নিউইয়র্ক ১১:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা : প্রবাসীরা কি ভাবছেন

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৭:২৩:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০১৫
  • / ৯৬৮ বার পঠিত

নিউইয়র্ক: ২০১৩ সালের ৫ জানুয়ারীর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অস্থির হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। সরকার এই দিবসটিকে দেখছে ‘গণতন্ত্রের বিজয়’ হিসেবে। তারা এই দিনটিকে ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ আখ্যা দিয়ে যেমন পালন করছে তেমনি অপর দিকে বিরোধী বিএনপি ও ২০ দলীয় জোট দিনটিকে ইতিহাসের কালো দিন উল্লেখ করে পালন করছে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে। বিরোধী জোট এই দিনে ঢাকায় সমাবেশের মাধ্যমে দিনটিকে প্রতিবাদ দিবস হিসাবে উদযাপন করতে চেয়েছিল; কিন্তু ৫ জানুয়ারী সমাবেশ করার অনুমতি পায়নি তারা। বরং বিরোধী দলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়াকে তার কার্যালয়ে কার্যত বন্দী করে রাখে সরকার।
দেশে যেমন এক ধরণের অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে তেমনি সৃষ্টি হয়েছে অস্থিরতারও। টানা অবরোধ, সরকার ও বিরোধী দলের অনড় অবস্থানে দেশের মানুষ যেমন শঙ্কা ও অনিশ্চয়তার মধ্যে বাস করছে তেমনি প্রবাসী বাংলাদেশীরাও এর বাইরে নন, তারাও আছেন  উৎকণ্ঠায়, উদ্বিগ্নতায়। কি ভাবছেন তারা? এই নিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশীদের মুখোমুখি হলে তারা ব্যক্ত করেন তাদের অনুভূতি।
বিশিষ্ট কমিউনিটি অ্যাক্টিভিষ্ট বুরহান উদ্দিন কফিল তার গভীর উৎকণ্ঠা প্রকাশ করে বলেন, স্বাধীনতার ৪৩ বছর পর এ রকম অবস্থা মোটেই কাম্য নয়। দেশ যেখানে এগিয়ে যাবার কথা সেখানে বার বার ব্যাহত হচ্ছে অগ্রগতি। কিছুতেই আমরা কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারছি না। যত দ্রুত সম্ভব সবাইকে দেশের স্বার্থে একটা সমঝোতায় আসতেই হবে। আসলে সমঝোতার কোন বিকল্প নেই। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমরা এতো রক্তক্ষয়ের মাধ্যমে দেশটা পেলাম এই হানাহানি দেখার জন্য? আমরা এর নিরসন চাই, যত তাড়াতাড়ি তা হবে ততই তা সবার জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে। তিনি এই জ্বালাও, পোড়াও ধ্বংসের রাজনীতির বিরোধিতা করে বলেন এটা কাম্য নয়। এসবের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করা আর কিছু বলার নেই। আমরা যারা প্রবাসী আমরা দেশে যেতে চাই, একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ও দেশ চাই।
