নিউইয়র্ক ০৮:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

ভয়াল ১১ সেপ্টেম্বরের ১৫ বছর

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১০:২২:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬
  • / ৬৪০ বার পঠিত

নিউইয়র্ক: নাইন ইলেভেন (৯/১১)-এর সন্ত্রাসী হামলার ১৫ বছর পূর্তি ১১ সেপ্টেম্বর বোববার। ইতিহাসের এ কালো দিনটির পর শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, বদলে গিয়েছে প্রায় পুরো বিশ্ব। সেদিন ১৯ জন সন্ত্রাসী যাত্রীবাহী বিমান ছিনতাই করে পরিকল্পিত হামলা চালায় বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে। সন্ত্রাসী এ হামলায় ধসে পড়ে নিউইয়র্কের টুইন টাওয়ার খ্যাত বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রের গগনচুম্বী দুটি ভবন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগনে হামলা চালায় অন্য একটি বিমান। হোয়াইট হাউসের দিকে ধাবমান তৃতীয় বিমানটি বিধ্বস্ত হয় পেনসিলভানিয়ায়। এ দিনটিতে সন্ত্রাসী হামলায় ২ হাজার ৯৯৬ জনের প্রাণহানি ঘটে। আহত হয়েছে ছয় হাজারের বেশি মানুষ। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে নিজ ভূখন্ডে এর আগে এমন হামলা আর প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে হাজার মাইল দূরের দেশ আফগানিস্তানে তখন তালেবান সরকার। আফগানিস্তানে আশ্রয় নেওয়া ওসামা বিন লাদেন ও তাঁর প্রতিষ্ঠিত সংগঠন আল–কায়েদা ১১ সেপ্টেম্বরের হামলার জন্য দায়ী উল্লেখ করে প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে যুক্তরাষ্ট্র। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ কংগ্রেসের অনুমোদন নিয়ে মাত্র এক মাসের মধ্যে আফগানিস্তানে হামলা চালান। দেশটিতে তালেবান সরকারের উচ্ছেদ ঘটে। আল–কায়েদা এবং তাদের নেতা ওসামা বিন লাদেনকে তাড়া করতে থাকে যুক্তরাষ্ট্র। ২০১১ সালের ২ মে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে ঘাপটি মেরে থাকা বিন লাদেনকে হত্যা করতে সক্ষম হয় যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু এরপরও অবসান হয়নি জঙ্গিবাদের। আল–কায়েদা নামের জঙ্গি সংগঠন এখনো একই ভাবধারায় ছড়িয়ে পড়েছে পূর্ব-পশ্চিমের নানা দেশে।
১১ সেপ্টেম্বরের ১৫ বছর পূর্তিতে মার্কিনবাসী আনুষ্ঠানিকভাবে স্মরণ করছে দিনটিকে। বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রের স্থানটিতে গড়ে উঠেছে সেপ্টেম্বর ১১ মেমোরিয়াল। ১৭৭৬ ফুট উচ্চতার নতুন স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। এ দিনটির পর জাতীয় নিরাপত্তাই হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।
বর্তমান নিরাপত্তাব্যবস্থায় ১১ সেপ্টেম্বরের অনুরূপ হামলা অনেকটাই অসম্ভব বলে মনে করেন জর্জ টাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তাবিষয়ক অধ্যাপক ডেনিয়াল বেয়ম্যান। তিনি বলেন, নিরাপত্তার বিষয়টি এখন সব রাষ্ট্রনেতাদের অগ্রাধিকারের তালিকায়। নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য গত ১৫ বছরে যত সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, মানবেতিহাসে তা নজিরবিহীন। ১১ সেপ্টেম্বরের পর গত ১৫ বছরে জঙ্গি হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের ৯৪ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এসব হামলার পেছনে জিহাদি ভাবাদর্শ কাজ করেছে বলে প্রমাণিত হয়েছে। যদিও রাজনীতি, সমাজ—সবই বদলে দিয়েছে ভয়াল ১১ সেপ্টেম্বর। তবুও এ দেশের মানুষ সময়ের সব ঝুঁকি ও ভয় মোকাবিলা করে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখার শপথ নেয় প্রতিটি ১১ সেপ্টেম্বরের স্মরণসভায়।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

