নিউইয়র্ক হাসপাতালে ভুল চিকিৎসা : ক্ষতিপূরণ বাবদ বাংলাদেশী শিশু পেল ৮.৫ মিলিয়ন ডলার
- প্রকাশের সময় : ০৮:২১:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫
- / ৪৩৮ বার পঠিত
নিউইয়র্ক: ভুল চিকিৎসার খেসারত হিসেবে নিউইয়র্ক সিটির যুঙ্কসে অবস্থিত মন্টিফিওর মেডিক্যাল সেন্টারকে দিতে হলো সাড়ে ৮ মিলিয়ন ডলার তথা ৬৭ কোটি টাকা এবং এ অর্থ পেয়েছে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ৭ বছরের এক শিশু। শুধু তাই নয়, চিকিৎসাকালিন এক মিলিয়ন ডলারের বিল এসেছে, সে অর্থও পরিশোধ করবে ঐ হাসপাতাল। এর বাইরে শিশুটিকে সারাজীবনের ভরন-পোষণসহ প্রয়োজনীয় সবকিছু করতে ২৬ মিলিয়ন ডলার দিতে হবে এবং এ অর্থ প্রদান করতে হবে মাসিক কিস্তিতে। সাড়ে ৮ মিলিয়ন ডলারের সমঝোতার মধ্যে তাৎক্ষণিকভাবে এক মিলিয়ন ডলার প্রদান করা হয় শিশুর নামে একটি বাড়ি ক্রয়ের জন্যে, যেখানে সে বাস করবে। অবশিষ্ট সাড়ে ৭ মিলিয়ন ডলার জমা করা হয় ব্যাংকে-যেখান থেকে শিশুটির ৎুয়োজনে ব্যয় করতে হবে।
শিশুর পক্ষে হাসপাতালটির বিাংদ্ধে আইনগত লড়াই চালান ৎুখ্যাত এটর্নী পেরী ডি সিলভার। এটর্নী সিলভার ২৫ আগস্ট বলেন, চিকিৎসকরা হচ্ছেন রোগীর সর্বশেষ ভরসাস্থল। অথচ তারাই যদি অস্ত্রোপচারের সময় উদাসীন থাকেন তাহলে রোগী ভরসা করবে কার ওপর। আর এজন্যেই আমি ঐ শিশুর নাজুক অবস্থায় হতভম্ব হয়ে পড়েছিলাম। সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ আদায়ে যা করা দরকার সে সব প্রক্রিয়া অবলম্বন করেছিলাম। মামলার উদ্ধৃতি দিয়ে এটর্নী পেরী ডি সিলভার আরো জানান, শিশুটির হার্ট সার্জারী করা হয়। সেটি সফল হলেও সার্জারীর পর হার্টের নিকটে তরল পদার্থ জমে। এরপর তাকে নেয়া হয় ব্রঙ্কসের এই মন্টিফিওর হাসপাতালে। চিকিৎসকরা সিদ্ধান্ত নেন যে, শিশুটিকে পেরিকারডিয়োসেনটেসিস প্রক্রিয়ায় চিকিৎসা দিতে হবে। এ অবস্থায় আলট্রাসাউন্ডের ভিত্তিতে তার বুকে বড় একটি সূই ঢুকিয়ে দেয়া হয়। ঐ সূইয়ের পথ বেয়ে তরল পদার্থ বের হয়ে আসার কথা। কিন্তু তার পরিবর্তে শিশুটির হার্ট ক্ষত হয় এবং প্রচুর পরিমাণের রক্ত ঝরে। বিষয়টি বুঝতে সক্ষম হননি চিকিৎসকরা। এভাবে প্রচুর রক্তক্ষরণে শিশুটি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়। প্রথমে যে চিকিৎসক অস্ত্রোপচার করেছিলেন তাকে আবারো ডাকা হয় এবং তিনি পুনরায় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শিশুটির প্রাণ রক্ষায় সক্ষম হন। কিন্তু ভুল জায়গায় সূই ঢুকিয়ে দেয়ায় প্রচুর রক্ষক্ষরণে শিশুটি পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হয়। এ অবস্থায় তাকে এক বছরের মত কাটাতে হয় হাসপাতাল এবং পুনর্বাসন কেন্দ্রে। এরপর বাসায় ফিরলেও তাকে নানা ধরনের সমস্যায় দিনাতিপাত করতে হচ্ছে। এমনকি যেতে হচ্ছে বিশেষ স্কুলে। এটর্নী সিলভার বলেন, এটি খুবই দু:খজনক ঘটনা যা ঘটা কখনোই উচিত হয়নি। চিকিৎসকরা যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতেন তাহলে শিশুটিকে এমন পরিস্থিতির মধ্যে পতিত হতে হতো না।
শিশুর নাজুক পরিস্থিতির বিস্তারিত তথ্য জেনে এটর্নী সিলভার শিশুটিকে সাথে নিয়ে এ বছরের শুরুতে ছুটে যান শিকাগো। সেখানকার ইউনিভার্সিটিতে কর্মরত যুক্তরাষ্ট্রের সেরা হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করেন। এই মামলায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সাক্ষ্য প্রদানে সম্মত হন। এটর্নী পেরী ডি সিলভার বলেন, এ রায়ে আমি এবং আমার পার্টনার-উভয়েই সন্তুষ্ট। এর ফলে শিশুটির ভবিষ্যত সংহত হবে। মামলায় শিশুর নাম গোপন রাখা হলো প্রাইভেসী আইনের কারণে।