কমিউনিটির পরিচিত মুখ সিলেটের মদন মোহন কলেজের প্রাক্তন ভিপি শাহাব উদ্দিন বলেন, এভাবে দেশ চলতে পারে না। দেশটা অচল হয়ে পড়েছে জ্বালাও, পোড়াও, অবরোধের মাধ্যমে। এসব আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সরকার পক্ষের  উদ্যোগে সমাধান করা উচিত। গণতন্ত্র এবং পুলিশি শাসন একসাথে চলতে পারে না। দেশটা আর যাই হোক পুলিশি রাষ্ট্র তো নয়। তিনি বলেন, নব্বইয়ের গণভ্যত্থানের মাধ্যমে যে গণতন্ত্রের সূচনা হয়েছিল তা এভাবে নষ্ট করা উচিত নয়। আসলে গণতন্ত্রের বিকল্প কিছু নেই। হোসনী মোবারক, সাদ্দাম হোসেন এরা কেউই শেষ পর্যন্ত টিকতে পারেনি। কেঊই পারে না। তিনি বলেন, যুদ্ধপরাধীর বিচার দ্রুত শেষ করা উচিত, এটি যত প্রলম্বিত করা হবে ততই দেশ একটা অস্থিতিশীলতার মধ্য দিয়ে যাবে। সুতরাং এটি শেষ করার কোনো বিকল্প নেই। শেখ হাসিনাকে গণতন্ত্রের মানস কন্যা বলা হয়। তিনিই পারেন গণতন্ত্রের স্বার্থে একটি গ্রহণযোগ্য সমাধানের পথে অগ্রসর হতে।
বিশিষ্ট কবি ফকির ইলিয়াস বলেন, গণতন্ত্রটা হলো গণমানুষের জন্য। রাজনৈতিক দলীয় স্বার্থ হাসিলের জন্য যদি সেই গণমানুষের অধিকারই রহিত হয় তাহলে তো সেটাকে গণতন্ত্র বলা যায় না। সংবিধান ও সংলাপ দুটো এক সাথেই চলতে পারে। বর্তমান এই পরিস্থিতিতে সংলাপের কোনো বিকল্প নেই। যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এ দেশ স্বাধীন হয়েছিল রাজনীতিকরা যদি সেই চেতনার ধারক হন তাহলে আলোচনার দ্বার উন্মুক্ত করতেই হবে। বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে হলে সাধারণ মানুষের চাওয়া-পাওয়াকে গুরুত্ব দিতে হবে। চলমান এই সময়ে এসেও আমরা যদি স্বৈরতান্ত্রিক মানসিকতা দেখাই তাহলে গণতন্ত্র মুখ থুবড়ে পড়বে যা কারোই কাম্য নয়।
গৃহবধূ শাহেলা আকতার তার অভিজ্ঞতা থেকে বলেন, তিনি গত বছর নভেম্বরে দেশে গিয়েছিলেন। তখন ৫ জানুয়ারীর নির্বাচন নিয়ে দুই দল একইভাবে মুখোমুখি হয়েছিল। তখনো দেশব্যাপী জালাও, পোড়াও, হত্যার মতো ভয়াবহ কান্ড ঘটেছিল। মানুষ এক প্রকার জিম্মি হয়ে পড়েছিল। নিউইয়র্ক ফিরতে তাকে দু’দুবার টিকেট বদল করতে হয়েছিল। অনেক কষ্টে সেবার তিনি দেশ থেকে ফিরতে পেরেছিলেন। তিনি বলেন এর পুনরাবৃত্তি কোনোভাবেই কাম্য নয়। সরকার ও বিরোধী দলকে বুঝতে হবে দেশটা শুধু তাদের নয়। এর বাইরে বৃহত্তর জনগোষ্ঠী রয়েছে, তাদের কথা ভাবতে হবে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে তারা এসব মোটেই তোয়াক্কা করছে না।
চাকুরিজীবি ও ক্যাব ব্যবসায়ী বুরহান উদ্দিন লিটন অনেকটা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এর জন্য বর্তমান সরকার শতভাগ দায়ী। তারা অন্যায়ভাবে বেগম খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করে, তাদের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। গণতন্ত্রের নামে তারা মূলত একনায়কতন্ত্র চাপিয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, একটা সুস্থ্য বিবেকবান মানুষ কখনো কল্পনা করতে পারে না বিরোধী নেতার বাড়ির সামনে বালি ও ইটের ট্রাক দিয়ে অবরোধ করে ফটকে তালা দিয়ে সর্বোপরি পিপার স্প্রে মেরে এইসব পরিস্থিতি সৃষ্টি করার। তিনি বলেন সরকার চাইলে আজই এই পরিস্থিতি থেকে দেশকে মুক্ত করতে পারে।
