত উত্তোলনের মধ্য দিয়ে জেএমসি পরিচালনা কমিটির ট্রাষ্টি বোর্ড ও নতুন কার্যকরী কমিটি গঠিত হয়। কমিটি নিম্নরূপ:
ট্রাষ্টি বোর্ড: চেয়ারম্যান- ডা. মোহাম্মদ এম এম বিল্লাহ, ভাইস চেয়ারম্যান- সৈয়দ এম মুজ্জাফফর এবং সদস্য- মোহাম্মদ আসাবুর রহমান, ডা. মোহাম্মদ রহমান (তুহিন), ডা. ফজলুল হক, জামিল চৌধুরী, ডা. নাজমুল খান। জেএমসি’র কার্যকরী পরিষদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদাধিকার বলে এই বোর্ডের সদস্য।
কার্যকরী পরিষদ: সভাপতি- খাজা মিজান হাসান, সহ সভাপতি- সিদ্দিকুর রহমান, সেক্রেটারী- মনজুর আহমেদ চৌধুরী, জয়েন্ট সেক্রেটারী- হুমায়ুন খান, কোষাধ্যক্ষ- আবুল কালাম, সহকারী কোষাধ্যক্ষ- মোহাম্মদ বাবুল মজুমদার। সদস্য- জোহেব চৌধুরী, মোহাম্মদ সাবুল উদ্দিন, ইঞ্জিনিয়ার কামাল ভূইয়া, মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, জহিরুল ইসলাম, ডা. মজিবুর রহমান ও আলহাজ আমানুল্লাহ।
শপথ গ্রহণ: এদিকে একই দিন বাদ মাগরিব জেএমসি’র নতুন কমিটি শপথ গ্রহণ করেন। নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রফিকুর রহমান তাদের শপথবাক্য পাঠ করান।
উল্লেখ্য, জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার উত্তর আমেরিকার অন্যতম মসজিদ ‘মসজিদ আল মামুর’ ছাড়াও আল মামুর স্কুল, হিফজ মাদ্রাসা সুনামের সাথে পরিচালনা করে আসছে। আর এই সেন্টার কেন্দ্র করে জ্যামাইকায় দেশ-বিদেশী মুসলিম কমিউনিটির পরিধি বাড়ছে।