বৃষ্টি-বাদলা উপেক্ষা করে আনন্দঘন পরিবেশে টাঙ্গাইল জেলা সমিতির বনভোজন অনুষ্ঠিত

- প্রকাশের সময় : ০২:৫৮:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ অগাস্ট ২০১৬
- / ১১৮২ বার পঠিত
নিউইয়র্ক: যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী টাঙ্গাইলবাসীদের সামাজিক সংগঠন টাঙ্গাইল জেলা সমিতি ইউএসএ ইন্্ক বার্ষিক বনভোজন ৩১ জুলাই রোববার অনুষ্ঠিত হয়। নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ডস্থ নয়নাভিরাম বেথপেজ ষ্টেট পার্কে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এই বনভোজনের পাঁচ শতাধিক প্রবাসী টাঙ্গাইলবাসীসহ বিভিন্ন জেলাবাসী অংশ নেন। বৃষ্টি-বাদলা উপক্ষো করে আনন্দঘন পরিবশে অনুষ্ঠিত এই বনভোজনে দু’টি বাসসহ অর্ধ শতাধিক প্রাইভেট কারে শিশু-কিশোর-কিশোরী থেকে শুরু করে বয়োবৃদ্ধ প্রবাসীরা বনভোজনস্থলে পৌছেন। অনুষ্ঠানমালার মধ্যে ছিলো: শিশু-কিশোর-কিশোরী, মহিলা আর পুরুষদের জন্য একাধিক আকর্ষনীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, কৃতি ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে সার্টিফিকেট বিতরণ, মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আর আকর্ষনীয় র্যাফল ড্র।
টাঙ্গাইলবাসীদের বনভোজন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে যোগ দিয়ে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সোসাইটির আসন্ন নির্বাচনে সভাপতি পদপ্রার্থী কামাল আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী রুহুল আমীন সিদ্দিকী, কর্ণফুলী ইনকাম ট্যাক্স সার্ভিসেস-এর মোহাম্মদ হাসেম, ল অফিস অব স্টুয়ার্ট এন বাবিস ও জন এ ভোস-এর প্রতিনিধি মোহাম্মদ জামান প্রমুখ। এছাড়ও আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন মেটলাইফ-এর পরেশ সাহা।
সকালের নাস্তা: বেলা সাড়ে ১০টার দিকে জ্যাকসন হাইটসের মেরিট কাবাব রেষ্টুরেন্ট পরিবেশিত সকালের নাস্তা খাওয়ার পর শুরু হয় নানান প্রতিযোগিতা। দুপুরে পরিবেশিত হয় জ্যামাইকার সাগর রেষ্টুরেন্ট পরিবেশিত সুস্বাদু খাবার। বিকেলে ছিলো দই-মিষ্টি আর চা-পান।
খেলাধুলা: শিশুদের দৌড় প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে খেলাধুলা পর্ব শুরু হয় প্রথমেই ৩-৫ বছরের বালক/বালিকাদের দৌড়ে রায়ান প্রথম, সামি দ্বিতীয় এবং রনি তৃতীয় স্থান লাভ করে।
৬-৮ বছরের বালকদের দৌড়ে রাতুল প্রথম, নাঈম দ্বিতীয় ও আরিয়ান তৃতীয় স্থান লাভ করে।
৬-৮ বছরের বালিকাদের দৌড়ে রমিসা ফাবিহা প্রথম, তাসমিয়া কামাল দ্বিতীয় ও তাসনিয়া তৃতীয় স্থান লাভ করে।