তরুণী ইভা তাসলিমা বলেন, আমাদের ইচ্ছা ছিল দেশে যাবার। খুব ছোট বেলায় এ দেশে এসেছি। আর যাওয়া হয়ে ওঠেনি। কিন্তুদেশের যে অবস্থা লক্ষ্য করছি, টিভি চ্যানেল গুলোতে যা দেখছি তাতে দেশে যাবার ইচ্ছাটা ক্রমশ মরে যাচ্ছে। সভ্য দুনিয়ায় এরকম ভাবা যায় না। সবার উচিত একটা সুন্দর পরিবেশ তৈরি করা। ভাবতে অবাক লাগে দেশের মানুষ কিভাবে নিজের দেশের সম্পদ এভাবে পুড়িয়ে দেয়, ধ্বংস করে দেয়।
কলেজ ছাত্র নাহিদ বলেন, দেশের কথা ভাবতে চাই না। আসলে ওটা একটা সভ্য দেশ ভাবতে কষ্ট হয়। সভ্য কোনো দেশের সরকার এভাবে করতে পারে ভাবা যায় না। বিরোধীরা প্রতিবাদের নামে যা করছে তারো নিন্দা জানাবার কোনো ভাষা নেই।
আইটি স্পেশালিষ্ট শাওন উদ্দিন বলেন, একটা দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের প্রধানকে বর্বরোচিতভাবে বালি ও ইটের ট্রাক দিয়ে আটকে দিয়ে, ফটকে তালা দিয়ে আর যাই হোক গণতন্ত্র রক্ষা করা বলা যায় না। পিপার স্প্রে মারার মতো ঘটনা নিঃসন্দেহে লজ্জাজনক। বিরোধীদল যেভাবে অবরোধের পথে গিয়েছে তা কাম্য না হলেও তাদের আর কোনো গত্যন্তর ছিল না। সরকারকেই এই পরিস্থিতির নিরসন করতে হবে। (সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা)

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা : প্রবাসীরা কি ভাবছেন

প্রকাশের সময় : ০৭:২৩:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০১৫

নিউইয়র্ক: ২০১৩ সালের ৫ জানুয়ারীর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অস্থির হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। সরকার এই দিবসটিকে দেখছে ‘গণতন্ত্রের বিজয়’ হিসেবে। তারা এই দিনটিকে ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ আখ্যা দিয়ে যেমন পালন করছে তেমনি অপর দিকে বিরোধী বিএনপি ও ২০ দলীয় জোট দিনটিকে ইতিহাসের কালো দিন উল্লেখ করে পালন করছে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে। বিরোধী জোট এই দিনে ঢাকায় সমাবেশের মাধ্যমে দিনটিকে প্রতিবাদ দিবস হিসাবে উদযাপন করতে চেয়েছিল; কিন্তু ৫ জানুয়ারী সমাবেশ করার অনুমতি পায়নি তারা। বরং বিরোধী দলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়াকে তার কার্যালয়ে কার্যত বন্দী করে রাখে সরকার।
দেশে যেমন এক ধরণের অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে তেমনি সৃষ্টি হয়েছে অস্থিরতারও। টানা অবরোধ, সরকার ও বিরোধী দলের অনড় অবস্থানে দেশের মানুষ যেমন শঙ্কা ও অনিশ্চয়তার মধ্যে বাস করছে তেমনি প্রবাসী বাংলাদেশীরাও এর বাইরে নন, তারাও আছেন  উৎকণ্ঠায়, উদ্বিগ্নতায়। কি ভাবছেন তারা? এই নিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশীদের মুখোমুখি হলে তারা ব্যক্ত করেন তাদের অনুভূতি।
