নিউইয়র্ক ১২:০৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

ভারতের একতরফা পানি প্রত্যাহারের বিরুদ্ধে নিউইয়র্কে ফারাক্কা কমিটির মানব-বন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৯:৪৬:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৪
  • / ৭২৯ বার পঠিত

নিউইয়র্ক: বাংলাদেশের উজানে ভারতের একতরফা পানি প্রত্যাহারের বিরুদ্ধে নিউইয়র্কে আয়োজিত মানব-বন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের এহেন আচরণকে মানবতা বিরোধী বলে বিবেচনা করে এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জনানো হয়েছে। গত ২০ ডিসেম্বর শনিবার বিকেলে সিটির জ্যাকসন হাইটস্থ ডাইভারসিটি প্লাজায় এই সমাবেশ অরিনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালে ফারাক্কা বাঁধ কমিশন করার পর থেকে ভারত বাংলাদেশের উজানে এবং হিমালয় অববাহিকায় শত শত সেচ-সৌধ নির্মাণ করেছে। অন্যদিকে আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প গ্রহণ, সিলেটের উজানে বরাক নদীতে বাঁধ দিয়ে বিদুৎ  প্রকল্প কার্যক্রম গ্রহণ এবং তিস্তা নদীর উজানে গজল ডোবা বাধ সহ সর্বত্র এক তরফা ও অন্যায়ভাবে বাধ নির্মাণ করার ফলে বাংলাদেশের সকল নদ নদী, ডোবা নালা শুকিয়ে কাঠ। ওজু, গোসল, প্রার্থনা, এমন কি রান্না-বান্না, ঘর গৃহস্থালির কাজে ব্যবহার করার জন্য এবং পান করার পানি পর্যন্ত  পাওয়া দুস্কর। গবাদি পশু পর্যন্ত পান করার পানি পাচ্ছে না। চারিদিকে মরুভুমিসম এবং কারবালার আহাজারি। শুধু তাই নয় উপরন্তু চুক্তি লংঘন করে আন্তর্জাতিক গঙ্গা নদীতে ১৬টি ব্যারাজ নির্মিত হলে বাংলাদেশের অস্তিত্বই বিপন্ন হবে।
সার্ক এর চেতনায় নদী সংশ্লিষ্ট দেশ বাংলাদেশ, ভারত, চীন, নেপাল, ভুটানকে নিয়ে আঞ্চলিক সহযোগিতার ভিত্তিতে অত্র অঞ্চলের পানি প্রবাহের উন্নয়ন ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা সম্ভব বলে সমাবেশ মনে করে। এইক্ষেত্রে বন্ধু প্রতিম দেশ বাংলাদেশের প্রতি সম মর্যাদা ও সমতার ভিত্তিতে ন্যায় আচরণ করবে এটাই আশা করে।
অন্যদিকে সকল বিভেদ-বিভাজন ভুলে দল মত নির্বিশেষে বাংলাদেশের নদী-পানি অধিকার রক্ষায় গোটাজাতিকে ঐক্যবদ্ধভাবে ভারতের এই অন্যায় অবিচার ও পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে হবে। একইসাথে ভারতের বিবেকবান জনগণ, বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশবীদসহ সকলেই এই বিষয়ে বাংলাদেশের পাশে এসে দাঁড়াবে এই আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।
আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের চেয়ারমান আতিকুর রহমান ইউসফজাই সালু। সভা পরিচালনা করেন আইএফসি’র সাংগঠনিক সম্পাদক আতাউর রহমান আতা। উক্ত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত থাকেন ও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সোসাইটি ইন্্ক নিউইয়র্ক-এর সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম হাওলাদার, আইএফসি’র চীফ এডভাইজার মোহাম্মদ আমিনউল্লাহ, কমিউনিটি অ্যাব্টিভিস্ট ওসমান চৌধুরী, জাকির হাওলদার, আবুল বাশার, জামান সরকার, আজাদ বাকির, ফারুক হোসেন মজুমদার প্রমুখ।
সমাবেশে আতিকুর রহমান সালু তার বক্তব্যে ফেব্রুয়ারী মাসে জাতিসংঘের সামনে বৃহত্তম সমাবেশ করার ঘোষণা প্রদান করেন। উল্লেখ্য, প্রচন্ড ঠান্ডা ও হিমেল হাওয়া উপেক্ষা করে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশী সমাবেশ ও মানব-বন্ধনে যোগদান করেন।
সমাবেশে ভারতীয় আগ্রাসানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিবাদ করায় সাধুবাদ জানানো হয় এবং ভারতের কাছ থেকে বাংলাদেশের নায্য অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে সরকারের প্রতি কতিপয় দাবী জানানো হয়।
দাবীগুলোর মধ্যে রয়েছে:
ক) দ্বিপাক্ষিকভাবে সমাধানের পথ যেখানে রুদ্ধ সেখানে অবিলম্বে আমাদের নদীর পানির নায্য দাবী জাতিসংঘের পানি কমিটি (ষষ্ঠ কমিটি)-তে উত্থাপন করতে হবে, যেমনটি করা হয়েছিল আমাদের সমুদ্র সীমা রক্ষা ও সমুদ্র সম্পদ রক্ষার বিষয়ে। আর এটা না করার অর্থ হবে আত্মহত্যার সামিল।
খ) বাংলাদেশের উজানে বাঁধ নির্মাণ বন্ধ করতে হবে।
গ) ২০০০ সালের জাতিসংঘের ‘মিলেনিয়াম’ ঘোষণা অনুযায়ী একে অপরের ক্ষতি হয় এমন বাঁধ, ব্যারাজ ও সকল স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ করতে হবে।