ভয়াল ১১ সেপ্টেম্বরের ১৫ বছর

প্রকাশের সময় : ১০:২২:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬

নিউইয়র্ক: নাইন ইলেভেন (৯/১১)-এর সন্ত্রাসী হামলার ১৫ বছর পূর্তি ১১ সেপ্টেম্বর বোববার। ইতিহাসের এ কালো দিনটির পর শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, বদলে গিয়েছে প্রায় পুরো বিশ্ব। সেদিন ১৯ জন সন্ত্রাসী যাত্রীবাহী বিমান ছিনতাই করে পরিকল্পিত হামলা চালায় বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে। সন্ত্রাসী এ হামলায় ধসে পড়ে নিউইয়র্কের টুইন টাওয়ার খ্যাত বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রের গগনচুম্বী দুটি ভবন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগনে হামলা চালায় অন্য একটি বিমান। হোয়াইট হাউসের দিকে ধাবমান তৃতীয় বিমানটি বিধ্বস্ত হয় পেনসিলভানিয়ায়। এ দিনটিতে সন্ত্রাসী হামলায় ২ হাজার ৯৯৬ জনের প্রাণহানি ঘটে। আহত হয়েছে ছয় হাজারের বেশি মানুষ। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে নিজ ভূখন্ডে এর আগে এমন হামলা আর প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে হাজার মাইল দূরের দেশ আফগানিস্তানে তখন তালেবান সরকার। আফগানিস্তানে আশ্রয় নেওয়া ওসামা বিন লাদেন ও তাঁর প্রতিষ্ঠিত সংগঠন আল–কায়েদা ১১ সেপ্টেম্বরের হামলার জন্য দায়ী উল্লেখ করে প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে যুক্তরাষ্ট্র। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ কংগ্রেসের অনুমোদন নিয়ে মাত্র এক মাসের মধ্যে আফগানিস্তানে হামলা চালান। দেশটিতে তালেবান সরকারের উচ্ছেদ ঘটে। আল–কায়েদা এবং তাদের নেতা ওসামা বিন লাদেনকে তাড়া করতে থাকে যুক্তরাষ্ট্র। ২০১১ সালের ২ মে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে ঘাপটি মেরে থাকা বিন লাদেনকে হত্যা করতে সক্ষম হয় যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু এরপরও অবসান হয়নি জঙ্গিবাদের। আল–কায়েদা নামের জঙ্গি সংগঠন এখনো একই ভাবধারায় ছড়িয়ে পড়েছে পূর্ব-পশ্চিমের নানা দেশে।
১১ সেপ্টেম্বরের ১৫ বছর পূর্তিতে মার্কিনবাসী আনুষ্ঠানিকভাবে স্মরণ করছে দিনটিকে। বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রের স্থানটিতে গড়ে উঠেছে সেপ্টেম্বর ১১ মেমোরিয়াল। ১৭৭৬ ফুট উচ্চতার নতুন স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। এ দিনটির পর জাতীয় নিরাপত্তাই হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।
বর্তমান নিরাপত্তাব্যবস্থায় ১১ সেপ্টেম্বরের অনুরূপ হামলা অনেকটাই অসম্ভব বলে মনে করেন জর্জ টাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তাবিষয়ক অধ্যাপক ডেনিয়াল বেয়ম্যান। তিনি বলেন, নিরাপত্তার বিষয়টি এখন সব রাষ্ট্রনেতাদের অগ্রাধিকারের তালিকায়। নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য গত ১৫ বছরে যত সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, মানবেতিহাসে তা নজিরবিহীন। ১১ সেপ্টেম্বরের পর গত ১৫ বছরে জঙ্গি হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের ৯৪ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এসব হামলার পেছনে জিহাদি ভাবাদর্শ কাজ করেছে বলে প্রমাণিত হয়েছে। যদিও রাজনীতি, সমাজ—সবই বদলে দিয়েছে ভয়াল ১১ সেপ্টেম্বর। তবুও এ দেশের মানুষ সময়ের সব ঝুঁকি ও ভয় মোকাবিলা করে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখার শপথ নেয় প্রতিটি ১১ সেপ্টেম্বরের স্মরণসভায়।