বিশিষ্ট কমিউনিটি অ্যাক্টিভিষ্ট বুরহান উদ্দিন কফিল তার গভীর উৎকণ্ঠা প্রকাশ করে বলেন, স্বাধীনতার ৪৩ বছর পর এ রকম অবস্থা মোটেই কাম্য নয়। দেশ যেখানে এগিয়ে যাবার কথা সেখানে বার বার ব্যাহত হচ্ছে অগ্রগতি। কিছুতেই আমরা কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারছি না। যত দ্রুত সম্ভব সবাইকে দেশের স্বার্থে একটা সমঝোতায় আসতেই হবে। আসলে সমঝোতার কোন বিকল্প নেই। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমরা এতো রক্তক্ষয়ের মাধ্যমে দেশটা পেলাম এই হানাহানি দেখার জন্য? আমরা এর নিরসন চাই, যত তাড়াতাড়ি তা হবে ততই তা সবার জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে। তিনি এই জ্বালাও, পোড়াও ধ্বংসের রাজনীতির বিরোধিতা করে বলেন এটা কাম্য নয়। এসবের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করা আর কিছু বলার নেই। আমরা যারা প্রবাসী আমরা দেশে যেতে চাই, একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ও দেশ চাই।
কমিউনিটির পরিচিত মুখ সিলেটের মদন মোহন কলেজের প্রাক্তন ভিপি শাহাব উদ্দিন বলেন, এভাবে দেশ চলতে পারে না। দেশটা অচল হয়ে পড়েছে জ্বালাও, পোড়াও, অবরোধের মাধ্যমে। এসব আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সরকার পক্ষের  উদ্যোগে সমাধান করা উচিত। গণতন্ত্র এবং পুলিশি শাসন একসাথে চলতে পারে না। দেশটা আর যাই হোক পুলিশি রাষ্ট্র তো নয়। তিনি বলেন, নব্বইয়ের গণভ্যত্থানের মাধ্যমে যে গণতন্ত্রের সূচনা হয়েছিল তা এভাবে নষ্ট করা উচিত নয়। আসলে গণতন্ত্রের বিকল্প কিছু নেই। হোসনী মোবারক, সাদ্দাম হোসেন এরা কেউই শেষ পর্যন্ত টিকতে পারেনি। কেঊই পারে না। তিনি বলেন, যুদ্ধপরাধীর বিচার দ্রুত শেষ করা উচিত, এটি যত প্রলম্বিত করা হবে ততই দেশ একটা অস্থিতিশীলতার মধ্য দিয়ে যাবে। সুতরাং এটি শেষ করার কোনো বিকল্প নেই। শেখ হাসিনাকে গণতন্ত্রের মানস কন্যা বলা হয়। তিনিই পারেন গণতন্ত্রের স্বার্থে একটি গ্রহণযোগ্য সমাধানের পথে অগ্রসর হতে।
বিশিষ্ট কবি ফকির ইলিয়াস বলেন, গণতন্ত্রটা হলো গণমানুষের জন্য। রাজনৈতিক দলীয় স্বার্থ হাসিলের জন্য যদি সেই গণমানুষের অধিকারই রহিত হয় তাহলে তো সেটাকে গণতন্ত্র বলা যায় না। সংবিধান ও সংলাপ দুটো এক সাথেই চলতে পারে। বর্তমান এই পরিস্থিতিতে সংলাপের কোনো বিকল্প নেই। যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এ দেশ স্বাধীন হয়েছিল রাজনীতিকরা যদি সেই চেতনার ধারক হন তাহলে আলোচনার দ্বার উন্মুক্ত করতেই হবে। বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে হলে সাধারণ মানুষের চাওয়া-পাওয়াকে গুরুত্ব দিতে হবে। চলমান এই সময়ে এসেও আমরা যদি স্বৈরতান্ত্রিক মানসিকতা দেখাই তাহলে গণতন্ত্র মুখ থুবড়ে পড়বে যা কারোই কাম্য নয়।