৯-১১ বছরের বালকদের দৌড়ে রাফিদ প্রথম, তাহির দ্বিতীয় ও শাহীর তৃতীয় স্থান লাভ করে।
৯-১১ বছরের বালিকাদের দৌড়ে আছুবা প্রথম, আতিয়া দ্বিতীয় ও রিফা তৃতীয় স্থান লাভ করে।
১৩-১৭ বছরের বালকদের দৌড়ে আদিব প্রথম, আকাশ দ্বিতীয় ও রাহাদ তৃতীয় স্থান লাভ করে।
১৮ উর্ধ্ব নারীদের দৌড়ে পাপিয়া প্রথম, সেতুজী দ্বিতীয় ও নাসরিন তৃতীয় স্থান লাভ করে।
১৮ উর্ধ্ব পুরুষদের দৌড়ে ইবনুল প্রথম, শুভ দ্বিতীয় ও মির্জা তৃতীয় স্থান লাভ করে।
এছাড়া পুরুষদের ফুটবল খেলায় টাঙ্গাইলের যমুনা ও ধলেশ্বরী নদীর নামে দুটি দল অংশ নেয় এবং খেলাটি ২-০ গোলে শেষ হয়। এতে যমুনা দল জয়ী হয়। যমুনার পক্ষে জিল্লুর ও শাহেদ খান গোল করেন। যমুনা দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন সাইফুল ইসলাম আর ধলেশ্বরী দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন আনিসুর রহমান।
সবশেষে ছিলো মহিলাদের পিলো ক্যাচ প্রতিযোগতা। গানের তালে তালে এতে অর্ধ শতাধিক নারী অংশ নেন। এতে পাপড়[ী প্রথম, মিসেস সালাম দ্বিতীয় এবং লিনা ও রাশিদা যৌথভাবে তৃতীয় স্থান লাভ করেন।
আরো ছিলো যেমন খুশি তেমন সাজ প্রতিযোগিতা।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান: সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রবাসের জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী প্রমি অন্যান্যরা সঙ্গীত পরিবেশন করেন।
সার্টিফিকেট বিতরণ: সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পর প্রবাসী টাঙ্গাইলবাসী পিতা-মাতার কৃতি সন্তানদের হাতে সার্টিফিকেট তুলে দেয়া হয়। চলতি বছর বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃতিত্ব অর্জনকারী বিশেষ করে ৯০ অথবা ৯০ উর্ধ্ব পয়েন্টধারী শিক্ষার্থীদের এই সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। এবছর সার্টিফিকেট প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা হচ্ছে: অন্তরা ইসলাম (পিতা: সিরাজুল ইসলাম), ইশরাক খন্দকার (পিতা: তৌফিকুজ্জামান খন্দকার), মৌরি খান (পিতা: মিজানুর রহমান খান), মোহাম্মদ এহতেশামুল হক খান (পিতা: মেহরাজুল হক খান), রাফিদ জিয়া (পিতা: মোহাম্মদ জিয়া), খন্দকার মুশফিক নাইয়ান (পিতা: খন্দকার মনোয়ার হোসেন), সুমাইয়া জামান (পিতা: খন্দকার বদরুজ্জামান), সাজিদ চৌধুরী (পিতা: ইমরান ইউ চৌধুরী), জাকির এম. হোসেন (পিতা: মোহাম্মদ জে. আলী), খন্দকার আর ইসলাম (মাতা: রাশিদা ইয়াসমীন), খন্দকার আহমেদ শামস (পিতা: খন্দকার আহমেদুল হক), খন্দকার আহমেদ নজাবাত (পিতা: খন্দকার আহমেদ হক), রাইসা (পিতা: এম. সাদেকুর), মহিদা ইসলাম (পিতা: সিরাজুল ইসলাম মিল্টন), রিফাত তাসিয়া (পিতা: মোহাম্মদ টি. আহমেদ), মোহাম্মদ মোসাব্বির রাফী (পিতা: মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ মিয়া)। এছাড়াও গত বছর যারা সার্টিফিকেট গ্রহণ করতে পারেনি, তাদেরকে অনুষ্ঠানে সার্টিফিকেট প্রদান করা হরা হয়। এছাড়া যারা সার্টিফিকেট গ্রহণের তালিকায় থাকার পরও সার্টিফিকেট গ্রহণ করতে পারেনি তাদেরকে বা তাদের পিতা-মাতাকে সমিতির সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান খান (আপেল)-এর সাথে যোগাযোগ (ফোন: ৯১৭-৮৬৪-৬৩৩৫) করে তা সংগ্রহ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
টাঙ্গাইল জেলা সিমিতির র্যাফল ড্র’র পুরষ্কার ছিলো: প্রথম পুরষ্কার- স্বর্ণালংকার (সৌজন্যে: কর্ণফুলী ইনকাম ট্যাক্স সার্ভিসেস, মোহাম্মদ হাসেম), দ্বিতীয় পুরষ্কার- এলজি ৫৫ ইঞ্চি এইচডি লিড স্মার্ট টিভি (সৌজন্যে: আশরাফুল আলম জঙ্গী), তৃতীয় পুরষ্কার- ল্যাপটপ (সৌজন্যে- ওয়াসী চৌধুরী. ইএ), চতুর্থ পুরষ্কার- ল্যাপটপ (সৌজন্যে: আহমেদ হায়দার এমডি), পঞ্চম পুরষ্কার- মুসলিন শাড়ী (সৌজন্যে: নিলাঞ্জলা ফ্যাশন হাউজ), ষষ্ঠ পুরষ্কার- গ্যালাক্সি ট্যাব (সৌজন্যে: কস্তুরী কাবাব, ম্যানহাটান), সপ্তম পুরষ্কার- গ্যালাক্সি ট্যাব (সৌজন্যে: সুনিম), অষ্টম পুরষ্কার- ৩২ ইঞ্চি লিড এইচডি টিভি (সৌজন্যে: কাওরান বাজার), নবম পুরষ্কার- ৩২ ইঞ্চি লিড এইচডি টিভি (সৌজন্যে: মেটলাইফ-এর পরেশ সাহা), দশম পুরষ্কার- স্মার্ট ফোন (সৌজন্যে: কাজি অটো রিপেয়ার এন্ড বডি শপ), একাদশ পুরষ্কার- পোর্টেবল স্পীকার (সৌজন্যে: মোহাম্মদ রুহুল আমীন সিদ্দিকী), দ্বাদশ পুরষ্কার- অ্যামাজন ক্যান্ডেল ফায়ার (সৌজন্যে: আতিকুর রহমান আপন), ত্রয়োদশ পুরষ্কার- ট্যাবলেট (সৌজন্যে: ফেরদৌসী জি. কামাল, সিপিএ), চতুর্দশ পুরষ্কার- টাঙ্গাইল শাড়ী (সৌজন্যে: ভৌমিক ফ্যাশন, ব্রঙ্কস), পঞ্চদশ পুরষ্কার- কফি মেকার (সৌজন্যে: সিজান রেষ্টুরেন্ট, জাহিদ), ষষ্টদশ পুরষ্কার- ফ্যান (সৌজন্যে: শাপলা বাংলা গ্রোসারী, ব্রঙ্কস) এবং সপ্তদশ পুরষ্কার- ডিনার সেট (সৌজন্যে: হাটবাজার গ্রোসারী)।
সমিতির সভাপতি দেওয়ান আমিনুর রহমান সহ আমন্ত্রিত অতিথি ও কর্মকর্তাগণ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরষ্কার ও সার্টিফিকেট বিতরণ করেন। বনভোজন অনুষ্ঠানের বিভিন্ন পর্ব উপস্থাপনা করেন মুক্তিযোদ্ধা এম এ নাছির, শামসুজ্জামান খান, খন্দকার মাহবুব হোসেন, মোহাম্মদ শিহাব উদ্দিন ও মোহাম্মদ আলী।
সবশেষে বনভোজনে অংশগ্রহণকারী সকলকে ধন্যবাদ জানান সমিতির সভাপতি দেওয়ান আমিনুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক তারিকুল ইসলাম।