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

ভারতের একতরফা পানি প্রত্যাহারের বিরুদ্ধে নিউইয়র্কে ফারাক্কা কমিটির মানব-বন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ

প্রকাশের সময় : ০৯:৪৬:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৪

নিউইয়র্ক: বাংলাদেশের উজানে ভারতের একতরফা পানি প্রত্যাহারের বিরুদ্ধে নিউইয়র্কে আয়োজিত মানব-বন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের এহেন আচরণকে মানবতা বিরোধী বলে বিবেচনা করে এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জনানো হয়েছে। গত ২০ ডিসেম্বর শনিবার বিকেলে সিটির জ্যাকসন হাইটস্থ ডাইভারসিটি প্লাজায় এই সমাবেশ অরিনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালে ফারাক্কা বাঁধ কমিশন করার পর থেকে ভারত বাংলাদেশের উজানে এবং হিমালয় অববাহিকায় শত শত সেচ-সৌধ নির্মাণ করেছে। অন্যদিকে আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প গ্রহণ, সিলেটের উজানে বরাক নদীতে বাঁধ দিয়ে বিদুৎ  প্রকল্প কার্যক্রম গ্রহণ এবং তিস্তা নদীর উজানে গজল ডোবা বাধ সহ সর্বত্র এক তরফা ও অন্যায়ভাবে বাধ নির্মাণ করার ফলে বাংলাদেশের সকল নদ নদী, ডোবা নালা শুকিয়ে কাঠ। ওজু, গোসল, প্রার্থনা, এমন কি রান্না-বান্না, ঘর গৃহস্থালির কাজে ব্যবহার করার জন্য এবং পান করার পানি পর্যন্ত  পাওয়া দুস্কর। গবাদি পশু পর্যন্ত পান করার পানি পাচ্ছে না। চারিদিকে মরুভুমিসম এবং কারবালার আহাজারি। শুধু তাই নয় উপরন্তু চুক্তি লংঘন করে আন্তর্জাতিক গঙ্গা নদীতে ১৬টি ব্যারাজ নির্মিত হলে বাংলাদেশের অস্তিত্বই বিপন্ন হবে।
সার্ক এর চেতনায় নদী সংশ্লিষ্ট দেশ বাংলাদেশ, ভারত, চীন, নেপাল, ভুটানকে নিয়ে আঞ্চলিক সহযোগিতার ভিত্তিতে অত্র অঞ্চলের পানি প্রবাহের উন্নয়ন ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা সম্ভব বলে সমাবেশ মনে করে। এইক্ষেত্রে বন্ধু প্রতিম দেশ বাংলাদেশের প্রতি সম মর্যাদা ও সমতার ভিত্তিতে ন্যায় আচরণ করবে এটাই আশা করে।
অন্যদিকে সকল বিভেদ-বিভাজন ভুলে দল মত নির্বিশেষে বাংলাদেশের নদী-পানি অধিকার রক্ষায় গোটাজাতিকে ঐক্যবদ্ধভাবে ভারতের এই অন্যায় অবিচার ও পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে হবে। একইসাথে ভারতের বিবেকবান জনগণ, বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশবীদসহ সকলেই এই বিষয়ে বাংলাদেশের পাশে এসে দাঁড়াবে এই আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।
আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের চেয়ারমান আতিকুর রহমান ইউসফজাই সালু। সভা পরিচালনা করেন আইএফসি’র সাংগঠনিক সম্পাদক আতাউর রহমান আতা। উক্ত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত থাকেন ও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সোসাইটি ইন্্ক নিউইয়র্ক-এর সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম হাওলাদার, আইএফসি’র চীফ এডভাইজার মোহাম্মদ আমিনউল্লাহ, কমিউনিটি অ্যাব্টিভিস্ট ওসমান চৌধুরী, জাকির হাওলদার, আবুল বাশার, জামান সরকার, আজাদ বাকির, ফারুক হোসেন মজুমদার প্রমুখ।
সমাবেশে আতিকুর রহমান সালু তার বক্তব্যে ফেব্রুয়ারী মাসে জাতিসংঘের সামনে বৃহত্তম সমাবেশ করার ঘোষণা প্রদান করেন। উল্লেখ্য, প্রচন্ড ঠান্ডা ও হিমেল হাওয়া উপেক্ষা করে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশী সমাবেশ ও মানব-বন্ধনে যোগদান করেন।
সমাবেশে ভারতীয় আগ্রাসানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিবাদ করায় সাধুবাদ জানানো হয় এবং ভারতের কাছ থেকে বাংলাদেশের নায্য অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে সরকারের প্রতি কতিপয় দাবী জানানো হয়।
দাবীগুলোর মধ্যে রয়েছে:
ক) দ্বিপাক্ষিকভাবে সমাধানের পথ যেখানে রুদ্ধ সেখানে অবিলম্বে আমাদের নদীর পানির নায্য দাবী জাতিসংঘের পানি কমিটি (ষষ্ঠ কমিটি)-তে উত্থাপন করতে হবে, যেমনটি করা হয়েছিল আমাদের সমুদ্র সীমা রক্ষা ও সমুদ্র সম্পদ রক্ষার বিষয়ে। আর এটা না করার অর্থ হবে আত্মহত্যার সামিল।
খ) বাংলাদেশের উজানে বাঁধ নির্মাণ বন্ধ করতে হবে।
গ) ২০০০ সালের জাতিসংঘের ‘মিলেনিয়াম’ ঘোষণা অনুযায়ী একে অপরের ক্ষতি হয় এমন বাঁধ, ব্যারাজ ও সকল স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ করতে হবে।