গৃহবধূ শাহেলা আকতার তার অভিজ্ঞতা থেকে বলেন, তিনি গত বছর নভেম্বরে দেশে গিয়েছিলেন। তখন ৫ জানুয়ারীর নির্বাচন নিয়ে দুই দল একইভাবে মুখোমুখি হয়েছিল। তখনো দেশব্যাপী জালাও, পোড়াও, হত্যার মতো ভয়াবহ কান্ড ঘটেছিল। মানুষ এক প্রকার জিম্মি হয়ে পড়েছিল। নিউইয়র্ক ফিরতে তাকে দু’দুবার টিকেট বদল করতে হয়েছিল। অনেক কষ্টে সেবার তিনি দেশ থেকে ফিরতে পেরেছিলেন। তিনি বলেন এর পুনরাবৃত্তি কোনোভাবেই কাম্য নয়। সরকার ও বিরোধী দলকে বুঝতে হবে দেশটা শুধু তাদের নয়। এর বাইরে বৃহত্তর জনগোষ্ঠী রয়েছে, তাদের কথা ভাবতে হবে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে তারা এসব মোটেই তোয়াক্কা করছে না।
চাকুরিজীবি ও ক্যাব ব্যবসায়ী বুরহান উদ্দিন লিটন অনেকটা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এর জন্য বর্তমান সরকার শতভাগ দায়ী। তারা অন্যায়ভাবে বেগম খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করে, তাদের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। গণতন্ত্রের নামে তারা মূলত একনায়কতন্ত্র চাপিয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, একটা সুস্থ্য বিবেকবান মানুষ কখনো কল্পনা করতে পারে না বিরোধী নেতার বাড়ির সামনে বালি ও ইটের ট্রাক দিয়ে অবরোধ করে ফটকে তালা দিয়ে সর্বোপরি পিপার স্প্রে মেরে এইসব পরিস্থিতি সৃষ্টি করার। তিনি বলেন সরকার চাইলে আজই এই পরিস্থিতি থেকে দেশকে মুক্ত করতে পারে।
তরুণী ইভা তাসলিমা বলেন, আমাদের ইচ্ছা ছিল দেশে যাবার। খুব ছোট বেলায় এ দেশে এসেছি। আর যাওয়া হয়ে ওঠেনি। কিন্তুদেশের যে অবস্থা লক্ষ্য করছি, টিভি চ্যানেল গুলোতে যা দেখছি তাতে দেশে যাবার ইচ্ছাটা ক্রমশ মরে যাচ্ছে। সভ্য দুনিয়ায় এরকম ভাবা যায় না। সবার উচিত একটা সুন্দর পরিবেশ তৈরি করা। ভাবতে অবাক লাগে দেশের মানুষ কিভাবে নিজের দেশের সম্পদ এভাবে পুড়িয়ে দেয়, ধ্বংস করে দেয়।
কলেজ ছাত্র নাহিদ বলেন, দেশের কথা ভাবতে চাই না। আসলে ওটা একটা সভ্য দেশ ভাবতে কষ্ট হয়। সভ্য কোনো দেশের সরকার এভাবে করতে পারে ভাবা যায় না। বিরোধীরা প্রতিবাদের নামে যা করছে তারো নিন্দা জানাবার কোনো ভাষা নেই।
আইটি স্পেশালিষ্ট শাওন উদ্দিন বলেন, একটা দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের প্রধানকে বর্বরোচিতভাবে বালি ও ইটের ট্রাক দিয়ে আটকে দিয়ে, ফটকে তালা দিয়ে আর যাই হোক গণতন্ত্র রক্ষা করা বলা যায় না। পিপার স্প্রে মারার মতো ঘটনা নিঃসন্দেহে লজ্জাজনক। বিরোধীদল যেভাবে অবরোধের পথে গিয়েছে তা কাম্য না হলেও তাদের আর কোনো গত্যন্তর ছিল না। সরকারকেই এই পরিস্থিতির নিরসন করতে হবে। (সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা)