নিউইয়র্ক: গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে। সেই সাথে বিএনপি-জামায়াত থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে দেশের মানুষ এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনে পেট্রোল বোমা মেরে ২০০ লোক হত্যা করা হয়েছে, পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে দুই হাজার যানবাহন। এতে দুই লাখ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। প্রতিমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি প্রশ্ন ছুড়ে বলেন, কি হলো এই আন্দোলনে? যারা দেশকে ভালোবাসে তারা দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এমন কর্মসূচী নিতে পারে না।
ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী উপরোক্ত কথা বলেন। সিটির জ্যাকসন হাইটস্থ জুইস সেন্টারে ১৭ এপ্রিল শুক্রবার রাতে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভা মঞ্চে অন্যান্যের মধ্যে উপবিষ্ট ছিলেন সহ সভাপতি যথাক্রমে আকতার হোসেন, সৈয়দ বশারত আলী, সামসুদ্দীন আজাদ ও লুৎফুল কবীর, সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আইরীন পারভিন ও সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমেদ।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদের পরিচালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে এরপর ‘জাতির জনক’ বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা ও মুজিবনগর সরকারের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে দেশের সহল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের পক্ষ থেকে সভাপতি মিসবাহ আহমদ, সাধারণ সম্পাদক ফরিদ আলম ও নিউইয়র্ক ষ্টেট যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সেবুল মিয়ার নেতৃত্বে প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেককে ফুলের তোড়া দিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হয়।
মুজিবনগর দিবসের আলোচনা পর্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মোজাহিদুল ইসলাম, প্রবাসী বিষয়ক সম্পাদক সোলেমান আলী, উপ প্রচার সম্পাদক তৈয়বুর রহমান টনি, যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের সভাপতি মিসবাহ আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক ফরিদ আলম, যুক্তরাষ্ট্র স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সাখাওয়াত বিশ্বাস, যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি কাজী আজিজুল হক খোকন, নিউইয়র্ক ষ্টেট আওয়ামী লীগর সহ সভাপতি রফিকুল ইসলাম, ব্রুকলীন আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম নজরুল প্রমুখ।
সভায় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক বিএনপি-জামায়াতের অবরোধ আন্দোলনের সমালোচনা করে বলেন, একাত্তরে পাকবাহিনী যেভাবে দেশের জনণকে হত্যা করেছে, হামলা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছিল বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনও ছিলো একই রকম। পেট্রোল বোমা, অগ্নিসংযোগ এসব হানাদারদেরই কাজ ছিলো। তিনি আরো বলেন, বিএনপি-জামায়াতের অবরোধ-হরতালে শিক্ষার্থীরা নির্বিঘেœ পরীক্ষা দিতে পারলো না, ১৫ লাখ পরীক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন ব্যাহত হলো, জানমাল আর অর্থনীতি ক্ষতি হলো। আর বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া ফুরফুরে মেজাজে বাসায় ফিরে গেলেন।
প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়নের সাফল্য বিশেষ করে তার মন্ত্রণালয়ের কথা তুলে ধরে বলেন, এই সরকারের আমলে স্বাস্থ্যখাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। শিশু ও মাতৃমৃত্যু হার কমেছে, মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। স্বাস্থ্যখাতের সাফল্যের কারণেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিকভাবে পুরস্কৃত হয়েছেন। তিনি বলেন, ৭১ সালে সাড়ে সাত কোটি মানুষের দেশে খাদ্য ঘাটতি ছিল। আর এখন ১৬ কোটি মানুষের দেশ খাদ্যে উদ্বৃত্ত। এসবই সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বের কারণে।
সভায় বক্তারা মুজিবনগর সরকারের নেতৃবৃন্দেকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে বলেন, মুজিবনগর সরকার আমাদের প্রেরণা। যার ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ আজকের পর্যায়ে এসেছে। বক্তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার উপরও গুরুত্বারোপ করেন। সভায় একাধিক বক্তা নিজ নিজ জেলার স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে হাসপাতালের শয্যা উন্নীতকরণ এবং অ্যাম্বুলেন্স সরবরাহের জন্য স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং দাবি জানান। প্রতিমন্ত্রী এসব দাবি সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের কাছে তুলে ধরার আশ্বাস দেন।
ড. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঠিক নেতৃত্বের কারণে এখন দেশে শান্তি বিরাজ করছে। তিনি বলেন, ধ্বংসাতœক রাজনীতির কারণে বিএনপি-জামায়াত জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ বলেন, বাংলাদেশ আজ জননেত্রী শেখ হাসিনা আর ডিজিটাল বাংলাদেশ-এর রূপকার সজিব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্বে এগিয়ে চলছে। ইনশা আল্লাহ আগামী নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়ে দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখবে।
অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, মহিলা লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগসহ দলের অন্যান্য অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।